তোর মনের অরন্যে,সূচনা_পর্ব
সাবিয়া সাবু সুলতানা
হাত পা বাঁধা অর্ধ নগ্ন অবস্থায় ফ্লোরে পড়ে রয়েছে রুশা সাগরে ভাসমান ইয়্যট এর রুমের মধ্যে । শরীরে চাপ চাপ রক্ত ও অসংখ্য কামড় ও আচড়ের আঘাতে ভরে আছে। ফ্লোরে ও রক্তের ছাপ স্পষ্ট হয়ে রয়েছে। আর ঠিক তার থেকে কিছুটা দূরে পাঁচ জন গুন্ডা মত লোক বসে মদ খাচ্ছে আর রুশার দিকে তাকিয়ে বিশ্রী ভাবে হাসছে। তাদের চোখে কাম লালসা ফুটে আছে। কখন মেয়েটার জ্ঞান ফিরবে আর তারা মদ শেষ করে তারপরেই ঝাঁপিয়ে পড়বে আবারো তাদের শরীরের খিদে মেটানোর জন্য।
দিল্লী পুলিশ কমিশনার রাজীব রায় এর মেয়ে রুশা রায়। কলেজ থেকে বাড়ি ফেরার পথেই তাকে তুলে নিয়ে আসা হয়। আজ এক এক সপ্তাহ হয়ে গেলো তাকে তুলে আনে আর তার পর থেকেই প্রতি টা ক্ষণ তার কাটছে মৃত্যু সমান যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে। এই এক সপ্তাহ ধরে প্রতিটা রাত দিন তার উপর গণ ধর্ষণ প্রক্রিয়া চলে যাচ্ছে। আর তার প্রত্যেকটা ভিডিও ইন্টারনেটে ভাইলাল করে দিয়েছে ইতি মধ্যেই। রুশার জানা নেই তার উপর হওয়া এই অত্যাচার এর কারণ
পুলিশ সব জায়গা হন্যে হয়ে খুঁজে চলেছে এই এক সপ্তাহ ধরে কিন্তু কোথায় তার হদিস পায় না। আজ সমস্ত পুলিশ ডিপার্টমেন্ট নিয়ে বোর্ড মিটিং বসেছে সবারই মুখ গম্ভীর হয়ে আছে তারা হাজার চেষ্টা করেও উদ্ধার করতে পারিনি ইতি মধ্যে তাদের কাছে কয়েক দফায় থ্রেট ও চলে এসেছে। পুলিশের হেফাজতে থাকা পাঁচটা ড্রাগ অস্ত্র ও মাদক দ্রব্যের গাড়ি সাথে কুখ্যাত মাফিয়া মুন্না কে ছেড়ে দেওয়ার জন্য। আর তারপরেই একটা একটা করে প্রতিদিন ভাইলাল হয়েছে পুলিশ কমিশনার এর মেয়ে রাজীব রায় এর মেয়ের ভিডিও। এই মুহূর্তে কমিশনার রাজীব রায় চুপ চাপ বসে আছে। আর চারিদিকে অফিসাররা নিজেদের মধ্যে এই নিয়ে আলোচনা করে চলেছে।
-“স্যার পুরো শহর তন্য তন্য করে খোঁজা হয়ে গেছে কিন্তু আমরা কোথাও খুঁজে পাইনি। পুলিশ অফিসারদের মধ্যে একজন বলে ওঠে।
-” স্যার তাহলে কি ওদের কথা মতো ওই ট্রাক গুলো ছেড়ে দেওয়া হবে? আরেক জন বলে ওঠে।
-“আরে বাবা ট্রাক গুলো ছেড়ে দিলে কি হবে তার সাথে ও যে এতটা ক্ষতি হয়ে গেলো সেটার কি হবে।
-“আমরা বুঝতে পারছি না আমাদের পুরো ডিপার্টমেন্ট এক ভাবে খুঁজে চলেছে কিন্তু কিছুই লাভ হলো না বরং উল্টে প্রতিদিন একটার পর একটা ভিডিও রিলিজ হয়ে যাচ্ছে।
-“স্যার আমরা এতদিন চেষ্টা করে ও এখনও কিছু করতে পারলাম বুঝতে পারছি না কি করা উচিত।
একের পর এক অফিসাররা সবাই তাদের নিজের নিজের মতামত ব্যক্ত করছে আর এদিকে কমিশনার চুপ করে বসে আছে। হটাৎ করেই টেবিলের উপর থাকা ল্যান্ড লাইন ফোন টা বেজে ওঠে। পাশে থাকা পুলিশ অফিসার ফোন টা রিসিভ করে লাউডে দিয়ে। বাকি অফিসার চুপ করে যায়। ওপারে থেকে আওয়াজ ভেসে আসে।
-“কি কমিশনার এখনও ভাবনা শেষ হয়নি নাকি? আপনার মেয়ে যে এখানে বন্দি হয়ে আছে। তবে বুঝলেন আপনার মেয়ে কে টেস্ট করতে সেই মজা লাগলো। উফ আমার ছেলে গুলো এখন মজা নিচ্ছে আপনার মেয়ের থেকে। বলেই বিশ্রী হেসে ওঠে।
-” এই স্কাউন্ডেল তোকে আমি একাউন্টার করে দেবো সামনে পেলেই। কমিশনার হঠাৎ করেই চিৎকার বলেই ওঠে।
-” আরে আরে আসতে আসতে সবে তোর মেয়ে কে ছিড়ে খাওয়া হচ্ছে আর একদিন পরেই মেয়ের লাশ কুটি কুটি করে পাঠিয়ে দেবো। তারপর আমার ট্রাক গুলো ছাড়িয়ে নিয়ে আসবো সাথে নিয়ে আসবো মুন্না কে জেল থেকে। বাই অফিসার।
ফোন কেটে যাওয়ার পর রাগে কমিশনার টেবিল থেকে ল্যান্ড লাইন টা ছুড়ে ফেলে দিয়ে চিৎকার করে ওঠে। হটাৎ মিটিং রুমের মধ্যে একজন অফিসার ঢুকে আসে কমিশনার ও বাকি বড় অফিসার দের উদ্দেশ্য করে স্যালুট করে বলে ওঠে।
-“স্যার সোহা ইজ ব্যাক। আজই দিল্লী তে ফিরেছে।
-” ওহ ফাইনালি সোহা ফিরে এসেছে তাহলে এইবার সব কিছুই ঠিক হয়ে যাবে। ডিএসপি কর্ন বলে ওঠে।
-“স্যার আমরা পুরো ডিপার্টমেন্ট মিলে পুরো শহর খুঁজে ফেললাম পেলাম না আর এই কে না কে সোহা এসেই খুঁজে ফেলবে সিরিয়াসলি। ওদের মধ্যে একজন অফিসার বলে ওঠে।
-“আপনি মনে হয় নতুন এই ডিপার্টমেন্টে তাইনা সেই জন্য হয়তো জানেন না কে এই সোহা । তাই প্লিজ আপনি মুখটা একটু বন্ধু রাখুন। কর্ন বলে ওঠে।
-” সরি স্যার।
-“কর্ন দ্রুত এই সোহা কে আপডেট করো সমস্ত ডিটেইলস পাঠিয়ে দাও। কমিশনার রাজীব রায় বলে ওঠে।
-” স্যার সোহা হয়তো এতক্ষণে তার মিশন শুরু করে দিয়েছে। আমি কালকেই ওকে মেইল করেছিলাম আর এখন শুনলাম সোহা ফিরে এসেছে তার মানে এতক্ষণে ও ওর কাজ শুরু করে দিয়েছে ওর টিম নিয়ে। কর্ন বলে ওঠে।
-” স্যার আমাদের কি শুধু এই সোহার উপর সব কিছু ছেড়ে দিয়ে বসে থাকলে হবে কি? না রুশা কে যদি এরপরে আরো বড় ক্ষতি করে দেয়?
-” আপনারা তো এতদিন খুঁজলেন কি করতে পেরেছেন? পেরেছেন কিছু করতে? তাহলে এখন চুপ করে বসে থাকুন আর কাল সকালে খবর পেয়ে যাবেন চেরি কি করতে পারে আর না পারে। কর্ন বলে ওঠে।
————-
-” আরে ভাই মেয়েটা আর কতক্ষণ পড়ে থাকবে ওর জ্ঞান ফেরা এবার একটু খেলা হয়ে যাক। অনেক ক্ষণ হয়ে গেছে টেস্ট করেছি ভাই আর তারপরে আবার এই মদ খেয়ে ওর টেস্ট টা কমে গেছে। গুন্ডা গুলোর মধ্যে একজন বিশ্রী হেসে বলে ওঠে।
-” আরে যায় বল এই এক সপ্তাহ বেশ ভালো মজা পাওয়া যাচ্ছে উফ যদি আরো কয়েকদিন যদি পাওয়া যায়না উফ কপাল খুলে যাবে। আরো একজন ঠোঁটের উপর জিভ বুলিয়ে বলে ওঠে।
-” আরে বস স্যার ফোন করেছিল যা মজা করার আজ রাত টা মজা করে নিতে বলেছে কালকে এই মেয়ের খেল খতম করে দেবে বলেছে।
টলতে টলতে ওদের মধ্যে একজন মদ এর বোতল হাতে নিয়ে উঠে আসে মেঝেতে অর্ধ নগ্ন হয়ে পড়ে থাকা রুশার কাছে। পুরো শরীরের দিকে চোখ বুলিয়ে জীব দিয়ে ঠোঁট চেটে নেয়। চোখ দিয়ে পুরো শরীর টা কে যেনো গিলে খাচ্ছে। হাতে থাকা মদ এর বোতল টা নিয়ে মুখের উপর ফেলে। মুখের উপর তরল জাতীয় কিছু পড়তে কিছু ক্ষণ পরেই পিট পিট করে চোখ খুলে তাকায় ।তাকে দেখে মনে হচ্ছে চোখ খুলে তাকাতেই তার খুব কষ্ট হচ্ছে। চোখ খুলতে দেখে শয়তান টা গালে হাত দিয়ে চেপে ধরে বোতলে থাকা মদ মুখে ঢেলে দিতে থাকে। রুশা মুখ সরিয়ে নিতে চেয়েও পারে না শুধু ছটফট করে যায়।
-“কি মামনি কষ্ট হচ্ছে বুঝি আহারে। এই দেখে যা তোরা এই মামনির কষ্ট হচ্ছে। বলে হেসে ওঠে।
-” আর কষ্ট হবে না দেখো আমরা চলে এসেছি তোমাকে আমরা আদর করব আর আমরা মজা নেবো একদম কষ্ট হবে না। বলেই হেসে ওঠে আরেকজন।
রুশা চোখ দিয়ে তার চারপাশে থাকা লোক কে দেখে আর তাদের বলা কথা গুলো শুনেই আবারো তার চোখে মুখে ভয়ে চেপে বসে সে বুঝে যায় আবারো তার সাথে নরক যন্ত্রণার কাজ শুরু হবে। রুশা শুধু মাথা নাড়িয়ে যাচ্ছে আর কিছু বলতে পারছে না। তার মুখের মধ্যে মদ এর বোতল চেপে ধরে রেখেছে একজন। এবার ওদের মধ্যে থাকা একজন এগিয়ে এসে রুশার শরীরের উপর থাকা পাতলা ওড়না টায় হাত দিতে গেলেই হঠাৎ করেই গুলি আওয়াজ শুনতে পায়। চারিদিকে থেকে গুলির আওয়াজ ভেসে আসছে। চমকে গিয়ে হাত সরিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে পড়ে চারদিকে তাকাতে থাকে। বাকি চারজন ও উঠে দাঁড়িয়ে যায়। এতক্ষণে তাদের মদ এর নেশা ও কেটে গেছে গুলির আওয়াজ শুনেই। একজন উঠে গিয়ে দূরে রাখা টেবিল থেকে গান তুলে নিয়ে চারদিকে ভালো করে দেখতে থাকে কিন্তু কোথাও কিছু নেই চারদিকে আবারো সব শান্ত কোথাও কোনো আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে না। তাদের মধ্যে থাকা একজন বলে ওঠে।
-“আরে ধুর কিছু নেই চল চল মজা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এমনিতেও মদ এর নেশা কেটে যাচ্ছে। আর তার উপর এই শালি কে আর কাল থেকে পাবো না। মনে বাইরে ওরা গান নিয়ে খেলছে। একজন বলে ওঠে।
-” হ্যাঁ তাছাড়া এই মাঝ সমুদ্রে কেই বা আসবে চল।
মদ খেয়ে থাকার ফলে গভীর ভাবে চিন্তা করতে পারেনা। গান পাশে ফেলে রেখে আবারো সব কয়জন মেয়েটার দিকে এগিয়ে যায়। মেয়েটার দিকে হাত বাড়াতে গেলে সাথে সাথে হাতে গুলি লেগে ছিটকে পাশে পড়ে। পাশে থাকা বাকিদের হাতে ও একের পর এক পরপর আরো চারটে বুলেট এসে লাগে। চার জনেই ছিটকে পড়ে।
চলবে……❣️
ভুল ত্রুটি মার্জনা করবেন…। নিজেদের মতামত জানাবেন ।