#মেঘের_অন্তরালে,পর্বঃ ০৩
লেখনীতেঃ তাহমিনা তমা
হুর অনেকটা সময় ইসরার দিকে তাকিয়ে থেকে নিঃশব্দে পাশে বসে পড়লো। বেলকনির বেলি ফুলের গাছটা সাদা ফুলে ভড়ে উঠেছে৷ ফুলের মিষ্টি গন্ধ মন জুড়িয়ে দিয়ে যাচ্ছে। হুর আর ইসরা পাশাপাশি বসে আছে।
ছোটবেলা থেকে বাবার কাছে একটা গল্প শুনে এসেছি। আমার বাবার দাদাকে বিয়ের জন্য ছোট মেয়েকে দেখিয়ে বড় মেয়ে বিয়ে দেওয়া হয়েছিলো। যখন সব জানাজানি হলো তখন অনেক ঝামেলা হয়েছিলো কিন্তু একটা সময় গিয়ে সব ঠিক হয়ে যায়। বাকি জীবনটা নাকি তারা সুখী দম্পতি হিসেবে কাটিয়ে গেছে।
ইসরার হঠাৎ বলা কথায় হুর খানিকটা চমকে তাকায় ইসরার দিকে। এই গল্পটা হুর অনেকবার শুনেছে ইসরার কাছে। প্রত্যেকবার বলা শেষে ইসরা আর হুর হাসতে হাসতে লুটোপুটি খেতো আর বলতো কী সাংঘাতিক ব্যাপার ভাবতে পারিস ? কিন্তু আজ কেউ হাসতে পারলো না বরং হুরের ভেতরটা ধক করে উঠলো।
ইসরা আবার বললো, আমি কখনো ভাবতে পারিনি যে গল্পটা নিয়ে সবসময় মজা করতাম সেটা একদিন আমার জীবনের গল্প হয়ে দাঁড়াবে।
হুর ইসরার কথার উত্তরে কিছু বলতে পারলো না মাথা নিচু করে বসে রইলো। ইসরার কোনো রাগ নেই হুরের উপর, কারণ মেয়েটা দেখতে যেমন সুন্দরী মনের দিকে থেকে ঠিক ততটাই নরম। একটু ইমোশনাল কথা বলে যে কেউ হুরকে নিজের স্বার্থে ব্যবহার করতে পারবে। হুরকে নিয়ে ইসরার মাঝে মাঝে খুব ভয় হয়। পৃথিবীটা যে বড্ড কঠিন এখানে এতো সহজ সরল মানুষকে সবাই ব্যবহার করে শুধু, তাদের সরলতার সুযোগ নেয়।
ইসরা হুরের দিকে তাকিয়ে বললো, এতটা সহজ সরল হয়ে যাস না, যাতে নিজের ক্ষতি হয়। পৃথিবীটা চেনার চেষ্টা কর হুর, নাহলে জীবনে অনেক হোটচ খেতে হবে।
হুর মাথা নিচু করে বললো, তুই প্লিজ মাফ করে দে আমাকে।
ইসরা আর কিছু বললো না, আবার বেলকনির বাইরে দেখতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো। হুরও কিছু না বলে চুপচাপ বসে রইলো ইসরার পাশে।
৫.
ডিভোর্সের তাড়া নিহানের পরিবারের, ইসরার বাবার নয়। মেয়েকে ও-বাড়ি পাঠানোর কোনো লক্ষণ দেখা গেলো না তার মধ্যে। মেয়ের সাথে চোখ মেলানোর সাহস পায় না ইখতিয়ার আহমেদ। সবসময় মেয়ের থেকে মুখ লুকিয়ে বাঁচার চেষ্টা করে। নিজের জীবনের সব সিদ্ধান্ত ঝুঁকে পড়ে নিয়েছেন তিনি। মেয়ের জীবনের সবচেয়ে বড় সিদ্ধান্তটাও কোনোরকম চিন্তা ভাবনা ছাড়াই নিয়ে ফেলেছেন। নিজের হাতে সযত্নে মেয়ের জীবনটা নষ্ট করে দিয়েছেন সেটা বুঝতে অনেক দেরি করে ফেলেছেন। গতরাতে নিহানের বাবা ফোনে জানিয়েছেন সকালে গাড়ি পাঠাবেন ইসরাকে নিতে। সেই থেকে ইসরার বাসায় অনেকটা গুমোট পরিবেশ বিরাজ করছে। যে বাড়ি থেকে এতো অপমানে বের করে দেওয়া হয়েছে সেই বাড়িতে মেয়েকে আবার কীভাবে পাঠাবে ভেবে পাচ্ছে না। আবার পরক্ষণে ভাবছে সেই অপমান সে নিজের ডেকে এনেছে, দোষটা তাদের নয়। ইসরা সকালে নিজের রুম থেকে এখনো বের হয়নি। নিচে গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে বেশ অনেকটা সময় হলো কিন্তু ইসরাকে কেউ কিছু বলার সাহস পেলো না। পারভীন বেগম চার পাঁচবার মেয়ের রুমের সামনে গিয়ে আবার ফেরত এসেছে। ইখতিয়ার আহমেদ আজ অফিস না গিয়ে ড্রয়িংরুমে সোফায় হেলান দিয়ে বসে আছে কপালে হাত রেখে। পারভীন বেগম বিনা প্রয়োজনে কিচেনে দাড়িয়ে আছে দেয়ালে হেলান দিয়ে আর ইমন খেয়েদেয়ে স্কুলে চলে গেছে অনেকক্ষণ আগে। মেয়ের রুমের দরজা খোলার শব্দে পারভীন বেগম আর ইখতিয়ার আহমেদ দু’জনেই সেদিকে তাকালো। রেডি হয়ে লাগেজ নিয়ে বের হয়েছে ইসরা। মেয়েকে এগিয়ে আসতে দেখে উঠে দাড়ালেন ইখতিয়ার আহমেদ। ইসরা বাবা-মা কারো দিকে না তাকিয়ে মেইন ডোর খোলে বের হয়ে গেলো। পারভীন বেগম মেয়ের পেছনে যেতে লাগলো। ইখতিয়ার আহমেদ যাবে কী যাবে না চিন্তা করতে করতে দু’জনেই চলে গেলো আর সে আবার নিজের জায়গায় বসে পরলো।
গেইটের বাইরে গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ইসরা সেদিকে এগিয়ে গেলো।
পারভীন বেগম ধরা গলায় বললো, ইসরা।
ইসরা দাঁড়িয়ে গেলো কিন্তু পেছনে ফিরে তাকালো না। পারভীন বেগম নিজেই এগিয়ে এসে মেয়েকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিলেন কিন্তু ইসরার মধ্যে কোনো হেলদোল দেখা গেলো না। সযত্নে মায়ের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে গাড়িতে উঠে বসলো। ইসরা বসতেই গাড়ি স্টার্ট দিলো ড্রাইভার। পারভীন বেগম চাতক পাখির মতো তাকিয়ে রইলেন চলে যাওয়া গাড়ির দিকে। চোখের আড়াল হয়ে গেলেই বুক ফেটে কান্না আসতে লাগলো তার। নিজেকে কোন রকম সামলে নিয়ে বাসার দিকে পা বাড়ালেন।
ইসরা জানলা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে, চোখ দুটোয় শ্রাবণ ধারা বয়ে চলেছে। অজানা এক পথে হাঁটতে চলেছে সে। এই পথের শেষ কোথায় তার অজানা। চলার পথটা যে সহজ হবে না সেটা বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে না তার। গাড়ি থেমে গেলে হুঁশ ফিরলো ইসরার। সামনে তাকিয়ে সাদা রঙের দুতলা ডুপ্লেক্স বাড়ি দেখতে পেলো। মোটামুটি বেশ বড় বাড়িটা আর সুন্দর। হ্যাঁ এটাই নিহানদের বাড়ি, যেখানে আরো বিশ দিন আগে এসেছিলো বধূ সেজে। ইসরা দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে গাড়ি থেমে নেমে নিজের লাগেজ নিয়ে সামনে আগাতে লাগলো। কলিং বেল বাজালে একটু পর দরজা খোলে গেলো। সামনে তাকিয়ে নিজের মায়ের বয়সী ভদ্র মহিলাকে দেখতে পেলো। পোশাক আশাকে বুঝা যাচ্ছে বাড়ির কাজের লোক। ইসরা ভেবেছিলো উনিও ইসরাকে দেখে বিরক্তি নিয়ে তাকাবে। কিন্তু ইসরার ধারণা ভুল প্রমাণিত করে মিষ্টি হাসলেন ইসরার দিকে তাকিয়ে।
ভেতরে আহেন।
ইসরা লাগেজ টেনে ভেতরে গেলে আশেপাশে কাউকে দেখতে পেলো না।
আমি এই বাড়ির কাজের লোক মনিরা। আপনে আমার সাথে আহেন আপনার রুম দেখাই দেই।
ইসরা কিছু না বলে মনিরার পেছনে হাঁটতে লাগলো। নিচতলার একদম কর্ণারের একটা রুমে ইসরাকে নিয়ে গেলো মনিরা।
আপনে এই রুমেই থাকবেন গতরাতে বড় সাহেব বলে দিছে।
ইসরার বুঝতে সময় লাগলো না এটা বাড়ির গেস্টদের জন্য বরাদ্দকৃত রুম। সেও তো এই বাড়ি গেস্ট মাত্র কয়েক মাসের, তাই তার জায়গা এখানেই হওয়ার কথা।
আপনে কিছু খাইবেন ?
ইসরা মলিন হেঁসে বললো, না।
কিছু লাগলে আমারে বইলেন আমি এহন যাই।
ইসরা সম্মতি দিলে মনিরা বের হয়ে গেলো রুম থেকে। ইসরা রুমটা ভালো করে দেখতে লাগলো। খুব বেশি কিছু নেই রুমে, একটা বেড, ড্রেসিং টেবিল, সোফা আর কাবার্ড। পাশে বেলকনি দেখে ইসরা সেদিকে এগিয়ে গেলো। কয়েকটা এরিকা পাম গাছ ছাড়া বেলকনিতে আর কিছু নেই। ইসরা কিছুটা সময় সেখানে থেকে রুমে এসে নিজের জিনিসপত্র গুছাতে লাগলো। কাজ শেষ করে শাওয়ার নিয়ে ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসে পড়লো। এখন বেলা বারোটা বাজে ইসরার পেটে কিছুই পরেনি। ক্ষুধা লাগেনি এমন নয় তবে খাওয়ার ইচ্ছেও নেই। চুল আঁচড়ে বেডে গিয়ে শুয়ে পড়লো।
বেলকনিতে দাঁড়িয়ে একটার পর একটা সিগারেট খেয়ে যাচ্ছে নিহান। ছোটবেলা থেকে পড়াশোনার প্রতি মনোযোগ ছিলো নিহানের। বাড়তি কিছু ভাবার সময় পায়নি কখনো। সবসময় বইয়ে মুখ গুঁজে থাকতো। যার ফলস্বরূপ আজ একজন প্রতিষ্ঠিত মানুষ সে, সমাজে নিজের ভালো একটা অবস্থান তৈরি করতে পেরেছে। ক্যারিয়ার আর পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকায় প্রেম ভালোবাসা নিয়ে ভাবার সময় হয়নি তার৷ সুদর্শন হওয়ায় কলেজ আর ভার্সিটি লাইফে অনেক মেয়ের ক্রাশ ছিলো নিহান কিন্তু পাত্তা দেয়নি কখনো। ইসরা মানে হুরকে দেখে তার ভালো লেগেছিলো। ভালো লেগেছিলো বলতে মনে হয়েছিলো মেয়েটা তার পাশে দাড়ানোর যোগ্যতা রাখে। সে একটা শার্ট কিনতে গেলেও কয়েকবার দেখেশুনে কিনে আর জীবনের সবচেয়ে বড় বিষয়ে এভাবে ঠকে গেলো। রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছে তার, ইচ্ছে করছে গেস্ট রুমে থাকা মেয়েটাকে খুন করে নিজের রাগ মেটাতে। ভাগ্য ভালো মেয়েটা তার সামনে নেই তাহলে হয়তো সত্যি সত্যি খুন করে দিতো।
৬.
ফজরের নামাজ পড়ে ধীরপায়ে ছাঁদে চলে গেলো ইসরা। দুদিন হলো এই বাড়িতে এসেছে কিন্তু কারো সামনে যায়নি। নিহানের আর তার ছোট চাচার পরিবার একসাথেই এই বাড়িতে থাকে। নিহানের মা ছাড়া বাকি সবাই চাকরিজীবী এই বাড়ির। ইসরাকে আলকাতরার কৌটা উপাধি দেওয়া নিহানের চাচাতো বোন আমিরা এইচএসসি পরীক্ষার্থী, তার সাথেও ইসরার দেখা হয়নি। রুমে দম বন্ধ হয়ে আসছিলো তাই ছাঁদে চলে গেলো। বাড়িটা মনিখালার সাহায্যে অনেকটা চিনে নিয়েছে ইসরা আর এই বাড়ির একমাত্র তার সাথেই কথা বলে ইসরা। তাকে মনিখালা বলেই ডাকে। ছাঁদের রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে নিচে তাকাতেই গেইট দিয়ে নিহানকে ঢুকতে দেখলো সাদা পাঞ্জাবি পড়া আর টুপি মাথায়। নিহান বাসার ভেতরে ঢুকে গেলো আর ইসরা আকাশের দিকে তাকালো। এভাবে কারো জীবন চলতে পারে কিনা ইসরার জানা নেই। এই বাড়িতে নিজেকে অন্য কোনো গ্রহের প্রাণী মনে হচ্ছে ইসরার কাছে। মা অনেকবার কল দিয়েছে কিন্তু ইসরা রিসিভ করেনি, কেনো যেনো কারো সাথেই কথা বলতে ইচ্ছে করে না তার।
আপনি এখানে কী করছেন ?
ছাঁদে এসে ইসরাকে দেখে নিহানের কপাল কুঁচকে গেলো। প্রতিদিন এই সময়টা ছাঁদে কাটাতে ভালো লাগে নিহানের তাই চলে এসেছে কিন্তু ইসরাকে এখানে একদমই আশা করেনি সে। নিহানের আওয়াজে চমকে পেছনে ফিরে তাকালো ইসরা। নিহানের মতো ইসরাও নিহানকে একদমই প্রত্যাশা করেনি।
রুমে দম বন্ধ হয়ে আসছিলো তাই এখানে এসেছি।
এটা আপনার নিজের বাড়ি নয় যখন যেখানে ইচ্ছে চলে যাবেন। এই সময়টা আমি ছাঁদে কাটাই, আর কেউ থাকুক সেটা আমি পছন্দ করি না।
নিহানের কথায় ইসরার মধ্যে কোনো হেলদোল দেখা গেলো না। সে নিজের মতো দাঁড়িয়ে আছে।
নিহান বিরক্ত হয়ে নিজেই চলে যেতে গেলে ইসরা বলে উঠলো, আপনার জন্য একটা খারাপ খবর আছে আমার কাছে।
নিহান তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বললো, আপনার মতো মানুষের থেকে কেউ ভালো কিছু আশাও করতে পারে না। আপনার গায়ের রং যতটা কালো আপনার মনটা তার থেকেও বেশি কালো।
ইসরা মুচকি হাঁসলো নিহানের কথায় আর বললো, আমার মন কতটা কালো আর সাদা সেটা আমি ভালো জানি। তবে আপনার মন কতটা সাদা সেটা আপনি ভালো জানেন। আর হ্যাঁ নিশ্চিত থাকুন আপনার বাসায় পারমানেন্ট থেকে যাওয়ার কোনো চেষ্টা আমি করবো না, আর না আপনার মন জয় করার চেষ্টা করবো।
চেষ্টা করে লাভ আছে বলে আপনার মনে হয় ?
ইসরা নিহানের কথা সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে বললো, আপনি হুরকে পছন্দ করেন সেটা আমি জানি। তবে যদি ভেবে থাকেন ডিভোর্সের পর হুরকে বিয়ে করবেন তার জন্য বলে রাখি হুরের বয়ফ্রেন্ড আছে। সেটা আমার মামাও জানে এবং বিয়েটা মোটামুটি ঠিক করা। আরাফ ভাইয়ার পড়াশোনা শেষ হলেই বিয়ের কাজ কমপ্লিট করা হবে।
নিহান চোখ মুখ শক্ত করে বললো, ঐ মেয়ে তো আপনার থেকে এক ধাপ এগিয়ে। কীভাবে ভাবলেন এমন প্রতারক কাউকে আমি আমার জীবনে জায়গা দিবো।
কথাটা শেষ করে বড় কদমে ছাঁদের গেইটের দিকে এগিয়ে গেলো নিহান। হঠাৎ থেমে গিয়ে বললো, আপনাকে যেনো আমার চোখের সামনে আর না দেখি। আপনার যা প্রয়োজন নিজের রুমে পেয়ে যাবেন। এই বাড়ির মানুষদের থেকে যত দুরত্ব বজায় রাখবেন সেটাই ভালো আপনার জন্য।
নিহান চলে যেতেই ইসরা একটা দীর্ঘ শ্বাস ছাড়লো। ইসরার মনে একবিন্দু ইচ্ছে নেই এই সম্পর্কটাকে সুযোগ দেওয়ার। মনে মনে সেও চায় এই মিথ্যে সম্পর্ক থেকে মুক্তি পেতে। তার মধ্যে কোনো ইচ্ছে নেই এই পরিবারের কারো মন জয় করার। এই পরিবারের প্রথম দিনের ব্যবহারে ইসরা বুঝে গেছে তাদের যতটা না সমস্যা বউ পাল্টে যাওয়ায় তার থেকে হাজার গুন সমস্যা একটা কালো মেয়ে তাদের পরিবারের বউ হয়েছে বলে।
চলে যাওয়ার সময় পেছনে থেকে কারো আওয়াজে শুনতে পেয়েছিলো, আর একটু ফর্সা হলে তাও ভেবে দেখা যেতো।
আর নিহান সে তো কালো মানুষদের এক প্রকার ঘৃণা করে বলা চলে। মনিখালার থেকে ইসরা শুনেছে ছোটবেলায় কোনো কালো বাচ্চার সাথে নিহান খেলতো না পর্যন্ত। নিহানের ছোট চাচার ছেলের গায়ের রং নিহানের থেকে চাপা তাই তাকেও নাকি খুব একটা পছন্দ নয় নিহানের। মনিখালার ভাষ্যমতে সে কালো নয় উজ্জ্বল শ্যামবর্ণ, নিহান তাকেই পছন্দ করে না আর ইসরা তো সেখানে একদমই কালো।
ইসরা বিড়বিড় করে বললো, মিস্টার নিহান আমার গায়ের রং যতটা কালো তার থেকে আপনার মনটা আরো বেশি কালো। এমন কারো মনে জায়গা করার কোনো ইচ্ছে আমার নেই যে মানুষকে সম্মানই করতে জানে না। আপনার মতো আমিও সময়ের অপেক্ষায় আছি। তবে তার আগে আমার বাবাকে বুঝাতে চাই সে কতবড় অন্যায় করেছে।
চলবে,,,,,,,