ভালোবাসার টান
part:1,2
writer:Tanzidaa Jannat ❤Jannatul Ferdousy
1
চারোপাশে মানুষের ভীর একেক জন একেক কথা বলছি। ভয়ে পিচ্চি মেয়েটা আমার হাত শক্ত করে ধরলো। মেয়েটা দেখতে এতোটা কিউট বলে বুঝানো জাবে না। বয়স টা পাচঁ সাড়ে পাচঁ এর বেশি হবে না। গায়ের রং গোলাপি, বড় বড় মায়াবী দু’টি চোখ ওর দিকে তাকালে মনে হয় পৃথিবীর সব মায়া ওকেই আল্লাহ তা’য়ালা দান করেছেন। দুপাশে দুটি ঝুটিঁ করা। সব মিলিয়ে কিউটের ডিব্বা
আন্টি বলে আমাকে জড়িয়ে ধরলো। এতক্ষণ আমার হুস ফিরলো দেখি কাঁদছে। আমি ওর চোখের পানি মুছে দিয়ে বল্লাম ভয় নেই আমি আছি তো। চারোপাশের মানুষ একেক জন একেক কথা বলছে কয়েক জন ছবি তুলছে এটা দেখে আমার মেজাজটা একেবারে গরম হয়ে গেলো।রাগি ভাবেই সবাইকে বল্লাম একে তো কেউ বাচ্চাটাকে সাহায্য করতে আসেন নি আর এখন এতো মানুষ ভীড় করে আজে বাজে কথা বলছেন। যান যে যার কাজে
সবাই বকবক করে কতোগুলো বলে চলে গেলো,,,,কেউ কেউ বললো মেয়েকে সামলে রাখতে পারেন না।( এই কথাটা শুনে বুকটা কেমন যেনো ধব করে উঠলো)
আর পিচ্চিটা আমার দিকে অসহায়ের মতো এক রাশ মায়া নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
আরে এতো ঝামেলার মাঝে আমার পরিচয় দিতেই ভুলে গেছি। আমি হচ্ছি মিসকা তাসনীম। সবাই আমাকে মিসকা বলেই ডাকে। আর বান্ধবীরা মিসু,মিসকু যে যেটা পারে তাই বলে ডাকে। বাবা নেই, মা গ্রামে থাকেন। আমরা দুই বোন বড় বোনের বিয়ে হয়ে গেছে আর আমি বান্ধবীদের সাথে বাসা নিয়ে ঢাকাতেই থাকি।বিবিএ কমপ্লিট করেছি।মা,আপু আত্নীয়রা সবাই বিয়ের জন্য জোর করলেও আমার মাথা ব্যথা নেই।আমার একটাই কথা আগে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করবো তারপর বিয়ের চিন্তা করবো।
আজ কলেজে সার্টিফিকেট আর প্রয়োজনীয় কিছু কাগজের জন্য ভার্সিটিতে গিয়েছিলাম।বুঝতে পারিনী এতো টাইম লাগবে। এদিকে গাড়ি পাচ্ছিলাম না সব গাড়িতে যাত্রী বোঝাই
আর রিক্সাওয়ালা মামারা তো কি যে হয়েছে যা ভাড়া তার ডাবল ভাড়া চাচ্ছে
তাই হাটছিলাম এক প্রকার রাগ দেখিয়েই।এর মধ্যেই দেখি একটা ফুটফুটে পিচ্চি একটা কুকুর ছানা নিয়ে রাস্তার মাঝখানে।ওদিক দিয়ে গাড়ি আসছে আমি কোনো দিক না তাকিয়ে ওকে পাজা করে কোরে রাস্তার এই সাইডে নিয়ে আসলাম। সাথে সাথে মানুষের ভীড় হয়ে গেলো।
মিসকাঃ ভয় পাচ্ছ কেন?আমি আছি তো 😊।কি নাম তোমার?
( হিয়া আরনাম,,,,,,পিচ্চি টা বললো)
মিসকাঃ ওয়াও কত্ত সুন্দর নাম ।একদম তোমার মতোই কিউট
হিয়াঃ ☺☺☺
মিসকাঃ আচ্ছা তুমি এখানে এলে কিভাবে??
হিয়াঃ আসলে আমি এই ডগিটার পিছু নিচ্ছিলাম। হঠাৎ ও রাস্তার মাঝখানে চলে গেলো। ওর পিছু নিতে গিয়ে রাস্তা হারিয়ে ফেলেছি
মিসকা ঃ আচ্ছা মোন খারাপ করে না সোনা।তোমার মা- বাবা হয়তো এতক্ষণ চিন্তা করছে তোমায় নিয়ে🤔।
হিয়াঃ আমার মা নেই
(মিসকাঃকথাটা শুনার সাথে সাথে মনে হলো কে যেনো হাতুড়ি দিয়ে আমার বুকে আঘাত করলো)
মিসকাঃ ছড়ি হিয়া বুঝতে পারি নি।আচ্ছা তোমার বাসার কারো নাম্বার মনে আছে??
মিসকাঃহিয়া বললো বাবাইয়ের নাম্বার মনে আছে। কিন্তু,,,,,(এটা বলে ও মাথা নিচু করে ফেললো)
মিসকাঃ কিন্তু,,,,,, কিন্তু কি হিয়া। নাম্বার টা বলো তা না হলে তুমি বাড়ি পৌছাবে কিভাবে? সন্ধ্যা হয়ে আসছে তো
হিয়াঃ বাবাই ভিষন রাগি। আমাকে ( আর বললো না কান্না করে দিলো আমাকে জড়িয়ে ধরে)
#চলবে,,,,,,,,,,,,,
#ভালোবাসার__টান,,,,,,,,,,,,😍👸😍
#part:::::::(2)
#writer:::::::::Tanzidaa Jannat❤Jannatul Ferdousy
( আমি বুঝতে পারলাম ও হয়তো ওর বাবাকে ভয় পাচ্ছে)
মিসকাঃ আচ্ছা শোনো তুমি একদম মোন খারাপ করো না সোনা।তোমাকে কাঁদলে একদম ভালো দেখায় না। হাসলে একটা প্রিনসেস মনে হয় 👸 তুমি জানো এটা😍( ওকে হাসানোর জন্য বললাম )
হিয়াঃ সত্যি,,,, (এটা বলে ও একটা টেডি হাসি দিলো।)
মিসকা ঃএবার তোমার বাবাইয়ের নাম্বারটা বলো,,,,
,( তারপর বললো,
০১৮********”)
তোমার বাবাইয়ের নামটাই তো জানি না 😔।কি নাম তোমার বাবাইয়ের?
হিয়া ঃ আহনিল হাসান ইফতি,,,😊
মিসকাঃরিং হচ্ছে,,,,,,,,,,
( ফোনটা ১ বার রিং হয়ে কেটে গেলো। আবার রিং দেওয়াতে ফোনটা পিক করলো)
ইফতিঃ হ্যালো,,,,,,,,
মিসকাঃ আসসালামু আলাইকুম,,,,ইফতি বলছেন?
ইফতিঃ ইয়েস,,,, কে বলছেন?
মিসকাঃ আমি মিসকা আপনি আমায় চিনবেন না,,,, ( বলতে না বলতেই,,,,,,)
ইফতিঃ তাহলে ফোন কেনো দিয়েছেন?
( মিসকাঃব্যাটা খারুছ একটা কথা শেষ করতেও দিলো না (মনে মনে)
মিসকাঃআসলে স্যার হিয়া এখন আমার কাছে।আর ও এড্রেস টাও,,,,,,,(বলতে না বলতেই)
ইফতিঃ হিয়া আপনার কাছে!!!😲আর আমি ওকে কোথায় কোথায় খুজে মরছি। আচ্ছা আপনারা এখন কোথায়??
মিসকাঃ এড্রেসটা বললাম,,,,,,
ইফতি ঃ আপনি ওয়েট করুন আমি এখনই আসছি,,,
মিসকাঃ আচ্ছা ঠিকাছে
( এতোক্ষন ভয়ে ভয়ে কথাগুলো বলছিলাম)
হিয়াঃ কি বললো বাবাই?😢
মিসকা ঃ বাবাই বললো এখনই আসছে তোমায় নিতে।আচ্ছা তোমার ক্ষুধা লাগে নি?
হিয়া ঃ না 😞
মিসকাঃ আমার না ভিষন ক্ষুধা পাইছে😔কিছু খাবো চলো,,, তুমি না খেলে আমিও খাবো না
হিয়াঃ তাহলে চলো,,,
(পাশেই রেস্টুরেন্ট ছিলো সেখানে গিয়ে দুজনে ২ টা বার্গার আর কোক খেলাম। সাথে ফুচকা আর পাশেই ওর ডগিটা বসে আছে🐕)
।
হিয়াঃ আন্টি তুমি না খুব ভালো ( আমার গালে ছোট দুটি হাত দিয়ে ধরে বললো)
মিসকাঃ তাই,,,,,,😊,তুমিও খুব ভালো লক্ষি একটা মেয়ে
হিয়াঃ জানো আন্টি আমি মাম্মাম কে খুব মিস করি৷কিন্তু আজ তোমার কাছে থেকে মনে হচ্ছে আমি আমার মাম্মাম এর কাছে আছি,,,,( গালে একটা চুমু দিয়ে)
মিসকাঃ( আমি চুপচাপ ওর কথাগুলো শুনলাম আর কেনো জানি না চোখের কোনে পানি জমা হয়ে গেলো😔)
হিয়া ঃ আচ্ছা বাবাইয়ের তো আসার সময় হয়ে আসছে
মিসকাঃ হুম এখন তো তুমি বাড়ি চলে যাবে
( এর মধ্যেই ফোনটা বেজে উঠলো)
ইফতিঃ হ্যালো,,,,,, কোথায় আপনি??
মিসকাঃ স্যার,,, আপনি এসে গেছেন?
ইফতিঃ না আসলে কি আপনার কাছে জিগ্যেস করছি? আজব তো
মিসকাঃহুম আসছি ( বজ্জাত একটা এভাবে কেউ বিহেভ করে (মনে মনে)
হিয়াঃ আন্টি তুমি মুখটা এমন করে রেখেছো কেন? তোমায় হাসলেই সুন্দর লাগে😊
মিসকাঃঃ একটু মুচকি হাসি দিলাম ( আসলে ওকে দেখলে এমনিতেই মন ভালো হয় যায়)
এবার চলো মি. বজ্জা,,,,,,,😷না মানে তোমার বাবাই এসে গেছে,,,,
(আমি হিয়ার হাত ধরে সামনে এগোতে লাগলাম। তখন দেখি একজন ছেলে গাড়ির সামনে দাড়িয়ে আছে,,,,,,৬ ফুট লম্বা হবে গায়ের রং ফর্সা,দেখতে বেশ হ্যান্ডসাম। কালো সু,নীল ব্লেজার, হাতে ঘড়ি,চোখে কালো চশমা সব মিলিয়ে মি. পার্ফেক্ট 👌👌 এমন সময় হিয়া বাবাই বলে উঠলো আর আমার হাত শক্ত করে ধরে রাখলো,,,,,,,বুঝলাম এটাই মি. ইফতি)
( আচ্ছা এতো হ্যান্ডসাম ছেলে কি কখনও উরনচন্ডির মতো বিহেব করতে পারে 🤔🤔মনে মনে)
হিয়াঃ আন্টি তুমি আমার সাথে যাবে আমাদের বাসায়
ইফতিঃ তোমাকে কতোবার বলেছি একা কখনও বাহিরে বেরোবে না,,,,,, একটা কথাও কানে যায় না তোমার?😠
( মি. ইফতি হিয়ার দুই সাইডে দুই হাত দিয়ে ধরে ধমক দিয়ে কথা গুলো বলছে।আর হিয়া ভয়ে চোখ বন্ধ করে আমার হাত আরো শক্ত করে ধরে আছে )
মিসকাঃ আসলে ছোট মানুষ তো তাই হয়তো বুঝতে পারে নি।।
তাই বলে এই টুকু বাচ্চার সাথে এমন ভাবে কথা বলছেন কেন?😡
ইফতিঃ হিয়ার হাত ছেড়ে চোখ রাঙিয়ে মিসকার দিকে তাকালো
মিসকা ঃ আমার ভয়ে গলা শুকিয়ে আসছিলো। মনে হচ্ছে কাচাঁ গিলে খাবে
ইফতিঃ আপনার তো সাহস কম না আপনি আমার সাথে এভাবে কথা বলেন। আপনার কাছ থেকে শিখতে হবে আমার কিভাবে কথা বলতে হবে ( কথাগুলো বলছে আর এক পা করে এগোচ্ছে)
মিসকাঃ না মা,,মানে আসলে আ,,আমি ঐভাবে কথা গুলো ব,,,,বলতে চাই নি। ও, ভ,,,,ভয় পাচ্ছিল তা,,,তাই আরকি।( এবার থেমে গেলো)
ইফতিঃ আপনি ওকে এত্তক্ষন কেয়ার করেছেন বলে কিছু বলল্লাম না তা না হলে
(এই ফাকে হিয়া আমার কাছে এসে আমার পিছনে লুকিয়ে গেলো)
মিসকাঃ হিয়া তুমি ভয় কেনো পাচ্ছ।দেখ তোমার বাবাই এখন তোমার বাসায় নিয়ে যাবে তোমাকে। লক্ষী সোনা ভালোভাবে থেকো কেমন।😊
হিয়াঃ তুমি চলো আন্টি তুমি না গেলে আমিও যাবো না, ( কান্না করে দিলো,)
(মিসকাঃ ওর এমন বায়নাতে রাজি না হয়ে পারলাম না। কিন্তু ঐ উরনচন্ডি, বদমেজাজি টার সাথে যেতেও ইচ্ছা করছিলো না। তবুও কি আর করার😩)
মিসকাঃ আসলে ও অনেক ভয় পেয়ে আছে তাই বলছিলাম যদি কিছু মনে না করেন আমি আপনার সাথে মানে আপনাদের সাথে যেতে পারি???( খুব ভয়ে কথা গুলো বললাম)
ইফতিঃ হুম, গাড়িতে উঠুন,,,,,
( মিসকা গাড়িতে উঠে হিয়াকে কোলে নিয়ে বসেছে।আর ভাবছে এই রাগি বজ্জাত টা কি একটু ভালো করে কথা বলতে পারে না নাকি??😒হিয়াটা এজন্য ই এতো ভয় পায়। বাংলা ৫ এর মত মুখটা করে রেখেছে 😏)
(হিয়াঃ এখন হিয়া হেসে হেসে আমার সাথে কথা বলছে গল্প করছে আর আমিও ওর সাথে তাল মিলিয়ে হাসছি। আবার মনে মনে ভয়ও হচ্ছে মি. বজ্জাত গোমড়ামুখোটাকে,,,,,,,,,, মাঝে মাঝে আড় চোখে আমাদের দিকে দেখছে)
হিয়া ঃ এইতো দেখো আন্টি আমরা বাসায় চলে আসছি।
মিসকাঃ দেখলাম বড় একটা গেটের সামনে গাড়ি থামলো। সাথে সাথে দাড়োয়ান গেট খুলে দিলো আর আমরা ভিতরে ঢুকছি। ভিতরে ঢুকতেই আমার চোখ সানাবরা হয়ে গেলো
চলবে,,,