তোমাকে,পর্ব 10.1,10.2
অনিমা হাসান
পর্ব 10.1
অনিমার ফিরতে ফিরতে বিকেল গড়িয়ে গেল I আজ ওর ব্যাংকে মিটিং ছিল I নিজের অবস্থার বর্ণনা দিয়ে হাউজ লোন কমানোর জন্য ব্যাংকে আবেদন করেছিল অনিমা I একটা শেষ চেষ্টা করে দেখা যদি বাড়িটা রাখা যায় I কোন লাভ হয়নি I ওরা কিছুতেই রাজি হয়নি I ওর অসম্ভব মন খারাপ হয়েছে I বাড়িটা বোধ হয় আর রাখা গেল না I
বাড়ি ফিরে দেখল সেঁজুতি আর মুনির দাবা খেলছে গভীর মনোযোগ দিয়ে I ওর উপস্থিতি টের পেল না কেউই I এত অল্প সময়ে এদের দুজনের মধ্যে কি করে এত সখ্যতা গড়ে উঠলো ভেবে পেল না অনিমা I ব্যাগ রেখে ওদের সামনে এসে দাড়ালো অনিমা I দুজনেই গভীর মনোযোগ দিয়ে বোর্ডের দিকে তাকিয়ে আছে I সেঁজুতি বোর্ড থেকে চোখ না সরিয়েই বলল I
মা আঙ্কেল আজ খিচুড়ি আর ডিম ভাঁজি করেছে I অনেক মজা হয়েছে I তুমি খাও I
সরি অনিমা আমার কিছু অর্ডার করতে ইচ্ছে করছিল না I তাই এখানেই রান্না করতে হল I আই হোপ ইউ ডোন্ট মাইন্ড I তুমি খেয়ে নিও I
থ্যাংক ইউ মুনির I তোমাকে অনেক কষ্ট দিলাম I
কোন ব্যাপার না I আমি তাহলে যাই আজকে I
মুনির চলে গেল I সেঁজুতি ওর চেস বোর্ড টা খুব সাবধানে ওপরে নিয়ে গেল যাতে করে পরে খেলাটা আবার কন্টিনিউ করা যায়I প্রায় আটটা বেজে গেছে I ক্লান্ত বিধ্বস্ত অনিমা ওপরে গিয়ে শাওয়ার নিল I এরপর নামাজ পরল I নিচে নেমে দেখল খিচুড়ি আর ডিম ভাজি রাখা আছে রাইস কুকার এর মধ্যে I অনিমার খেতে ইচ্ছা করছে না I জ্বর টা মনে হয় আবার উঠছে I অনিমা চা করল তারপর মগ নিয়ে বাগানে চলে গেল I
অনিমার বাগানের কোন ঘেঁষে একটা চেরি গাছ I গোলাপি ফুলে ছেয়ে আছে I নিচেও গোলাপি ফুলের আস্তরণ Iঅনিমা চায়ের কাপ হাতে মেঝেতে বসলো I প্রচন্ড ঘুম পাচ্ছে I কাপটা পাশে রেখে ওর বড় সাদা ওড়না টায় শরীর ঢেকে মেঝেতে শুয়ে পড়ল I তারপর কখন ঘুমিয়ে পড়ল নিজেও টের পেল না I
সন্ধের দিকের মুনির সাধারণত বাগানে যায় I ইচ্ছে করে একটু দেরিতে যায় যখন অনিমা চা খেয়ে চলে যায় I অনিমাকে জিজ্ঞেস করা হয়নি ওর জ্বর কেমন I মেয়েটা বড় অযত্ন করে নিজের I ওষুধ খেয়েছে কিনা কে জানে I বাগানের ঢুকেই মনিরের অন্তরাত্মা কেঁপে উঠল I চেরি গাছের নিচে সাদা কাপড়ে ঢাকা অনিমার দেহটা পড়ে আছে I এক মুহূর্তের জন্য ওর মনে হলো অনিমা নেই I এত বছর পর্যন্ত ওর মনে হয়েছে অনিমা হয়তো ওর কাছে নেই কিন্তু ভালো আছে কোথাও না কোথাও আছে এই পৃথিবীর বুকে I কিন্তু যদি অনিমা না থাকে তবে ও কেমন করে বেঁচে থাকবে Iমনির দৌড়ে গিয়ে হাঁটু মুরে বসলো অনিমার সামনে I কাঁপা হাতে ওর কপাল স্পর্শ করলো I হালকা গরম I ভারী শ্বাস-প্রশ্বাস চলছে I মুনির একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল I কিছুক্ষণ বসে রইল ওই ভাবেই I তারপর খুব সাবধানে যত্ন করে অনিমাকে তুলে নিল I কি রকম পাখির মত হালকা I আস্তে আস্তে সিঁড়ি দিয়ে উঠে ভিতরে ঢুকে সোফায় শুইয়ে দিল I মুনির জানে অনিমার ঘুম খুব গভীর I আস্তে করে মাথার নিচে একটা কুশন দিয়ে দিল I সোফার উপর পড়ে থাকা ছোট কম্বলটা উড়িয়ে দিল গায়ে I অনিমার ঘুমন্ত মুখটার দিকে কিছুক্ষণ অপলক চেয়ে রইল মুনির তারপর একটা কঠিন সিদ্ধান্ত নিল I
মূল বাড়ি থেকে বেসমেন্টে যাওয়ার একটা দরজা আছে I এটা সবসময় ভেতর থেকে বন্ধ থাকে I মুনির দরজা খুলে নিচে নেমে গেল I ইচ্ছে করেই লক করলো না I যাতে প্রয়োজনে উপরে উঠে আসতে পারে I
নিচে নেমে মুনির ওর মা ফোন দিল I রেহানা বেগম সাধারণত এসময় ফজরের নামাজ পড়ে কোরআন তেলাওয়াত করেন I ছেলের ফোন পেয়ে বই বন্ধ করে রেখে ফোন ধরলেন
আসসালামু আলাইকুম মা , কেমন আছো ?
ওয়ালাইকুম আসসালাম ভালো আছি বাবা I আলহামদুলিল্লাহ I তোমরা সবাই কেমন আছো ?
ভালো I তোমাকে একটা কথা জানানোর জন্য ফোন দিলাম I
বল বাবা
মা আমি অনিমাকে বিয়ে করতে চাই
আলহামদুলিল্লাহ I তুমি কি ওকে একথা বলেছো ?
এখনো বলিনি
খুব সাবধানে বলবে বাবা I মেয়েটার উপর দিয়ে অনেক ঝড় গেছে I
তুমি দোয়া করো মা
অবশ্যই দোয়া করব I তুমি তো কখনো নিজের জন্য কিছু চাওনি I আল্লাহ নিশ্চয়ই তোমার এই চাওয়াটা পূর্ণ করবে I
অনিমার যখন ঘুম ভাঙলো তখন গভীর রাত I ও কিছুতেই মনে করতে পারল না ও কখন কিভাবে এখানে এসেছে I যতদূর মনে পড়ছে ও বাগানে চা খাচ্ছিল I তারপর আর কিছু মনে নেই I অনিমার মনে হল হয়তো অনেক ঘুম পাচ্ছিল তাই এখানে এসে শুয়ে পড়েছে I অনিমা আস্তে আস্তে উপরে চলে গেল I একটা দীর্ঘ ক্লান্তিকর দিন ছিল আজ I বাড়ি বিক্রির জন্য কাজ শুরু করতে হবে কাল থেকে I বেশি দেরি করা যাবে না I
***********
হ্যালো অনিমা
হ্যাঁ মুনির বল
আজকে কি তোমার কাজ?
না আজ আমার ছুটি
আমার সঙ্গে একটু এক জায়গায় যেতে পারবে ?
কোথায় যেতে হবে বলো
বিশেষ কোথাও না I
কখন যেতে চাও ?
লাঞ্চের পর I এই ধরো দুইটার দিকে
আচ্ছা ঠিক আছে
অনিমা আজকে একটা সাদা গাউন পরেছে I হালকা নীল স্কার্ফ দিয়েছে মাথায় I অনিমা যখন সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে এলো মুনির মুগ্ধ হয়ে গেল ওকে দেখে I
তোমার জ্বর কেমন ?
জ্বর আসেনি আর
গুড I চলো তাহলে যাওয়া যাক
মুনির উবার কল করেছে I অনিমা বুঝতে পারছে না ওরা কোথায় যাচ্ছে I কিছু জিজ্ঞেস করতে ও অস্বস্তি হচ্ছে I গাড়িটা যখন পার্কিং লটে ঢুকলো অনিমা অবাক হয়ে গেল I মুনির ওকে কেন এখানে নিয়ে এসেছে ও ঠিক বুঝলো না I এটা ওর অসম্ভব প্রিয় একটা জায়গা I ও মাঝেমাঝেই এখানে এসে একা একা বসে থাকে I গতবছর যখন মুনির এসেছিল তখন ওকে এখানেই নিয়ে এসেছিল অনিমা I এরপর জায়গাটার সাথে অন্যরকমের একটা স্মৃতি জড়িয়ে গেছে I গাড়ি থেকে নেমে মুনির বলল
চলো তাহলে
আমরা এখানে কেন এসেছি মুনির ?
তোমাকে কয়েকটা কথা বলব তাই
অনিমা বেশ অবাক হল I কথা বলার জন্য এখানে আসার কি দরকার ও ঠিক বুঝলো না I তবে কিছু জানতে ও চাইলো না I ওরা হাঁটতে হাঁটতে জলের ধারে চলে গেল I সেদিনের মতো আজকের আবহাওয়া মনোরম নয় I আকাশের কোণে মেঘ জমে ধূসর হয়ে আছে I আকাশের সাথে সাথে জলের ও রং বদলায় I আজ জলের সেই হালকা নীল রং নেই I কেমন মন খারাপ করা ধূসর হয়ে আছে I ওরা দু’জন আস্তে আস্তে একটা পাথরের দ্বীপের উপর উঠে গেল I প্রচণ্ড বাতাস আজকে I এরকম আবহাওয়ায় সাধারণত এখানে কেউ আসে না I জায়গাটা তাই অন্যান্য দিনের চাইতে ও নিরব I মুনির কিছু বলছে না I পকেট এ্ হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে সামনের দিকে তাকিয়ে I অনিমারএকটু বিরক্ত লাগছে I প্রচন্ড বাতাসে দাঁড়িয়ে থাকা যাচ্ছে না মাথার স্কার্ফ উড়ে যাচ্ছে বারবার I
কিছু বলবে বলছিলে তুমি I অবশেষে অধৈর্য হয়ে অনিমা বলল
আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই অনিমা
চলবে …
লেখনীতে #অনিমা_হাসান
তোমাকে
পর্ব 10.2
ক্যাম্পাসে আজ সাজ সাজ রব I দেশের জনপ্রিয় ব্যান্ড দল আসছে আজ ব্যান্ড শো করতে I ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে অন্য রকমের উত্তেজনা I যদিও অনুষ্ঠান শুরু হবে বিকেল পাঁচটায় কিন্তু সকাল থেকেই উৎসবের আমেজI
সেপ্টেম্বর প্রায় শেষ হয়ে এসেছে I কিন্তু এ বছর বর্ষা বেশ দীর্ঘায়িত হচ্ছে I সকাল থেকেই আকাশের কোণে মেঘ জমেছে I আয়োজক থেকে শুরু করে ভলান্টিয়ার সবাই বেশ চিন্তার মধ্যে আছে I এ অনুষ্ঠানের জন্য সবাই অনেকদিন ধরে অপেক্ষা করে ছিল I হঠাৎ বৃষ্টি নামলে সবটা পন্ড হয়ে যাবে I হাসিব সহ অন্যান্য ভলান্টিয়াররা চিন্তিত মুখে স্টেজের সামনে ঘোরাঘুরি করছে I
দোস্ত বৃষ্টি নামলে তো ধরা খাইয়া যামু
এত চিন্তা করছিস কেন I ব্যাকআপ ব্যবস্থা তো নিয়েছিস
আরে ব্যাকআপ তো স্টেজ আর পারফরমারদের জন্য I বৃষ্টি নামলে অডিয়েন্সের কি হইব ?
তুই এখনই অ্যানাউন্স করে দে সবাইকে ছাতা আর রেনকোট নিয়ে আসতে
এইটা ভালো বলছো I আরে মামু তুমি একটা জিনিয়াস I বৃষ্টিতে গান একদম জইমা যাইবো
মুনির একটা নিশ্বাস ফেলে বলল
আর কিছু লাগবে? আমাকে এবার যেতে হবে
আরে , তুমি কই যাইবা ?
তোকে আগেই বলেছি আমি পাঁচটা পর্যন্ত আছি I
তোমার ডার্লিং এর গান আছে তো ব্যান্ড শো এর পরে
ও এতক্ষণ থাকবে ? অনেক রাত হয়ে যাবে তো
আমি তো বলছি থাকতে I দরকার হইলে বাসায় পৌছায় দিমু
আমি চলে আসবো তার আগেই
মুনির তাড়াহুড়া করে বেরিয়ে গেল I ও ইচ্ছা করেই থাকতে চায়নি I এসব লাউড মিউজিক ও একেবারে নিতে পারে না I প্রচন্ড মাথা ধরে যায় I তাই একটা অজুহাত করে বেরিয়ে গেল I রাস্তা পার হওয়ার সময় হঠাৎ মনে হল অনিমাকে দেখল ডিপার্টমেন্টে দিকে যেতে I ওর তো এই সময় এখানে থাকার কথা না I মনির এগিয়ে গিয়ে ডাক দিল
অনিমা তুমি এখানে কি করছ ?
পালাচ্ছি
মানে ? তোমারতো পারফরম্যান্স আছে ব্যান্ড শো এরপরে
আরে কিসের পারফরম্যান্স , ব্যান্ড শো এরপর আমার বোরিং গান কে শুনবে ?
তোমার গান মোটেই বোরিং না
ঠিক আছে বোরিং না হলে না I আমি যাচ্ছি এখানে আর কিছুক্ষণ থাকলে আমার মাথা ফেটে যাবে
অনিমা দুইহাত দিয়ে মাথা চেপে ধরল
মাথা ব্যথা করছে? ওষুধ খাবে ?
তুমি সারাক্ষণ এত ওষুধ ওষুধ করো কেন ? মনে হয় তোমার কাছে সব কিছুর ওষুধ আছে ?
মুনির হেসে ফেললI বলল
তুমি ব্যান্ড শোর রাগ আমার উপর দেখাচ্ছ কেন? চলো তোমাকে রিক্সায় তুলে দি
তুমি কোথায় যাচ্ছ ? স্টুডেন্টের বাসায় ? চলো একসাথে পালাই
মুনির এবার বেশ অবাক হল মাথাব্যথায মেয়েটার মাথাই নষ্ট হয়ে গেছে I
অনিমা বলল তুমি না গেলে না যাও আমি একাই চললাম
অনিমা দাঁড়াও I এদিক দিয়ে গেলে কেউ তোমাকে দেখে ফেলবে তারপর আবার ধরে নিয়ে যাবে
কি বলো ? না না তাহলে এই দিক দিয়ে যাব না
চলো তোমাকে অন্য পথে নিয়ে যাচ্ছি
ওরা দুজন ডিপার্টমেন্ট এর পেছনে চলে গেল I এখানে দেয়াল ঘেঁষে একটা চায়ের দোকান I সব সময় ওরা এখান থেকে চা খায় I দোকানটা রেলিং এর বাইরের দিকে I দোকানের পাশে অনেকখানি রেলিং ভাঙ্গা I মুনির বলল
সাবধানে এসো
রেলিং পার হয়ে ওরা পিছনের দিকের রাস্তায় উঠে গেল I অনিমা আনন্দে হাততালি দিয়ে উঠলো বলল
ওয়াও দারুন
ঔষধ খাবে এখন ?
না , এদিকে অত শব্দ নেই I মনে হয় এমনি মাথা ব্যথা চলে যাবে
তোমাকে রিকশা করে দেবো?
তোমার কি খুব তাড়া ?
না
তাহলে চলো হাটি একটু
ওরা দুজন পাশাপাশি সামনের দিকে হাটা শুরু করল I দুজনেরই খুব ইচ্ছা করছে হাত ধরাধরি করে হাঁটতে কিন্তু কেউই প্রথম ধাপটা নিতে সাহস পাচ্ছে না I হঠাৎ ফুটপাত থেকে নামতে গিয়ে অনিমা হোচট খেলো I মুনির অনিমার হাতটা ধরে ফেলল তারপর বলল
কেয়ারফুল অনিমা এখনই তো পড়তে
অনিমে কিছু বলল না একটু হাসল শুধু I মুনির ওর হাতটা আর ছাড়লো না I হাত ধরাধরি করে দুজনে হটল অনেকক্ষণ I হাঁটতে হাঁটতে একসময় চারুকলার সামনে চলে এলো I মুনির বলল
ভেতরে যাবে ?
না এর ভেতর যেতে আমার ভয় লাগে I
সেকি ?
কেমন যেন গা ছমছমে একটা পরিবেশ I তারপর আবার এখন সন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে
আমি সঙ্গে যাচ্ছি তারপর ও ভয় লাগবে ?
অনিমা মনে মনে বলল তুমি সঙ্গে থাকলে আমার কোথাও যেতে ই ভয় লাগবে না I কিন্তু সেটা বলার আগেই মুনির বলল
আচ্ছা থাক চলো তাহলে I
ওরা যখন শাহবাগের মোড়ে পৌঁছলো তখন সন্ধ্যা হয়ে গেছে I মোড়ের দিকে অনেকগুলি খালি রিকশা দাঁড়িয়ে আছে I মুনির একটা রিকশা নিয়ে নিল I অল্প বয়সি রিকশাচালক দাঁত বের করে হেসে বলল
হুড উঠায়া ইমু ?
মুনির খুব বিরক্ত হয়ে বলল তোমাকে আমি বলেছি হুড তুলতে ? যাও তাড়াতাড়ি যাও
অনিমা বলল তুমি ওর উপর রাগ করছো কেন ?
রিকশাচালক ছেলেটি পেছন ফিরে বলল
সবাইতো স্যার এই সময় হুড উঠিয়ে দিতে কয়
তুমি বেশি কথা বল I মুনির রাগ দেখালেও ওর প্রচন্ড হাসি পাচ্ছিল I অনিমা তো হাসি চাপতেই পারল না I বিপত্তিটা বাঁধলো কিছুক্ষণ পর I হঠাত করেই বৃষ্টিটা নামলো I মনির বলল
পর্দা নাই? আমরা নামবো ? পর্দা বের করবে ?
না স্যার I পর্দা নাই
মানে ? এখনও তো অনেকটা পথ বাকি I
অনিমার খুব মজা লাগছিল I আজকে কেমন করে যেন ওর সব ইচ্ছাগুলো পূরণ হয়ে যাচ্ছে I ওর খুব শখ ছিল মনিরের সঙ্গে একদিন রিক্সায় করে বৃষ্টিতে ভিজার I অনিমা বলল
বাদ দাও না I ওর কাছে না থাকলে কি করা যাবে ?
তুমি বুঝতে পারছ না আমাকে স্টুডেন্টের বাসায় যেতে হবে I এরকম ভিজে গেলে আমি যাব কি করে ?
সমস্যা নেই তুমি আমাদের বাসায় যেয়ে চেঞ্জ করে নিও I আমি ড্রায়ার দিয়ে কাপড় শুকিয়ে দেবো
তোমার মাথা খারাপ হয়ে গেছে I এই তুমি সাইডে রাখ আমি অন্য রিক্সা নেবো I
অনিমার হঠাৎ মনটা খারাপ হয়ে গেল I ও মনিরের হাতটা ধরে বলল প্লীজ
মনির কি বুঝলো কে জানে একবার অনিমার দিকে তাকালো তারপর বলল
আচ্ছা ঠিক আছে যাও
অনিমা হাতটা সরিয়ে নিতে চাইলে মনির বলল
ধরে বস , সামনে রাস্তা ভাঙ্গা
এরপর আর কোন কথা হল না দুজন হাত ধরাধরি করে বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে এগিয়ে যেতে লাগলো I
চলবে ….
লেখনীতে
অনিমা হাসান