ভালোবাসার টান part:61,62 EnD

ভালোবাসার টান
part:61,62 EnD
writer:Tanzidaa Jannat
61
ইফতি রুমে রাগে হনহন করে ঢুকলো,,,,,,

মিসকা তখন সুয়ে ছিলো,,,,ইফতিকে দেখে উঠে বসল,,,,,,,

ইফতিঃ মিসকার হাত ধরে টেনে ওর সামনে দাড়া করালো,,,,

মিসকা কিছুটা ভয় পেয়ে যায়,,,,

ইফতি মিসকার দুই বাহু শক্ত করে ধরে,,,,

ইফতিঃ আমার চোখের দিকে তাকাও,,,,

মিসকা ইফতির চোখের দিকে তাকায়,,,,কিন্তু ওর চোখে তাকাতে কেমন জানি ভয় লাগছে,,,রাগে লাল হয়ে আছে চোখ,,,

ইফতিঃ কি হয়েছে তোমার,,,,??( রাগান্বিত কন্ঠে)

মিসকা ঃ(কিছু বলছে না,,,)

ইফতিঃ আমি কিছু জিগ্যেস করছি,,, উত্তর দাও( জোরে ধমকে বললো)

মিসকাঃ ইফতির ধমকে কেদে ফেলে,,,,,

মিসকার কান্না দেখে ইফতি হাতটা আলগা করে ধরে,,,

মিসকা চলে যেতে নিলে ইফতি টান দিয়ে বুকের সাথে মিশিয়ে ফেলে,,,,

ইফতিঃ আমি তোমাকে টেক্সট করেছিলাম ছাদে যাওয়ার জন্য,,,,, আমার বিশ্বাস ছিলো তুমি আসবে,,,,কিন্তু তুমি তার মর্যাদাটা রাখলে না,,,,,

মিসকাঃ আমি বিশ্বাস ভাঙিনী,,,,,( বলে নিজেকে ছাড়িয়ে নেয়)

ইফতি মিসকার কথায় ভ্রু কুচকে ওর দিকে তাকায়,,,,

মিসকাঃ আমি গিয়েছিলাম ছাদে,,,,,কিন্তু সেখানের পরিস্থিতি দেখে মনে হল আমার সেখান থেকে চলে আসা উচিত,,,,,,

ইফতিঃ কিন্তু মিসকা সবসময় যা দূরে থেকে দেখে যা ভাববে তা হয় না,,,,,,

মিসকাঃ হবে হয়তো,,,,আমার ঘুম পাচ্ছে আমি একটু ঘুমতে চাই,,,,,,

বলেই মিসকা বিছানায় গিয়ে সুয়ে পরে,,,,,

ইফতিঃ বারান্দায় গিয়ে আকাশের দিকে মুখ করে দাড়িয়ে আছে,,,,,,কেন মিসকা এমন ভুল বুঝছে কেন,,,,,ওকেন বোঝেনা ওর এমন বিহেভ আমাকে কতোটা হার্ট করে,,,,,আমি তো ওকেই ভালোবাসি শুধু ওকে,,,,,,,,কিন্তু ও যদি আমাকে ভুল বুঝে দূরে সরিয়ে রাখে আমি সহ্য করতে পারবো না,,,,,,,
( ইফতি আজ যেন আকাশ,বাতাস,প্রকৃতির কাছে ওর মনের কথা বলছে,,,,,,)

মিসকাঃ ছড়ি ইফতি এইটুকু আমাকে করতেই হলো ,,,,, কারন কাল যে তোমার সাথে কি ঘটতে চলেছে তা তুমি নিজেও জানো না,,,,আমি জানি তুমি কষ্ট পাচ্ছ,,,,,পারলে আমায় ক্ষমা করো,,,,( মনে মনে)

ইফতি কিছুক্ষণ বারান্দায় দাড়িয়ে থেকে রুমে এসে পানি খেয়ে সুয়ে পরলো,,,সাথে সাথে যেন চোখে সারা রাজ্যের ঘুম চলে আসলো,,,,কিছুক্ষণের মধ্যে ঘুমিয়েও গেলো,,,,,,

মিসকার যখন মনে হলো ইফতি ঘুমিয়ে পড়েছে তখন ওর কাছে গিয়ে কপালে একটা চুমু একে দিল,,,,,,নতুন জীবনে তোমাকে স্বাগতম আমার বজ্জাত রাক্ষস টা,,,,,তারপর ওকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পরলো,,,,,

ইফতিঃ সকালে উঠে ইফতি চোখ খুলে দেখে ঘড়িতে ১১ টা বেজে গেছে,,,,,,

ইফতিঃ ওহ নো আজ তো ক্লাইন্ট আসার কথা কনফারেন্স আছে,,,,, তাড়াতাড়ি করে রেডি হয়ে বেরিয়ে পরলো,,,,

মিসেস নিলুফাঃ কি হলো ইফতি কিছু খেয়ে যা,,,,

ইফতিঃ না মম তাড়া আছে একটু,,,বাইরে খেয়ে নেব( ফোনে কথা বলতে বলতে চলে গেলো)

এদিকে তাড়াহুড়োয় বাসার কিছুই খেয়াল করলো না ইফতি,,,,,,

প্রায় সারা দিন কাজ করে ইফতি পুরো টায়ার্ড,,, আজ সারাটা দিন ইফতি কাজে বিজি ছিলো,,,,,২ টা প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করেছে,,,,, ইফতি ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো,,,,,৮. ২৪ বাজে,,

ইফতিঃ সিফাত এতো ফাস্ট চালাচ্ছিস কেন??

সিফাতঃ না আসলে ইফতি ভাইয়া তেমন কিছু না,,,, আপনি সারাদিন আজ যে পরিশ্রম করেছেন তাই ভাবলাম যত তাড়াতাড়ি যাবো ফ্রেস হয়ে রেস্ট নিতে পারবেন

ইফতিঃ ঠিক বলেছিস,,,,,,এতো বিজি ছিলাম বাসায় একটা ফোনও করা হয় নি,,,,,,,

কিছুক্ষণের মধ্যে বাসার সামনে এসে সিফাত গাড়ি থামালো,,,,

ইফতিঃ একি সিফাত পুরো বাসা এতো ঘুটঘুটে অন্ধকার কেন??

সিফাতঃ জানি না তো ( একটু ভয়ের সুরে)

ইফতির বুকটা কেমন জানি ধক করে উঠলো,,,,পুরো বাসা এমন নিস্তব্ধ হয়ে আছে কেন?? কিছু হয়েছে,,,,ভেবেই দৌড়ে দরজার সামনে গিয়ে কলিংবেল বাজাতে থাকলো,,,,,,

হঠাৎ দরজা খুলে গেলো,,,,,পুরো ঘর অন্ধকার,,,,,,ইফতি সামনে ভালো করে তাকাতেই দেখলো কেন্ডেল লাইট দিয়ে কিছু একটা লেখা সামনে একপা এগিয়ে গেলে লেখাটা স্পস্ট হয়,,,,,

,,,,,,,হ্যাপি বার্থ ডে ,,,,,,

ইফতিঃ বার্থডে?? কার??

এসব ভেবে আরো দু”কদম এগোয় সাথে সাথে সমস্ত লাইট জ্বলে ওঠে,,,,,,উপর থেকে ফুলের বৃষ্টি হচ্ছে মনে হচ্ছে,,,,,,,
সবাই এক সাথে ক্লাব দিয়ে ইফতিকে বার্থডে উইস করছে,,,,

ইফতি সমস্ত কিছু দেখে পুরাই থ,,,,,বাড়ির ডেকরেশন থেকে শুরু করে সবকিছু তার কাছে সবকিছু স্বপ্নের মতো লাগছে,,,,,,,,

হিয়াঃ বাবাই( জোরে বাবাই বলে ডাকার সাথে সাথে সবাই দুদিক ভাগ হয়ে যায়,,,,,,,,

ইফতি সামনে তাকিয়ে পুরাই টাস্কি খেয়ে যায়,,,,এ ইফতি কাদের দেখছে,,,,,সদ্য নেমে আসা কোনো অপ্সরী নাতো??

নেভি ব্লু আর সোনালি কালারের কম্বিনেশন লেহেঙ্গা পড়া চুলগুলো ছাড়া,,,,,সিথিতে টিকলি,,,,হাতে মুঠ ভর্তি কাচের চুড়ি,,,,,কানে বড় ঝুমকা সব মিলিয়ে অপ্সরীর মতো লাগছে,,,,,,হ্যা এরা আর কেউ নয় মিসকা আর হিয়া,,,,দুজন আজ হুবহু একরকম করে সেজেছে,,,,,ইফতি যেন চোখ ফিরাতেই পারে না,,,,,একটার পর একটা সার্প্রাইজ পাচ্ছে,,,,,,

ইফতি কি সপ্ন দেখছে,,,,,নাকি সত্যি নিজেই কনফিউজড,,,,

মিসকা আর হিয়া দুজনে ইফতির সামনে এসে দাড়ায়,,,,,ইফতি বোকার মতো তাকিয়ে ওদের দেখছে,,,,

মিসকাঃ মুচকি একটা হাসি দিয়ে,,,,,ইফতির পায়ে সালাম করলো,,,,

মিসকার স্পর্শে ইফতি বাস্তবে ফিরলো,,,,,তার মানে এসব কিছু সত্যি ঘটছে কোনো স্বপ্ন নয়,,,,

মিসকাঃ হ্যাপি বার্থ ডে,,,,বলে একটা মুচকি হাসি দিয়ে হাত বাড়িয়ে দিল,,,

ইফতিঃ হাসি মুখে মিসকার হাতে হাত রাখলো,,,,,,

মিসকা ইফতির হাত ধরে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে আর সবাই হাত তাকি দিচ্ছে,,,,,

মিসকা একটা প্যাকেট ধরিয়ে দিয়ে বললো চেঞ্জ করে আসতে,,,,ইফতি চোখের ইশারায় সম্মতি দিয়ে উপরে গিয়ে চেঞ্জ করে আসে,,,,,

ইফতি নিচে নামার সময় সবাই ইফতির দিকে হা করে তাকিয়ে আছে,,,,,,

মিসকাঃ উপরে তাকিয়ে দেখে ইফতি নামছে,,,,নেভী ব্লু কালারের পাঞ্জাবিতে ইফতিকে যা লাগছে বলে বুঝাতে পারবো না,,,,ফরসা গায়ের রং হাতে একটা ঘড়ি চুলগুলো হালকা স্পাইক করা হালকা খোচা খোচা দাড়ি মুখে হালকা স্মাইল নিয়ে নিচে নামছে,,,,,

মিসকাঃ তো পুরাই ক্রাশ ,,হায় আল্লাহ এই ছেলেকে আজ এত সুন্দর কেন লাগছে,,,,,,

ইফতিঃ নিচে নেমে মিসেস নিলুফা আর মুফতিউর রহমানকে সালাম করে,,,,,

মিসকার সামনে গিয়ে একটু মুচকি হেসে,,,,,

ইফতিঃ কি হলো এভাবে কি দেখছো?? মনে হচ্ছে তো আমার নজর লেগে যাবে,,,,

মিসকাঃ ইফতির কথায় লজ্জা পেয়ে নিচে তাকায়,,,

ইফতিঃ কিন্তু কেউকি জানে তাকে আজ অপ্সরীর মতো লাগছে,,,,,

মিসকাঃ ঠোট কামড়ে ধরে হাসছে,,,,

হিয়াঃ ওমা বাবাই তোমাকে তো সিনেমার হিরোদের মতো লাগছে,,,

ইফতিঃ হুম হিরোই তো তোমার মাম্মামের হিরো😂

মিসকা ইফতির দিকে তাকাতেই ইফতি মিসকাকে চোখ মারে,,,

হিয়াঃ হুম বুঝেছি এখন চলো কেক কাটবে,,,,,,

হিয়া ইফতিকে টেনে নিয়ে কেকের সামনে দাড়া করায়,,,,,

ইফতি হিয়ার হাত ধরে কেকটা কাছে সবাই হাতে তালি দেয়,,,,ইফতি প্রথমে হিয়াকে, মমকে,বাবাকে খাইয়ে দেয়,,,,

ইফতিঃ আরেক পিস নিয়ে মিসকার মুখের সামনে ধরে,,,,

মিসকাঃ হা করতেই নাকে কেকের ক্রিম লাগিয়ে দেয়,,,,

ইফতি একটু মুচকি হেসে ওকে খাইয়ে দেয়,,,,,,,

মিসকাঃ এর শোধ তুলবো দাড়াও না,,,,,(মনে মনে)

মিসকা ইফতির হাতে সুন্দর রেপিং পেপারে মুড়ানো একটা বক্স দেয়,,,,

ইফতিঃ কি এটা??

মিসকাঃ তোমার গিফ্ট,,,,, তবে এখন খুলবে না,,, ছাদে গিয়ে খুলবে,,,,

ইফতিঃ মনে হচ্ছে স্পেশাল কিছু

মিসকাঃ স্পেশাল নয় অনেক স্পেশাল 😊বলেই চলে গেল

এর পর খাওয়াদাওয়ার পর্ব শেষ করে একে সব গেস্ট চলে গেলো,,,,,,,

হিয়া ঘুমিয়ে যাওয়ায় মিসেস নিলুফা নিয়ে যায়,,,,,,সবকিছু এখন নিরব,,,,,,

#রাতঃঃ১১.৩৯

ইফতি চারো দিকে খুজে দেখে মিসকা কোনো জায়গায় নেই,,,,,ইফতি হাতের বক্সটার দিকে তাকাতেই মনে পড়ে ছাদের কথা,,,,,,

ইফতি ছাদে চল যায়,,,,,,ছাদে গিয়ে ইফতি আরো অবাক হয় পুরো ছাদ নানা রকম লাইটিং দিয়ে সাজানো,,,,,,,দোলনাটা রজনী গন্ধা আর গোলাপ দিয়ে সাজানো,,,,,পুরো ফ্লোরে আলপোনা দিয়ে আকাঁ

ইফতিঃ একবার হেসে মিসকাকে খোঁজে,,,, এর মধ্যেই মোবাইলে টুং করে একটা মেসেজ আসে,,,,

ইফতিঃ মেসেজটা চেক করে দেখে মিসকার মেসেজ,,,

আমাকে না খুজে বক্স টা খুলে দেখ,,,,,

ইফতি খুব আগ্রহের সাথে বক্স টা খুলে দেখে একটা সুন্দর ডায়রী,,,,,আর একটা ব্রেসলাইট,,,

ইফতি হাসিমুখে ডায়রীটা খুলে,,,,,

ডায়রীতে লেখা

শুভ জন্মদিন❤

আজ তোমার জন্মদিন খুব সুন্দর একটা মূহুর্ত,,,,,, পুরোনো সব কিছু ভুলে নতুন জীবনে পা বাড়াও এই শুভ কামনা,,,,,কিছু কথা বলতে চাই প্লিজ একটু মোন দিয়ে পড়বে,,,,,

ভাবছো এটা মিসকার ডায়রী?? একদমই ভুল আমি নীলা,,,,, এখন হয়তো এই নামটাকেও তুমি ঘৃনা করো,,,,যাই হোক আসল কথা বলি,,,,,

আমি তোমাকে কষ্ট দিয়ে কত ভুল করেছি তা আমাকে এখন পদে পদে রিয়েলাইজ করতে হচ্ছে,,, তবে আজ থেকে হয়তো আমার কষ্টটা কমে যাবে হয়তো কমবে না,,,,,,,,, ,,আমি তোমাকে ছেড়ে লাইফটাকে ইনজয় করতে চলে গেছিলাম। কিন্তু যে ভুল তা আমার লাইফটা আমায় বুঝিয়ে দিয়েছে জীবনটা কতো কষ্টদায়ক,যন্ত্রণা দায়ক,হতে পারে,,,,,,আমি প্রথম ২ বছর ভালোই ছিলাম আড্ডা, পার্টি বন্ধুের নিয়ে মেতে থাকা। কিন্তু যখন আমি আস্তে রিয়েলাইজ করলাম এভাবে ভালো থাকা যায় না। জীবনে বাচতে হলে সবাইকে নিয়ে ভালো থাকতে হয় তখন তোমায় খুব মিস করেছি,,,কিন্তু তুমি তো জানো আমি কতটা জেদী,,,,আমি তখন ভাবলাম তাহলে তুমি কেনো আমাকে নিতে আসলে না,,,, তুমি তো পারতে আমার কাছে চলে আসতে,,,,,যেহেতু আমি কষ্টে থাকবো তোমারও কষ্ট পেতে হবে,,,,এই ভেবে দেশে আর ফিরি নি,,,, আরো কেটে গেলো দেড় বছর,,,,,এই দেড়টা বছর আমার যে কতটা অপমানের সাথে যন্ত্রনার সাথে কাটাতে হয়েছে তোমাকে বোঝাতে পারবো না,,,,একটা নষ্ট মেয় হয়ে গেলাম,,,,, কিন্তু আমি প্রলয়ের সাথে যোগাযোগ রাখতাম,,,,ও আমাকে তোমার আর মিসকার ছবি পাঠায় আর বলে তুমি সুখে আছ,,,,আমি সেদিন রাগে বস- বর্তি হয়ে বাসার সবকিছু ভেঙে ফেলি আর সিদ্ধান্ত নেই আমি তোমার লাইফে ফিরে আসবো,,,,ঠিক দুদিন পর টিকেট ওকে করে আমি বাংলাদেশে ফিরি,,,,,,কিন্তু দেখ ভাগ্যের পরীহাস আমার বাবা আত্মীয় স্বজন আমাকে তাড়িয়ে দিলেন,,,,আমি নাকি তার মেয়ে নই,,,,এটা যে কত কষ্টের তা আমি সেদিন বুঝতে পেরেছি,,,,,,আমি একটা হোটেল বুক করে থাকতে লাগলাম আর তোমাদের খোজ খবর নিতাম,,,,একদিন দেখি তোমরা আমার ফ্লাটের পাশের রেস্টুরেন্ট এসেছ তখন আমি মিসকার সাথে ইচ্ছা করে ধাক্কা খাই আর ও ভয় পেয়ে যায় আমি দ্রুত সেখান থেকে চলে আসি ও আমার পিছু দৌড়ে এসেছিল কিন্তু আমি আড়ালে লুকিয়ে যাই,,,,আমার একটাই লক্ষ ছিল আমি তোমাদের শান্তিতে থাকতে দিবো না,,,,,,আমি পরে তোমার অফিসে যাই এবং তোমাকে কনভেন্স করার চেষ্টা করি কিন্তু তুমি আমায় তাড়িয়ে দিয়েছিলে আমি সেদিন বুঝতে পেরেছিলাম তুমি আমায় ঘৃনা করো,,,ভালোবাস না,,,আমি সেদিন প্রতিজ্ঞা করেছিলাম তোমাদের মধ্যে অবিশ্বাস সৃষ্টি করবো আমি সুখি না হলে তোমাদেরও হতে দিব না,,,,, যখন আমি বের হই তখন মিসকার সাথে দেখা হয়,,,,,ওর রিয়াকশন দেখে আমি খুশি হই কারন আমি এটাই চেয়েছিলাম,,,,তারপর একদিন তোমাদের পিছু নেই এবং তোমাদের পুরো সুখের মূহুর্ত দেখে হিংসায় জ্বলে পুরে মরছিলাম ঠিক তখনই ডিসাইড করেছিলাম দূরে থেকে কিছু সম্ভব না তোমাদের সংস্পর্শে থাকতে হবে ঠিক তখনই ইচ্ছা করে তোমাদের গাড়ির সামনে পড়ি,,,,,আর আমার প্লানটাও কাজে লাগে,,,,,কিন্তু আমি কখনও বুঝতে পারি নি তোমাদের বাসায় আসার পর আমি পুরো বদলে যাবো,,,,তোমাদের দুজনের প্রতি বিশ্বাস আমার সকল প্লান নষ্ট করে দেয়,,,,, মিসকাকে দেখে আমি বুঝেছি কিভাবে সবাইকে ভালো রেখে ভালো থাকা যায়,কীভাবে ভালোবাসা অর্জন করতে হয়,,,,,হিয়াকে আমি যখন কোলে নেই আমি তখন প্রথম মাতৃত্ব বুঝতে পারি,,,,,, আর মিসকার আচরন আমাকে পাল্টাতে বাধ্য করে বদলে যেতে,,,,,ইফতি আমি রিয়েলাইজ করেছি আমি জীবনে কত বড় ভুল করেছি,,,,,আমি কত কষ্ট দিয়েছি, কত পাপ করেছি তাই এর প্রাশ্চিত্য করতে চেয়েছি,,,,,কাল যখন তুমি মিসকাকে মেসেজ করো তখন ও আমার সাথে গল্প করছিলো,,,,আমি ওকে বলেছিলাম আজ শেষ বারের মতো রাতটা আমাকে দিতে তোমার সাথে কথা বলার জন্য ইফতি আমি চেয়েছি তোমার মনে যত কষ্ট আছে তুমি বলে হালকা হও,,, পিছুটান থেকে পুরোপুরি বেড়িয়ে আস এজন্য কাল যা যা বলেছি করেছি সবকিছু ছিলো সাজানো, নাটক আমি তোমায় প্রথমে রাগাই পরে ইচ্ছা করে ডায়রী আর এ্যালবামটা তোমার সামনে ধরি যাতে তুমি নিজ হাতে সব চিহ্নগুলো মুছে ফেল তোমার জীবন থেকে আর মোন থেকেও,,,,,

ইফতি আমি জীবনে পাপ করেছি বলেই জীবন আমাকে চরম শিক্ষা দিয়েছে,,,,আমার আত্নীয় স্বজন সবাই আমাকে দূর করে দিয়েছে,,,,,,তোমার ভালোবাসা হারালাম,,,,নিজের মেয়ের সাথেও যে অন্যায় করেছি তার কারনে মাতৃত্বের মর্যাদা হারালাম,সবার কাছে আমি এখন ঘৃনার পাত্রী,,,এভাবে বেঁচে থাকা কতটা কঠিন শুধু আমিই বুঝতে পারছি,,,,,,,, আমি আর কখনও তোমার সামনে আসবো না,,, তুমি আমার কাছে কোনোদিন কিচ্ছু চাও নি শুধু ভালোবেসেই গেছ আমিই হতভাগী যেকিনা তা বুঝেও এরিয়ে গেছি,,,,কিন্তু কাল তুমি আমার কাছের থেকে চেয়েছ আমি যাতে আমার মুখ তেমায় না দেখাই এটা তো আমি পূরন করতেই পারি বলো,,,,,,,তাই আজ চলে গেলাম,,,,,,ভালো থেকো তোমরা,,,,,তবে আমায় ভুলে যেও না,,,, আমায় একটু বন্ধু ভেবে মনে রেখ তাতেই আমি ধন্য হবো,,,আমার মতো এমন হাজারো মেয়ে আছে যারা সুখ নামের মরিচিকার পিছনে দৌড়ায় তাদের জন্য একটা কথাই বলবো ভালোবাসাকে চিনতে শেখ বুঝতে শেখ আর মূল্য দাও,,,,, যাতে এমন না হয় তুমি একদিন রিয়েলাইজ করতে পারলে কিন্তু সবকিছু তখন হাতের বাইরে চলে গেছে,,,,

আরেকটা কথা তোমার কালকের প্লানটা মাটি করে দিয়েছি তাই নিজ হাতে পুরো ছাদটাকে সাজিয়েছি,,,,,,, জানিনা কেমন হয়েছে তবুওভালোবাসা ছিল এতে,,,,,যদিও তোমাদের ভালোবাসার কাছে আমার ভালোবাসা খুব সামান্য,,,,, তুমি খুব ভাগ্যবান ইফতি মিসকার মতো একটা অর্ধাঙ্গিনী পেয়েছ,,,,,কখনও কস্ট দিও না ওকে,,,,,, আজ কিন্তু মিস করো না,,, মিসকাকে তোমার মনের কথা বলে পুরোপুরি এক হয়ে যাও,,,,,,,,
,,,,আর হ্যা তোমাদের ছেলে হলে নীসাত নাম রেখ আমি আর মিসকা মিলে এই নাম রেখেছি,,,,,(আমাদের তিনজনের অক্ষর দিয়ে)

পরের সারপ্রাইজ টা মিসকা দিবে,,,,, আমার এবার যাবার পালা আমি আসি,,,,, সুখে থেকো,,,,,,,তোমাদের #ভালোবাসার__টান অটুট থাকুক সারাজীবন,,,,,

ইফতি ডায়রিটা পড়ে নিজের চোখের পানি মুছে ফেললো,,,,,

হাতের ব্রেসলাইট টার দিকে তাকিয়ে আছে,,,,,নীলার শেষ স্মৃতি,,, সত্যি প্রথম ভালোবাসা পুরোপুরি কেউ ভুলতে পারে না,,,,,

#চলবে,,,,,,,

#ভালোবাসার__টান,,,,,,,😍👸😍

#অন্তিম__পর্ব

#writer::::::::Tanzidaa Jannat

পেছন থেকে কারো জড়িয়ে ধরায় ইফতি ফিরে তাকালো,,,,,,

ইফতিঃ কি হলো মিস মসা?? এভাবে জড়িয়ে ধরলে যে,,,,,,এতো দিন তো ঠিক করে আমার সাথে কথাই বলো নি😑

মিসকাঃ ইফতির কলার ঠিক করে ওর চোখ মুছে দেয়,,,,,,,

হুম কথা বললে কি এই সারপ্রাইজ টা পেতে মি. রাক্ষস (বলেই হাসতে থাকে)

ইফতিঃ তোমার হাসি পাচ্ছে তুমি জানো এই দু’দিন আমার মনের উপর দিয়ে কি বয়ে গেছে,,,,,( গাল ফুলিয়ে একটু অভিমানির সুরে).

মিসকাঃ ওহহো,,,,, আই এম ছড়ি বাবা,,,,,,,আমার দিকে তাকাও

ইফতিঃ তুমি আমায় একটুও বিশ্বাস করো না মিসকা??

মিসকাঃ কে বলেছে?? আমি তো তোমায় অবিশ্বাস করিনি সবিই আমার আর নীলা আপুর প্লান ছিলো( একটু হেসে)

ইফতিঃ স্রিয়াসলি??

মিসকাঃ ইয়েস মাই হাসবেন্ড,,,,,, আসলে সেদিন তোমায় আমি নীলা আপুর দেখে খুব কস্ট পাই তারপর সাদে চলে আসি,,,,,নীলা আপু এসে আমার সাথে অনেকক্ষণ গল্প করে,,,,,তখনই তোমার জন্মদিনের কথা ওঠে,,,,,আপু তখনই এসবকিছু শিখিয়ে দিয়েছিলো,,,,,,,সারাদিন তোমার সাথে কি কি হয়েছিলো তা সবই নীলা আপুর কাছে বলতাম আর দুজনে মিলে হাসতাম,,,,,কি বুদ্ধুই না তোমায় বানিয়েছি দুজন মিলে,,,,জানো এই দুদিন আপু আর আমি ভালো ফ্রেন্ডও হয়েছি,,,,,আজ আমাকে দেখছো আপু নিজ হাতে আমাকে সাজিয়েছে এই সবকিছু আপু করেছে,,,,

ইফতিঃ হুম আমাকে ছড়ি বলার সুযোগও দিলো না

মিসকাঃ ইফতির মুখটা হাতের মধ্যে আবদ্ধ করে বলে,,,,,আপু যাওয়ার সময় বলে গেছে তোমায় কষ্ট না পেতে,,,,,, আর আমাকে প্রমিস করিয়ে নিয়েছে তোমাকে কষ্ট না দিতে আর কষ্টে থাকলেও সব কষ্ট ভাগাভাগি করে নিয়ে তোমার কষ্ট কমিয়ে দিতে,,,,,,এইটুকুতো আমি রাখতেই পারি বলো,,,,,বলেই ইফতির নাকে জোরে চিপ দিয়ে বুঝলেন মিসটার রাক্ষস

ইফতিঃ আউ,,,,,,এভাবে কেউ দেয়,,,,

মিসকাঃ হাহা আমি দেই,,,,,

ইফতিঃ দেখাচ্ছি তোমায় মজা দাড়াও,,,,

মিসকাঃ এই না বলেই দোড় নিয়ে দেয়,,,,,

ইফতি মিসকার হাত ধরে নিজের কাছে নিয়ে আসে,,,,,,দুহাত দিয়ে শক্ত করে ধরে

মিসকাঃ ছাড়ো প্লিজ,,,,,,

ইফতিঃ ওকে বলেই ছেড়ে দেয়,,,,,

মিসকা ছাদের রেলিং ধরে দাড়ায়,,,,,, আজকে চাদটা পুরো গোলাকার আকৃতি ধারন করেছে,,,,, মাঝে মাঝে ছোট ছোট দু’একটা তারা উকি দিচ্ছে,,,,,

মিসকাঃ আপু তোমায় সত্যিই খুব ভালো বাসতো,,,,,দেখনা সেই ভালোবাসার টানেই তো এখানে এসেছিল,,,,,আর ভালোবাসার টানেই আমাদের মাঝ থেকে চলপ গেলো,,,,,চিরদিনের জন্য,,,,,,

ইফতি মিসকাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে,,,,,,,,।

ইফতিঃহুম সে আমার পাস্ট ছিলো,,,,,,,আর আমি আমার পাস্টকে ভুলে গেছি,,,,,, ঐদিকে আর ফিরে যেতে চাইনি আর চাইও না,,,,,,
( মিসকার ঘাড় থেকে চুল গোলো সরিয়ে ইফতির থুতনি ওর ঘারে রাখে,,,,,,,)

আমি আমার বর্তমানটাকে আকড়ে ধরে বাঁচতে চাই,,,,,,,যতটা সুন্দর তার থেকে আরো সুন্দর করে গড়ে তুলতে চাই,,,,,,,শত বাধার পরেও তোমার হাত ধরে এগিয়ে যেতে চাই,,,,,,,(মিসকা)

মিসকাঃ হুম

ইফতিঃ কিছু বলছো না যে,,,,,,

মিসকাঃ শুনছি তো,,,,

ইফতি মিসকার চুলে নিজের নাক ডুবায়,,,,,, মিসকার কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিসিয়ে বলে আই লাভ ইউ,,,,,

মিসকাঃ এই কথাটা শোনার সাথে সাথে চোখ থেকে পানি ঝরে পরে,,,, এই একটা কথা শোনার জন্য কতোদিনের অপেক্ষায় ছিলো,,,,,,,

ইফতিঃ এই মিসকা কিছু বলছ না কেনো??

মিসকাঃ কি বলবো?? এই যে বললাম তার উত্তর দিবে না??

মিসকাঃ কেনো কিছু বলেছ,,,,,

ইফতিঃ এই মাত্র ই তো বললাম

মিসকাঃ আমি তো কিছু শুনতে পাইনি

ইফতি মিসকার দিকে তাকিয়ে ওকে ছেড়ে দেয়,,,,,,

মিসকাঃ একি ছেড়ে দিলো কেন?? তাহলে কি আমার উপর রাগ করলো ( মনে মনে ভেবে পিছনে তাকায়)

পিছনে তাকিয়ে দেখে ইফতি সেখানে নেই,,,,এবার মিসকার খুব কান্না পাচ্ছে,,,,, ইফতি হয়তো রাগ করেছে,,,,কিসব করলাম এমন মজা না করলেও পারতাম,,,,, ও হয়তো খুব কস্ট পেয়েছে,,,,,,,মিসকা হাটতে হাটতে দোলনার পাশে গিয়ে দাড়ায়,,,,,,,

পিছনে কারো উপস্থিতি পেয়ে মিসকা ঘুরে তাকায়,,,,,তাকিয়ে দেখে ইফতি একগুচ্ছ গোলাপ হাতে হাটু গিরে বসে আছে,,,,,,,

মিসকা ইফতিকে দেখতে পেয়ে যেন নিজের প্রান ফিরে পেলো,,,,,,ওকে দেখে কান্না করে দিলো,,,,,তবে এ কান্না দুঃখের নয় সুখের,,,,,,

ইফতিঃ ফুলগুলো মিসকার দিক বাড়িয়ে দিয়ে,,,,,,আজ কোনো বাধা নয়,,,, নয় কোনো দ্বীধা সবকিছু পিছনে ফেলে এসে দাড়িয়েছি তোমার সামনে,,,,,,তোমায় নিজের মনের কথা জানাতে,,,,,যা একটু একটু করে জমিয়েছি খুব যত্নে এই মনের গহিনে,,,,,,

তোমার ভালোবাসায় নিজেকে দিতে এসেছি উজার করে দিতে,,,,,,খুব ভালোবাসি তোমায় মিসকা,,,,,,, I LOVE YOU MISHKA,,,,জোরে চিৎকার করে বলে,,,,,

মিসকা হাসিমুখে ফুলগুলো ইফতির হাত থেকে নেয়,,,,,,,

মিসকাঃ ভালোবাসি,,,, আমিও খুব ভালোবাসি আমার রাগি রাক্ষস বরটাকে,,,,,খুব ভালোবাসি,,,,,,

ইফতি মিসকার কথা শুনে উঠে দাড়ায়,,,,,,,

মিসকা ইফতিকে জড়িয়ে ধরে,,,,,,,ইফতিও মিসকাকে জড়িয়ে ধরে,,,,,,

মিসকা কেদেই চলেছে,,,,,

ইফতিঃ কি হলো এভাবে কাঁদছো কেন?

মিসকাঃ এটা কান্না নয় এটা তো সুখের অশ্রু

ইফতি মিসকার চোখের পানি মুছে দেয়,,,,

মিসকাঃ চোখ বন্ধ করো

ইফতিঃ কেনো??

মিসকাঃ এতো কিছু বলতে পারবো না,,,,,চোখ বন্ধ করতে বলেছি চোখ বন্ধ করো,,,,,

ইফতি চোখ বন্ধ করলে মিসকা একটা কালো কাপড় এনে ইফতির চোখ বেধে দেয়,,,,,,

ইফতিঃ কি করছো বলোতো??

মিসকাঃ আমার উপর বিশ্বাস আছে তো??

ইফতিঃ অবশ্য ই আছে,,,,,,

মিসকাঃ তাহলে হাতটা ধরো,,,

ইফতি মিসকার হাতে হাত রাখে,,,,,মিসকা এসে এক জায়গায় এসে থামে

মিসকাঃ এবার চোখ খোলো,,,

ইফতিঃ চোখের থেকে কাপড়টা সরিয়ে দেখে মিসকা একটা টেবিলের সামনে দাড়ানো,,,,,একটা কেক হাতে দাড়িয়ে আছে,,,,,,,কেক হাতে মিসকাকে কি সুন্দর লাগছে চুলগুলো বাতাসে উড়ছে,,,,,,ঠোঁটের কোনে হাসি,,,,,অপুর্ব লাগছে দেখতে,,,,

মিসকাঃ কেকটা রেখে ইফতির সামনে এসে দাড়ায়,,,,,,,

ইফতি শুধু মিসকার দিকে এক নজরে তাকিয়ে আছ,,,,,,

মিসকা তুরি বাজিয়ে,,,, কি হলো,,,

ইফতিঃ তোমায় দেখছি,,,,,আজ এতো সুন্দর লাগছে তোমাকে,,,,,

মিসকাঃহয়েছে হয়েছে এখন চলো কেক কাটবে,,,,হাত ধরে নিয়ে যেতে চাইলে ইফতি ওখানে দাড়িয়েই থাকে

মিসকাঃ কি হলো দাড়িয়ে আছো যে ??

ইফতিঃ আমি যে বললাম বউকে খুব সুন্দর লাগছে তা তোমার বিশ্বাস হলো না,,,,

মিসকা লজ্জামাখা হাসি দিয়ে বলে,,,,,,আমার বরটাকে কি কোনো দিক দিয়ে কম দেখছে,,,,,, যেমন সুদর্শন, তেমনি খুব ভালো মনের একটা মানুষ,,,,,,,, তার চোখের চাহনি,তার রাগ, তার হাসি, তার চোখের পানি, তার কেয়ারিং সব সবকিছুর প্রেমে পড়েছি,,,,,,,এ এক অদ্ভুত টান ভালোবাসার টান,,,,,,,,

ইফতিঃ এতো প্রেমে যখন হাবুডুবু খাচ্ছিলা তখন বলনি কেন যে তুমি আমায় ভালোবাস

মিসকাঃ বা রে আমার লজ্জা লাগে না,,,,, বলেই হাত দিয়ে মুখ ঢেকে রাখে,,,,

ইফতি মিসকাকে জড়িয়ে ধরে হুম আমার বউয়ের লজ্জাটা একটু বেশিই,,,,,,ভাবছি আজ সব লজ্জা ভেঙে দিবো,,,,,,,

মিসকা ইফতির বুকে আস্তে করে দুইটা কিল দিয়ে,,,,,, যাহ কিসব ধরনের কথা হচ্ছে,,,,,

মিসকাঃ এবার চলো কেকটা কাটতে হবে তো,,,,,

মিসকা ইফতির হাত ধরে কেকটা কাটে,,,,,

ইফতি কেকের এক পিস নিয়ে মিসকাকে খাইয়ে দেয়,,,,,

মিসকা ইফতিকে খাইয়ে দিতে গিয়ে দুষ্টমি বুদ্ধি মাথায় চাপে,,,,,( কি মি. তখন কেক লাগিয়ে ছিলা এবার দেখ কেমন লাগে /মনে মনে/)

ইফতি হা করতেই মিসকা কেক দিয়ে ইফতির পুরো মুখ মাখিয়ে দেয়,,,,,,

ইফতিঃ কি করলে এটা??

মিসকাঃ বেশ হয়েছে বলেই হাসতে থাকে,,,,,,

ইফতিঃ দাড়াও দেখাচ্ছি বলেই মিসকাকে ধরার জন্য হাত বাড়ালো,,,,,

ইফতির হাত বাড়ানোর সাথে সাথে মিসকা দৌড় দেয়,,,,,,,একসময় ইফতি মিসকাকে পিছন থেকে হাত ধরে একটান দেয়,,,, মিসকা তাল সামলাতে না পেরে ইফতির বুকে গিয়ে পরে,,,,,

ইফতি মিসকার দুহাত পিছনে চেপে ধরে,,,,,

ইফতিঃ এবার কোথায় যাবে??

মিসকাঃ এই না,,, ভালো হচ্ছে না কিন্তু বলে দিলাম,,,,,

ইফতি মিসকার কথা কানে না দিয়ে নিজের গাল ইফতির গালে মিলিয়ে দেয়,,,,,,ইফতি নিজের গালের কেক মিসকার পুরো মুখে মেখে দেয়,,,,,,

ইফতির প্রতিটা স্পর্শে মিসকা এক অনুভূতি অনুভব করতে থাকে,,,,,,,

ইফতিঃ কি কেমন দিলাম😂,,,,,বলেই ওর দিকে তাকাতে দেখে মিসকার চোখ বন্ধ নিঃশ্বাস জোড়ে জোড়ে নিচ্ছে,,,,ঠোঁট কাঁপছে,,,,,,

ইফতি একটু হেসে,,,,,পকেট থেকে রুমাল বের করে মিসকার পুরো মুখ পরিস্কার করে দেয়,,,,,

মিসকা লজ্জায় যে লাল হয়ে গেছে তা ইফতি ভালো করেই বুঝতে পারছে,,,,

ইফতিঃ এই নাও এবার আমার মুখটা পরিস্কার করে দাও,,,,

মিসকা লজ্জা মাখা মুখে রুমালটা নিয়ে পরিস্কার করতে থাকে ইফতি মিসকার দিকে যে এক ধ্যায়ানে তাকিয়ে আছে তা মিসকা বুঝতে পারছে,,,,,,,,

ইফতিঃ মিসকা আজ জন্ম দিনে তো আমাকে তুমি কোনো গিফট দিলে না,,,,,

মিসকাঃ কি চাই,,,,,

ইফতিঃ তোমাকে আমার করে পেতে চাই,,,,,

মিসকাঃ লজ্জায় চলে যেতে নিলে,,,,,ইফতি ধরে ফেলে,,,

ইফতিঃ এতো বার বার দূরে যেতে কেনো চাও?? আমি কি ভুল কিছু চেয়েছি,,,,,,

মিসকাঃ আমিতো সবটা জুরে তোমার ইফতি,,,,,,বলেই ইফতির কপালে একটা চুমু দিলো,,,,

ইফতিঃ মিসকার কপাল থেকে স্লাইড করে ঠোঁটের কাছে এসে থেমে যায়,,,,,,,মিসকার চোখের দিকে তাকিয়ে ওকে কোলে তুলে নেয়,,,,,,,

রুমের দরজার সামনে গিয়েতো পুরাই টাস্কি,,,,,

ইফতিঃ মিসকাকে দাড় করিয়ে বললো একি রুমটা এতো সুন্দর করে কে সাজিয়েছে??এতো পুরো বাসর ঘরের মতো

মিসকাঃ ইফতির দিক তাকিয়ে বলে,,,, এটা আমার পক্ষ থেকে তোমার গিফট,,,,,, পছন্দ হয়েছে??

ইফতিঃ আবার জিগায়,,,,,কি হলো আমার থেকেতো এক ধাপ এগিয়ে মহারানী😂

মিসকাঃ হুম,,,,,, আজ আমাদের বাসর,,,,,,জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু,,,,,যেখানে শুধু আমরা থাকবো,,,,,,,আমাদের ভালোবাসা থাকবে,,,,,,,

ইফতিঃ মিসকার কপালে ভালোবাসার পরশ একে দিয়ে ওকে কোলে তুলে নেয়,,,,,মিসকা ইফতির গলা জড়িয়ে ধরে,,,,,,, ইফতি মিসকাকে নিয়ে পা বাড়ায় ওদের নতুন জীবনের নতুন অধ্যায়ের গল্প রচনা করতে,,,,,

#১বছর

ইফতির চোখ আজ বার বার ভিজে উঠছে,,,,,,বারবার মনের মধ্যে ভয় বাসা বাধছে,,,,,,,মিসকার কিছু হবে নাতো,,,,

মিসেস নিলুফা ঃ কিচ্ছু হবে না সব ঠিক হয়ে যাবে,,,

হিয়া কান্না করছে মুফতিউর রহমান ঘুরে ঘুরে এটাসেটা দেখাচ্ছে,,,,,,,,,,

ডাক্তারঃ কনগ্রাচুলেইশন আপনাদের একটা ছেলে বাবু হয়েছে,,,,,( ওপারেশন থিয়েটার থেকে বের হয়ে,,,,,,,,)

নার্স এসে বাবুটাকে মিসেস নিলুফার কোলে দেয়,,,,,

মিসেস নিলুফা ঃ আলহামদুলিল্লাহ ☺

হিয়াঃ দাদুভাই আমার ভাই হয়েছে,,,,😊দৌড়ে বাবুর কাছে এসে ছোট ছোট হাত পা নেরে দেখছে,,,,

ইফতিঃ মি মিসকা কেমন আছে( কাঁপা গলায়)

ডাক্তারঃ জ্বী মা,বাচ্চা দুজনেই ভালো আছে

ইফতিঃ আমি কি ভিতরে যেতে পারবো??

ডাক্তার ঃ হ্যা,,,,,,,,,,, তবে বেশি কথা বলতে দিয়েন না

ইফতিঃ থ্যাংকস ডক্টর,,,,, ইফতি ভিতরে গিয়ে দেখে মিসকা চোখ বন্ধ করে আছে,,,,,,,,,,,, ইফতি পাশে বসতেই মিসকা চোখ খোলে,,,,

ইফতিঃ কেমন কাগছে??

মিসকাঃ অনেক ভালো,,,,,,,,,বাবুকে কোলে নিয়েছ??

ইফতিঃ না তোমার হাতে থেকে কোলে নিবো বলে,,,
এখনও নেই নি

মিসেস নিলুফা আর মুফতিউর রহমান একসাথে কেবিনে আসে,,,,,

মিসেস নিলুফা ঃ মিসকার পাশে বাবুকে সুয়ে দিয়ে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে চলে গেলো,,,,,

মুফতিউর রহমানঃ বাহ কি সুন্দর লাগছে তোর পাসে,,,,,,,

মিসকাঃ বসেন বাবা

মুফতিউর রহমানঃ না না এখন তো সবাইকে জানাতে হবে মিষ্টি কিনতে হবে তোরা থাক আমি অদিকটা সামলাই,,,,বলে চলে গেলো,,

মিসকাঃমিসকার এক হাতে এখনও স্লাইন চলছে তাই আরেক হাত দিয়ে বাবুকে ইফতির কোলে এগিয়ে দিলে ইফতি কোলে নেয়,,,,,,,

মিসকাঃ কার মতো হয়েছে বলতো??

ইফতিঃ বাবুকে কোলে নিয়ে এক নতুন অনুভুতি হচ্ছে ইফতির,,,,,ছোট ছোট হাত,পা,নাক,চোখ কি সুন্দর লাগছে,,,,,, নাক চোখ আমার মতো বাকিটা তোমার😂

মিসকাঃ হাহা,,,,,,,,

হিয়াঃ এসে মিসকার পাশে বসে

মিসকাঃ কেদেছ কেনো হিয়া??আমি একদম ঠিকাছি

হিয়াঃ মিসকার গলা জড়িয়ে ধরে,,,,,,,থ্যাংকস মাম্মাম আমাকে একটা ভাই উপহার দেওয়ার জন্য

মিসকাঃ হিয়ার কপালে চুমু দিয়ে হাতদিয়ে চুল ঠিক করে,,,,,তুমি খুশি তো??

হিয়াঃঅনেক😊

ইফতিঃ আমি ভাবছি আমি এই তিন পিচ্চিকে সামলাবো কিভাবে😂

মিসকাঃ কি বললা??

ইফতিঃ ঠিকই তো বলেছি,,,এই কয়েক মাস যা জ্বালিয়েছ দুজন এখন আরেকজন যোগ হলো,,,,😦

মিসকাঃ বেশ করেছি,,,,,,

ইফতিঃ বাবুকে মিসকার পাশে সুয়ে দিয়ে,,,, হুম এবার একটা স্মাইল দাও,তো দেখি,,,,,

ওদের চারজনের সুখের মুহুর্ত ক্যামেরায় বন্দি করে নিল,,,,,,

আসলে ভালোবাসার টানটা ঠিক এরকমই,,,,,সবাইকে এক টানে বেধে রাখে,,,,,,,ভালোবাসা থাক চিরস্থায়ী,,,,, গল্প যতটা সুন্দর বাস্তব ততটাই কঠিন,,,, তবুও ভালোবাসার টানে সবার জীবন হয়ে উঠুক সুখীময়,,,,,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here