ভালোবাসার টান part:45,46

ভালোবাসার টান
part:45,46
writer:Tanzidaa jannat
45
ইফতিঃ মম নিয়ে আমাকে নীলার পাশে বসিয়ে দিলো,,,,,আমি অবাক হয়ে নীলাকে দেখছি আর নীলা মায়ের কথা শুনে হাসছে,,,,তবে একবারও আমার দিকে তাকালো না,,,,,,

বাবা, মম খুব খুশি সবাইকে ফোন করে বলছে,,,,নীলা কতক্ষণ পর উপরে চলে গেলো,,,,ওর নাকি খারাপ লাগছিলো,,,,মম আমাকে ওকে নিয়ে উপরে যেতে বললে নীলা বললো ও একা যেতে পারবে,,,,ও চলে গেলো,,,,

মমঃ কিরে তুই বসে আছিস কেন??যা ওর সাথে যা,,,

আমি কোনো কথা না বলে ওর পিছনে গেলাম,,,,,

রুমে গিয়ে দেখি ও বারান্দায় দাড়িয়ে আছে,,,, আমি ওয়াশরুম থেকে ফ্রেস হয়ে ওর পাসে গিয়ে দাড়ালাম,,,,,,,

নীলাঃ কি ভাবছো আমি সবাইকে কেনো বলে দিলাম??

ইফতিঃ না তেমন কিছু না,,,,

নীলাঃ তেমন কিছু নয়??( ভ্রু কুচকে)

ইফতিঃ———–( কোনো কথা বললো না)

নীলাঃ শোনো তুমি আমাকে কাল শর্ত দিয়েছিলে আমি যদি তোমার বাচ্চাকে পৃথিবীতে আনি তাহলে আমি যা চাইবো তাই দেবে,,,,

ইফতিঃ বলেছিতো দিবো,,,,

নীলাঃ এভাবে বললে হবে না,,,,,,ইফতির হাত নীলার পেটের উপর রেখে বললো ওকে ছুয়ে বলো তুমি আমাকে তাই দিবে যা আমি চাইবো,,,,,

ইফতিঃ অসহায়ের মতো ওর দিকে তাকিয়ে চোখের পানি ছেড়ে দিলাম,,,,,,আর ভাবলাম ভালোবাসার পরিনতি কি কষ্ট। যা নীলা আমাকে দিচ্ছে আচ্ছা নীলাকি আমাকে এতটুকু ভালোবাসে নি?? যদি বাসে তাহলে এমন কিভাবে করতে পারে,,,,

নীলাঃ কি এত ভাবছো,,,,,,যা বলতে বললাম তাই বলো

ইফতিঃ হ্যা দিবো,,,,,,আমি ওকে ছুয়ে বলছি তুমি যা চাইবে তাই পাবে,,,,,,

নীলাঃ থ্যাংকস,,, আমি জানতাম তুমি তোমার কথা ফেলবে না,,,,,,

ইফতিঃ তবে তোমাকে এই কয়টা মাস আমার রুলস মেনে চলতে হবে,,,,,,,

নীলাঃ মানে!!! তুমি আমাকে যা বলবে আমাকে তাই করতে হবে,,,,

ইফতিঃ হ্যা,,,,,

নীলা ঃ রাগে ওখান থেকে চলে গেলো,,,,

তারপর থেকে আমি ওকে কেয়ার করতাম,,,পার্টি তে যেতে দিতাম না ওর সব অভ্যাসগুলো বদলে দিয়েছিলাম,,,,,আমি যখন অফিসে থাকতাম তখন প্রতি ঘন্টায় ফোন দিতাম কি করছে না করছে খোজ নিতাম,,,,আমি ভেবে ছিলাম ও এখন থেকে বদলে যাবে,,,,,,

আমাদের সেই অপেক্ষার মুহুর্ত আসলো নীলাকে হসপিটালে ভর্তি করা হয়েছে,,,,,,

আমরা সবাই বাইরে অপেক্ষা করছি,,,,

একজন নার্স এসে আমার কোলে বাবুটাকে দিয়ে হেসে বললো দেখুন আপনার একটা ফুটফুটে মিষ্টি মেয়ে হয়েছে,,,,,সেদিনটা আমার কি যে খুশি লাগছিলো,,,খুশিতে আমি কান্না করে দেই,,,,ওর কপালে একটা চুমু দিয়ে বলেছিলাম আমার হিয়া,,,,মম আমার কোলে থেকে ওকে নিল,,,আর আমি নীলার কাছে গেলাম,,,, স্লেলাইন চলছে,,, আমি ওর মাথায় হাত রাখতেই চোখ মেলে আমার দিকে তাকালো,,,,,

নীলাঃ কেমন লাগলো আমার উপহার,,,,,

ইফতিঃ সবচেয়ে সেরা উপহার আমার জীবনের,,,,,

নীলাঃ তাহলে এবার আমাকে উপহার দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হও,,,

ইফতিঃ আমি হেসে বললাম ঠিকাছে আগে বাড়ি তো চলো,,,

এভাবে প্রায় একমাস চলে গেলো সব নরমাল,,,,,আমিও আগের সবকিছু ভুলে গেছিলাম,,,

একদিন নীলা এসে বললো ইফতি আমাকে গিফট দেওয়ার জন্য তুমি রেডি তো,,,,

ইফতিঃ কেন থাকবো না,,,,, বলো তোমার কি চাই,,,,

নীলাঃ মুক্তি??

ইফতিঃ মুক্তি কি??

নীলাঃ আমার সামনে একটা কাগজ ধরে বললো এটাতে সাইন করে আমাকে মুক্তি দাও,,,

আমি ওর হাত থেকে কাগজটা নিয়ে দেখি ডিভোর্স পেপারস।এটা দেখার পর আমার মনে হচ্ছিল পায়ের নিচে মাটি নেই,,,,,চোখ থেকে শুধু পানি পরছিলো,,,,

ইফতিঃ ডিভোর্স??

নীলাঃ হ্যা ডিভোর্স,,,,,, আমি এখানে থাকতে পারবো না,,,,দম বন্ধ হয়ে আসে আমার,,,,,,, এই কয়েক মাস আমার উপর কি টর্চার হইছে তা শুধু আমিই জানি,,,,মনে হচ্ছিল আমার সুখ গুলো সব আমার কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হচ্ছে,,,, কিন্তু না আমি স্বাধীন ভাবে বাচতে চাই জীবনটাকে ইনজয় করতে চাই,,,,,এখানে থাকলে সব কিছু মাটি হয়ে যাবে,,,

ইফতিঃ রাগে ওকে থাপ্পড় মেরে ফেললাম,,,,,,কি বললে তুমি এতদিন তোমাকে টর্চার করেছি,,,,আরে এতদিন ধরে যদি একটা কুকুরকেও পালতাম না এতো আদর যত্ন করে তাহলে ঐ কুকুরটাও আমার জন্য প্রান দিতে রাজি থাকতো,,,আর তুমি আমার কেয়ারিংকে বলছো টর্চার,,,,,😠😠

নীলাঃ হ্যা হ্যা টর্চার,,,, আমার বিরুদ্ধে গিয়ে আমাকে জোর করে সবকিছু করিয়েছো,,,,এটা টর্চার নয়,,,,, আমাকে একা একা একটু বের হতে দাও নি,হসপিটাল পর্যন্ত তুমি আমাকে একা ছাড়নি এটা টর্চার নয়,,,,,,আমার নিজেকে গৃহ বন্দি করে রেখেছো,,,তুমি যেটাকে কেয়ারিং বলছো,,,, ঐকেয়ারিং এ আমি দিনের পর দিন শুধু এটা ভেবেছি কবে আমি এই খান থেকে যেতে পারবো,,,,,,আজ সময় হয়েছে আর এখানে থাকা আমার সম্ভব নয়,,,,,,

ইফতিঃ আমি ভেবেছিলাম তুমি পাল্টে গেছো,,,,,😂😂কত বোকা আমি তাই না😂,,,,আমি তোমায় কেয়ারিং করলাম সেটা তোমার কাছে টর্চার,,,,ইউ নো ওয়াট তুমি এসব ডিজার্ভ ই করো না,,,,আসলে মানুষ যেটার যোগ্য নয় তাকে ঐ জিনিস দিতে নেই,,,,,,তোমার বেলাতেও তাই হয়েছে,,,,

নীলাঃ এই শোনো তুমিই আমাকে কথা দিয়েছিলে হিয়াকে আমি তোমাকে দিবো আর তার বিনিময়ে আমি যা চাইবো তাই দিবে,,,,,আমি সারা রাত সেদিন ভেবে এই ডিসিশন টা নিয়েছি,,,কারন আমি বুঝতে পেরেছি তুমি আমার মতো নয়,,,,,,,তোমার সাথে আমি কোনো দিন সুখি হতে পারবো না,,, আর তুমিও তাই বলছি এটাতে সাইন করে দাও,,,,

ইফতি ঃ নীলার পা জড়িয়ে ধরলো,,,,,, প্লিজ নীলা তুমি যেও না,,,, তুমি চলে গেলে হিয়ার কি হবে!! ও তো ছোট তোমার কি ওর জন্য এতটুকু মায়া হয় না ,,,,,😭 আর আমি আমি তো তোমাকে খুব খুব ভালোবাসি আর এত ভালোবাসি যে তোনাকে কখনও ছাড়তে হবে একথা একবারের জন্য ও ভাবি নি,😭,,যদি বুঝতাম এমন কথা কখনও দিতাম না,,,, আর বুঝবোই কি করে আমি তো তোমায় ছেড়ে যাওয়ার জন্য ভালোবাসি নি,,,,নীলা তুমি এমন করতে পারো না আমি মরে যাবো😭😭

নীলাঃ ইফতির হাত থেকে পা টা ছাড়িয়ে নিয়ে,,,,দেখ ইফতি দুজনের কথা ভেবেই এই ডিসিশন টা নিয়েছি,,,,,,,আর কেউ কারো জন্য মরে যায় না,,, তোমার জীবনে এমন কেউ আসবে সেদিন আফসোস হবে না আরো আমাকে ধন্যবাদ দিবে যাই হোক রাত ৮.০০ টায় আমার ফ্লাইট USA যাচ্ছি,,,ভালো থেকো আর মনে করে সাইন করে দিও,,,,

আমি সেদিন কেঁদেছিলাম অনেক কেঁদেছিলাম,,,,,,,পরে জানতে পারি ও চলে গেছে,,,,, আমি যখন হিয়াকে কোলে নিতে যাই তখন ওর পাশে থাকা তিলটা আমাকে নীলার কথা বার বার মনে করিয়ে দেয়,,,,সেদিন হ্যা সেদিন থেকে নীলাকে ভোলার জন্য হিয়ার দূরে চলে যাই,,,,এই রুমটা আমাকে নীলার কথা মনে করিয়ে দেয় বলে সবকিছু পাল্টে ফেলি,,,,শুধু ঘুমানোর জন্য এই রুমটায় আসি,,, যেই ছাদটাতে না গেলে শান্তি পেতাম না আর একটু শান্তি পাওয়ার জন্য ঐ ছাদে তালা ঝুলিয়ে রাখছি,,,,,বাবা,মম এর মুখে তাকাতে পারবো না বলে অনেক রাতে ড্রিংস করে বাসায় ফিরি,,,,,মাঝে মাঝে সকালে কারো চুমুতে ঘুম ভাংতো তখন দেখতাম হিয়া এসে ওর ছোট্ট দুটি ঠোঁট দিয়ে আমাকে চুমিয়ে পুরো মুখ নোল দিয়ে ভরে ফেলেছে কতক্ষণ বুকে সুয়ে থাকতো,,,আমি সবকিছু বুঝতে পেরেও চোখ বন্ধ রাখতাম,,,,, আমারও খুব ইচ্ছা করতো ওকে জড়িয়ে বুকে নিয়ে ঘুমুতে কিন্তু না আমি আর কারো মায়ায় পরতে চাই না,,,,,মম এসে হিয়াকে কোলে নিয়ে চলে যেতেন চোখের পানিও ফেলতেন,,,,,আমি সবকিছু টের পেয়েও চুপ থাকতাম,,,,,হিয়া আস্তে আস্তে বড় হতে থাকে ওকে দেখতে পুরো নীলার মতো লাগে,,,,,,, ও যখন আমার সামনে আসতো নীলার সেদিনের চেহারাটা মনে পরে যেত,,,,রাগে ঘৃনায় হিয়ার সাথে রুডলি বিহেভ করতাম,,,কিন্তু রুমে এসে দরজা লাগিয়ে কাঁদতাম,,,,,,, আমার কষ্ট বুঝার মতো কেউ নেই,,,, কেউ না,,😢😭
সকলের কাছে আমার কান্নাগুলো ঘৃনায় পরিনত হয়েছে,,,, ঘৃনায়😢

মিসকা কাদতে কাদতে পুরো ডায়রী ভিজিয়ে ফেলেছে,,, এর পরের পৃষ্ঠা উল্টিয়ে দেখে আর কিছু লেখা নেই,,,,,

মিসকাঃ ঘুমন্ত হিয়াকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকে,,,,,,,,

#চলবে,,,,,,,,

#ভালোবাসার__টান,,,,,😍👸😍

#part:::::(46)

#writer:::::::::Tanzidaa Jannat

মিসকার কান্নার শব্দে হিয়ার ঘুম ভেঙে যায়,,,,,

হিয়াঃ কি হলো মাম্মাম তুমি কাঁদছো কেনো??

মিসকাঃ ছড়ি হিয়া আমি তোমার ঘুম ভেঙে ফেললাম,,,,,,

হিয়াঃ এখন তো উঠতেই হতো,,,,,দেখ ঘড়ির দিকে তাকিয়ে কতো বাজে??😂

মিসকাঃ এইরে ৫ টা বেজে গেছে এখন কি হবে??

হিয়াঃ উফফ আগে চোখের পানিটাতো মুছে নাও,,,,বলেই চোখের পানি মুছে দিল,,,

মিসকাঃ হিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে,,,,,এই পরীর মতো ফুরফুটে মেয়েটাকে রেখে নীলা কিভাবে যেতে পারলো,,,,আচ্ছা জীবনটাকে তো স্বামী, সন্তান নিয়ে আরো বেশি ইনজয় করা যায়,,,,,,,চারপাশে সবকিছু যেনো সুন্দর কিন্তু নীলা কি এসব বুঝো নি নাকি বুঝতে কখনও চেষ্টা করেনি,,,,,??😑 ( হিয়ার দিকে তাকিয়ে ভাবছে)

হিয়াঃ এই মাম্মাম কি হলো কি দেখছো এমন করে??

মিসকাঃ হুম না কিছু না,,,,,

হিয়াঃ কি যেনো করবে বললে??

মিসকাঃ হ্যা চলো এখন সবকিছু ঠিক করতে হবে তোমার বাবাই আসার আগে,,,,,

হিয়াঃ বাবাইকে তুমি সারপ্রাইজ দিবে,,,,মাম্মাম

মিসকাঃ হুম,,,,😉😉

মিসকা হিয়াকে কোলে নিয়ে রুম থেকে বের হয়ে গেলো,,,,,

ইফতি বাসায় ফিরতে ফিরতে প্রায় ৮.০০ বেজে গেলো,,,,,বাসায় কলিং বেল চাপলে রুমা এসে দরজা খুলে দেয়,,,,,সব কিছু কেমন যেন শান্ত,,,,,ইফতির বুকটা কেমন যেন ধক করে ওঠে,,,

ইফতিঃ রুমা বাসায় কেউ নেই নাকি??

রুমাঃ কেন ছোটসাহেব সবাই তো আছে,,,,

ইফতিঃ না আসলে এত শান্ত হয়ে আছে ঘড়টা যে কারো সাড়া শব্দ নেই এজন্য

রুমাঃ ওরা উপরেই আছে,,,,

ইফতি ঃ রুমের দিকে যাচ্ছে আর ভাবছে কি ব্যাপার আজ এমন নিরিবিলি কেন সবকিছু??

দরজার সামনে গিয়ে দাড়িয়ে যায়,,,দরজাটা আটকানো যেই খুলতে যাবে একটা চিরকুট দেখতে পায়,,,, তাতে আবার নং দেওয়া আছে,,,,

চিরকুট নং(১)
দরজা খোলার আগে নিচে তাকিয়ে দেখেন একটা রিমোট আছে,,,,, ঐটা হাতে নিয়ে দরজা খুলে ২ কদম এগিয়ে লাল বাটনটা প্রেস করবেন,,,😊

ইফতি ঃ কিসব বাচ্চাদের মতো,,,উফফ রিমোট টা হাতে নিয়ে দরজা খুলে দেখলো পুরো ঘরটা অন্ধকার,,,,দুকদম এগিয়ে লাল বাটনটা প্রেস করতেই কালারিং লাইট জ্বলে উঠলো,,,,,, ইফতি এতোটাই অবাক হয়ে সবকিছু দেখছে যে বোকার মতো হা করে দেখছে,,,,,,,নিজের রুমটাকে নিজে চিনতে পারছে না,,,,,,সবকিছু পাল্টে ফেলেছে মিসকা,,,,,সামনে এগোতে এগোতে একটা কার্ড দেখতে পেল,,,,,লাভ সেড করা,,,, কার্ডে বড় বড় করে লেখা 🌼নতুন জীবনে নতুন ঘর আর নতুন অধ্যায়ে আপনাকে প্রান ধালা শুভেচ্ছা,,,,,
যদি পছন্দ হয় এসব কিছু,,,, তবে খুজে দেখুন ২য় চিরকুট,,,, 😊

ইফতিঃ একটু হাসি দিয়ে দেখলো বিছানার উপর একটা কাগজ ভাজ করা,,,,, হাতে নিয়ে দেখলো তাতে লেখা,,,,, 🍀যদি চোখের ঘোরখানি কাটে,,,,,দেখুন তবে একটা প্যাকেট আছে বিছানার উপরেতে🍁,,,,,

ইফতি প্যাকেট টা নিয়ে দেখলো একটা ব্লাক কালারের পাঞ্জাবি আছে,,,,,একটু হাসি দিয়ে ওয়াশরুম থেকে ফ্রেস হয়ে এসে ড্রেসিন টেবিলে দাড়িয়ে চুল ঠিক করছে আর ভাবছে পাগলি মেয়েটা আরো কি কি করবে কে জানে🙂 হঠাৎ দেখলো আয়নার পাশে একটা চিরকুট হাতে নিয়ে দেখলো,,,,,, 🍁ছাদে আছি দাড়িয়ে আপনারি অপেক্ষাতে,,,,🌺

ইফতি চিরকুটটা হাতে নিয়ে উপরে উঠতে থাকে,,,,,, আচ্ছা মিসকা আমার জন্য দাড়িয়ে আছে ছাদে আরো কি কিছু সারপ্রাইজ দেওয়া বাকি আছে?? কতো বছর পর আমি ছাদে যাচ্ছি তাও আবার ব্যাকুল মনে,,,এসব ভাবতে ভাবতে ইফতি ছাদের দরজার সামনে দাড়ায় একটু দম নিয়ে সাহস করে এক পা ফেলে আরেক পা দিতেই গোলাপের পাপড়ি গায়ে এসে পরছে,,,,,ইফতি তাকিয়ে দেখে পুরো ছাদ লাইটিং দিয়ে ডেকরেট করা,,,,সারা ছাদে ফুলের গন্ধে মো মো করছে,,,,,,আর সামনে হিয়া বেলুন নিয়ে দাড়িয়ে,,,,,
জোরে চিৎকার করে বলছে 💕আই লাভ ইউ বাবাই,,,,💞 এতো কিছু দেখে ইফতি এবার কেঁদেই ফেললো,,,,,কাদতে কাদতে হাটু গিরে বসে পরলো,,,,তবে এই কান্না কষ্টের নয় সুখের,,,,সুখের কান্না দিয়ে আজ ইফতি দুঃখের গ্লানি মুছে ফেলছে,,,,

মিসকা ইফতির সামনে দাড়িয়ে,,,,,

মিসকাঃ কান্না যদি থামে তবে তাকি দেখুন সামনে,,,,,কয়েকজন অপেক্ষায় আছে আপনার নতুন জীবনের সাথে চিরসঙ্গী হতে,,,,,

ইফতি সামনে তাকিয়ে দেখে মিসকা ব্লাক কালারের একটা শাড়ী পরেছে,,,,,,,মুখ ঢাকা হাতে বড় একটা কাগজ,,,,,, তাতে কিছু লেখা,,,,,,

ইফতি মিচকি হাসি দিয়ে তাকিয়েই আছে,,,

মিসকা নিজের মুখটা থেকে কাগজটা নামিয়ে একটা পার্ট ফেলে দিয়ে আবার বললো,,,,

দাড়িয়ে আছি অনেক আশা নিয়ে দিয়েছি তো হাতটাও বারিয়ে,,,
যদি হাতটা ধরে পাশে থাকার সায়টুকু পাই,,,,কসম করে বলছি ছাড়বোনা হাত যদি পাশে রাখেন চিরকাল,,,,

এই পার্ট ও ফেলে আবারও বলছে,,,,

পাবো কি সেই অধিকার,,,, নতুন করে জীবনটা শুরু করার💖

পাবো কি সেই অধিকার,,,,, সকল কষ্টের হতে ভাগিদার,,,,💔

পাবো কি সেই অধিকার,,,,
সব কষ্ট ভুলিয়ে নতুন করে ছন্দে জীবন লেখবার,,,,,

পিছনের সব কিছু ঝেড়ে ফেলে সামনে এগিয়ে দেখুন
আপনার হাতটা ধরে নতুন সপ্ন বুনতে আমরা দুজন আছি দাড়িয়ে,,,,,

মিসকা সব পেপারগুলো ফেলে ইফতির দিকে তাকিয়ে হিয়াকে পিছন থেকে ধরে আছে আর হিয়া ঠোঁটে মুচকি হাসি রেখে লাল বেলুন ধরে আছে,,,,,,

ইফতি আর এক মুহুর্ত দাড়িয়ে না থেকে দৌড়ে মিসকার সামনে গিয়ে মিসকাকে জড়িয়ে ধরলো,,,,

মিসকা ও ইফতিকে জড়িয়ে ধরেছে ইফতি কাঁদছে,,,, মিসকার চোখ থেকেও পানি পরছে,,,,

হ্যা মিসকা হতে পেরেছে ইফতির সকল দুঃখের ভাগিদার,,,,,সবকিছু জানার পর মিসকা চেয়েছে ইফতির জীবনের সকল দুঃখ ভুলিয়ে দিতে,,,,,,তাই সে এই প্লানটা করে,,,,

হিয়াঃ বাবাই তুমি মাম্মামকে জড়িয়ে ধরে আছো আর আমি যে দাড়িয়ে আছি,,,😒

ইফতিঃ হিয়ার কথায় মিসকাকে ছেড়ে দেয়,,,,,

মিসকাঃ লজ্জা পেয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে,,,,

ইফতি হিয়াকে কোলে নিয়ে এই যে নিলাম,,,,তো এই বেলুনগুলো কিসের জন্য??

হিয়াঃ তোমার জন্য,,,,

ইফতিঃ তাই??

হিয়াঃ হুম,,,

মিসকাঃ একটা কলম আর একটা কাগজ এনে ইফতির সামনে ধরলো,,,,,

ইফতি হিয়াকে নামিয়ে বললো এগুলো দিয়ে কি করবো,,,

মিসকাঃ আপনি এই কাগজে আপনার এমন কিছু ইচ্ছা লিখুন যেগুলো পুরন হয় নি,,,,

ইফতিঃ তা দিয়ে কি হবে??

মিসকাঃ উফফ এতো কেনো কথা বলেন,,, যা বলেছি তাই করেন,,,

ইফতিঃ কলমটা নিয়ে কিছু একটা লিখলো,,,,

মিসকা কাগজটা একবার পড়ে নিয়ে ভাজ করে বেলুনের সাথে বেধে দিলো

ইফতিঃ কি করছো এগুলো,,,,

মিসকাঃ নিন এবার এই বেলুনগুলো ছেড়ে দিন,,,,

ইফতিঃ বেলুনগুলোর সুতো ছেড়ে দিতেই সব উড়ে গেলো,,,

মিসকাঃ যেগুলো উড়িয়ে দিলেন ঐখানে আপনার অসম্পূর্ণ কিছু স্বপ্ন,,,,,,, ঐগুলো কখনও ছুতেও যাবেন না,,,,,এখন থেকে আমি আপনি, হিয়া আমরা সবাই মিলে স্বপ্ন পুরন করবো,,,আমাদের স্বপ্ন,,,,

ইফতিঃ মিসকার দিকে তাকিয়ে,,,, কি আছে ওর মাঝে জানি না,,,,, তবে ও আমার জীবনে একটু একটু করে এমন ভাবে জায়গা করে নিয়েছে যেখানে শুধু ওরই আনাগোনা,,,,আমি জানি না ওর প্রাপ্যটুকু ওকে দিতে পারবো কি না তবে এটা জানি ওকে ছাড়া আমার জীবন আর চলবে না,,,,এক মুহুর্তের জন্য ও না,,,আমি জানি না ওকে সবটুকু দিয়ে ভালোবাসতে পারবো কি না তবে এটা জানি মিসকা নামটা আমার প্রতি নিঃশ্বাসের সাথে মিশে যাচ্ছে,,,,

মিসকাঃ এই যে হ্যালো,,,কি ভাবছেন??

ইফতিঃ কিছু না,,,,

হিয়াঃ মাম্মাম আমার ঘুম পাচ্ছে,,,,

মিসকা রুমাকে ফোন করলে রুমা এসে হিয়াকে নিয়ে যায়,,,

ইফতিঃ এতো সুন্দর করে এসব সাজিয়েছে কে??

মিসকাঃ সবাই মিলে,,,,ওহহো আপনাকে তো ফুলগাছগুলো দেখানোই হয় নি,,,,

মিসকা ইফতির হাত ধরে সবফুল গাছগুলো দেখাচ্ছে,,, আর ইফতি মিসকার দিকেই তাকিয়ে আছে,,,

মুসকাঃ দেখুন কি সুন্দর ফুলগুলো ফুটেছে😍

ইফতিঃ ফুলতো ফুটেছে তবে আমার হাতের কালো গোলাপটা বেশি সুন্দর,,,,, এতো সুন্দর যে নেশা লেগে যাচ্ছে,,,

মিসকাঃ ইফতির কথায় লজ্জা পেয়ে দৌড় দিতে নিলে,,,, ইফতি হাত ধরে ফেলে,,,ইফতি মিসকার কাছে আসতে আসতে খুব কাছো এসে পরে,,,,,,

মিসকার বুকের হার্টবিট বাড়ছে,,,,,ইফতি মিসকার চুলে মুখ গুজে দিয়ে আমার কালো গোলাপটার স্মেল অন্য গোলাপের থেকে আলাদা,,,,এই স্মেলে যাদু আছে,,,,,মিসকা চোখ বন্ধ করে আছে,,,,,

চলবে,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here