নীলচে_তারার_আলো,পর্ব_৯
নবনী_নীলা
সবকিছু খুব সহজেই জোগাড় হয়ে গেছে। গ্রামের মানুষরা কাঠ কয়লা দিয়ে ওদের সাহায্য করেছে। আগুন জ্বালানো হয়েছে, তার চারপাশে গোল হয়ে সবাই বসে আছে। খাবারের ব্যবস্থা করতে নিপা আর রোহিত গেছে। এখানে মোট আট জন আছে। দিবা সবে ঘুম থেকে উঠেছে তাই চুপ করে বসে আছে। পাশে হিয়া বসে বসে হাই তুলছে। দিবাকে এলিয়েনটার কথা বলা হয় নি। ঘটনাটা কাউকে বলতে পারলে ভালো লাগতো তার।
প্রভা একপাশে বসে আছে নিরবে। হিয়া খেয়াল করলো প্রভা মেয়েটা খুব চুপচাপ থাকে। অপ্রয়োজনে কথাও বলে না। প্রভাকে খুব ভালো করে দেখলো হিয়া মেয়েটা নিজেকে যেনো শুভ্রের জন্যেই এমন পরিপাটি আর পারফেক্ট করে সাজিয়েছে।জিন্সের উপর স্কাই ব্লু শার্ট ইন করে পড়া আর উপরে ডাক্তারের অ্যাপ্রণ। চুলগুলো ঢেউ খেলানো বেশি বড়ো না হাতের কনুই পর্যন্ত। হয়তো এমনটাই শুভ্রের পছন্দ।
সবাই এদিক সেদিক ছুটছে, দিবা, হিয়া, প্রভা আর অধরা শুধু আগুনের চারিপাশে বসে আছে।
কিছুক্ষণপর একপাশে বসে অধরা গান ধরলো। এই মৌনতা তার ভালো লাগছে না। খোলা আকাশ চারিপাশে গাছপালা তার মাঝে গোল হয়ে বসে এমন ভাবে কোনোদিন কারোর গান শোনা হয় নি হিয়ার। খালি গলায় এমন বাংলা গানও অসাধারণ লাগছে তার কাছে। শুভ্র কোথাও নেই? হিয়া আশেপাশে একবার চোখ বুলিয়ে নিলো, নাহ্ নেই। এদিকে প্রভা বার বার ফোন করছে। সে কল শুভ্র ধরছে না।
এইসবের মাঝে হটাৎ একটা গাড়ি এসে থামলো তাদের ক্যাম্পের কাছাকাছি। সবাই একে অপরের মুখ চাওয়া চাওয়ি করছে। রাত কম হয় নি, এতো রাতে এমন পাহাড়ি এলাকায় ব্যাক্তিগত গাড়ি খুব কম দেখা যায়। অধরাও গান বন্ধ করে তাকিয়ে আছে। প্রভা আশেপাশে তাকিয়ে দেখলো শুভ্র ফোনে কথা বলতে বলতে তাদের দিকে আসছে।
শুভ্র ফোন নামিয়ে এদিকে আসতেই প্রভা বলে উঠলো,” এতক্ষণ কোথায় ছিলি?”
শুভ্র বললো,” এইদিকে নেটওয়ার্ক ছিলো না তাই পাহাড়ের উচুঁতে যেতে হয়েছে। আর ড্রাইভার জায়গাটা চিনতে পারছিলো না তাই বলে বলে দিতে হয়েছে।”
অধরা উঠে বললো,” তার মানে তুই চলে যাচ্ছিস?”
” ইয়েপ, তোরা এনজয় কর। আমার পক্ষে এইভাবে খোলা আকাশের নীচে রাত কাটানো ইম্পসিবল। আর এমনিতেও আমি অনেক টায়ার্ড।”, বলতে বলতে একবার হিয়ার দিকে তাকালো শুভ্র।
” ভাই, তুই যে কোন গ্রহের মানুষ? কি হয় থাকলে? একসাথে মজা করতাম সবাই।”, নিরব বলে উঠলো।
” মজা আমার সাথে? বেটার নট।”, বলেই তাচ্ছিল্যের হাসি হাসলো শুভ্র।
হিয়া এইদিকে মহা খুশী। আহ্ লোকটা গেলেই সে বাঁচে। পরিবেশটা তখন অনেকটা শান্তিময় লাগবে। হিয়া হেসে হেসে দিবার দিকে তাকিয়ে আছে।দিবা মুখ ফুলিয়ে আছে, শুভ্র ভাইয়া মাঝে মাঝে প্রেসিডেন্টের থেকেও বেশি ভাব নেয়। হিয়া খুশী হয়ে বললো,
” লোকটা গেলে বাঁচি।” দিবা আড় চোখে তাকিয়ে আছে। শুধু যে দিবা তাকিয়ে আছে তা না শুভ্রও তাকিয়ে আছে। তার যাবার কথা শুনে হিয়া বেশ আনন্দেই আছে। খুব আনন্দ তাই না এক্ষুনি আনন্দ বের করছি।
শুভ্র হিয়াদের বসার জায়গার দিকে এগিয়ে এলো। শুভ্রকে এগিয়ে আসতে দেখে হিয়া হাসি থামলো। শুভ্র ফোনের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে বললো,” বসে আছো কেনো চলো।”
শুভ্রের কথায় হিয়া চোখ বড় বড় করে উঠে দাড়ালো। যাবে মানে? কোথায় যাবে? শুভ্র স্ক্রিন থেকে চোখ সরিয়ে বললো,” এভাবে তাকিয়ে আছো কেন? যাও গিয়ে গাড়িতে বসো।”
” গাড়িতে গিয়ে বসবো মানে?”, হিয়ার এমন প্রশ্নে শুভ্র অবাক হওয়ার ভান করে বললো,” আচ্ছা, তোমার তাহলে থেকে যাওয়ার প্ল্যান? আমি তো ভাবলাম যে আমি ফিরে যাচ্ছি তোমাকে না নিয়ে গেলে বাবা আবার পুরো বাড়ি না মাথায় তুলে ফেলে।”
শুভ্রের কথায় হিয়ার মাথায় বড় সর একটা বাঁশ পড়লো। হিয়া হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছে।
” বাই দ্যা ওয়ে বাবা তোমাকে রাতে বাহিরে থাকার অনুমতি দিয়ে দিলো, আপুকে তো কোনোদিন দেয় নি। বাহ, বাবা যে এতটা বদলে গেছে তা আমার জানা ছিলো না। ওয়াইট, বাবাকে বলেছো তো যে রাতে এইখানে থাকছো? হোয়াটএভের! এইটা তোমাদের ব্যাপার।”, বলতে বলতে প্রভার দিকে তাকিয়ে বললো,” আচ্ছা আমি যাই, তাহলে।” বলেই শুভ্র গাড়ির দিকে হাঁটা দিলো।
শুভ্র ভালো করে জানে কিছুক্ষনের মধ্যে হিয়া তার পিছু পিছু দৌড়াবে। সত্যি তাই কারণ হিয়া রবীউল সাহেবকে বলে নি যে সে আজ রাতে ফিরবে না। তিনি আসার সময় বার বার বলে দিয়েছিল যে বেশি রাত যেনো না হয়। আর এখন তো অনেক রাত হয়ে গেছে। লোকটা চিন্তায় আছে নিশ্চয়ই। হিয়ার মাথায় এই কথাটা সত্যি ছিলো না। হিয়া সবাইকে অবাক করে দিয়ে শুভ্রের পিছনে ছুটতে ছুটতে এসে শুভ্রের পাশের সিটে বসে পড়লো। সবাই মুখ চাওয়াচাওয়ি করছে।
নিপা বলে উঠলো,” মেয়েটার নাম হিয়া না? ও শুভ্রকে চিনে?” প্রভা চুপ করে আছে।
মোহিত বললো,” ওরা কি একসাথে ফিরবে? মেয়েটা তো শুভ্রের গাড়িতে উঠে বসেছে।”
প্রভা কিছু ভেবে না পেয়ে বললো,” ওরা কাজিন।”
দিবা বাঙ্গাত্বক দৃষ্টিতে নিজের বোনের দিকে তাকালো। তার বোন যে কি চায়? শেষে কষ্ট তো নিজেই পাবে। কেনো যে তার বোন নিজেকে কষ্ট দিতে উঠে পরে লেগেছে কে জানে?
হিয়া গাড়িতে বসে দড়জা লাগিয়ে মাথা নীচু করে আছে। লোকটা নিশ্চই এখন জিজ্ঞেস করবে!
শুভ্র কিছুটা অবাক হওয়ার ভান করে বললো,” তুমি এইখানে কি করছো?” হিয়া চোখ পিট পিট করে একবার তাকিয়েই চোখ নিচু করে বললো,” আমিও যাবো।”
শুভ্র আর কথা বাড়ালো না। হিয়ার দিকে সন্দেহের চোখে তাকিয়ে রইলো তারপর ঠোঁটের কোণে হালকা বিজয়ীর হাসি রেখে ড্রাইভারকে বললো,” রাস্তা দেখে শুনে যাবে। চলো।”
হিয়া মিনমিনিয়ে বললো,” আপনার ফোনটা একটু দিবেন?”
শুভ্র একটা ভ্রূ তুলে বললো,” কেনো?”
” ফোন করে জানতাম।”,বলেই শুভ্রের দিকে তাকালো। ফোন করে বললে হয়তো আংকেল টেনশন করবে না, এমনিতেও লোকটার প্রেসার আছে। হিয়া নিজের ফোনটাও আনেনি সঙ্গে করে।
” প্রয়োজন হবে না। দিদিকে বলা আছে আর এমনিতেও বাবা রাতে প্রেসারের ওষুধ খেয়ে বেশিক্ষণ জেগে থাকতে পারে না।”, হিয়ার প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করলো যে মোহনা আপুকে কি বলা আছে কিন্তু প্রশ্নটা করা হলো না তার।
হিয়া দৌড়ে এসেছে ঠিকই কিন্তু খারাপ লাগছে। কি সুন্দর সবাই মজা করছে। আচ্ছা এই লোকটার কি কোনো কিছুই ভালোলাগে না? সবার সাথে বসে আনন্দ হইচই করতে ইচ্ছে করে না। কেমন রোবোটিক জীবন যাপন করে। হিয়া জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে। শুভ্র চোখ বন্ধ করে গা হেলিয়ে বসে আছে। গাড়ি চলছে কখনো উচু নিচু পাহাড়ি রাস্তা দিয়ে কখনো আবার সরু পথ দিয়ে।
চোখ বন্ধ করে থাকায় কিছুক্ষনের জন্য শুভ্র ঘুমিয়ে পড়েছিল। শুভ্র চোখ বন্ধ রেখেই মাথার দুপাশ ধরে রাখলো কিছুক্ষণ। তারপর চোখ খুলে পাশে তাকাতেই দেখলো হিয়া গাড়ির কাচের জানালায় মাথা হেলিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে,কাচটা অর্ধেক নামানো। শুভ্র এগিয়ে এসে হিয়ার মাথাটা তুলে সিটে শুইয়ে দিলো। কি মেয়েরে বাবা! এইভাবে ঘুমাচ্ছে কিছু যদি হয়ে যেতো।
শুভ্র হিয়ার গাল স্পর্শ করতেই দেখলো একদম ঠান্ডা হয়ে আছে। হাত দুটোও একদম বরফ হয়ে গেছে। শুভ্র সিটের পিছন থেকে পাতলা চাদরটা নিয়ে হিয়াকে মুড়িয়ে দিলো। চাদরটা পেয়ে হিয়া আরো আরাম করে ঘুমাচ্ছে। শুভ্র ভ্রু কুঁচকে ঘুমিয়ে থাকা হিয়াকে দেখলো কিছুক্ষণ, তারপর ড্রাইভারকে বললো,” গ্লাস গুলো বন্ধ করে দেও আর পিছনের লাইটাও।”
গাড়ীর গ্লাস গুলো বন্ধ করে দেওয়া হলো আর পিছনের লাইটাও ড্রাইভারের সামনে অল্প আলোর বাতি জ্বলছে এতে হিয়ার ঠান্ডায় লাল হয়ে যাওয়া নাকটা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে শুভ্র। এই মেয়েকে ঘুমের মাঝে কেউ কিডন্যাপ করলে এর ঘুম ভাঙবে না।
গাড়ী নীলকুঞ্জের মানে শুভ্রদের বাসার সামনে এসে পৌঁছেছে ভোরের দিকে। শহর হলেও চারিপাশে এখনো অন্ধকার, ল্যাম্প পোস্টের আলো জ্বল জ্বল করছে। গাড়ী থামায় শুভ্রের চোখ খুললো, চোখ খুলে প্রথমেই হিয়ার দিকে তাকালো। মেয়েটা এখনও ঘুমাচ্ছে। এমন আরাম করে গাড়িতে ঘুমিয়ে থাকতে সে আর কাউকে দেখেনি। ড্রাইভার গাড়ি থেকে নেমে গেছে। শুভ্র আর হিয়া নেমে পড়লে পরে এসে গাড়ী গ্যারাজে রাখবে।
শুভ্র প্রথমে ভাবলো হিয়াকে ডেকে তুলবে। পরে ভাবলো থাক ঘুমিয়ে আছে ঘুমিয়ে থাকুক। তবে দ্বিতীয়বার হিয়ার দিকে তাকাতেই দেখলো হিয়ার কাধের কাছে জামাটা সরে গিয়ে ফর্সা কাধ দেখা যাচ্ছে আর জামার একটা অংশ দেখা যাচ্ছে। শুভ্র প্রথমে চলে যেতে নিয়েও আবার কি ভেবে থামলো। এগিয়ে গিয়ে হিয়ার কাধের পাশটা চাদর দিয়ে ঢেকে দিলো সেই মুহুর্তে হিয়া নড়ে চড়ে চোখ খুলেই শুভ্রকে এতো কাছে দেখে প্রথমে বুঝতে পারলো না। এইটা কি স্বপ্ন? স্বপ্ন হলেও এইটা কেমন স্বপ্ন। লোকটা তার এতো কাছে কি করছে।
কয়েক সেকেন্ডে হিয়া বুঝতে বাকি রইলো না যে এইটা স্বপ্ন নয়। শুভ্র তার একদম কাছে, হিয়া টান মেরে শুভ্রর হাত থেকে চাদরটা নিয়ে নিজেকে মুড়িয়ে কড়া গলায় বললো,” কি করছেন আপনি?”
হিয়ার চোখ মুখের অবস্থা দেখে বুঝাই যাচ্ছে যে সে উল্টা পাল্টা কিছু ভাবছে। শুভ্র এগিয়ে আসতেই। হিয়া একদম পিছিয়ে গিয়ে গাড়ির দরজা ঘেঁষে রইলো। শুভ্রের ইচ্ছে করছে গাড়ীর দরজাটা খুলে দেয় আর হিয়া ধপাস করে পরে যাক। তাহলে মাথার এইসব বাজে চিন্তা দূর হবে। হিয়া রাগী গলায় বললো,
” এগিয়ে আসছেন কেনো? কি চান?”
শুভ্র কড়া চোখে তাকিয়ে আছে। ইচ্ছে করছে এমন কিছু বলে যাতে মেয়েটা ভয়ে কেপে উঠে। শুভ্র এগিয়ে এসে হিয়ার দুপাশে হাত রেখে বললো,”তোমার কি মনে হয় আমি কি চাইতে পারি?”
হিয়া ভয়ে জড়সড় হয়ে গেছে। শুভ্র এতো কাছে এসে এমন ভাবে কথাটা বললো যে হিয়ার শরীর শিউরে উঠলো। শুভ্র হিয়ার দিকে তাকিয়ে থেকে বললো,
” এইটা আমার চাদর, ঘুম শেষ হলে ধুতে দিয়ে দিবে।”,বলেই দু পাশ থেকে হাত সরিয়ে নিলো শুভ্র।
তারপর গাড়ী থেকে নেমে গেলো।
আরেকটু হলে হিয়ার ছোটো খাটো একটা হার্ট অ্যাটাক হয়ে যেতো। একটা চাদর গায়ে দিয়েছে বলে এইভাবে বলার কি আছে। দূরে থেকে বলা যায় না? কিছু হলেই একেবারে কাছে চলে আসা লাগে। সকাল সকাল এর মুখ দেখতে হলো পুরো দিনটা কেমন যাবে কে জানে? খারাপই যাবে। এই লোকের চেহারা দেখেছে আর দিন ভালো যাবে,কখনোই না।
🌟 সকালে এসে শুভ্র লম্বা একটা ঘুম দিয়ে দুপুরের আগে উঠেছে। উঠে শাওয়ার সেরে কফি হাতে কিছুক্ষণ বারান্দায় বসলো। ফোনটা খুলতেই দেখলো প্রভার ম্যাসেজ সেদিকে নাকি প্রচুর বৃষ্টি শুরু হয়েছে ভোর থেকে, যার কারণে ওরা ফিরতে পারে নি। ফোনটা একপাশে রেখে শুভ্র একটু হাসলো। ভালোই হয়েছে ওরা আরো কিছুক্ষন পাহাড়ে থাকতে পারবে। পাহাড়ে থাকার শখ মিটে যাবে। কফি হাতে রূমে আসতেই দেখলো মোহনা দাড়িয়ে আছে।
শুভ্রকে দেখেই রেগে বললো,” ঘুম থেকে উঠেই কফি! নাস্তা তো করিস নি। লাঞ্চ ও কি করবি না?”
শুভ্র দেওয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে বললো,” হুম উপরে পাঠিয়ে দিতে বল।”
” নাহ্ তোর খাবার আর ঘরে দেওয়া হবে। নিচে গিয়েই খেতে হবে।”, চোখ রাগিয়ে বললো মোহনা।
” দিদি জোর করিস না। আমার ভালো লাগে না।”,থমথমে গলায় বললো শুভ্র।
” নাহ্ ভালো লাগবে। যার জন্যে এতে সমস্যা তোমার সে আর তোমার সামনে আসবে না। তুমি নিশ্চিন্তে নীচে আসতে পারো।”,
” মানে?”
” মানে হিয়া আর নিচে যাবে না। তোমার আর ওর মুখ দেখতে হবে না।”, প্রায় রাগেই বললো মোহনা।
” দেখ দিদি, আমার সমস্যা হিয়া না, আমার রাগ বাবার উপর। এতদিন হলো সে একবারও এসেছে আমার সাথে কথা বলতে?”,থমথমে গলায় বললো শুভ্র।
” তুই গিয়েছিস বাবার সাথে কথা বলতে? আর হিয়ার উপর রাগ নেই তো ওকে এতো কথা শুনালি কেনো?”
” ভুলটা ওর ছিলো। আমার রুমে এসেছিল কেনো? আর সবসময় এমন লাফালাফি করে কেনো?”
মোহনা একটু চাপা গলায় বললো,” হিয়াকে নিয়ে সমস্যা যখন নেই তখন ওকে তোর রুমে শিফট করিয়ে দেই।” বলেই সে ঠোঁট চেপে হাসলো সে।
মোহনার এমন কথায় শুভ্র ভ্রু কুঁচকে তাকালো তারপর ভারী মুখে কফিতে চুমুক দিল।
এর ফাঁকে মোহনা আরো বললো,” রাগ যদি ওর উপর না থাকে তাহলে ভালোবাসে দেখতেই পারিস। তোর যদি তেমন কোনো ইচ্ছা থাকে তাহলে আমাকে বলতে পারিস। আমি হিয়াকে তোর রুমে শিফট করিয়ে দিবো। আর বলতে লজ্জা লাগলে একটু হাসবি তাহলেই আমি বুঝে যাবো।”
” হয়েছে তোর আর জনসেবা করতে হবে না। আমার প্রয়োজন হলে আমি তুলে নিয়ে আসতে পারবো। তোর হেল্প আমার লাগবে না। আর আমার ইচ্ছে ছাড়া তোর এসব ট্রিকসেও কাজ হবে না। দিদি এখন যা এই রুম থেকে। উল্টা পাল্টা কথা বলে মাথাটা ধরিয়ে দিয়েছিস।” থমথমে মুখে বললো শুভ্র।
[ চলবে ]