ভালোবাসায়_ভেজা_সন্ধ্যে,১২,১৩

#ভালোবাসায়_ভেজা_সন্ধ্যে,১২,১৩
#রোকসানা_রাহমান
পর্ব (১২)

রিপ্তি কথার তালে তালে নিজের হাতদুটো অনুভবের গলার কাছে এগিয়ে নিচ্ছে। অনুভব হাত থেকে নিজের ফোনটা পাশে রাখলো,কান থেকে ইয়ারফোনটা খুললো।রিপ্তির হাতদুটো নিজেই নিজের গলাতে চেপে ধরে বললো,,,,

“” আমি তো সেই প্রথম রাতেই খুন হয়েছি,মায়াকন্যা! খুনের উপর যদি কিছু থাকে,তাহলে আজ তাই করে দাও!””

অনুভবের বাক্যপ্রকাশে রিপ্তি অভিভূত! বিস্ময়জোড়া চোখদুটো গভীর আগ্রহে। মনের ভেতর চলছে সন্দেহের গুটিখেলা। রিপ্তি বেশ সন্দেহচোখেই বললো,,

“” রাত,কিসের রাত? কেমন রাত?””

রিপ্তির প্রশ্নে অনুভব নড়লো। বুকের ভেতর থেকে এক ভাবময়ী নিশ্বাস বেড়িয়ে এসেছে। ঠোঁটে রসালো হাঁসি নিয়ে মিহিসুরে বললো,,,
“” উফ! সেইরাতের কথা নাই শুনলে,নাই জানলে আমার মায়াকন্যার কথা। সব মেয়ের সব জানতে হয় না গো!””

অনুভবের হেয়ালিপনা কথায় রিপ্তির মুখ থেকে ঝড়ে পড়ছে বিরক্তের কুন্ডলি। নাক বেয়ে পড়ছে,রাগের তপ্ত নিশ্বাস। কেমন রাত,কেমন মেয়ে? যদি নাই বলবে তবে কথা পাড়লো কেন? কেন কেন?? না চাইতেও অগোচরেই রিপ্তির হাতের বাধন শক্ত হয়ে পড়ছে অনুভবের গলায়৷ কন্ঠনালীটা বুঝি দেবেই গেলো। তবে কি এবার তার ভাঙা গলার গান বিনাশ করেই ছাড়বে?? অনুভব চটজলদি রিপ্তির হাত আকড়ে ধরে বললো,,,

“” সত্যি সত্যি মেরে ফেলবে নাকি??””

রিপ্তির অন্যমনস্কতা কেটে গিয়েছে। চোখের সরলদৃষ্টি অনুভবের প্রশ্নবিদ্ধ চোখে। মন তো চায় মেরে ফেলি,তবে সে মরণ যে শরীরি মরণ নয়। তাহলে? তাহলে কোন মরণ?? রিপ্তির মনে জাগা প্রশ্ন মনেতেই ক্ষীণ হয়ে বাজছে। নিজেই জানেনা কি করছে? কেন করছে? তবে সব সময় করে ফেল,করে ফেল এক আক্ষেপ সারাক্ষণ তাকে তাড়া করে! হুশিয়ারী চালায় তার হৃদমাঝারে!!

“” সে এক নিশব্দ,নিঃস্তব্ধতার নিশাচর রাত। চারপাশে তখন জোসনা বাড়ী। নেই কোনো মানুষজনের হাট্টাহাট্টি। ঝিঝিপোকার ঝিঁঝিঁ শব্দে মনমাতানো কালো রাত। চিকনসুরে মধুরকান্নার শব্দে আমি শিহরিত। এক মায়াবীর কেঁপে উঠা কাঁপুনিতে চলছে আমার বুকে উচ্চশব্দের ধুকপুকুনি। আমি যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলাম আমার বুকের কম্পনের শব্দে মেয়েটির দুঃখ ঝরানো কান্নার যেন কোনো ব্যাঘাত না ঘটে। এক ছুটন্ত ট্রেনে দুজন নিরব পাখি!””
“” ট্রেণ!””
“” হুম ট্রেণ। ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে ছেড়েছিল সে ট্রেণ। মেয়েটির গন্তব্যস্থল ছিলো। কিন্তু আমার? আমি কেন উঠেছিলাম? তার যাদুবলের মোহে! দুজনে একি কামরার একি সিটে বসা। কেউ কারো সাথে কোনে কথা বলিনি। আমার চোখ তো তার মুগ্ধতায় বন্দী। সে কি আমাকে দেখেছিলো? হয় তো দেখেনি,নাহয় দেখার প্রয়োজন মনে করেনি। তার মন ভারাক্রান্ত ছিলো,চোখে,মুখে বিষন্নতা। স্বপ্ন ভাঙার ব্যথা বুকে নিয়ে অঝোরে কেঁদে যাচ্ছিলো। এতো কান্নার মাঝেও নিজের শরীরে জড়ানো লাল শাড়ীটিতে ছিলো যত্নের স্পর্শ। হয় তো নিজের শাড়ী ছিলোনা। খুব আপন কারো। নষ্ট হলে ব্যথাটা তার বুকেই বেশি বিধতো! হাতভর্তি চুড়ির ঝনঝনানি আর চোখভর্তি পানি নিয়ে একপলক আমার দিকে ফিরেছিলো। পুরো কামরায় আমি একমাত্র পুরুষ মানুষ। অার কারো পদচিহ্ন পড়েনি। তবুও মেয়েটির মধ্যে কোনো ভয়েরা বাসা বাধতে পারেনি। পুরুষনামক আতঙ্ক হয়তো তখনো তার মনে পরিচিতি ফেলেনি।
আমি তার পাশেই বসেছিলাম। এক হাতের মতো দুরত্ব রেখে। এতেও তার মধ্যে বিশেষ ভ্রূক্ষেপ ফেলতে পারেনি। সে আপন মনে চোখের জল ফেলছে। তার নোনা চোখের পানি আমার শরীরে কাটা হয়ে বিধছিলো। অমন স্নিগ্ধমাখা মুখটাতো চোখের পানি বড্ড বেশি বিষাদ দিচ্ছিলো আমায়। আমি হাত বাড়িয়ে তার কাধে হাত রাখলাম। কিন্তু চোখের কোটরে হাত পৌছালো না। কাঁপা কন্ঠে বললাম,তুমি তো শীতে কাপছো,জানালাটা বন্ধ করে দেই? আমার প্রশ্নের উত্তরে সে ছলছল নয়নে চেয়ে রইলো। কিছু বললোনা। আমি আর কিছু বলার সাহস জুগাতে পারলাম না!

রাত তখন কুয়াশায় হারিয়ে যাচ্ছে। আকাশের তারারা মিলে যাচ্ছে। আমি তখনো নানা অসস্থিভরা মুগ্ধতায় তারপানেই চেয়ে আছি। কাঁদতে কাঁদতে মেয়েটি ঘুমিয়ে পড়লো। বসে বসে কতক্ষণ ঘুমাবে? আমি তার মাথাটা সিটে লাগিয়ে দিতেই ও আমার হাত চেপে ধরলো। তার চোখের কোল থেকে গড়িয়ে পড়া উষ্ণ পানির স্পর্শ পড়ে আমার হাতে। আলতো আদরের ইচ্ছে জাগছিলো মনে। কিন্তু পারিনি। অমন সদ্য কৈশোরে পা পড়া মেয়েটার মুখে আমি আদরের স্পর্শ মাখতে পারিনি। বড্ড বেশি দোটানায় ভুগছিলাম যে। হঠাৎই সে আমার হাত ছেড়ে দেয়। ঘুমকাতুরে মুখটা দখল করে নেয় আমার নরম কোল!””

রিপ্তি মন্ত্রমুগ্ধের মতো অনুভবের মুখের বুলি শুনে যাচ্ছে। এ কেমন কাব্য? না কাব্য নয়,হয়তো উপন্যাস! সে যাইহোক। রিপ্তির ভালো লাগছে। মিঠা মধুর মতো যার স্বাদ। এই মুহুর্তে সে মৌচাকে ডুবে আছে। পুরো মধু না খেলে যে তৃপ্তি মিটবেনা। রিপ্তি ছোট্টকরে বিভোরধ্বনি ছাড়লো,,

“” তারপর?””
“” তারপর! তার স্পর্শেই আমার চোখে রাজ্যের ঘুম নামলো। মন তো চাইছিলো আরেকটু দেখি,জেগে থেকে আরেকটু তার ছোঁয়া অনুভব করি! কিন্তু ঐ যে ঘুম? আমার সব শেষ করে দিলো। যখন আমার ঘুম ভাঙলো তখন আমি নরসিংদীর হাটুভাঙা স্টেশনে। আমার কোল খালি,ট্রেণের খালি কামরা হুট করেই ভরে গেলো। এতো মানুষের ভিড়ে তাকে এতো খুজলাম কিন্তু ভাঙা কপাল তাকে খুজেই পেলো না!””

রিপ্তি কিছুটা অবিশ্বাসভঙ্গি নিয়ে বললো,,

“” এক ঘুমে সব শেষ? আর খুজে পেলেননা? হাটুভাঙা রেলস্টেশন তো খুব বড় নয়। তেমন একটা জনমানবের ভিড়ও থাকেনা। তাও পেলেননা? আপনি হয় তো খুজেননি।””

অনুভব সিট ছেড়ে কিছুটা সোজা হয়ে বসলো। রিপ্তি অনেকটায় তার দিকে ঝুকে আছে। নিজেদের মধ্যে দুরত্ব কমিয়ে নিয়ে রহস্যভঙ্গিতে বললো,,

“” সে হয় তো ঐ স্টপেজে নামেইনি!””
“” আপনি কি করে জানলেন? আপনি তো তখন ঘুমুচ্ছিলেন।””
“” হুম,সে তো ঘুমায়নি। সে বলেছে!””
“” সে কখন বললো? আপনি মিথ্যে বলছেন কেন?””
“” তুমি কি করে জানলে আমি মিথ্যে বলছি?””

রিপ্তি বেশ আত্মবিশ্বাস নিয়ে অনুভবের কথার উত্তর দিবে তার আগেই ওর ফোন বেজে উঠলো। দুজনেরই কল্পনার ঘোর কেটে গিয়েছে। রিপ্তির সরাসরি চোখ আটকে আছে অনুভবের ফোনের দিকে। যেখানে ছোট্ট করে বউ লেখাটা ভেসে আছে। রিপ্তির দৃষ্টি অনুসরণ করে অনুভবের চোখও পড়লো নিজের ফোনে। রিংটোনের সাথে ভাইব্রেট অন থাকায় ফোনটা সমানে কেঁপে উঠছে। ফোনের স্ক্রিনে নজর পড়তেই কপাল কুঁচকে গেলো। সামান্য বিস্ময় নিয়ে রিপ্তির দিকে এক পলক তাকিয়ে আবার ফোনেই পড়েছে। অনুভব ফোনে হাত দিতেই রিপ্তি সরে এলো। গাড়ীর দরজা খুলে বাড়ীর দিকে হাঁটা ধরেছে। অনুভব তখনো ফোন হাতে নিয়েই বসে আছে!

বাসার ছোট গেট পেরিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতেই পরিবানু হাঁকিয়ে উঠলেন,,,

“” ঐ ছেরি,তোর ওড়না কই? ওড়না ছাড়া সারা পাড়া ঘুইরা বেড়াস? ওড়না কি খাইয়া ফালাইছস!””

রিপ্তির ত্যাড়া উত্তর,,

“” ওড়না জাহান্নামে!””
“” ওড়না ক্যান জাহান্নামে যাইবো? জাহান্নামে তো তুই যাবি। যা এহনি ওড়না পইড়া আয়!””
“” পারবো না!””

~~~

দিন পেরিয়ে রাতের চাদর গায়ে পড়েছে প্রকৃতি। রিপ্তি তখনো ছাদে। কেমন জানি এক ভালো লাগেনা রোগ পেয়েছে তার। কারণ ছাড়াই মেজাজ চটে আছে। খেতে ইচ্ছে করছে না একদম। আকাঁশ দেখতে ভালো লাগছে। আকাশের তারা গুনতে ইচ্ছে করছে। আজ সে তারা গুনে গুনে রাত শেষ করবে। ঘুৃমাবে না একটুও। ঘুম পেলে তো ঘুমাবে?? ভাবীকে অনেক কষ্টে বিদায় করেছে। ভাবী তার খুব পছন্দ হয়েছে। কিন্তু মাঝে মাঝে এমন কিছু সময় আসে যখন পছন্দের জিনিস বিরক্ত লাগে আর অপছন্দের জিনিস আনন্দ দেয়। এই মুহুর্তে তার উল্টা সময়ই চলছে,বাবা,ভাই,ভাবী,দাদীকে তার বিরক্ত লাগছে। তবে অনুভবের উপস্থিতি কামনা করছে।

এলোমেলো তারার ভিড়ে
অগোছালো মনের নীড়ে
তোমার সুবাস উড়ে
প্রিয়াঙ্গিনী,
কবে পাবো তোমায়
আপন করে???(রোকসানা)

অনুভবের কন্ঠস্বরে রিপ্তি ঝড়ের গতিতে পিছুঘুরে। সে তো পেছনে নেই। তার পাশেই দাড়িয়ে। পকেটে হাত,আকাশে মুখ! অনুভবও কি তারা গুনছে? তারও কি ঘুম আসছেনা? তার মনও কি চাইছে? রাতের তারা গুনে ভোর দেখার ইচ্ছে??

রিপ্তি উতলামনে অনুভবের কাধে হাত রাখলো। মনের ব্যাকুলতা থামাতে কিছু বলতে ইচ্ছে করছে কিন্তু কি বলবে? তারমাঝেই বাবার ডাক পড়লো। অনিচ্ছা সত্ত্বেও রিপ্তি ছুটন লাগালো বাবার ডাকের সাড়া দিতে। তাকে যে এখনি ফিরতে হবে। তার অনেক কিছু বলার আছে। এই লাল ব্যাঙ তার অপেক্ষায় থাকবে তো?? রিপ্তি সিড়ির ধাপ ফেলে বাবার কাছে আসতেই মনে পড়লো,সে তো অনুভব কে অপেক্ষা করতে বলেনি,তাহলে উনি কেন অপেক্ষা করবেন??

~~~

বাবার আদেশ উপদেশ ফেলে রিপ্তি যখন ছাদের দিকে ছুটছে, ঠিক তখনি অনুভবের ফোন বাজার শব্দ পেলো। তবে কি উনি নিচে নেমে এসেছেন? না আসারই বা কি আছে? আমি তো বলিনি আমার অপেক্ষায় থাকতে। কারো ইচ্ছে প্রকাশ না পেয়ে কেউ কেন ইচ্ছে পূরণ করবে?? রিপ্তি নিজেই নিজের মনকে শান্তনা দিয়ে উত্তরের দিকে ছুটলো। দ্রুতবেগে ছুটতে ছুটতে চট করে কক্ষের দুয়ার খুলে রিপ্তি হতাশ। রুম তো ফাঁকা তাহলে মোবাইলের শব্দ পেলাম যে? তবে কি আজকাল আমার কান ভুল শুনছে? রিপ্তি পথঘুরে আবার ছাদের দিকে পা বাড়িয়েছে তখনি পরিচিত মোবাইলের সুর। ঘাড় বাকিয়ে পেছন ঘুরলো সে। ঐ তো বিছানার উপর ফোন রাখা। তারমানে সে ভুল শুনেনি। কিন্তু ফোনের মালিক কই?? তবে কি উনি ফোন রেখেই ছাদে গেলেন?? যদি কোনো গুরুত্বপূর্ণ কল হয়?? রিপ্তি পায়ে পায়ে ফোনের কাছে এগিয়ে এলো। ফোন হাতে নিতেই চোখ চড়কগাছ! তৃণা?? এতোরাতে লাল ব্যাঙের ফোনে তৃণার কল কেন? রিপ্তি ভাবনা ফেলে রিসিভ করার আগেই কেটে গেলো। সাথে সাথে পরপর কয়েকটি মেসেজ প্রবেশ করছে,,,

*ami ready.
*tmar kothamoto sob guchiye niyechi
*amader basar samne dariye achi. Tmi kothay?
*amar khub voi korche,Ripti jodi jene jay??

আরো কিছু মেসেজ দেখা বাকি রয়ে গেলো।মোবাইলটি শব্দ করে আবার বেজে উঠেছে। সেভ নাম্বারের জায়গায় তৃণা নয়,লিনা ভাসছে!

রিপ্তির সব ভাবনারা কেমন এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। দুপুরে তো আরেকটি নাম্বার থেকেও কল এসেছিলো। যেখানে কোনো নাম উল্লেখও ছিলো না। তাহলে কি উনি বিবাহিত? ঐটা যদি বউ হয়,লিনা কে? আর তৃণা? ওকে নিয়ে কোথায় যাওয়ার প্ল্যান করছে?? রিপ্তি আর কিছু ভাবতে পারছেনা। সারাশরীর রাগে কাঁপছে। ফোন আরেকবার কাঁপুনি দিয়ে উঠতেই হাতের মুঠো শক্ত হয়ে আসলো। প্রচন্ড চিৎকারসহিত মেঝেতে আছাড় মেরেছে।

“” আহ!””

ব্যথাতুর কন্ঠ পেয়ে রিপ্তি সামনে চোখ মেলে তাকালো। অনুভব দাড়িয়ে আছে। ডানহাতে বুকের বা-পাশটা বুলাচ্ছে। তবে কি ভুল করে ফোনটা উনার বুকে গিয়ে লেগেছে?? রিপ্তি দৌড়ে এসে অনুভবের বুকে হাত রাখতে গিয়ে থমকে গেলো। মুখে ফুটে উঠছে ঘৃণার প্রতিচ্ছবি!

রিপ্তিকে অমন থমকে যেতে দেখে অনুভব নিজেই ওর বাড়িয়ে রাখা হাতটা বুকে চেপে ধরলো। বা হাতে রিপ্তির কোমড় পেচিয়ে নিজের দিকে টেনে এনে বললো,,

“” তোমাকে দেখে তো মনে হয়না তুমি শক্তিরানী! আমার ফোনের উপর তোমার এতো কিসের রাগ বলো তো!””

রিপ্তি অনুভবের বাধন থেকে ছুটার প্রয়াসে বললো,,

“” ছাড়ুন আমাকে!””
“” আবার পালাবে?””

রিপ্তির কঠিনসুর,,,

“” আমি ছাড়তে বলেছি!””

অনুভব রিপ্তিকে ছাড়ার বদলে আরেকটু নিজের দিকে টেনে নিলো। এবার দু-হাতে কোমড় পেচিয়ে নিয়ে নিচুস্বরে বললো,,

“” অধিরানীর অধিকার না ফলালে নয়??””

অনুভবের প্রশ্নের আগামাথা কিছুই বুঝেনি রিপ্তি। তবে তার মনে হয়েছে এটা ছিলো পৃথিবীর সবচেয়ে কুৎসিত প্রশ্ন। যার উত্তরে কোনো শব্দব্যয় নয়,হাতের বলব্যয় করতে হবে। রিপ্তিও আর সময়ের অপেক্ষা করলো না। শরীরের সর্বস্ব শক্তি নিয়ে অনুভবের গালে চড় মেরে বসলো,,

“” আপনি একটা খারাপ মানুষ।পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ নোংরা মানুষ! আপনি এখনি আমাদের বাড়ী ছেড়ে চলে যাবেন!””

চলবে

#ভালোবাসায়_ভেজা_সন্ধ্যে
#রোকসানা_রাহমান

পর্ব (১৩)

রাতের খাবার শেষ করে বিছানায় শরীর এলিয়ে দিলেন কবির সাহেব। ঘুমুতে যাওয়ার আগে বইয়ে মুখ গুজা উনার তরুন বয়সের অভ্যাস। কিন্তু আজ বইয়ে মন বসাতে পারছেননা। বয়সের ভারটা কি খুব বেশি হয়ে গিয়েছে?? আজকাল শরীরটা একদম মনের সাথে তাল মেলাতে চায়না। একটু থেকে বেশি কিছু করতে গেলেই হাত-পায়ে কাঁপুনি ধরে। দুর্বলতায় ভরপুর শরীরটা দিনে দিনে আলসেমিতে রূপ নিচ্ছে। কবির সাহেব চোখের চশমাটা খুলতে গিয়েও খুললেননা। খোলা দরজার আবছা ছায়াটাকে উদ্দেশ্য করে বললেন,,

“” কিছু বলবে,বউমা? আমার মনে হচ্ছে তুমি এই নিয়ে চারবার আমার দুয়ারে পাক দিচ্ছো!””

বাবার ডাক অমান্য করে পালিয়ে যাওয়ার সাহস নেই মিন্মির। গুটিগুটি পায়ে ভেতরে ঢুকে মাথা নিচু করে দাড়ালো। শাড়ীর আঁচলটা আরেকবার ঘোমটায় রেখে বললো,,

“” আপনার কিছু লাগবে,বাবা?””

কবির সাহেব মন্থরগতিতে উঠে বসলেন। ইশারায় মিন্মিকেও বসতে বললেন। ঠোঁটে মৃদু হাঁসি নিয়ে বললেন,,

“” যা বলতে চাচ্ছো তা বলে ফেলো। আমি নিশ্চিত,তুমি কিছু জানার ইচ্ছেতে এসেছো।””

মিন্মি মাথা তুলে বাবার দিকে তাকালো। ছোট্ট চাহনি একেঁ সাথে সাথে মাথা নামিয়ে ফেললো। বেশ কিছুক্ষণ ইতস্ততায় ভুগে নিচু্স্বরে বললো,,

“” আমি রিপ্তির ব্যাপারে সবটা জানতে চাই,বাবা। আপনি আমায় অনেককিছু বলেছেন। কিন্তু আমার মনে হচ্ছে আপনার সেই অনেককিছুর মাঝেও কিছুই নেই। আমার চোখে রিপ্তির এমনকিছু পড়েছে যা আমার সব চিন্তাভাবনাকে ঝাপসা করে দিচ্ছে। আবছা কল্পনায় ভুলভাল ভেবে বসছি।””

কবির সাহেব ছেলের বউয়ের দিকে তাকালেন। ঠোঁটের মৃদুহাসিটা মিলিয়ে গেছে। মুখে ভর করছে গাম্ভীর্য। তিনি চুপ করে রইলেন। মিন্মিও চুপ। তবে সে অপেক্ষায় আছে কিছু শোনার!

কবির সাহেব কিছু সময় নিরব থেকে রুমের নিরবতা ভাঙলেন,,,

“” রিপ্তি জন্ম নেওয়ার চারঘন্টা পর ওর মা মারা যায়। রেনুর আকস্মিক মৃত্যুটায় আমি বড্ড বেশি ভেঙে পড়ি। রাসেলও খুব ছোট। সবে স্কুলে ভর্তি করিয়েছি। ও খুব কাঁদছিলো। কিছুতেই ওর কান্না থামাতে পারছিলাম না। শেষে রিপ্তিকে ওর কোলে দিয়ে বললাম,দেখ তোর কান্না দেখে তোর বোন কেমন মিটিমিটি হাঁসছে! রাসেল কান্না থামিয়ে বললো,,বাবা,আমার হাত কাঁপছে,বোন যদি পড়ে যায়? তুমিও আমার সাথে ধরো!

রাসেলের কথায় সেদিন আমিও হেঁসে উঠেছিলাম। আমাদের তিনজনের সংসার তিনজনেরই রয়ে গেলো। শুধু যোজন-বিয়োজনের ফলে হাঁসিকান্নার খেলা চললো। রাসেল আর আমি দুজনেই স্কুল যাওয়া বন্ধ করে দিলাম। দুজনেই রিপ্তিকে সামলাতে ব্যস্ত! এরমধ্যে কানাঘুষো অনেক দায়-উপদেশ চলছিলো আমার দ্বিতীয় বিয়ে নিয়ে। কিন্তু মা শব্দটির আগে সৎ শব্দটা ব্যবহার করতে আমার ঘোর আপত্তি। সেই আপত্তি বজায় রেখেই রিপ্তি আর রাসেলকে কোলেপিঠে মানুষ করতে লেগে গেলাম। রেনুর মা অনেকবার আরজি নিয়ে এসেছিলেন রিপ্তিকে নিয়ে যাওয়ার। কিন্তু রাসেলের মুখের দিকে তাকিয়ে উনাকে বারবার ফিরিয়ে দিতে হয়েছে। এভাবেই চলছিলো। রিপ্তি বসতে শিখলো,হাঁটতে শিখলো,কথা বলতে শিখলো। শিখনি চর্চা ঠিক রাখতে দিলাম কিন্ডার গার্টেনে ভর্তি করে। তখনি বাধলো বিপদ। আমার হাঁসিখুশি মেয়েটা স্কুল থেকে ফিরতো মন খারাপ নিয়ে। জিজ্ঞেস করলেই ঠোঁট উল্টিয়ে বলতো,আমার মা কোথায়,বাবা? আমার মা চাই। মায়ের হাত চাই,আমি আম্মুর আঙুল ধরে স্কুলে যাবো।

ছোট্ট রিপ্তিকে এ কথা,সে কথা দিয়ে ভুলিয়ে রাখার তুমুল চেষ্টা আমার আর রাসেলের। নিত্যনতুন খেলনা,নতুন নতুন জায়গায় ঘুরতে নেওয়ার কায়দাকেও ধরে ফেললো সে। দিন যত এগুচ্ছিলো ও তত জেদি হচ্ছিলো। আমার সব কথাতে সে অবাধ্য। ভুল ধরিয়ে দিতে গেলেই বলতো,আম্মু এনে দাও তাহলে আর ভুল করবোনা।

রিপ্তির জেদের মুখোমুখি হওয়া থেকে আমি নিজেকে দুরে রাখতে শুরু করলাম। রিপ্তিও আমাকে এড়িয়ে চলতে থাকলো। সময় যত গড়াচ্ছিলো আমাদের দুরত্ব তত বেড়ে যাচ্ছিলো। এরমাঝেই ও একদিন আমার রুমে আসলো। ওর বয়স তখন নয়। আমি পরীক্ষার খাতা দেখছিলাম। ওকে আমার রুমে দেখে আমি বেশ অবাক। খাতা দেখা বন্ধ করে ওর কাছে দাড়াতেই ও মুখ ফিরিয়ে নিলো। পরিষ্কার গলায় বললো,,যে বাসায় মা নেই,সেই বাসায় আমি থাকবো না। আমি নানির সাথে থাকবো!””

আমার এখনো মনে আছে,রিপ্তিকে নানীবাড়ী রেখে আসাতে রাসেল টানা নয়দিন জ্বরে কাতরিয়েছিলো। তবু্ও আমি ওকে ফিরিয়ে আনতে যায়নি। ঐ ছোট্ট মেয়েটার উপর আমার অভিমান হয়েছিলো,গাঢ় অভিমান। আর সেই অভিমান থেকেই প্রতিজ্ঞা করে বসি,ও যতদিননা আমাকে ডাকবে আমি ততদিন ওর কাছে যাবো না। আমার ঐ প্রতিজ্ঞা পুরো পাঁচ বছর পর্যন্ত অব্যাহত রইলো। না ও আমায় ডেকে পাঠালো,না আমি ও বাড়ীতে পা রাখলাম। ওর খরচপাতি,প্রয়োজন-অপ্রয়োজন সব খবরাখবরের দায়িত্ব রাসেলের কাঁধে দিয়ে আমি আমার শিক্ষকতায় ব্যস্ত। ব্যস্ততার মাঝে হঠাৎ হঠাৎ মন কেঁদে উঠতো আমার মা মরা মেয়েটার জন্য। মা যদি কোনো বাজারের পন্য হতো,তাহলে তারজন্য যতমূল্যই পরিশোধ করতে হতো আমি ততমূল্য দিয়েই কিনে আনতাম। মেয়ের মুখের তৃপ্তির হাঁসিটা আমার আর দেখা হলোনা।

পাঁচবছর বাদে রিপ্তি হুট করে হাজির। সেদিনও আমি পরীক্ষার খাতা দেখায় ব্যস্ত। চোখে চশমা ব্যবহার করি। চশমার ঝাপসা দুর করতে নরম কাপড়ের টুকরোটা দিয়ে কাঁচ মুচ্ছিলাম তখনি রিপ্তি খোলাগলায় বললো,,

“” আমার আম্মুর বেনারসী কোথায় রেখেছো? চাবিটা দাও।””
“” বেনারসী?””

মেয়ে আমার প্রশ্নে বিরক্ত হয়ে রুম ছেড়ে বেরিয়ে গেলো। কিছু সময় শেষে রেনুর মাকে নিয়ে হাজির হলো। আমাকে উদ্দেশ্য করে নানির দিকে মুখ করে বললো,,

“” নানি,বাবাকে বলো না,বেনারসীটা দিতে। আমি কখন পড়বো? আর কখন বিয়ে করবো? এতো দেরি করলে তো আমার বর চলে যাবে!””

আমি ভেবেছিলাম ওটা ওর ছেলেমানুষী ছিলো। আলমারীর চাবীটা ওর দিকে বাড়িয়ে দিলাম। ও নিজে আলমারী খুলে শাড়ী বের করে পড়লো। মাথায় বিশাল ঘোমটা টেনে আমার সামনে এসে দাড়ালো। আমি কিছু বুঝার আগেই পায়ে ধরে সালাম করে বললো,,

“” বাবা,দোয়া করে দাও তো!””

আমার দোয়া নিয়ে ও রুম ছেড়ে বেরিয়ে গেলো। সেদিন শুধু রুম না,আমার বাড়ী এমনকি গ্রাম ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলো । সারাদিন অপেক্ষা করেও যখন ওর কোনো দেখা পেলাম না। তখন রাতের অন্ধকারে পুরো গ্রাম তন্ন তন্ন করে খুজেছি ওকে। শুধু আমাদের গ্রাম নয়,আশেপাশের গ্রামগুলোতে খোঁজ লাগিয়েও ওকে পাওয়া যায়নি। রাসেল ভয়ভয় মুখ বানিয়ে বললো,বাবা,আমার বোন বেঁচে আছে তো?? আমি সঙ্গে সঙ্গে ওকে থাপ্পড় মেরেছিলাম। রাগ ঝেড়ে খুব বকেও ছিলাম। এমন পরিস্থিতিতে কেউ এমন কথা বলে??

বাপ ছেলে হতাশ আর নিরাশে যখন ডুবে যাচ্ছি ঠিক তখন পাশের বাড়ীর সাগরের বাবা দৌড়ে এলো। বেলানগর রেল স্টেশনে নাকি রিপ্তি ঘুমাচ্ছে। খবরটা পেয়েই আমি আর রাসেল ছুটলাম রেল স্টেশন। হুম,সাগরের বাবার তথ্য সঠিক ছিলো। আমরা যখন ওর কাছে পৌছুলাম ও তখনো ঘুমেই। আমি হাল্কা করে ডাকতেই রিপ্তির ঘুম ভেঙে যায়। ঘুমজড়ানো চোখে আমাকে জড়িয়ে ধরে বলেছিলো,,বাবা,এখন থেকে আমি তোমার সাথে থাকবো। তোমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাবো!

তারপর থেকে রিপ্তি আবার আমার কাছে থাকতে শুরু করলো। সেই একদিনের নিখোঁজ মেয়েটির সব পাল্টে গেলো। আমার চঞ্চল,অবাধ্য বদমেজাজী,জেদি মেয়েটা হঠাৎ করেই শান্ত হয়ে গেলো।

মিন্মি আর অপেক্ষা করতে পারলোনা। চটজলদি প্রশ্ন করে বললো,,

“” রিপ্তি,সেদিন বউ সেজে কোথায় গিয়েছিলো?””

কবির সাহেব বউমার দিকে তাকালেন। ছোট্ট নিঃশ্বাস ছেড়ে বললেন,,

“” আমি জানিনা।””

এমন একটা উত্তরের জন্য মিন্মি মোটেও প্রস্তুত ছিলোনা। বসা থেকে উঠে পড়লো। বাবার দিকে অবিশ্বাসী চাহনি একেঁ বললো,,

“” আপনি সত্যিই জানেননা?””
“”না। আমি ওর মুখ দেখে বুঝে গিয়েছিলাম ও আঘাত পেয়েছে,গভীর আঘাত। আর সেই আঘাতের কারণ উন্মোচন করতে গিয়ে যদি ও আবার আমার থেকে দুরে চলে যায়? তাই তখন আর জানতে চাওয়া হয়নি। তবে আমার ছোট্ট আশা ছিলো হয়তো রিপ্তি নিজে এসেই আমাকে বলবে। কিন্তু বলেনি। আর আমিও পুরোনো কথা ঘেটে ওর ক্ষতটাকে জাগিয়ে তুলতে চাইনি। তবে আশা ছাড়িনি,এখনো অপেক্ষায় আছি রিপ্তির সেই না বলা কথাটা শোনার। কি এমন ঘটেছিলো যে রিপ্তি এক রাতে এতোটা বদলে গেলো?? প্রশ্নটা আমাকে খুব জ্বালাতন করে,মাঝে মাঝে তো খুব ইচ্ছে হয় রিপ্তিকে জিজ্ঞেস করি! কিন্তু ওর মুখের দিকে চোখ পড়লে আর করা হয়না।””

কবির সাহেব নিজেও বসা থেকে উঠে দাড়ালেন। মিন্মির মাথায় হাত রেখে বললেন,,

“” একটা মেয়ের মনের ভেতর ঢুকার ক্ষমতা একটা মেয়েরই থাকে। আর সে যদি হয় মা রূপি তাহলে তো কথাই নাই। আমি নিশ্চিত,আজ যদি রিপ্তির মা বেঁচে থাকতো,তাহলে কিছুই অজানা থাকতো না। তুমি পারবে তো,আমার মেয়ের মনের গভীরে ঢুকতে??””

বাবার কথার উত্তরে মিন্মি মাথা নাড়লো। চোখ তার ভিজে উঠছে। চোখের পানি আড়াল করতে ঘোমটাটা আরেকবার টেনে নিয়ে দরজার দিকে পা বাড়ালো।

~~~

সকালে রিপ্তির ঘুম ভাঙলো তৃণার ডাকে।

“” অনুভব ভাইয়া কোথায়?””

তৃণাকে দেখেই রিপ্তির মিষ্টি সকাল বিরক্তে ছেয়ে গেলো। শোয়া থেকে উঠে পড়লো। ব্রাশে পেস্ট লাগাতে লাগাতে বললো,,

“” জানিনা।””
“” জানিসনা মানে?””
“” জানিনা মানে জানিনা।””
“”তোদের বাড়ী থেকে এমন নাদুস-নুদুস একটা ছেলে নাই হয়ে গেলো আর তুই বলছিস জানিসনা?””
“” তোর বয়ফ্রন্ডের খবর আমি জানতে যাবো কেন?””

তৃণা ভুল করে আকাশ থেকে মাটিতে পড়েছে এমন ভাব নিয়ে বললো,,

“” অনুভব ভাইয়া আমার বয়ফ্রেন্ড?””
“” না,ছেলেবন্ধু!””

তৃণা রিপ্তির ফ্যানামাখা ব্রাশটা কেড়ে নিয়ে বললো,,

“” নিজের বয়ফ্রেন্ডকে অন্যের ঘাড়ে ঝুলিয়ে দিতে তোর লজ্জা করছেনা?””

রিপ্তি ভ্রূ কুঁচকে বললো,,

“” ঐ লাল ব্যাঙ আমার বয়ফ্রেন্ড হতে যাবে কেন?””
“” প্রপোস করবে তোকে,আর বয়ফ্রেন্ড হবে অন্যকারো?””
“” প্রপোস? কিসের প্রপোস?””
“” অনুভব ভাইয়া কাল তোকে প্রপোস করেনি?””
“” না।””
“” তুই মিথ্যে বলছিস। তোরা দুজন কি প্ল্যান করেছিস বলতো? একজন তোকে সারপ্রাইজ দিবে বলে আমাকে সারারাত রাস্তায় দাড় করিয়ে রাখলো,আরেকজন মিথ্যার ঝুলি খুলে বসেছিস৷ নিজেরাই যদি তলে তলে মধুখাবি,আমাকে কেন মশার কামড় খাওয়ালি?””

তৃণার কথা রিপ্তির মাথায় ঢুকছেনা। তাহলে কি ও যা ভেবেছিলো তা ভুল? অনুভব আর তৃণার মধ্যে তেমন কোনো সম্পর্ক নেই?? রিপ্তি আর কথা প্যাচালোনা। সরাসরি প্রশ্ন করলো,,

“” তুই বলতে চাচ্ছিস লাল ব্যাঙ আমাকে ভালোবাসে? আর সেই ভালোবাসার কথা জানাতে একটা সারপ্রাইজ সাজাতে তোকে ব্যবহার করতে চেয়েছিলো?””
“” হুম। কিন্তু উনি তো কাল আসেনি। আমি এতোবার করে কল দিলাম,ধরলোইনা!””
“” তোকে কে বললো উনি আমায় ভালবাসে?””
“” উনি নিজে বলেছেন।””
“” মিথ্যা বলেছেন।””
“” মিথ্যে বলতে যাবে কেন?””
“” কারণ উনার তুই বাদেও আরো একটি প্রেগন্যান্ট গার্লফ্রেন্ড ও একটি বউ আছে! হতে পারে অধিক প্রেগন্যান্ট গার্লফ্রেন্ড আর অধিক বউ আছে। আমি তো শুধু একটির খোঁজ পেয়েছি!!

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here