#পাগল_প্রেমিকা
#পর্ব_১২,১৩,১৪
#sharmin_akter_borsha
১২
রিমন বৃষ্টির আইডিটা নষ্ট করে দেয় অনেকবার রিপোর্ট দিয়ে.. আইডিটা বৃষ্টির অনেক প্রিয় ছিল, পরে যখন বৃষ্টি আইডিতে লগ ইন করতে যায় কিন্তু ঢুকতে পারে না। আইডি ডেসিবল দেখে বৃষ্টি প্রচুর কাঁদে অনেক প্রিয় ছিল আইডিটা যার জন্য বৃষ্টি নিজেকে সামলাতে পারে না। বৃষ্টির বুঝতে বাকি থাকে না আইডিটা ডেসিবল কে করেছে আইডি ডেসিবল করার পেছনে গোটা টাই রিমনের হাত ছিল। বিছানায় মুখ গুঁজে কাঁদতে থাকে বৃষ্টি কাদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পরে। অনেক চেষ্টা করে আইডিটা ফেরত পাওয়ার কিন্তু ওর আইডি কার্ড ছিলো না তাই আনতে পারেনি পুরো দুই দিন সায়েম ভাই আইডির পেছনে সময় দেয় বেক আনার জন্য অনেক কিছু করে কিন্তু ব্যর্থ হয়। বৃষ্টি সিদ্ধান্ত নেয় ও আর কখনো রিমনের সাথে কথা বলবে না আর আইডি নষ্ট করার জন্য রিমনকে কখনো ক্ষমা করবে না।
একদিকে আইডি চলে যাওয়ার দুঃখ অন্য দিকে রিমনের সাথে বিচ্ছেদের কষ্ট বৃষ্টি কিছুতেই মেনে নিতে পারছিল না। শুধু কেঁদেই যাচ্ছিল বৃষ্টির দুইটা আইডি ফেইক আইডি থাকলেও অরিজিনাল তো অরিজিনালই হয় । বৃষ্টি কে এভাবে দেখতে বর্ষা রিমার একটুও সহ্য হচ্ছিল না। তাই বন্ধুদের সাথে প্লেন করে বৃষ্টি কে নিয়ে বাহিরে পিকনিক মানাতে যাবে। বৃষ্টি শুরুতে রাজি হয় না তবে কাব্য নাহিদ অপূর্ব ওরাও যাবে ওরা তিনজন জোর করতেই বৃষ্টি যেতে রাজি হয়। সন্ধ্যার পর বাড়ি ফিরে আসবো সবাই। রেস্টুরেন্ট থেকে কাব্য নাহিদ অপূর্ব মাহিম নীরব ওরা ফাস্টফুড নিয়ে নেয়। আর আমাদের রিমা ও ওর গিটার ছাড়া কোথাও যেতে পারে না গিটারও বাড়ি থেকে আসার সময় নিয়ে আসে। আমরা দুপুরের পর বাড়ি থেকে রওনা দেই কিন্তু সবকিছু গুছিয়ে নিতে সময় লাগে আমাদের পৌছাতে অনেকটা সময় লেগে যায়। আমরা একটা মাঠে যাই এটা অনেক বড় মাঠ এক পাশ থেকে আরেক পাশ দেখা যায় না এখানে আবার মাঠ থেকে কিছুটা দূরে শুধু গজারী বাগান… অনেক বড় গন বাগান বলতে গেলে জঙ্গল… আমরা সবাই মিলে মাঠে বসে পরি.. এরই মধ্যে সন্ধ্যে হতে চলেছে আমরা এখনও বসে আড্ডা দিচ্ছি কিন্তু বৃষ্টির মন উদাসী এদিকে কোনো খেয়ালই নেই ওদের আনা ফাস্টফুড ও মুখে দেয়নি বৃষ্টি আর কেউ না বুঝলে জুম্মা বর্ষা রিমা বৃষ্টির অবস্থা জানে তাই ওর প্রতি কষ্ট হচ্ছে। এদিকে সবাই জোর করছে বৃষ্টি কে একটা গান গাওয়ার জন্য এমন টাইমে গান না হলে কি চলে নাকি? বর্ষা রিমা জুম্মা বৃষ্টি কেউই রাজি হয় না। কিন্তু কাব্য জেদ করে বৃষ্টি গান না গাইলে কেউ বাড়ি যাবে না। সব কিছুর পর বৃষ্টি গান গাইতে রাজি হয়।
রিমা হাতে গিটার নিয়ে গিটারে সুর তুলে.. গিটারের সুরে বৃষ্টি গান গাইতে শুরু করল….
Music….🎶🎶🎶
সেই তুমি কেনো আজ এতো অচেনা হলে
সেই তুমি কেনো আমাকে দুঃখ দিলে🎶🎶🎶
কেমন করে এত অচেনা হলে তুমি🎶
কিভাবে এত বদলে গেলে এই তুমি🎶🎶
ও বুকেরই সব কষ্ট দু’হাতে সরিয়ে চলো বদলে যাই..
তুমি কেনো বুঝোনা তোমাকে ছাড়া আমি অসহায়
আমার সবটুকু ভালোবাসা তোমায় ঘিরে আমার অপরাধ ছিলো যতটুকু তোমার কাছে,
তুমি ক্ষমা করে দিও আমায়,🎶🎶🎶
কত রাত আমি কেঁদেছি বুকের গভীরে কষ্ট নিয়ে শূন্যতায় ডুবে গেছি আমি।
আমাকে তুমি ফিরিয়ে নাও,,,🎶🎶🎶
তুমি কেনো বুঝোনা তোমাকে ছাড়া আমি অসহায়
আমার সবটুকু ভালোবাসা তোমায় ঘিরে আমার অপরাধ ছিলো যতটুকু তোমার কাছে,
তুমি ক্ষমা করে দিও আমায়,🎶🎶
যতবার ভেবেছি ভুলে যাবো তারও বেশি মনে পরে যায়
ফেলে আসা সেই দিনগুলি ভুলে যেতে পারি না।🎶
তুমি কেনো বুঝোনা তোমাকে ছাড়া আমি অসহায়🎶
আমার সবটুকু ভালোবাসা তোমায় ঘিরে আমার অপরাধ ছিলো যতটুকু তোমার কাছে,🎶
তুমি ক্ষমা করে দিও আমায়,🎶
সেই তুমি কেনো আজ এতো অচেনা হলে🎶
(গানটা একটু এডিট করলাম গল্পের সাথে মিলানোর জন্য) সম্পূর্ণ গান বৃষ্টি শেষ করতে পারেনি তার আগেই ওর চোখে পানি চলে আসে। চোখের পানি জেনো কোনো বাধাই মানছিল না। দুই হাত দিয়ে চোখের পানি মুছতে মুছতে সবার কাছ থেকে উঠে চলে যায়।
সাথে সবাই বৃষ্টির পেছন পেছন চলে আসে এখনই মাগরিবের আজান দিবে এমন সময় এই জঙ্গলে থাকা মোটেও ঠিক না। সবাই গাড়িতে বসে বৃষ্টি কে জিজ্ঞেস করে কাঁদছে কেনো? তারপর বৃষ্টি সবটা সবাইকে বলে দেয়। শুধু জানতে পারে না কাব্য নাহিদ অপূর্ব ওরা ওদের বাইকে ছিল তাই জানতে পারে না। বাড়িতে আসার পর বৃষ্টি এটা মোটেও ঠিক করে নাই এটা ওর একটুও করা উচিত হয়নি।
চলবে….?
#পাগল_প্রেমিকা
#পর্ব_১৩
#sharmin_akter_borsha
________
বাড়িতে এসে বৃষ্টি ওর রুমে চলে যায় আর আবারও সব কিছু ভাঙচুর করে। বাহির থেকে আমরা অনেক ডাকাডাকি করি কিন্তু বৃষ্টি দরজা খুলে না। বাড়িতে বৃষ্টির আম্মু ছিলো না। সে তো অপূর্ব মানে ফুপির ফ্লাটে গিয়েছিল তখন ফুপি ডেকে ছিল.!
ওদের সাথে কাব্য বাড়িতে আসেনি কাব্য নীরবকে ওর বাইকের পেছনে বসিয়ে কোথায় জেনো চলে যায়। বর্ষা রিমা বৃষ্টি বাড়িতে ঢুকার পরপরই।
এদিকে অনেক বার ডাকাডাকি পরও বৃষ্টি দরজা খুলছে রুমের মধ্যেই জোরে জোরে কাঁদছে কেনো করলো ওর রাইটার বাবু ওর সাথে এমন কেনো করল এতো ভালোবাসার এই ফল বলছে আর কাঁদছে।
এদিকে বর্ষা আর রিমার এখন বৃষ্টির উপর প্রচুর রাগ উঠছে দু’জনেই জোরে দরজায় থাপ্পড় মারে আর ডাকতে থাকে। আরও কিছুক্ষণ পর বৃষ্টি দরজা খুলে দেয়। দরজা খুললে বর্ষা রিমা ঠেলে রুমে ঢুকে পরে আর সামনে তাকাতেই দু’জনের মাথায় আকাশ ভেঙে পরে পুরো রুমের জিনিস তো ছড়িয়ে ছিটিয়ে পরে আছেই সাথে রুমের ফ্লোরে রক্ত।
ফ্লোরে রক্ত দেখতেই রিমা বৃষ্টির দিকে তাকায়। বর্ষা সাথে সাথে রুমের দরজা আটকে দেয়। চোখ মুখ ফুলে আলু হয়ে গেছে কাঁদতে কাঁদতে মুখ থেকে চোখ সরিয়ে হাতের দিকে তাকিয়ে দেখে হাত থেকে রক্ত এখনো পরছে। বর্ষা ওর হাত দিয়ে বৃষ্টির হাত চেপে ধরে সাথে রিমাকে ফাস্ট টেজ বক্স নিয়ে আসতে বলে। অনেক রক্ত বেরিয়ে গেছে। অনেক খানিই কেটেছে হাতের ভেতরে সাদা মাংস দেখা যাচ্ছে। রক্ত জেনো থামার নামই নিচ্ছে না অনেক কষ্টে হাতে ব্যান্ডেজ করে দেয়। রক্ত পরাও বন্ধ হয়ে যায়। ফ্লোরের রক্তের দিকে একবার তাকিয়ে বর্ষা বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে ওর কাঁধে হাত রেখে বলল,,
কি করছিস কি তুই মাথা খারাপ হয়ে গেছে তোর পাগল হয়ে গেছিস নিজের হাত কাটছিস তুই বুঝতে পারছি তুই কি করছিস, তুই এইসব কেন করছিস ওই ছেলেকে ভালোবেসে যার তোর প্রতি নাই বিশ্বাস আর না বাসে তোকে ভালো তার জন্য তুই নিজের ক্ষতি করছিস ভালোবাসা ভালো কিন্তু ভালোবাসায় অন্ধ হওয়া বোকামি তুই এখনো কেনো বুঝছিস না ওই ছেলে শুধু তোর সাথে টাইমপাস করছে।
বর্ষার কথা শেষ হতেই বৃষ্টি কাঁদতে কাঁদতে বলল,, আমি ওকে ভালোবাসি ও না বাসলেও আমি বাসি আর নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসি অনেক বেশি ভালোবেসে ফেলছি, আমি থাকতে পারবো না ওকে ছাড়া আমার নিজেকে নিজের কাছে পাগল পাগল লাগছে আমি পাগল হয়ে যাবো ওকে ছাড়া আমি রাইটার বাবুকে ছাড়া থাকতে পারবো না আমার অনেক কষ্ট হচ্ছে বর্ষা। কথাগুলো বলে বৃষ্টি বর্ষাকে জরিয়ে ধরে বৃষ্টির কথা শেষ হতেই রিমা বলে।
কি সব পাগলামি করছি বৃষ্টি তুই যদি আমার থেকে বড় না হতি তাহলে এখন তোর এই কাজে তোর গালে ঠাসসস করে চড় বসিয়ে দিতাম। বৃষ্টি কে কথাটা বলে রিমা বর্ষার দিকে তাকিয়ে বলল, তুই তো ওর এক মাসের ছোট তুই তো ওকে কিছু বলতে পারিস কিছু বলছিস না কেনো ওকে? বর্ষা রিমার দিকে চোখ বড়বড় করে তাকাতেই রিমা চুপ হয়ে যায় আর বিছানার অন্য পাশে অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে বসে পরে। বর্ষা বৃষ্টি কে ওর থেকে ছাড়িয়ে আবারও বুঝানোর চেষ্টা করে কিন্তু বৃষ্টি সেদিকে পাত্তা না দিয়ে বিছানায় শুয়ে পরে। বর্ষা বৃষ্টির গায়ে চাদর টেনে দেয় এদিকে বৃষ্টি বালিশে মুখ গুজে কাদতে কাদতে ঘুমিয়ে পরে তারপর বর্ষা রিমা আবারও কাজের বেটির কাজ শুরু করে ফাস্ট ফ্লোরের রক্ত পরিস্কার করে তারপর রুমটা গুছায়। রুম ক্লিন করা হলে দু’জনেই বৃষ্টির মাথার কাছে বসে থাকে। বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে রিমা বলে. কাল বাড়িতে কি বলল যখন সবাই ওর হাত দেখে জিজ্ঞেস করবে কি হইছে ব্যান্ডেজ কেনো তখন আমরা কি বলবে? বর্ষা রিমার দিকে তাকিয়ে ওর কথাগুলো শুনে তারপর ওর দিকে তাকিয়ে বলে, কাল সকালে আবার একটা মিথ্যে বলতে হবে। আর সকালের টা সকালে ভাববো এখন ঘুমা। দু’জনই বৃষ্টির দুই পাশে শুয়ে ঘুমিয়ে গেলো। বৃষ্টির আম্মু রাতে খাবার খাওয়ার জন্য ওদের তিনজনকে ডাকতে আসে কিন্তু বর্ষা খাবে না বলে দেয় তিনজনের একজনও রাতে খায়নি। বৃষ্টির এমন অবস্থায় ওরা কি করে খাবে। সকালে ঘুম থেকে উঠে বৃষ্টি বর্ষা রিমাকে প্রমিজ করে আর কখনো রিমন এর সাথে কথা বলবে না।
ব্রেকফাস্ট এর জন্য ডাইনিং টেবিলে গেলে বৃষ্টি কে জিজ্ঞেস করে সবাই হাতে ব্যান্ডেজ কেনো?
বৃষ্টি কারো কথার কোনো উত্তর দেয় না কোনো রকম খেয়ে উঠে চলে যায়। কোই আর যাবে ছাঁদে গেছে বৃষ্টি চলে যাওয়ার পর বৃষ্টির আম্মু বর্ষা রিমাকে ভয় দেখিয়ে বলে হাতে ব্যান্ডেজ কেন? বর্ষা ওর চাচিকে বলে আসলে চাচি কাল রাতে বৃষ্টি আপেল কাটার সময় রিমা হঠাৎ বৃষ্টির উপর পরে যায় আর তখন ছুড়ি গিয়ে বৃষ্টির হাতের উপর লাগে আর হাত কেটে যায় । তারপর দু’জনেই সেখান থেকে কেটে পরে। সিঁড়ি দিয়ে উঠছে ছাদে যাওয়ার জন্য এদিকে রিমা বর্ষার পিঠে ঘুসি দিয়ে বলল, আমার নাম টাই ছিলো বলার আমি ওর উপরে গিয়ে পরছি আর কেটে গেছে৷ রিমার কথা শুনে সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে বর্ষা রিমাকে বলল, আর নয়তো কি বলতাম সত্যি কথা বলতাম যাতে পরে বৃষ্টি আমাকে ছাঁদ থেকে নিচে ফেলে দিক। সিঁড়ির উপর থেকে নামছিল কাব্য বর্ষার কথা শুনে কাব্য বলে। বৃষ্টি তোকে ছাঁদ থেকে কেনো ফেলে দিবে? কাব্যর ভয়েস শুনে বর্ষা রিমা অবাক হয়ে সিঁড়ির উপরের দিকে তাকালো তারপর
চলবে….?
#পাগল_প্রেমিকা
#sharmin_akter_borsha
#পর্ব_১৪
________
বৃষ্টি তোকে ছাঁদ থেকে কেনো ফেলে দিবে?
রিমা মুখ ফসকে বলেই দিচ্ছিল কাব্য কে সবটা রিমা কাব্যর কথা শুনে অন্য মনস্ক হয়ে বলল.
ভাইয়া ওই বৃষ্টি ওর হ… আর কিছু বলার আগেই বৃষ্টি রিমার পিঠে ঘুসি দিয়ে বলে। একদম চুপ কর তুই আমি বলছি কথাটা বলে বর্ষা কাব্যর দিকে তাকিয়ে কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলল, আসলে ভাইয়া আমাদের সাথে রাগ করে ছাঁদে চলে গেছে আমরা দু’জনে দুজনের হাত ধরে ছাদেই যাচ্ছিলাম। আর তুই সামনে এসে পরলি এখন সামনে থেকে সর..! কথাটা বলেই সাইড কেটে রিমার হাত ধরে টানতে টানতে বর্ষা চলে গেলো। ভ্রু কুঁচকে সন্দেহের চোখে কাব্য বর্ষার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে। বর্ষা রিমা যেতেই কাব্য বৃষ্টির আম্মুর কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করে বৃষ্টি অদ্ভুত আচরণ করছে কেনো কি হয়েছে? হুদ্দাই প্রশ্ন করে আর বৃষ্টির আম্মু গজগজ করে সব বলে দেয় ওর যে হাতে ব্যান্ডেজ কেটে গেছে সেটাও বলে কিন্তু রিমার উপরে পরায় বৃষ্টি হাত কেটেছে কথাটা কাব্যর হজম হচ্ছিল না।
এভাবে গায়ের উপর পরলেই হাত কাটে না ছুড়ি তে কি অত ধার ছিলো যে হাত কেটে যাবে কি ভাবছে কাব্য, কাব্য কে অন্য মনস্ক দেখে বৃষ্টির আম্মু ভ্রু নাচিয়ে কাব্যর দিকে প্রশ্ন ছু্ড়ে মারে কি ভাবছিস কাব্য?
কাব্যর চাচির ধ্যান ভাঙে আর বলে.. কিছু ভাবছি না বড় আম্মু আসছি আমি..! বলেই হনহনিয়ে বেরিয়ে গেলো। সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠছে৷ ওইদিকে রিমা বর্ষা বৃষ্টি কে পেছন থেকে জরিয়ে ধরেছে.!
কাব্য ছাঁদে এসে বৃষ্টি কে জিজ্ঞেস করে হাত কেটেছে কিভাবে, বৃষ্টি জাস্ট ইগনোর করে চলে গেলো বর্ষা রিমাও পেছন পেছন চলে গেলো।
কারণ এখানে থাকলেই কাব্যর জেরা করা শুরু হতো!
এদিকে সারাদিন সবাইকে বলতে বলতে বর্ষা রিমা শান্ত মানে (ক্লান্ত) হয়ে গেছে!
এদিকে এক দিন না যেতেই বৃষ্টি ওর অন্য আইডি দিয়ে রিকুয়েষ্ট পাঠিয়ে দেয় রিমনকে আর বর্ষা রিমাকে বলে না। কয়েকটা এসএমএস দিয়ে রিকুয়েষ্ট এক্সেপ্ট করতে বলে। সেও এক্সেপ্ট করে তারপর কয়েকটা বাজে কথা বলে যা এখানে লিখা আমার পক্ষে অন্তত সম্ভব না।
তারপর সেই আগের মতো পায়ে পড়ে বৃষ্টি রিমন এর সাথে কথা বলে। রিমন যথাসম্ভব দুরত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করে বৃষ্টির থেকে। আগের থেকে অনেক পরিবর্তন রিমনের মধ্যে বৃষ্টি লক্ষ্য করে কিন্তু কিছুই করার নেই তত দিনে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল বৃষ্টি রিমন এর প্রতি দূর্বল হয়ে গেছে রিমন ছাড়া বাঁচবে না এমন টাইপের ভালোবাসায় পরিনত হয়েছিল বৃষ্টির ভালোবাসা যে বৃষ্টি আগে হাসি খুশি থাকতো পুরো বাড়ি হাসি ঠাট্টায় মাতিয়ে রাখতো সে একটা ছেলেকে অন্ধের মতো ভালোবেসে ফুলের কলির মতো চুপসে গেলো। বৃষ্টি চাইলেও রিমন কে ভুলতে পারছিল না বারবার নিজের মনের কাছে হেরে গিয়ে রিমনের কাছে ফিরে যায়। রিমনের অবশ্য আগে বৃষ্টি কে ভালো লাগতো ওর সাথে কথা বলার আগ্রহ ছিলো কিন্তু যখন রিমন বুঝতে পারে বৃষ্টি ওর প্রতি দূর্বল তখন থেকেই শুরু হয় রিমনের অবহেলা বৃষ্টির প্রতি যার ফলে বৃষ্টি অন্তরে অন্তরে গুমড়ে মরছিলো। বৃষ্টি আসতে আসতে সবার থেকে নিজেকে আলাদা করে নিলো একলা থাকতে শুরু করল হাসা বন্ধ করে দিলো। কারো সাথে মিশতো না সারাদিন শুধু ফোন হাতে নিয়ে রুমের এক কোনায় বসে থাকতো। বর্ষা রিমার ব্যাপারটা স্বাভাবিক লাগেনি তাই ওরা দু’জন ঠিক করে সব কিছু কাব্য নাহিদ অপূর্ব কে বলবে। যেমন ভাবনা তেমনই কাজ ওরা দু’জন কাব্যর রুমে যায় কাব্য তখন একা ছিলো না ওর সাথে নাহিদ আর অপূর্ব ও ছিলো, বর্ষা রিমা দু’জন কে এক সাথে দেখে নাহিদ অপূর্ব ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করল।
” তোরা দু’জন একসাথে এখন এই রুমে কেন যা তোদের রুমে যা ”
নাহিদ অপূর্বর কথা শুনে বর্ষা মুখ ফুলিয়ে চলে যেতে নিলে রিমা বর্ষার হাত ধরে নেয়। ওদের দু’জনকে খাম্বার মতো দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে কাব্য ভ্রু নাচিয়ে রিমার দিকে প্রশ্ন ছুড়ে মারে।
” তোরা দু’জন কি কিছু বলবি নাকি শুধু শুধু চেহারা দেখাতে আসছিস? ”
কাব্যর কথা শুনে রিমা রাগে দাঁতে দাঁত চেপে বলে।
“চেহারা দেখানোর মানুষের অভাব নাই তোদের কে দেখানোর কোনো ইচ্ছাও নাই একটা ইমপোর্টেন্ট কথা ছিলো সেটাই বলতে আসছি..”
রিমার কথা শুনে অপূর্ব বিছানার উপর আরাম করে বসে হাতে চুটকি বাজিয়ে বলল।
“তা এতো ইমপোর্টেন্ট কথা তোরা দু’জন একা বলতে আসছিস তোদের দলের লিডার আফা কোই তাকে তেমন দেখছি ও কয়েকদিন যাবৎ ঘটনা কি.”
অপূর্বর কথা শুনে বর্ষা চোখ বড়বড় করে ওদের তিনজনের দিকে তাকায়। বর্ষার তাকানো দেখে ওদের আর বুঝতে বাকি থাকে না সত্যিই ঘটনা জটিল হয়তো জরুরি কথাই হবে আর নয়তো ডাইনি গুলা ওদের কাছে আসতো না। নাহিদ বর্ষার দিকে তাকিয়ে বলে।
“যা বলবি তারাতাড়ি বল আর বলে বিদায় হো আমাদের অনেক কাজ আছে”
নাহিদের কথায় ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে রিমা বল।
“জানি জানি কি কাজ করিস তোরা তিনজনে একসাথে”
রিমার কথায় অপূর্ব চোখ ছোটো-ছোটো করে বলল।
“কি জানিস তুই আমরা কি করি..”
অপূর্বর কথায় বিরক্ত হয়ে কাব্য ওদের সবাইকে চুপ হতে বলল আর বর্ষা রিমাকে রুমের মধ্যে আসতে বলল আর কি বলার জন্য আসছে সেটা বলতে বলল।
বর্ষা কাব্যর কথা শুনে রুমে ঢুকে দরজা আটকে দেয়। দরজা আটকাতে দেখে ওদের তিন জনের চোখ কপালে উঠে যায় আর ভ্রু কুঁচকে ওদের দু’জনের দিকে তাকিয়ে থাকে। বর্ষা রিমা হেঁটে দু’জনে সোফায় বসে ওদের ১০মিনিট ধরে চুপ করে বসে থাকতে দেখে কাব্য একটা ধমক দিলো।
কাব্যর কাছে ধমক খেয়ে রিমা ভয়ে মিশ্রিত কণ্ঠে বর্ষাকে বলল..
“তুই বল না মানে শুরু কর”
বর্ষা একবার রিমার দিকে তাকালো আরেকবার কাব্য, নাহিদ, অপূর্বর দিকে তাকিয়ে জিহ্বা বের করে ঠোঁট ভিজিয়ে নিলো তারপর এক দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বলতে শুরু করল সব শুরু থেকে এই পর্যন্ত যা যা হয়েছে কি কি করেছে বৃষ্টি সব কিছু (নেগেটিভ কথা বাধে সব)
বর্ষার কথা শেষ হলে কাব্য নাহিদ অপূর্ব তিনজনেই বর্ষা রিমাকে তিনটা জোরে ধমক দেয় ধমক খেয়ে বর্ষার চোখে পানি টলমল করতে লাগল। আর রিমা তো কেঁদেই দিলো। সাথে অপূর্ব তো বর্ষা রিমা কে মারার প্লেম করে বিছানা থেকেও নেমেছিল কাব্য নাহিদ অপূর্ব কে মাথা দিয়ে ইশারা করতেই পাশে ডেসিনটেবিলের সামনে থাকা টি টেবিল টায় লাথি মেরে বারান্দায় চলে যায়। এই সবের কারণ.. কাব্য নাহিদ অপূর্ব যতই বৃষ্টি বর্ষা রিমার পেছনে লেগে থাকুক না কেনো যতই জ্বালাক না কেনো বর্ষা রিমা বৃষ্টি ওদের তিনজনের কলিজা অনেক আদরের ছোট বোন আর এত কিছু হয়েগেছে ওরা এতদিন ওদের কিছুই বলেনি আর আজ এসে বলছে তাই অপূর্ব একটু বেশিই রেগে গেছে নাহিদ দুইচোখ ফেলফেল করে তাকিয়ে আছে বর্ষা রিমার দিকে আর ওরা দু’জনেই দুই হাত দিয়ে ওড়না শক্ত করে মুঠি বন্ধ করে ধরে ফ্লোরের দিকে তাকিয়ে আছে ওই হাল্কা শীতেও বর্ষা রিমার ঘাম জড়ছে। কাব্য সিঙ্গেল সোফায় বসে ছিলো দুই পা ছড়িয়ে দুি হাটুর উপর দুই হাতের কনুই রেখে দুই হাতের প্রত্যেক টি আঙ্গুল এক একটা আঙ্গুলের ভাজে ঢুকিয়ে হাত মুঠি বন্ধ করে থুতনির সাথে মিশিয়ে রেখে চোখ দু’টো ছোটো-ছোটো করে ভ্রু কুঁচকে ফ্লোরের দিকে তাকিয়ে আছে কিছু একটা ভাবছে যে কেউ দেখেই বলে দেবে। কিছুক্ষণ পর কাব্য মাথা তুলে বর্ষা রিমার দিকে তাকালো আর বলল।
“আমরা ওইদিন পিকনিক থেকে ফিরে আসার পর আমি সব কিছুই শুনেছি মাহিম আর নীরভের কাছে তসি তোদের ওইদিন বারবার জিজ্ঞেস করছিলাম হাত কিভাবে কাটলো তোরা তো বললি না যাই হোক এখনো দেরি হয়নি আমরা সবাই মিলে সাপোর্ট করলে নিশ্চয়ই বৃষ্টি আগের মতো হয়ে যাবে আর সারাদিন মোবাইল নিয়ে বসে থাকে যখন তোরা দু’জন নজর রাখ দেখ ও আবার ওই ছেলের সাথে কথা বলছে বা যোগাযোগ করেছে নাকি যোগাযোগ করলে আমাকে জানাবি বুঝেছিস তারপর আমরা কিছু একটা করবো এখন যা তোরা। ”
কাব্য কথা শেষ হলে বর্ষা রিমা মাথা নাড়িয়ে সোফা থেকে উঠে দরজার সামনে আসে দরজা খুলতে যাবে তখনই পেছন থেকে কাব্য আবারও ডাক দেয় রিমা, বর্ষা পেছনে ঘুরে তাকাতেই কাব্য বলল..
চলবে….?