ভালোবাসার টান part:57,58

ভালোবাসার টান
part:57,58
writer:Tanzidaa Jannat
57

ইফতি মিসকার চিৎকারে সামনের দিকে তাকিয়ে গাড়ি থামায়,,,,,,

গাড়ি থামার সাথে সাথে মিসকা ইফতি দুজনেই গাড়িয় থেকে বের হয়,,,,দৌড়ে সামনে গিয়ে দেখে একটা মেয়ে উপুড় হয়ে পরে আছে,,,

মিসকা ইফতি দুজনেই দুজনের দিকে তাকায়,,,মিসকা বেস ভয় পেয়ে আছে,,,,,,

মিসকাঃ কাঁপা কাঁপা হাতে মেয়ে টার মুখ ঘুড়াতেই মিসকা একদম স্তব্ধ হয়ে যায়,,,,,,নীলা!!

মিসকা ইফতির দিকে তাকায়,,,,ইফতিও এমন কিছু হবে আশা করে নি,,,,

ইফতি তাড়াতাড়ি মিসকার পাশে বসে,,,,,মিসকা হাটু গিরে বসা মিসকার কোলে নীলার মাথা রাখা,,,,,

ইফতিঃ কি হয়েছে?? বলেই নীলার মাথায় হাত দেয়,,,,,এতো জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে,,,,,

মিসকাঃ মনে হচ্ছে মাথায় চোট পেয়েছে রক্ত পরছে,,,,

ইফতিঃ কিন্তু এতো রাতে তাও এখানে কিভাবে এলো,,,,,,

মিসকাঃ ইফতি তোমার কি মাথা ঠিক আছে বলতো,,,,এখন এসব বলার সময়?? দেখছ মেয়ে টা জ্ঞান হারিয়ে পরে আছে আরো কোথায় চোট পেয়েছে তাও বলা যাচ্ছে না,,,,,,

ইফতিঃ মিসকাকে কিছু বলতে নিয়েও থেমে যায়,,

মিসকাঃ তাড়াতাড়ি ওকে কোলে তুলে গাড়িতে উঠাও হাসপাতালে নিতে হবে,,,,

ইফতিঃ কোলে নিবো মানে,,,

মিসকাঃ আজব কথা তো,,,আমি পারলে কি তোমায় বলাতাম

মিসকাঃ কিন্তু মিস,,,

ইফতিঃ একদম চুপ কর এখন যদি নীলা না হয়ে আমি বা অন্য কোনো মেয়ে হতো কি করতে,,,,??,এভাবে ফেলে যেতে??

ইফতিঃ কিছু না বলে মিসকার দিকে একবার তাকায়,,,,,নীলাকে কোলে তুলে নেয়,,,

মিসকাঃ গিয়ে সামনের দরজা খুলে দেয়,,,,

ইফতিঃ সামনের দরজা কেন খুললে পিছনেরটা খুলে দাও ওখানে ওকে বসিয়ে দেই,,,

মিসকাঃ তুমি ওকে এখানে বসাও,,,,কথা না বলে তাড়াতাড়ি গাড়ি স্টার্ট দাও হাসপাতালে যেতে হবে,,,,,,

ইফতিঃ নীলাকে বসিয়ে দেয়,,,,,,

মিসকা পিছনে গিয়ে বসে,,,

ইফতিঃ গাড়ি স্টার্ট দেয় কিছুক্ষনের মধ্যে একটা হসপিটালে পৌছায়,,,,

ইফতি নিলাকে কোলে তুলে একটা কেবিনে নেয়,,,,

ডাক্তার ইফতিকে জিগ্যেস করে নীলা ওর কি হয়,,,,ইফতি কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না,,,,

মিসকাঃ আমার বোন হয়,,,,

ডাক্তারঃ ও ঠিকাছে,,,,,,এভাবে চোট পেয়েছে কিভাবে,,,

মিসকা ইফতির দিকে একবার তাকায় তারপর বলে

মিসকাঃ আসলে আমরা ঘুরতে বের হয়েছিলাম,,,,আপু রাস্তা ক্রস করছিল তখন একটা গাড়িতে ধাক্কা খায় আর এমন অবস্থা,,,,,

ডক্টর ঃ আচ্ছা ঠিকাছে আপনারা বসুন আমি দেখছি,,,,,

মিসকা কেবিনের বাইরে বসে ওয়েট করছে ইফতি হিয়াকে কোলে করে নিয়ে এসে মিসকার পাসে বসে,,,,,,

কিছুক্ষণের মধ্যে ডাক্তার এসে বলে তেমন কিছু হয় নি মাথায় একটু বেশি চোট পেয়েছে এজন্য সেন্স লেস হয়ে গেছে,,,,, ডান হাতে একটু মচকে গেছে,,,,ঔষধ দিয়ে দিয়েছি,,,,, কিছুক্ষণের মধ্যে জ্ঞান ফিরে আসবে,,,,,,

মিসকাঃ এতো ক্ষনে দম ফিরে পেল,,,,,নীলার কিছু একটা হয়ে গেলে ইফতি মিসকা দুজনেই দায়ী থাকতো,,,,,

কিন্তু নীলা এতো রাতে ঐ জায়গায় কী করছিলো,,??

ইফতি মিসকার হাতের উপর হাত রাখলে মিসকা একটু চমকে উঠে ইফতির দিকে তাকায়,,,,

ইফতিঃ ছড়ি মিসকা,,,,

মিসকাঃ কেনো,??

ইফতিঃ আসলে তখন আমি,,,,,

মিসকাঃ ছড়ি তো আমার বলা উচিত,,,,, তখন এতো ভয় পেয়েছিলাম যে তোমায় কতকিছু বলেছি,,,,

ইফতিঃ তুমি তো ভুল কিছু বলনি,,,,,

নার্স এসে বলে নীলার জ্ঞান ফিরেছে,,,,,,

মিসকাঃইফতিকে বসতে বলে কেবিনের ভিতরে যায়,,,,

মিসকা নীলার কাছে গিয়ে জিগ্যেস করে এখন কেমন লাগছে,,,??

নীলা মিসকার কথা শুনে ওর দিকে তাকায়,,,,, তারপর উঠতে নেয়,,,,

মিসকা উঠে বসতে সাহায্য করে,,,,

নিলাঃ কে তুমি??

মিসকাঃ মিসেস ইফতি( একটু হেসে) কিন্তু তুমি আমায় মিসকা বলতে পারো,,,,,

মিসকার মুখে মিসেস ইফতি নামটা শুনে নিলার মুখ কালো হয়ে যায়,,,,,,

মিসকাঃ বললে না যে এখন কেমন লাগছে??

নীলাঃ ভালো( অন্য দিকে মুখ করে,,,)

নার্স এসে মিসকার হাতে একটা প্রেসক্রিপশন দেয়,,,আর বলে ঔষধ গুলো নিয়মিত খাওয়াতে,,,,

মিসকাঃ থ্যাংকস,,,

নীলাঃ তুমি এখানে কি করছ??

মিসকাঃ সেটাই তো রহস্য বলো,,,,,তুমি একসিডেন্ট করলে আর দেখ এতো গাড়ি থাকতে আমাদের গাড়িতেই,,,,বিষয়টা একটু রহস্যময় না,,,,,

মিসকার কথায় নীলা রাগান্বিত হয়ে মিসকার দিকে তাকায়,,,

মিসকাঃ একি তুমি রাগ করলে কেন??

নীলাঃ আমার এখন কথা বলতে ভালো লাগছে না প্রচন্ড মাথা ব্যথা করছে,,,,(,মাথা ধরে বসে আছে)

মিসকাঃ চলো বাসায় যাবে,,,,

নিলাঃ কাদের বাসায়?? ( মাথা উঠিয়ে)

মিসকাঃ আমাদের বাসায়,,,,তুমি আমাদের গাড়িতে এক্সিডেন্ট করেছ,,,,,এখন আমাদের দায়িত্ব তোমাকে পুরোপুরি সুস্থ করে তোমার স্থান টা বুঝিয়ে দেওয়া আইমিন তোমার বাসায় পৌছে দেওয়া ,,,,কি যাবে তো??

নীলাঃ চুপ করে কিছুক্ষন কিছু একটা ভাবলো,,,,,তারপর মাথা নেরে সম্মতি দেয়,,,,,

মিসকাঃ নীলাকে ধরে বাইরে বের হয়,,,,,

ইফতিঃ দুজনকে দেখে উঠে দাড়ায়,,,,,

মিসকাঃ হিয়াকে আমার কোলে দাও,,,,তুমি নীলা আপুকে নিয়ে আস,,,,,

ইফতির অনিচ্ছা সত্বেও নীলাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে,,,

নীলাঃ আমি জানি ইফতি আমার জায়গাটা এখনও আমারই আছে,,,,,তুমি এখনও আমায় ভালোবাস,,

ইফতিঃ ভালোবাসা,,,,,হাহা হাসালেন মিস নীলা,,,

নীলাঃ তুমি এভাবে কেন কথা বলছ??

ইফতিঃ একজন অপরিচিত মানুষের সাথে এভাবেই কথা বলতে হয়,,,,,ছোট বেলায় আমার বাবা মা এই শিক্ষাই দিয়েছেন,,,,

নীলাঃ প্লিজ ইফতি এমন করো না,,,,আমি জানি তুমি মুখে স্বীকার করছো না তবে এখনও তুমি আমায় আগের মতই ভালোবাস তা না হলে আমাকে এতো কেয়ার এখনও করতে না,,,,

ইফতিঃ দেখুন বার বার ভালোবাসার কথা বলবেন না,,,,আর আপনার জায়গায় অন্য কেউ হলে আমি এটাই করতাম,,,,,ঐযে মেয়েটাকে দেখছেন ও হচ্ছে আমার স্ত্রী মিসকা,,,,ওর কোনো কথাই আমি ফেলতে পারি না,,,,,

নীলা কিছু বলতে গেলে ইফতি থামিয়ে দেয়,,,,,,

ইফতিঃ গাড়িতে উঠুন,,,,,

নীলা কিছু না বলে চুপচাপ গাড়িতে উঠে পরে,,,,

মিসকাঃ পিছনে হিয়াকে নিয়ে বসে আছে,,,,

ইফতিঃ গাড়ি ড্রাইভ করছে,,

নীলাঃ মাথা হেলান দিয়ে বসে আছে,,,,

ইফতিঃ কোথায় যাবো??

মিসকাঃ কোথায় যাবে মানে,,,,বাসায় চলো

ইফতিঃ বাসায়?? ও কেন,,,,,,

ইফতি কি বলবে মিসকা বুঝতে পেরে মিসকা ইফতিকে থামিয়ে দিল

মিসকাঃ কথা না বলে সাবধানে গাড়ি চালাও আর বাসায় চলো,,,

ইফতিঃ পিছনে ঘুরে মিসকার দিকে তাকিয়ে রাগে গাড়ি চালাচ্ছে

মিসকাঃ বজ্জাত রাক্ষস টাকে কতোদিন পর আবার রাগতে দেখলাম,,,,,,উফফ আমার রাক্ষসটা রাগলেও কিউট লাগে,,,,ছড়ি ইফতি নীলাকে আমাদের সাথে নেওয়ার একটাই কারন ওকে ওর জায়গাটা বুঝাতে হবে,,,,আর ওকে নেওয়ার উদ্দেশ্য টা তুমি ধীরে ধীরে বুঝতে পারবে,,,,,,,( মনে মনে)

ইফতিঃ গাড়ি বাসার সামনে এসে থামায়,,,,মিসকার কোল থেকে হিয়াকে নিয়ে চলে যায়,,,,

মিসকাঃ ইফতির মুখ দেখে বুঝতে পারে এখন কথা বলা ঠিক হবে না বেশ রেগে আছে তাই কোনো কথা বলে না,,,,

নীলাকে গাড়ি থেকে বের করে ওকে ধরে বাসার সামনে যায়,,,

কলিং বেল বাজাতেই রুমা এসে দরজা খুলে দেয়,,,,,

ইফতি হিয়াকে নিয়ে উপরে চলে যায়,,,,

রুমা মিসকার সাথে নীলাকে দেখে অবাক হয়ে যায়,,,,,

নীলাঃ রুমা তুই কেমন আছিস??

রুমাঃ কোনো কথা না বলে চলে যেতে নেয়,,,

মিসকাঃ রুমা কেউ কিছু জিগ্যেস করলে উত্তর দিতে হয়

রুমাঃ ছড়ি বউ মনি,,,,

মিসকাঃ আর কখনও এমন করবে না,,,, এখন নীলা আপুকে নিয়ে গেস্ট রুমে নিয়ে যাও বলে মিসকা উপরে উঠে গেলো,,,

রুমাঃ ঠিকাছে,,,,আসেন আপা আপনারে,,,,

নীলাঃ থাম আমাকে শেখাতে হবে না কোথায় কি( রাগি হয়ে) আমি নিজেই যেতে পারবো বলেই নীলা চলে গেলো,,,,,,

রুমে ঢুকে নীলা দরজা বন্ধ করে পায়চারী করছে,,,,,

ঐমেয়েটা সবাইকে দেখছি মায়াজালে আটকে রেখেছে,,,,, কি আছে ঐমেয়ের মধ্যে,,,,আজকে ওদের চোখে চোখে রেখেছিলাম ভাগ্যিস প্লানটা কাজে খেটেছে,,,,আমি ওদের জীবনে পা রাখতেই ওদের মধ্যে মান অভিমান শুরু হয়ে গেছে,,,,,আর কয়েকদিন থাকলে কি হবে তা ওরা নিজেরাও জানে না,,, উফফ মাথর চোট টা মনে হচ্ছে বেশি পেয়েছি,,,,,প্রচন্ড ব্যথা করছে,,,,,,, রাত অনেক হলো একটু ঘুমিয়ে নেই,,,,সকালে তো আবার আমাকে একগাদা জেরার মধ্যে পরতে হবে,,,,

মিসকা রুমে ঢুকে দেখে ইফতি ওয়াশরুম থেকে ফ্রেস হয়ে বের হয়েছে,,,,মিসকাকে দেখে রাগে বারান্দায় চলে যায়,,,,,

মিসকাঃ কাপড় নিয়ে ফ্রেশ হতে চলে যায়,,,,,

ফ্রেশ হয়ে দেখে ইফতি এখনও বারান্দায়,,,,, মিসকা পিছন থেকে ইফতিকে জড়িয়ে ধরে,,,

ইফতিঃ মিসকার হাত ছুটায় আর মিসকা বার বার হাত দিয়ে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে,,,,,

ইফতিঃ মিসকা হাত ছুটিয়ে মিসকার দিকে ফিরে,,,,, কি হচ্ছে টা কি ( একটু রাগি গলায়)

মিসকাঃ ইফতির এমন ধমকে ওর দিকে তাকিয়ে থাকে আর দুচোখ বেয়ে পানি পরে,,,,,

ইফতিঃ মিসকার চোখে পানি দেখে মাথা নিচু করে চলে যেতে নেয়,,,,

মিসকাঃ ইফতি হাত ধরে রাখে,,,,

ইফতি মিসকার দিকে তাকাতেই মিসকা ইফতিকে জড়িয়ে ধরে

ইফতিও মিসকাকে জড়িয়ে ধরে,,,,

ইফতিঃ আইএম ছড়ি,,,,,,

মিসকা ঃ তুমি আমায় এভাবে ধমক দিতে পারলে,,,,,

ইফতিঃ বললাম তো ছড়ি,,,কি করবো তুমিই তো আমার মেজাজটা খারাপ করে দিলা,,,,,তুমি জানো নীলা কতটা জেদী?? ও যা বলে তাই করে,,,

মিসকাঃ জানি বলেই ওকে এখানে এনেছি,,,,,,আজ যা ও করলো তারপর ওকে আর বিশ্বাস নেই,,,,,,

ইফতিঃ এতোকিছু বুঝেও নিজের বিপদ নিজে ডেকে আনলে

মিসকাঃ তুমি আমার পাশে থাকলে আমার কিছু হবে না,,,,,

কিন্তু তুমি আমায় একটুও ভালোবাস না,,,,,

ইফতিঃ আমি তোমায় অনেক ভা,,,,

মিসকাঃ কি,,,

ইফতিঃ আমি তোমায় ভা

মিসকাঃ কি কতক্ষণ ধরে ভা ভা করছো তোতলার মতো,,,,বলেই চলে যেতে নেয়,,,,,,

ইফতিঃ মিসকার হাত ধরে কাছে টেনে নিয়ে মিসকার ঠোঁটে নিজের ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়,,,,,

মিসকা প্রথমে বড় বড় চোখ করে ইফতির দিকে তাকালেও পরে সেও হারিয়ে যায়,,,,,ইফতির সাথে সুখের রাজ্যে,,,,

#চলবে,,,,,,

#ভালোবাসার__টান,,,,,😍👸😍

#part:::::::::::(58)

#writer:::::::::Tanzidaa Jannat

সকালে মিসকা ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে ইফতি আর হিয়া দুজনে এখনও ঘুমিয়ে আছে,,,,,,,মিসকা হিয়ার কপালে একটা চুমু একে দেয়,,, ইফতির কপালে হাত দিয়ে ওর চুলগুলো সরিয়ে দেয়,,,,,কি সুন্দর লাগছে ইফতিকে ইচ্ছে করছে ঐ ফরসা গালে একটা চুমু একে দিই,,,,এসব কি ভাবছি,,, মাথাটা একে বারেই গেছে,,,,

মিসকা মুচকি হেসে উঠতে নিলেই ইফতি মিসকার হাত ধরে রাখে,,,,,

মিসকাঃ একি হাত ধরে রাখছ কেন??

ইফতিঃ একজনকে তো আদর করে ভালোবাসার পরশ দিলা আরেকজন যে আছে তার কি হবে,,,,

মিসকাঃ মানে তুমি জেগে আছ,,,, ঘুমিয়ে নেই,,,,,,

ইফতিঃ তোমার ছোয়া পেলে কি আর ঘুমিয়ে থাকা যায়,,,,,,ইচ্ছে করে বউটাকে আরো কাছে এনে জরিয়ে ধরে ঘুমিয়ে থাকি,,,

মিসকাঃ আরে করছো টাকি হাত ছাড়,,, হিয়া উঠে যাবে তো,,,

ইফতিঃ উঠুক তাতে কি হিয়া দেখবে ওর মাম্মাম আর বাবাই রোমাঞ্চ করছে,,,,

মিসকাঃ মাথা ঠিক আছে তোমার ছাড় বলছি

ইফতিঃ ছাড়বো তবে এক শর্তে,,,,,যদি একটা চুমু দেও

মিসকাঃ পারবো না

ইফতি ঃ ওকে এই হাতও আমি ছাড়বো না এই হাত ধরেই আমি ঘুমিয়ে থাকবো,,,,,

মিসকাঃ আচ্ছা দিচ্ছি,,,,, আগে হাত ছাড়,,,

ইফতিঃ না বাবা আমি রিক্সের মধ্যে যাবো না,,,,,,,,, আগে আমারটা শোধ করো তারপর ছাড়বো

মিসকা নিজের রাগ কন্ট্রোল করে আচ্ছা দিচ্ছি,,,,,, কিন্তু হাত না ছাড়লে আমি চুমু দিবো কি করে মাঝখানে তো হিয়া,,,

ইফতি ওকে দেখাচ্ছি বলেই মিসকাকে এমন টান দেয় হিয়ার উপর দিয়ে ইফতির বুকে গিয়ে পরে,,,,

মিসকাঃ আরে কি হচ্ছে ও যদি ব্যথা পেত,,,,

ইফতিঃ ও যাতে ব্যথা না পায় এজন্য ই তো এভাবে আনলাম😉

মিসকাঃ এভাবে জড়িয়ে ধরে আছ কেন ছাড়,,,,,

ইফতি মিসকাকে আরো জোরে শক্ত করে ধরে,,,,,

ইফতিঃ আমার বউকে আমি জরিয়ে ধরবো না চুমু খাবো তা আমার ইচ্ছা,,,,

মিসকাঃ হইছে আর আজাইরা ঢং দেখাতে হবে না

ইফতিঃ ওকে ছেড়ে দিবো পাওনা পরিশোধ করো,,,,বলেই গাল এগিয়ে দেয়

মিসকাঃ ওকে দিচ্ছি কিন্তু চোখ বন্ধ কর,,,আমার কেমন লজ্জা করছে,,,,

ইফতিঃ ওহ রিয়েলি এখনও লজ্জা করে,,,

মিসকাঃ বন্ধ করো প্লিজ

ইফতি ঃ ওকে,,, ইফতি চোখ বন্ধ করে

মিসকা আস্তে করে ইফতির গালে ওর ঠোট ছুয়ে দেয়,,,

মিসকাঃ এবার ছাড়,,,,

ইফতিঃ এভাবে কেউ কাউকে কিস করে আল্লাহ ইফতি হাসতে থাকে,,,

মিসকাঃ আমি এভাবেই দেই,,,,এবার ছাড়,,,,,

ইফতি ঃ আমি আবার কারো ধার রাখি না বলেই ইফতি মিসকা গালে কিস করে,,,,,

মিসকাঃ হা করে তাকিয়ে থাকে,,,,,

ইফতিঃ কি হলো মুখের হা
বন্ধ কর,,,,,এতক্ষণ তো ছাড় ছাড় বলছিলা এখন কি যেতে ইচ্ছা করছে না

মিসকা ইফতির কথায় একটু লজ্জা পায়,,,জোরে এক ধাক্কা দিয়ে ভেঙচি কেটে চলে যায়,,,,

ইফতিঃ এর শোধ রাতে তুলবো,,,,,😂

মিসকা নিচে নেমে দেখে নীলা নাস্তা রেডি করে ফেলেছে,,,,,

মিসকাঃ একি নীলা আপু তুমি অসুস্থ শরীর নিয়ে তুমি এসব করতে গেলে,,, আর তোমার হাতে তো ব্যথা,,,,,,

নীলাঃ নিজের মানুষের জন্য একটু কস্ট করতেও ভালো লাগে,,,,,রাতে ঔষধ খেয়েছি তাই ব্যথাটা একটু কমেছে

মিসকাঃ ও আচ্ছা,,,,,

নীলাঃ মিসকা দেখ এই সবকিছু ইফতি খেতে পছন্দ করে,,,

মিসকাঃ ও তাই কোথায় আমাকে তো কখনও বলে নি,,,

নীলাঃ কি যে বলো আমরা ভালোবেসে বিয়ে করেছি ওর পছন্দ অপছন্দ সবকিছু আমার জানা আর আমার কি পছন্দ অপছন্দ সব কিছু ওর জানা আছে,,, তোমার এসব জানার কথা নয়,,,

মিসকা নীলার কথায় একটু কষ্ট পেলেও বুঝতে দেয় না,,,,,,

মিসকাঃ হুম তুমি তো আমার থেকে বেশি জানবে,,,,,এটাই স্বাভাবিক,,,আচ্ছা নীলা আপু তুমি চলে গেলে ওযে জিন্দালাশ হয়ে বেঁচে থাকবে এটা জানতে না,,,,,

নীলা চুপ করে যায় কি বলবে বুঝতে পারছে না,,,

মিসেস নিলুফাঃ এতো সকালে খাবারের ঘ্রানে ঘর তো ভরে গেছে মিসকা কি এত রান্না করেছিস

মিসকাঃ আমি না মা নীলা আপু রান্না করেছে,,,

মিসেস নিলুফাঃ নীলা,,,,,,তুই?? তুই এখানে কি চাস,,,,?? মিসকা ও এবাড়িতে কেন??

মিসকা ঃ মা আপনি এখানে বসেন আমি সব বলছি,,,,,,

মুফতিউর রহমানঃ মিসকা তোর মা তো ঠিক কথাই বলেছে,,,,, ও এবাড়িতে কেন??

মিসকাঃ বাবা আমি এনেছি,,,

দুজনে মিসকার দিকে তাকায়,,,,,,

মিসেস নিলুফাঃ কার কাছে জিগ্যেস করে ওকে এখানে এনেছিস??

মিসকাঃ ছড়ি বাবা- মা আসলে ঘটনাটা এমন ভাবে হলো আমার আর কিছু করার ছিল না,,,

মুফতিউর রহমানঃ কি এমন হলো যে ওকে এই বাড়িতে আনতেই হলো

মিসকাঃ সব খুলে বললো

মিসেস নিলুফাঃ তাহলে ওকে ওর বাড়িতে পৌছে দিতি

মিসকাঃ মা আজ নীলা আপুর জায়গায় যদি অন্য মেয়ে হতো আমি ঠিক এই কাজটাই করতাম,,,,,আর যেহেতু আমাদের গাড়িতে এক্সিডেন্ট হয়েছে আমাদেরও তো কিছু দায়িত্ব আছে

দুজনেই চুপ করে থাকে,,,,,

নীলাঃ মা বাবা আমাকে ক্ষমা করে দাও প্লিজ

মিসেস নিলুফাঃ কোন মুখে মা বাবা বলিস তুই লজ্জা করে না,,,,,আমরা শুধু মিসকার আর ইফতির মা বাবা,,,,,

নীলাঃ মিসকা মিসকা শুধু এই মেয়েটার নাম,,,,,, কিভাবে কি করতে হয় আমারও জানা আছে,,,,,,,( মনে মনে)

ইফতি হিয়াকে কোলে নিয়ে নিচে নেমে আসে,,,,,

হিয়াঃ মাম্মাম বলে হিয়ার কোলে ওঠে

মিসকাঃ আমার প্রিন্সেসটার ঘুম হলো,,,,

হিয়াঃ ওয়াও মাম্মাম এতো খাবার কে রান্না করলো??

মিসকাঃ তোমার ঐ আ ( বলেই থেমে গেল) ইফতির দিক তাকালো,,,,

নীলাঃ হিয়াকে মিসকার কোল থেকে নিয়ে,,,,,বললো আমি রান্না করেছি,,,

মিসকার কেন জানি বুক ফেটে কান্না আসছিলো,,,,,ইচ্ছে করছিলো নীলার কাছ থেকে হিয়াকে নিয়ে আসতে,,,,,

ইফতি মিসকার মুখের দিকে তাকিয়ে বিষয়টা বুঝতে পেরে মিসকার পাশে গিয়ে দাড়িয়ে ওর হাতে নিজের হাত আবদ্ধ করে রাখে

মিসকা ইফতির দিকে তাকায়,,,,, ছল ছল চোখে

ইফতি চোখের ইশারায় মিসকার চোখের পানি মুছতে বললো,,,

নীলাঃ হিয়া তুমি আমাকে মাম্মাম, মামুনি যা ইচ্ছা ডাকতে পারো,,,,

হিয়াঃ ছড়ি আন্টি,,,,বলেই হিয়া নীলার কোল থেকে নেমে পরে,,,

মিসকাকে জড়িয়ে ধরে বলে এই যে দেখছ এই হচ্ছে আমার মাম্মাম,,,,,আর আমার একটা বড় আম্মু আছে তাকে মামুনি বলি,,,,,,তোমাকে আমি আন্টি বলে ডাকবো,,,,,,,

নীলাঃ রাগে ক্রোদ্ধে ফুসতে থাকে,,,চোখ লাল হয়ে যায়,,,,

হিয়ার কাছে গিয়ে বলে বললাম না আমি তোমার মাম্মাম,,,তুমি আমাকে মাম্মাম বলে ডাকবে,,,

হিয়া নীলার এমন আচরনে ভয় পেয়ে মিসকাকে জড়িয়ে ধরে,,,,,

মিসকাঃ তোমার সাহস কি করে হয় আমার মেয়ের সাথে এভাবে কথা বলতে,,,,রুমা তুমি হিয়াকে নিয়ে যাও এখান থেকে

রুমাঃ হিয়াকে কোলে নিয়ে চলে যায়,,,,,,

নীলাঃ তোমার মেয়ে?? ও আমার মেয়ে ইফতি আমার হাজবেন্ড এই সংসার আমার,,,,,তুমি একটা ছোটলোকের মেয়ে হয়ে ইফতিকে ফাসিয়ে বিয়ে করেছ,,,,,,,

ইফতিঃ নীলার গালে ঠাস করে একটা চড় মারে,,,,,,তোমার সাহস হয় কি করে আমার সামনে আমার স্ত্রীকে অপমান করার,,,,,,

নীলাঃ তোমার এতো বড় সাহস তুমি এই মেয়েটার জন্য আমাকে চড় মারলে,,,,,,( ইফতির শার্টের কলার ধরে)

মিসকাঃ নীলার হাত ছুটিয়ে,,,,,তুমি যদি আমার বড় না হয়ে ছোট হতে না তাহলে এই চড়টা আমি মারতাম,,,,

তোমার সংসার,?? তোমার স্বামী?? তোমার মেয়ে?? ওহ রিয়েলি,,,,,হাহা হাসালে তুমি

মিসকাঃ আল্লাহ তোমায় সব দিয়েছিলো কিন্তু তুমি সেটার মুল্য দিতে পারো নি,,,,,,

তোমার মত মেয়েদের ধিক্কার জানাই,,,,,এই টুকু একটা শিশুকে ছেড়ে চলে যেতে বাধলো না তোমার?? যে ছেলেটা তোমাকে দিনের পর দিন পাগলের মতো ভালোবেসে গেছে তাকে কষ্ট দিতে একবারও ভাবলে না তুমি,,,,,,এখন এসেছো অধীকার দেখাতে,,,,কি ভাবলে তুমি চাইবে আর আমি তোমাকে সব দিয়ে দেব,,,,

এই যে মানুষ টাকে দেখছো এইটা তোমার রেখে যাওয়া ইফতি নয় এটা আমার ইফতি যাকে আমি একটু একটু করে ভালোবাসা দিয়ে গড়েছি,,,,,,ভালোবাসি হ্যা এই মানুষটাকে আমি ভালোবাসি,,,, (চোখের পানি মুছে)আর আমি আমার ভালোবাসাকে আরেকজনের হতে কখনও দিবো না,,,,,,

হিয়াকে দেখছো ওকে আমি মায়ের মমতা দিয়েছি,,,, তুমি হাজার বছর চেষ্টা করলেও আমার মেয়েকে আমার কাছ থেকে নিতে পারবে না,,,,,কারন কি জানো,,,,ওরা দুজন আমার রক্তে মিশে গেছে,,,,,ওদের সাথে আমার #ভালোবাসার__টানের সম্পর্ক,,,

#ভালোবাসার__এতো গভীর হয় যে কেউ সেই টান কে ছিন্ন করতে পারে না

কারো স্পর্শে নীলা চমকে ওঠে,,,,,,

মিসকাঃছড়ি আসলে ও বেশি রেগে গিয়েছিলো,,,,এজন্য চড়টা মেরেছে আমি ক্ষমা চাইছি ওর হয়ে

নীলাঃ খেয়াল করলো ও নিজের গালে হাত দিয়ে রেখেছে,,,,,( তারমানে আমি কল্পনা করছিলাম আর ইফতি আমাকে মারলো তাও এই মেয়েটার জন্য) নীলা কোনো কিছু না বলে দৌড়ে চলে যায়,,,,,

চলবে,,,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here