#পূর্নিমার_চাঁদ_জানে_তুমি_আমার
#লেখনীতে:মাইশা চৌধুরী
সূচনা পর্ব
ফুপাতো ভাইয়ের রুমে ঢুকে একটা মেয়ে আর তাকে এমন অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখবো ভাবিনি।তারা দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরে কিস করছে।আমি জুস নিয়ে এসেছিলাম রেহান(ফুপাতো ভাই) ভাইয়ের জন্য।
কিন্তু গিয়ে এমনটা দেখে বেরিয়ে এলাম রুম থেকে।
আমি সারা আহমেদ মিথি। এবার মেডিকেলে ভর্তি হয়েছি।আম্মু আব্বু চট্টগ্রামে থাকে।আমি পড়াশুনা করার জন্য এখানে এসেছি ঢাকায়।আর রেহান ভাই এবার বিদেশ থেকে পড়াশুনা শেষ করে এসে নিজের বিজনেস শুরু করেছেন।তবে সেটা সম্পূর্ণ দেখাশুনা করে রোহান ভাইয়া।রোহান হলো রেহান ভাইয়ের জমজ ভাই।ফুপির ২ ছেলে ১ মেয়ে। মেয়ের নাম অর্পি।অর্পি আপু আমার সাথে অনেক ফ্রেন্ডলি।তবে রেহান ভাই তেমন একটা পছন্দ করে না বলে আমার মনে হয়।কিন্তু কেনো সে কারনটা আমার অজানা। আসার পর থেকেই সবার সাথে ভালো বিহেভ করলেও আমার সাথে রুড ব্যবহার।
আমাকে এভাবে রেহান ভাইয়ের রুমের বাহিরে দাড়িয়ে থাকতে দেখে অর্পি আপু এসে বলে,,
“কি রে মিথি এভাবে ভাইয়ার রুমের সামনে দাড়িয়ে আছিস কেনো চল ভিতরে চল।”
“না আপু তুমি যাও।আমাকে পড়তে বসতে হবে।”
আমি আমার রুমে রুমে চলে এলাম।অর্পি আপু রেহান ভাইয়ের রুমে গেলা।ফুফাকে আমি আঙ্কেল ডাকি।ছোটবেলা থেকে আঙ্কেলই ডাকা শিখেছি।
আঙ্কেল জানেনা যে রেহান ভাই আসার সময় এই মেয়েটাকে সাথে করে এনেছে।জানলে রেহান ভাইকে বাড়ি থেকে বের করে দিবে।আঙ্কেল এসব একদম পছন্দ করেনা।কাল রেহান ভাইকে এয়ারপোর্ট থেকে রিসিভ করতে মামি আর অর্পি আপু গিয়েছিলো আঙ্কেল কোনো এক কাজে যেতে পারেনি।আর আমি ছিলাম মেডিক্যাল কলেজে।
আমার ভাবনার মাঝেই দেখি রোহান ভাইয়া আমার মাথায় একটা চাটি মারলো।
“কিরে মিথিলার বইন মিথি একা একা বসে কি করিস হুম?”
“রোহান ভাই আমার কোনো বোন নেই তুমি যানো।”
“কেনো নেই বল তো?থাকলে আজ আমাকে অবিবাহিত থাকা লাগতো না।”
আমি রোহান ভাইয়ের কথায় হেসে দিলাম।
“চল খেতে ডাকছে তোকে।”
“আঙ্কেল আসছে?”
“হুম অনেকক্ষণ আগেই আসছে। তাই তো ওই পেত্নী নিজের রুমে বেরুবে না আজ আর। শান্তি। চল তো তুই।আমি গেলাম তারাতারি আসবি।”
আমি মাথা নাড়িয়ে সায় দিলাম।এ বাড়িতে ফুপি আর রেহান ভাই ছারা কেউ নিধিকে(ওই মেয়েটা) পছন্দ করে না।
খাওয়ার টেবিলে যে যার মতো বসেছি।
রেহান ভাই সবার পরে এলেন।আর এসেই আমার পাশের সিটে বসে পড়লেন।খাওয়া শুরু করলাম সবাই।
খাওয়ার মাঝেই ফুপি আঙ্কেলকে বলল,,
“শোনো না বলছি কি আমার এক বান্ধবীর মেয়ে আছে নিধি।ওকে কিছুদিনের জন্য এ বাড়িতে আনবো।তুমি না করবে না কিন্তু। ”
“কি দরকার? আর এতো বড় বড় ছেলে আছে বাড়িতে।একটা অচেনা মেয়ে বাড়িয়ে না আনলেও কি?আনতে হবে না।”
ফুপির অনেক জোড়াজুড়িতে রাজি হয় আঙ্কেল। তবে সেটা শুধু ৩ দিনের জন্য।৩দিন পর চলে যেতে হবে ওই মেয়েকে।আমি, অর্পি আপু,রোহান ভাই একে অপরের মুখের দিকে তাকিয়ে আছি।
খাওয়া শেষে যে যার রুমে গেলাম।আমি রুমে এসে দেখি রুম অন্ধকার। আজব আমি তো লাইট অফ করিনি।তাহলে? আমি লাইট অন করতে গিয়ে কারো সাথে ধাক্কা খেয়ে বেডে পরে গেলাম।
রোহান ভাই আমার নিচে পরেছেন।
“এই মিথি তুই ঠিক আছিস?”
“হ্যা।”
“তো উঠ মুটকি একটা।বইন তুই কতো কেজি হবি? ১০০?”
আমি রেগে গেলাম। উঠতে যাবো ওমনি আবার পড়লাম।তখনই লাইট অন হলো।দরজার দিকে তাকিয়ে দেখি রেহান ভাই দাড়িয়ে আছেন।
“বাহ এখানে তো প্রেমলীলা চলছে। আমি এসে ডিস্টার্ব করলাম।সরি সরি।”
দাতে দাত চেপে কথা গুলো বলে চলে গেলেন রেহান ভাই।
আমি উঠে দাড়ালাম। কান্না পাচ্ছে।এমনি একটা দোষ দিয়ে গেলো। রোহান ভাই আমার দিকে তাকিয়ে বলল,,
“মন খারাপ করিস না।তুই তো জানিসই দেশের বাহিরে পড়তে গিয়ে ও নষ্ট হয়ে গেছে।বাড়িতে এক মেয়ে এনে তুলেছে।যে কি না শর্ট ড্রেস ছাড়া পড়ে না।কাল থেকে তো সবার সামনেই ঘুরবে ওই মেয়ে মন চায় চর মেরে সোজা করি।”
“থাক রোহান ভাই আমি কিছু মনে করিনি।”
“করবিও না তুই তো আমার ছোট বোন।কাল তোকে আর অর্পিকে নিয়ে শপিং এ নিয়ে যাবো।
বলে রোহান ভাই চলে গেলেন।আমিও বিছানা গুছিয়ে জানালার কাছে দাড়ালাম।৯তলার উপর থেকে নিচে দেখতে আমার বেশ ভয়ই করে।তবে আজ করছে না।মন খারাপ ভিষন তাই হয়তো ভয়টা কাজ করছে না।
আম্মু আব্বুর কথা মনে পড়ছে।সন্ধ্যায় কথা হয়েছিলো।
আমি রুম থেকে বের হয়ে কিচেনে এলাম।
পানি নিতে।পানি নিয়ে লাইট অফ করে সামনে তাকাতেই দেখি এক ছায়ামুর্তি।যে আমার দিকেই এগিয়ে আসছে।
চলবে…!!!
(কেমন লাগছে জানাবেন।আপনাদের মন্তব্যের উপর নির্ভর করবে গল্পটা কেমন হবে।ধন্যবাদ।)