তোমাকে আমার প্রয়োজন,পর্ব ৪
জয় চৌধুরী
সূর্যের আলোয় ঘুম ভেঙে যায় অনুর,চোখ খুলে তাকিয়ে দেখে ও রুমে শুয়ে আছে,কিন্তু রুমে কেউ নেই ওর যতটুকু মনে পড়ছে ও আরিয়ানের গাড়িতে ঘুমিয়ে পড়েছিল তারপর কি হলো ওর কিছুই মনে নেই।
বিছানা থেকে নেমে রুম থেকে বেরিয়ে যায় অনু।
সিড়ি বেয়ে অনুকে নামতে দেখে এগিয়ে যান আরিয়ানের মা
আরে মা তুমি ঘুম থেকে উঠে গেছো
অনু উনাকে চিনতে পারে না,তাই উনার দিকে চেয়ে থাকে
কিছু বলছো না যে, ও বুঝেছি আমাকে চিনো নি আরে আমি আরিয়ানের মা আর তোমার ও মা
অনু এখন চিনতে পেরে উনাকে গিয়ে প্রণাম করে
থাক থাক মা প্রণাম করতে হবে না,তোমরা আমার সন্তান আমার আশীর্বাদ সব সময় তোমাদের সাথে আছে
অনু উনাকে ঝাপটে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দেয়
একি মা কান্না করছো কেন,দেখো নি দেখো আমার মেয়েটা কান্না করছে কেন??
অনুও সমাল তালে কান্না করে বলে
ছোটবেলা থেকে মায়ের আদর পাই নি,কাউকে মা বলে ডাকতে পারিনি, আজকে আমাকে আপনার সন্তান বলাতে আনন্দে কান্না পাচ্ছে
অনুর মাথায় হাত বুলিয়ে দেন আরিয়ানের মা।।
আর কান্না করতে হবে না মায়েরা যে সন্তানের কান্না সয্য করতে পারে না
এই বলে দুহাত দিয়ে অনুর চোখের জল মুছিয়ে দেন
আমি কি আপনাকে মা বলে ডাকতে পারি??
সন্তানেরা মা বলে ডাকবে না তো কি বলে ডাকবে!! আর তুমি আমাকে আপনি আপনি করছো কেনো সন্তানরা তো মাকে তুমি বলেই ডাকে
অনু হেঁসে ফেলে
সরি মা আর বলবো না
হুম অনেক হয়েছে মা-মেয়ের ভাব জমাজমি, যাও ফ্রেশ হয়ে আসো,তোমার জন্য অপেক্ষা করছি
আচ্ছা মা
এই বলে অনু ফ্রেশ হতে চলে যায়,রুমে গিয়ে মনে পড়ে আরে আমার তো কোনও ড্রেস ই নেই পড়বো কি
অনু চিন্তায় পড়ে যায়, সারারুমে হাঁটাহাটি করে ভাবতে থাকে কি পড়বে,
চোখ যায় আরিয়ানের ওয়ারড্রোব এর দরজায় লেপ্টে থাকা কাগজের দিকে কৌতুহল বশত এগিয়ে যায় অনু
কাগজে স্পষ্ট অক্ষরে লিখা আছে
“জানি এখন কি পড়বে সেই চিন্তায় আছো,ওয়াড্রোব টা খোলও আমার পিচ্চি বউয়ের জন্য শাড়ি রাখা আছে,শাওয়ার নিয়ে এই শাড়িটা পড়বে”
ওয়াড্রোবটা খুলে দেখে লাল রংয়ের টুকটুকে একটা লাল শাড়ি সাথে ছায়া ব্লাউজ সাথে গয়নাও।
সবে মাত্র থানার কাজ শেষ করে আরিয়ান দরজা দিয়ে বাসায় প্রবেশ করছিলো, অনুকে উপর থেকে সিঁড়ি বেয়ে নামতে দেখে হা করে অনুর দিকে চেয়ে আছে আরিয়ান।
অনু নিচে নেমে আরিয়ান এর সামনে এসে দাঁড়ায়, সেদিকে আরিয়ানের কোনও খেয়াল ই নেই ও ওর মায়া পরীকে দেখতে ব্যস্ত
স্যার আমাকে কেমন লাগছে?
অনুর মুখে স্যার ডাকটা শুনে আরিয়ান ভেবাছ্যাকা খেয়ে যায় ওর বউ ওরে স্যার ডাকছে অদভূত
এই তুমি আমাকে স্যার ডাকছো কেন?? কালকে যে আমাদের বিয়ে হয়েছে সেটা কি ভুলে গেছো
ওও তাই তো কিন্তু আপনাকে কি বলে ডাকবো🤔
নাম ধরে তো ডাকা যাবে না একে তো আপনি আমার বয়সে বড়,আর স্বামীও
যা খুশি ডেকো কিন্তু স্যার বলে ডাকবা না
আরে আরিয়ান এসে গেছিস,ভালো হয়েছে তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে আয় তিনজন মিলে একসাথে নাস্তা করবো।
ড্রাইনিং রুম থেকে বেরিয়ে আরিয়ানের মা বলেন
আচ্ছা মা
❤️
রাত প্রায় ১২টা ছুঁইছুঁই আরিয়ান থানায় গিয়েছিলো সেই সন্ধ্যায় এখনো বাসায় ফিরেনি
গাড়ি হর্ণ এর শব্দে অনু বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ায়
বাড়ির সামনে ছ্রোট বাগানটা তে চারদিকে ডেকোরেশন করা লাল নীল সবুজ বাতির সমাহার
ঠাসস করে আতশবাজি শব্দে অনু ভয়ে পেয়ে যায়, মূহুর্তে ভয়ে কেটে আনন্দে চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ে।
আতশবাজি আকাশে গিয়ে রংবেরঙের লেখা ফুটে উঠছে
🎇 Happy birthday 🎆
হ্যা আজ অনু আঠারো বছরে পা দিয়েছে আর ওদের বিয়ের ও আড়াইমাস হয়েছে
অনু খুশিতে আত্মহারা হয়ে তাড়াতাড়ি করে বাগানে যায়
অনু বাগানে গিয়ে অবাক ছাড়দিকে গুটগুটে অন্ধকার কিন্তু একটু আগে তো আরিয়ান কে দেখেছিলো,বাগানটাও সুন্দর করে সাজানো ছিলো,ও স্পষ্ট দেখেছিলো আরিয়ান ওরে আতশবাজি ফুটিয়ে ওইশ করেছিলো।
অনু কিছুটা ভয়ে পেয়ে যায়
বাসার ভিতরে ফিরে যাওয়ার জন্য পিছু পা হতেই নিজের কোমরে কারো শীতল স্পর্শ পেতেই অনু আরো ভয় পেয়ে যায়……….
।
।
।
।
চলবে…………