প্রায়ভেট_টিচার♥,পর্ব_৪
লেখক_Ananta Sanny
ইকরা মনে মনে বলল…প্লিজ একবার পালিয়ে দেখো। তোমার ভালর জন্যই সব ছেড়ে রেখে আসছি আমি। ইকরার কথা গুলো অনন্ত শুনতে পায় না। অনন্ত চলে যাওয়ার পর ইকরা বাইরে দাড়িয়ে উসপিস করছে আসছে না কেনো???
একটু পর অনন্ত আসলো। হাতে কোনো ব্যাগ নেই….
-আপনার ব্যাগ কই??(ইকরা)
-দেখেন আমার যাওয়া ঠিক হবে না। আপনি বাসায় চলে যান (অনন্ত)
-………..(ইকরা রাগে ফুলছে)
-দেখেন রাগ করে কাজ হবে না। আপনার একটা সুন্দর ভবিষ্যৎ আছে। আর আমাকে ভালবাসেন তাই কি হইছে?? ভালবাসলেই কি আমার সাথে সবসময় থাকতে হবে?? সব কষ্ট ভাগ করে নিতে হবে??
-দেখ অনেক কথা বলছিস আর একটা কথাও তুই বলতে পারবি না। আমি বাসা থেকে একবারে চলে আসছি। আমি এখান থেকে গেলেও বাসায় আমি ফিরবো না
-কই যাবেন??
-মরবো
-না
-না কেন?? তোর কোনো সমস্যা?? তুই তো ভালবাসিস না আমাকে
-কে বলছে??
-আমি বলছি
-ভাল না বাসলে কি আমি আপনাকে বাসায় ফিরে যেতে বলতাম???
-আর তোকে ভালবাসি বলেই তোকে নিয়ে পালাচ্ছি।
-পালিয়ে কি হবে??
-আগে তুই ব্যাগ নিয়ে আয় বলছি
অনন্তকে অনেক জোড়াজুড়ির পর ব্যাগ নিয়ে আসলো….
-এইতো লক্ষী ছেলে একটা (ইকরা)
-কই যাবেন এখন??(অনন্ত)
-আমি বাসা থেকে ৫ লাখ টাকা নিয়ে আসছি…শহর থেকে দূরে থাকব আর তোমার চিকিৎসা করাবো
-শহর থেকে দূরে কোথায় থাকবে?? আর কোথায় চিকিৎসা…
-ওই তোমার কিচ্ছু চিন্তা করতে হবে না। আমি সব ব্যাবস্থা করেই রাখছি
-আপনি আমার জন্য এত করছেন কেনো??
-তা জানি না। শুধু জানিইইই…
-কি??
-ভালবাসি
-…..চুপ চুপ আর কথা না এখন চলো
ইকরা অনন্তকে নিয়ে শহর থেকে কিছুটা দূরে একটা গ্রামে গেলো। আর সেখান একটা বাড়িতে তারা গেলো..
-এটা কোথায় এলাম?? (অনন্ত)
-আমাদের গ্রামের বাসা। আগে আমরা এখানেই থাকতাম(ইকরা)
-আপনাদের বাসা থেকে পালিয়ে আপনাদের বাসায় আসলাম! এটা কেমন পালানো!
-পালায় নি তো
-তাহলে আপনি যে বললেন পালিয়ে আসছি
-ওইটা মিথ্যা বলছি
-তাহলে সত্যি কোনটা??
-শোনো তাহলে…তোমার সাথে কথা বলার পর আমি বাসায় যাই। বাসায় গিয়ে আব্বু আম্মুকে আবার ব্যাপার টা বুঝিয়ে বলি। তখন তারা কি বলল যানো??
-কি বলছে??
-আমি তাদের মেয়ে না
-কিহহ!!
-হুমমম
-তাহলে আপনি..
-আমাকে তারা হাসপাতাল থেকে কিনেছিলো। সে যাই হোক বাদ দাও এসব
-তারপর তারা কি বলল আপনাকে??
-আমাকে বলল যে তোমার জন্য আমার সম্মান ডুবাতে পারব না। তুমি পারলে তার সাথে চলে যাও
-তারপর
-তারপর আর কি, ব্যাগ গুছিয়ে সোজা তোমার কাছে
-আর টাকা পেলেন কোথায়?? আর এই বাড়িটা??
-চেয়ে নিয়েছি। আর উনারা একবারে ফেলে তো দিতে পারে না। মান সম্মান এর ভয়ে এইরকম করল। হুহ
-আমার জন্য আপনার আজ এই অবস্থা। আমাকে আগে বললে আমি আসতামই না
-হ্যা তোমাকে আমি ভালভাবেই চিনি তাই সব মিথ্যা বলেছি
-হুমমমম
হঠাৎ করে ইকরা কান্না শুরু করলো।
-আরে কান্না করছেন কেনো??(অনন্ত)
-আমার বাবা মা কেউ নেই। আপন কেউ নেই (ইকরা এটা বলে জোড়ে জোড়ে ন্যাকা কান্না করছে)
-আমি আছি তো এখন আপনার পাশে
-পাশে থাকলে তো হবে না
-তাহলে??
-বুকে জায়গা দিতে হবে
-…….(অনন্ত চোখ বড় বড় করে ফেলছে)
-কি হলো??
-না কিছু না
-ওইখানে জায়গা দিবা না??
-হুমম আসেন
ইকরা অনন্তকে জড়িয়ে ধরতে আবার থেমে গেলো….আর বলল
-নাহ হবে না(ইকরা)
-কি হবে না??(অনন্ত)
-কিছুই হবে না। তোমার বুকে আমার জায়গা হবে না
-কেনো??
-তুই এখনও আমাকে আপনি করে বলতেছিস। তাহলে আমি তোর বুকের মধ্যে কিভাবে যাবো
-তাহলে তুমি বলতে হবে??
-ন্যাকামো করনে কেনো জানেন না
-আমি কোনো মেয়েকে তুমি করে বলি নি। কেমন যেনো লাগে
-বউ এর সাথে তুমি বলতে তোর কেমন যেনো লাগে তাই না??
-বউ!!
-হ্যা কয়েকদিন পর তো বি বি বিয়ে হবে আমাদের
-………
-ওই কি ভাবছো??
-ভাবছি বউ এখনো কেনো তার জায়গা টা নিচ্ছে না
-ওরে দুষ্টু বর…. (ইকরা অনন্ত কে জড়িয়ে ধরলো
-এই স্টিক ছাড়ো তো এখন থেকে আমি তোমার স্টিক (ইকরা)
-তাই??
-হুমম তাই তো
-তা কেমন লাগছে এখন
-খুবই ভালো
-কেনো??
-কেনো আবার প্রিয়জন এর বুকে আছি তাই
-হুমমম
-তোমার কেমন লাগছে গো??
-বলে বোঝাতে পারবো না কেমন লাগছে
-কেনো??
-এরকম ভালবাসা পাই নি তো তাই
-পাগল একটা
-হুমমম
-এখন কি এভাবে বাইরে দাড়িয়ে থাকবে?? ঘরে যাবে না??
-হুমম চলো
ঘরে প্রবেশ করতে করতে…ইকরা বলল
-শোনো এখন তো রান্না করা সম্ভব না। আমি রাতের জন্য কিছু খাবার এনেছি। ওগুলোই খাবো সকালে রান্না করবো ঠিক আছে??(ইরা)
-আচ্ছা ঠিক আছে
-আর হ্যা এগুলো গুছিয়ে নেই। ওপাশে বাথরুম আছে তুমি ফ্রেস হয়ে আশো। তুমি আসলে আমি যাবো ঠিক আছে??
-আচ্ছা….
ইকরা আর অনন্ত রাতের খাওয়া শেষ করে। আর এদিকে অনন্ত মনে মনে চিন্তা করে একসাথে তো শোয়া যাবে না। মেয়েটা যে কি করে আল্লাই যানে…
-এই কি ভাবছো??(ইকরা)
-না কিছু না (শুভ)
-তাহলে চুপ হয়ে একভাবে অন্যদিকে তাকিয়ে আছো যে!
-ভাবছি যে আমি ঘুমাবো কোথায়?? আর তুমি ঘুামবে কোথায়??
-তুমি এখানে ঘুমাবে আর আমি এ
-না
-পুরোটা বলতে দাও
-হুমম বলো
-এখানে ঘুমাবো না। পাশে আর একটা রুম আছে ওইখানে ঘুমাবো
-হুমম ঠিক আছে।
-আচ্ছা আমার একদম কাছে এসে আমার দিকে ঘুরে বসো
-কেনো??
-যা বলছি তাই করো
-হুমমমম তারপর
-আমি তোমাকে ভাল করে দেখবো। এতদিন একটু একটু করে দেখে মন ভরে নি। আজ মন ভরে দেখবো
-হুমম দেখো
ইকরা অনন্তর চোখের দিকে একভাবে তাকিয়ে আছে….
-এই একটা কথা বলি (ইকরা)
-হুমম বলো(শুভ)
-তোমার ঠোঁটে একটা কিস করি
-নাহহহহ
-কেনো??
-এখন না
-এখনই। আর আমারই তো সব
-তাও এখন না
-তাহলে কখন বিয়ের পর
-ওকে ওকে লাগবে না এখন। এহহহ আসছে
-এখন ঘুমাও অনেক রাত হইছে
-হুমম তুমিও যাও ঘুমাও
-ওকে
অনন্ত শুয়ে পড়লো ইকরা সব কিছু ঠিক ঠাক করে দিলো। আর অনন্তর কানের কাছে গিয়ে বলল
-তুই ঘুমানোর পর রাতে এসে ঠিকই দিয়ে যাবো(ইকরা)
-……..(অনন্ত কিছু না বলেই তার ঠোঁট টা ইকরার ঠোঁটের সাথে মিলিয়ে দিলো)
-এখন যাও ঘুমাও(অনন্ত)
-হুমম থ্যাংক ইউ (ইকরার চোখে পানি)
-এই কান্না করছো কেনো??
-এমনি সুখে কান্না করছি
-পাগলি একটা যাও ঘুমাও
তারপর ইকরা চলে গেলো। পরদিন সকাল বেলা… ইকরা ঘুম থেকে আগে জেগে উঠলো…সে উঠে অনন্ত কাছে এলো। এসে দেখে অনন্ত বালিস ছেড়ে এক হাতের উপর ঘুমাচ্ছে…
-এই(ইকরা ডাকলো)
-……
-এই যে স্যার
-উমমমম
-উমম কি উঠতে হবে না??
-সকাল হইছে??
-না একটু পর হবে। উঠো
-হুমম উঠছি। পা টা খুব ব্যাথা করছে
-একটু সহ্য করো আজ থেকেই চিকিৎসা শুরু হয়ে যাবে
-হুমমম
-এখন যাও ফ্রেশ হয়ে আসো
-আচ্ছা….
অনন্ত গেলো ফ্রেস হতে…ইকরা তার রুমে যাচ্ছিলো তখন অনন্তর ফোনে একটা ম্যাসেজ আসে….(জান কই তুমি?? কেমন আছো??)
ইকরা ম্যাসেজ টা দেখে চোখ কাপালে উঠে যায়। রাগ করে সেখানেই বসে পরে। একটু পর অনন্ত আসে…
-এখনো যাও নি??(অনন্ত)
-তুই এমন করলি কেন??(ইকরা)
-কি করছি
-এইটা কি???
(অনন্ত ম্যাসেজ টা দেখলো)
-আমি তো চিনি না
(অনন্তর কথা শুনেই ইরা মোবাইলে দিয়ে শুভর গালে ঠাসসসস একটা থাপ্পড় মারল)
-বেইমান কুত্তার বাচ্চা (ইকরা)
-না শোনো আমি তো তাকে চিনি না
-এতদিন মরিচিকার পেছে ছুটছিলাম? ছিহ…
-……….(অনন্ত কিছু বলছে না তার গাল বেয়ে রক্ত পড়ছে)
ইকরা অনেক গালা গালি করছে। হঠাৎ আবার
-টুংটুং (ম্যাসেজ আসলো। ইকরা ম্যাসেজটা দেখে অনন্তর দিকে তাকায়। অনন্ত আরও ভয় পায়)
-আমি সত্যি চিনি না (অনন্ত কান্না করে বলে)
(ইকরা আবার ফোন এর দিকে তাকালো।)ম্যাসেজে লেখা ছিলো সরি ভুলে চলে গেছে।
(ইকরা বুঝতে পারলো তার এত রাগ দেখানো টা একদমই উচিত হয় নি)
ইকরা বলল…
-আ আ আমি বুঝতে পারি নি (ইকরা হাটু গেড়ে বসে পড়লো)
.
চলবে