তুুমি_আমার_অধিকার,পার্টঃ9,10
লেখক_সাব্বির আহাম্মেদ
পার্টঃ9
নদীর পাশে অন্তী মূখ ভার করে বসে আছে কেনো কথা বলছে না নিলয়ের সাথে??
_ কি হলো তুমার হুম..??
_ কিছু না “”
_ঢং দেখে পারি না বাপু । মেয়েদের এতো ঢং কোথার থেকে আসে ( নিলয় এই কথা বলে জিব কামড় দিলো)
_ অন্তী এইবার রেগে কি বললা তুমি আমি ঢং করি হুম..
দাড়া দেখাচ্ছি তুমাকে
অন্তী নিলয়কে কিল ঘুষি যা পারে দিতে থাকলো । নিলয় বেচারার আর কি করবো সে তো রাগ উঠিয়ে দিয়েছে চুপচাপ সহ্য করা ছাড়া আর কেনো উপায় নেই । অনেকক্ষণ ধরে চললো তাদের খুনসুটি ।
এইদিক ওইদিক তাকাচ্ছে নিলয় না কোথাও দেখতে পাচ্ছে না তাকে নিলয়।
অন্তীঃ- কি খুজচ্ছো?
নিলয়ঃ- একজন বাদাম বিক্রেতাকে?? তার সাথে অনেক আগে পরিচয় হয়েছে । তাকে খুজছি, তার কথা বলতে না বলতেই.
মনিরঃ- স্যার আসসালামু ওয়ালাইকুম… কেমন আছুইন ।
নিলয়ঃ- ওয়ালাইকুম আসসালাম । আরে মনির যে কোথায় ছিলে এতোদিন তুমাকে খুজছিলাম ।
মনিরঃ- ওইহানে বাদাম বেচছিলাম পরে আপনাগোরে দেইখা দৌড়ে আসলাম ।
নিলয়ঃ- ও আচ্ছা ।
মনিরঃ- স্যার একখান কথা কইবার আছে??
নিলয়ঃ- কথা বলো..
মনিরঃ- স্যার কথা দিতে হবে যে আপনি আমার কথা শুনবেন.
নিলয়ঃ- আচ্ছা বলো কি কথা??
মনিরঃ- এই মেডাম আপনে আজকে আমাগো বাসায় যাইতে হবে কিন্তু না করতে পারবেন না । যেদিন আপনারে প্রথম দেখছিলাম আপনি একা ছিলেন তাই যেতে চায়ছিলাম । আর আপনি বলছিলেন যে, যেইদিন দুইজন হবেন সেইদিন যাবেন । হিসেব অনুযায়ী আজকে যাবেন!!
নিলয়ঃ- মুচকি হেসে ও আচ্ছা ঠিক আছে সে না হয় যাবো!!
তো এখন বাদাম দেও ত!! আর বসো গল্প করি তারপর যাবো.
মনির তার বউকে কল দিয়ে জানিয়ে দিলো যে আজকে তাদের বাসায় মেহমান আসবে ।
নিলয়ঃ- তো তারপর তুমার বাসার কি অবস্থা তুমার বউ কেমন আছে সব ঠিকঠাক তো হুম..??
মনিরঃ- জি স্যার আপনাগো দোয়ায় ভালো ।
অন্তীর ফোনে কল আসলো ,
. হ্যালো”
মেম আজকে আপনার আসার কথা ছিলো আপনি কি আসবেন না । ছেলে মেয়েরা আপনার জন্য অপেক্ষা করছে?
_ না আজকে আসতে পারবো না । তুমি বরং তাদেরকে বুজিয়ে বলে দিয়ো ওকে!!
ওকে মেম..
নিলয় এতোক্ষণ অন্তীর কথাগুলো খুব মন দিয়ে শুনছে তবে আগা মাথা কিছুই বের করতে পারছে না, বা বুজতে পারছে না
আচ্ছা অন্তী ওইদিন তুমি বলছিলা পরে এক সময়ে তুমার রহস্যের কথা বলবা । তো এখন তো আমরা ফ্রি আছি বলতে পারো..
অন্তীঃ- হুম শুনবা তাহলে শুনো!!
ওইদিন রাতে আমার জ্ঞান ফেরার পর আমি দেখলাম সুন্দর এক ঘরে আমাকে রাখা হয়েছে । জ্ঞান ফেরার পর আমি শোয়া থেকে উঠলাম বারান্দা গেলাম । রুমটা বেশ সুন্দর পরিপাটি করে সাজানো । তবে আমার কি হয়েছে বা আমি কে কিছুই বুজতে পারলাম না । আমার মনে হলো আমি সব গুলিয়ে ফেলছি ।
. মধ্য বয়স্ক এক লোক আসলো খুব সুন্দর ভাবে আমার সাথে কথা বললো আমি শুধু চেয়ে থাকলাম । তার কথায় কেনো জবাব দিলাম না ।
দেখলাম একজন মহিলা আসলো হাতে কিছু খাবার নিয়ে.
তারপর ওরা আমায় বসিয়ে দিলো খাবার খাওয়ায় দিলো।
আমাকে ঘুমাতে বললো আর কালকে কথা বলবে বলে চলে গেলো । আমার প্রচন্ড ঘুম ধরছিলো ঘুমিয়ে গেলাম ।
পরের দিন সকালে তারা আমাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলো ।
_ রোগী আপনাদের কি হয়??
_ আমার মেয়ে আমরা তার বাবা মা!!
আমি শুধু ড্যাব ড্যাব করে চেয়ে থাকলাম । কিছুই বুজতে পারছি না ।
_ ডাক্তার চেকআপ করে দিলো আর বললো সে ঠিক হতে একমাস সময় লাগবে এই একমাসে তাকে খুব যত্ন নিতে হবে..
ওকে ডাক্তার, সমস্যা নেই আমরা তার ঠিকমতো যত্ন নিবো
বাসায় চলে আসলাম তারা ঠিক একমাস আমাকে খুব যত্ন নিলো । আমি আস্তে আস্তে তাদের বাবা মা ডাকতে শুরু করলাম । আর কেনো ডাকবো না বলো তারা আমায় খুব আদর করছে.
নিলয় বললো তারপর কিভাবে তুমার সবকিছু মনে পড়লো ।
অন্তীঃ হুম শুনো, প্রত্যেকদিন আব্বু আমায় ঘুরতে নিয়ে যেতো তবে একদিন আমি নিজ থেকে বের হলাম । অনেক জায়গায় ঘুরলাম ঘুরতে ঘুরতে এই নদীর ধারে আসলাম ।
এই জায়গায় এসে বসলাম, বসতেই মাথাটা ঝিম ঝিম করা শুরু করছে । মাথায় শুধু একটা জিনিস ঘুরপাক খাচ্ছে আমি এখানে এসেছি আরো বহুবার । তবে কার সাথে আসলাম সেটা মনে পড়ছে না । সেখান থেকে বাসায় চলে গেলাম ।
রাতে বাবা আসলে তাকে আমি জিজ্ঞাসা করলাম আমাকে কোথার থেকে পেয়েছে ??
_ তারপর ওনি সব খুলে বললো । আমার কিছুটা মনে পড়ছে
পরের দিন আমি ওই জায়গায় গেলাম, সেখান থেকে হাটতে হাটতে আমাদের ভার্সিটির সামনে চলে এলাম । এরপর আমার সব মনে পড়তে শুরু করছে । আমি সেখানে গিয়ে তুমাকে অনেক খুজলাম কিন্তু পেলাম না ।
_ একটু আগে যে কথা বললাম, আমি একটা এতিমখানা দিয়েছি বাবাকে বলে, অসহায় বাচ্ছাদের ভারণপোষণ পড়াশুনা সব আমি দেখাশুনা করি । কারণ একসময়ে আমি এমন ছিলাম ।
নিলয়ঃ- যাক ভালো উদ্দেগ নিয়েছো তুমি খুব ভালো তারপর?
অন্তীঃ- তারপর আর কী !! প্রত্যেকদিন এই নদীর ধারে আসতাম আর তোমার খুজতাম বসে থাকতাম তুমার অপেক্ষা
আর ভাবতাম একদিন ঠিক তুমার দেখা পাবো ।
পরে একদিন এসে দেখতে পারলাম তুমার মতো কেউ একজন বসে আছে । আমার মন বলছে এটা তুমি দৌড়ে এসে তুমার সামনে আসলাম । আর দেখা হলো আমাদের
নিলয়ঃ- হুম যাক ভালো!!
মনিরঃ- স্যার অনেকক্ষণ হয়ছে, এহেন চলেন বাসায় যেতে হবে??
নিলয়ঃ- হুম চলো ..
নিলয় অন্তী বাদাম বিক্রেতার বাসায় গেলো খুপড়ি ছনের ঘর তবে রুমটা সুন্দর করে সাজিয়েছে আমাদের জন্য । আমাদের বসতে কষ্ট হলোও মানিয়ে নিলাম । আর রান্নাটা দারুণ হয়েছে । অনেকদিন পর পেটপুরে খেলাম । খেয়ে খুব তৃপ্তি পেলাম ।
খাওয়া দাওয়া শেষ করে মনিরের হাতে কিছু টাকা গুজে দিলাম আর আমার নাম্বারটা দিয়ে দিলাম । বললাম পরের দিন আমারা ঘুরতে যাবো । তুমাকে কল দিলে বউকে নিয়ে চলে আসো । আর যে টাকা গুলো দিলাম সে গুলো দিয়ে ভালো দেখে তুমার আর বউয়ের জন্য জামা কাপড় কিনো ।
তাদের বাসা থেকে বের হয়ে অন্তীকে একটা রিক্সা উঠিয়ে বাসার দিকে হাটা শুরু করলাম ।
রাতে খেয়ে দেয়ে শুয়ে পড়লাম কালকে খুব সকালে উঠতে হবে সব কিছু গুছাতে হবে ।
_ পরের দিন..
ছয়টা টিকেট কাটলাম, সেন্টমার্টিন এসি বাসের বাসটা ভালো সার্ভিস দিচ্ছে ইদানিং তাই এটার টিকেট কাটলাম ।
আবির অথৈ এক এক করে সবাই চলে আসলো কিন্তু অন্তীর আসার কেনো নাম গন্ধ নেই । মেয়েটা ইদানিং টাইম ওয়েস্ট করা শুরু করছে ।
_ অন্তীর ঘড়ির এলার্ম বেজে উঠলো, সে এতোক্ষণ ঘুমিয়ে ছিলো । ধড়ফড়িয়ে উঠে দেখলো ও আল্লাহ খায়ছে মাত্র 30 মিনিট সময় আছে তারপর বাস ছেড়ে দিবে । সে উঠে কি করবা না করবে বুজতে পারছে না । এক প্রকার দৌড়াদৌড়ি শুরু করে দিয়েছে বাসায় । আর বাবা মাকে বকা শুরু করছে
সব তুমাদের জন্য তুমরা আমাকে ডাক দিলা না ইচ্ছে করে
হারুনঃ শুনো মেয়ের কথা কত ডাক দিলাম উঠার কেনো নাম গন্ধ নেই তার । আর এখন সব আমাদের দোষ হুম….
_ মেয়ের এই কান্ডে দেখে তার হারুন সাহেব ও তার স্তী হাসতে হাসতে শেষ ।
_ অন্তী কি করবে বুজতে পারছে না । তাড়াতাড়ি ওয়াসরুমে ডুকে ফ্রেশ হয়ে আসলা । মেকআপ করার সুযোগ নেই । ব্যাগে দুই তিনটা কাপড় নিয়ে বেরিয়ে পড়লো ।
অন্তীর ফোনে কলের পর কল আসছে.. ফোন সাইলেন্ট করা তাই বুজতে পারছে না সে ।
অন্তীঃ- বায় বায় মা, বাবা! মুখ ভেংচিয় কাটলো তাদের দিকে চেয়ে অন্তী !! 😏😏😏
হারুন সাহেব ও তার বউ হাসতে হাসতে পুরাই শেষ.. 😂😂😂😂 সাবধানে যাইস মা আর পৌছেয়ে কল দিবি কিন্তু..
বাস ছেড়ে দিয়েছে এখনও অন্তীর আসার কেনো নাম গন্ধ নেই নিলয় বাসের দরজা সামনে দাড়িয়ে আছে কপালে চিন্তার ভাজ পড়েছে তার যে কেউ দেখলে বুজবে ??
আবির অথৈ মনির সবাই চিন্তিত অন্তী কোথায় সে আসছে না কেনো । তাহলে কি অন্তীকে কি না নিয়ে যেতে হবে??
আপনারা কি বলেন.. ?? 🙂
( অন্তীর রহস্যের জট খুলে দিলাম । আর বাদমওয়ালাকে আমাদের সাথে নিয়ে নিলাম) চিল হবে শুধু.
চলবে..
#তুমি_আমার_অধিকার🍂
#লেখক_সাব্বির আহাম্মেদ
#পার্টঃ10
সবাই চিন্তিত অন্তী আসছে না দেখে । ডাইভারকে বলে নিলয় বাসটা থামিয়ে রেখেছে.. .
ডাইভারঃ- ভাই আর কতক্ষণ ওয়েট করবো মেলা দেরি হয়ে যাচ্ছে তো ।
দূর থেকে দেখা যাচ্ছে কেউ একজন খুব জোড়ে দৌড়ে আসছে
_ বাসের সামনে এসে অন্তী হাফাচ্ছে নিলয় রাগান্তিত স্বরে বললো এতো ঢং না করে, বাসে উঠো জলদি আজাইরা..!
নিলয়ের ধমক শুনে অন্তী হন্তদন্তে হয়ে বাসে উঠলো
সবাই এখন খুশি । অন্তী গিয়ে অথৈয়ের পাশের সিটে বসলো কারণ নিলয়ের সাথে আবির বসেছে । তাদের পিছনের সিটে মনির আর তার বউ বসেছে ।
অথৈ আর অন্তী একসাথে বসেছে ।
অথৈঃ- কিরে তর আসতে এতো দেরি হয়েছে কেনো?? কি করছিলি তুই আরেকটু হলে তো বাস ছেড়ে দিতো??
অন্তীঃ- ছেড়ে দিলে দিতো, যেতাম না হুহু ( রাগী স্বরে)
অথৈঃ- বাবা এতো দেখছি জ্বালে ভরা । তবে অথৈ অন্তীর ব্যাপারটা বুজতে পারলো ।
_ নিলয় অন্তীর সাথে বসে নাই দেখে সে রেগে আছে । অথৈ আবিরকে ইশারা দিয়ে সব বুজিয়ে দিলো । আবির সব বুজতে পেরে.. নিলয় আমি একটু উঠলাম অথৈ আমায় ডাকছে?? এই অন্তী তুমি এইখানে আসো । অন্তী তো লাফ মেরে এসে নিলয়ের সাথে বসলো । নিলয় অন্তীকে দেখে না দেখার ভান করে জানালার দিকে চেয়ে রইলো ।
একটু আগে আকাশটা পরিষ্কার ছিলো হঠৎা করে মেঘ জমে পুরো আকাশ কালো হয়ে গেলো । (এই যেনো মনে হচ্ছে আকাশটা আজ কালো রেশমি শাড়ি পড়েছে❤)
গুটি গুটি বৃষ্টিও পড়ছে
যাক এইরকম ওয়েদার কার না দেখতে ভালো লাগে ।
অন্তীঃ- এহ্হমমম ( কাশি স্বরে)
নিলয়ঃ- একটু তাকিয়ে আবার আকাশ দেখাতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো ।
_ অনেক্ষণ ধরে অন্তীর কর্মকান্ডে দেখে নিলয়ের হাসি পেলো এইবার । থামো আর কাহিনি করতে হবে না । তারপর বলো এতো দেরি হলো কেনো আসতে??
অন্তীঃ- ঘুমায়ছিলাম ( ন্যাকামির স্বরে)
নিলয়ঃ- ওহ আচ্ছা ভালো ।
এইবার আকাশ ফেটে বৃষ্টি নামা শুরু করলো । অন্তী বলে উঠলো আমার খুব ঘুম পাচ্ছে এ কথা বলতে না বলতেই নিলয়ের কাধে অন্তী মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়লো । নিলয়ের তো অবাক হওয়া ছাড়া কিছু নেই । প্রথমে ভাবলো অন্তীর মাথাটা উঠিয়ে দিবে । তারপর কি যেনো ভেবে আর উঠালো না ।
__ একটু তো অধিকার দেওয়া যায় তাকে!!
অন্তী মিটমিট করে আড়াচোখে তাকালো নিলয়ের দিকে না ।
নিলয় কিছু বলছে না । ভালো তো সে নিলয়কে আরো শক্ত করে ধরে ঘুমিয়ে পড়লো ।
দীর্ঘ 7/8 ঘন্টা জার্নি করার পর কক্সবাজার এসে পড়লো তারা ।
হোটেল আগে থেকে বুকিং করা ছিলো তাই সোজা হোটেল এসে পড়লো ত। ম্যানাজার তাদের রুম দেখিয়ে দিয়ে গেলো । আপতত অথৈ আর অন্তী এক রুমে থাকবে নিলয় আবির একসাথে । মনির আর তার বউ একসাথে । নিলয় সবাইকে ফ্রেশ হয়ে রেস্ট নিতে বললো ।
পরের দিন ঘুরতে বের হবে তারা ।
**
**
**
এইবার চলুন নিরার দিকে ফোকাস করি,
নিরা আর হদয় একদিন আগে চলে আসলো হোটেলে । নিরা এখনো হদয়ের আসল মতলবটা টের পায় নি ।
সমুদ্রের ধারে হাত ধরে হাটছে নিরা আর হদয় । এইদিকে হদয়ের বন্ধুরা নিরার গহনাঘাটি কোথায় রাখছে খুজে পাচ্ছে না। হদয় হাসি হাসি ভাব নিয়ে নিরার দিকে তাকিয়ে মনে মনে বললো, আরেকদিন যাক তারপর বুজতে পারবে মামুনি আমি কি চিজ,
নিরাঃ- কি এতো ভাবছো হদয়, দেখো আজকের দিনটা কত সুন্দর । আকাশে মেঘেরা লুকোচুরি খেলছে আর নিচে সমুদ্রের পানি ঢেউ হয়ে লুকোচুরি খেলছে । হদয় শুধু নিরার কথায় তাল মিলাচ্ছে কিন্তু তার মনটা পড়ে আছে রুমে……
হদয়ের বন্ধু নিরব কল দিলো..
হ্যালো..
আরে বেটা মাল গুলো কোথায় রাখছে খুজে পাচ্ছি না তো ।
হদয় রাগের স্বরে বললো আরে সালা ভালো করে খুজ । ভালো সুযোগ করে দিয়েছি তোদের । খুজে না পেলে একেকটাকে জ্যান্ত রাখবো না আমি???
_ আচ্ছা শুন তুই নিরা তো তোর সাথে আছে, একটু কৌশলে তার কাছ থেকে জেনে নেয়??
হদয়:- ভালো আইডিয়া তো দাড়া আমি জেনে নিয়ে নিজে আসছি.
হদয় নিরার কাছ থেকে কৌশলে সব জেনে, আচ্ছা নিরা আমার খুব জোর পেয়েছে আমি আসি..
নিরাঃ- কিহ এমন সময় তুমার বাথরুম পেয়েছে হা হা যাও যাও জলদি আসো..
-আচ্ছা সরি হুম তুমি একটু অপেক্ষা করো আমি এই যাবো আর আসবো..
নিরাঃ- আরে তাড়াহুড়ার কিছু নেই তুমি যাও আমি একটু একা ঘুরবো !! তুমার আসতে হবে না!!
“হদয় তো মহা খুশি, সে আর একমূহর্ত দেরি না করে হোটেলের দিকে হাটা শুরু করলো ।
অপর দিকে, খুব সকালে অন্তী সবাইকে উঠিয়ে দিলো সে আর এক মূহর্ত থাকতে পারছে না । ঘুরতে যাবে??
আবির অথৈ মনির সবাই ফ্রেশ হয়ে চলে আসলো । এইবার নিলয়ের কেনো খবর নেই উঠার । অন্তী রেগে নিলয়ের রুমে ডুকলো । ডুকে দেখলো মহাশয় এখনো ঘুমিয়ে আছে দাড়াও দেখাচ্ছি মজা, এক গ্লাস পানি নিয়ে এসে নিলয়ের প্যান্টের ওপর ঢেলে দিলো,
নিলয়ঃ- নিলয় লাফ দিয়ে উঠে এইইইইইইইইই কে রে… কে এ কাজ করলো আমার স্বাধের প্যান্টটা ভিজিয়ে দিলো কে ??
অন্তী আর দেরি না করে সেখান থেকে ভৌ দৌড় দিলো!! সবাই সেকি হাসি । হা হা হা😂😂😂 ( আমিও এই জায়গা লিখতে অনেক হাসছি 😁😂😂😂)
সবাই বেরিয়ে পড়লো অন্তী নিলয়ের হাত ধরার চেষ্টা করছে বারবার নিলয় সেটা খেয়াল করে বুকে হাত বেধে হাটা শুরু করলো । অন্তী খুব রেগে গেলো নিলয়ের এমন কাহিনি দেখে!! অনেকক্ষণ ঘুরাঘুরির পর নিলয় আবির অথৈ মনির সবাই বসলো চেয়ারে অন্তী বসলো না । সে পানিতে ছুটাছুটি করছে । নিলয় আর তাকে আটকালো না । অব্যশই তারও ভালো লাগছে অন্তীর এমন পাগলামি গুলো ।
নিলয়ের মনে আস্তে আস্তে অন্তীর জন্য ভালোবাসা জন্মাচ্ছে ।
_ নিরা ঘুরতে ঘুরতে নিলয়রা যেখানে বসেছিলো । সেখানে চলে আসলো ।
নিলয় তো পুরা টাস্কি খেয়ে আছে নিরাকে দেখে । নিরাও যে অবাক হয়ছে তা না সেও অবাক হয়েছে । ভাবতে পারিনি তাদের এইভাবে দেখা হবে । নিরা কিছুক্ষণ দূরে থাকিয়ে নিলয়ের কাছে আসলো?? আবির কিছু বলতে যাবে নিলয় তাকে থামিয়ে দিলো ।
নিরাঃ- কি ব্যাপার সদলবদল নিয়ে একবারে আমি যেখানে আসছি সেখানেই আসতে হলো আপনাকে আর কোথাও যাওয়ার জায়গায় নেই ??
এতোক্ষণ অন্তী পানিতে ছুটাছুটি করছে । নিলয়ের সামনে একটা মেয়েকে দেখে সে ছুটে আসলো ।
অন্তীঃ- কি হয়েছে কি এইখানে । আর এই মেয়ে তুমি কে??
নিরাঃ- তার আগে বলো তুমি কে?? আমাদের মাঝখানে উড়ে আসলা কেনো!!
অন্তীঃ- আমি যেইই হইই না কেনো । তাতে তুমার কি?
নিরা অন্তীর কথায় কান না দিয়ে নিলয়কে আবার সেই কথা গুলো বললো ।
অন্তী এইবার নিজেকে কন্টোল করতে পারলো না । এই মেয়ে তুমার সাহস কি করে হু । আমার সামনে আমার ভালোবাসার মানুষটিকে এমন কথা বলার । তুমি কোন অধিকারে তাকে এই কথা গুলো বলছো । তাকে তো তুমি কেনো অধিকার দেও নি । তাহলে কোন অধিকারে কথা গুলো তাকে কথাগুলো বলছো হু
তারপর অন্তী এক এক করে নিলয়ের সাথে কি কি হয়েছে সব বললো ।
– ফারদার যদি আমি তুমাকে নিলয়ের আশে পাশে দেখি তুমার খবর আছে??
_ নিরা রেগেমেগে সেখান থেকে চলে আসলো । তবে নিলয়ের বিষয়টা তার মনে একটু খারাপ লেগেছে ।
পরে সে ব্যাপারটা সাধারণ ভেবে উড়িয়ে দিলো…
অন্তীর এমন কাহিনি দেখে নিলয় আবির অথৈ সবাই হতবাক.
অথৈঃ- কি মেম এতো ভালোবাসা কোথার থেকে আসলো আপনার মনে হুম?? অথৈয়ের কথা শুনে অন্তী লজ্জায় হোটেলের দিকে দৌড় দিলো ।
_ সবাই হো হো হো করে হেসে উঠলো..
নিরা রেগে মেগে হোটেলে আসলো । হদয় নিরার এমন হাবভাব দেখে জিজ্ঞাসা করলো কি হয়েছে ।
নিরাঃ- কিছু না বললো এই বলে সে শুয়ে পড়লো ।
আর এইদিকে হদয়ও তার বন্ধুরা তাদের কাজটা সেরে ফেললো। আজ রাতটা কেনোমতে কাটিয়ে দিয়ে কাল খুব ভোরে উঠে চম্পট দিবে!!
– আসলে হদয়রা সংঙ্গবদ্ধ প্রতারক ।
বড়লোকের সুন্দরী মেয়েদের প্রেমের জালে ফাসিয়ে তাদের থেকে অর্থ সম্পদ হাতিয়ে নেওয়া হলো তাদের পেশা । নিরাও তার জালে ফেসে গেছে । তবে নিরাকে তাদের জালে ফাসাতে তার অনেক কাঠখড় পুড়াতে হয়েছে । সত্যি সত্যি ভালোবাসার অভিনয় করতে হয়েছে । যাক আর কিছু না ভেবে রিলাক্স মুডে শুয়ে পড়লো সে ।
খুব ভোরে উঠে হদয় আর তার সাথীরা চম্পট দিলো । আগে থেকে সবকিছু ব্যবস্থা করে রাখা হয়েছে । হদয় নিরার জন্য একটা চিরকুট লিখে টেবিলে রেখে দিলো ।
নিরার সকাল আটটার দিকে ঘুম ভাঙ্গলো, চোখ কচলাতে কচলাতে দেখলো তার পাশে হদয় নেই । সে ভাবলো হয়তো বাথরুমে গেছে । অনেকক্ষণ ওয়েট কর পর দেখলো হদয়ের কেনো পাওা নেই । এইবার সে ভয় পেয়ে গেলো । আজকে তাদের বিয়ে করার কথা ছিলো ।
একটু পর তার খেয়াল আসলো সে তো আসতে বেশ টাকা আর গহনাঘাটি নিয়ে এসেছে । তার ব্যাগ খুলতে সে দেখে তার ব্যাগ ফাকা । সে খুব চিৎকার দিয়ে উঠে । হোটেলের কর্মচারীরা দৌড়ে এসে..
ম্যাম এনিথিং রং…..
নিরাঃ- নো আমার কিছু হয় নি যাও এখান থেকে । নিরা দৌড়ে হোটেলের বাহিরে গেলো হদয় কি তার টিকিটাও খুজে পেলো না পাবে কি করে হদয় তো আগেই সবকিছু নিয়ে চম্পট দিয়েছে । রুমে এসে দেখলো টেবিলের ওপর একটা চিরকুট ।
সেখানে লিখা, হাই বেবি “” খুব শকড হয়ে আছো তাই না । খুব বেগ পেতে হয়েছে তুমাকে পটাতে তবে ব্যাপার না আবার দেখা হবে আমাদের ?? নিরা চিরকুটটা ছিড়ে ফেললো ।
সে হ্দয়ের নাম্বারের কল দিলো নাম্বারটা বন্ধ পেলো।
এইদিকে নিলয়দের আজকে যাওয়ার পালা । সবাই ব্যাগপত্র গুছিয়ে রেডি হয়ে নিলো ।
– বাস ছেড়ে দিবে একটু পর..
এইবার বাসে অন্তী সবার আগে উঠে পড়লো । অথৈ অন্তীর পাশে বসতে যেতেই অন্তী তাকে উঠিয়ে দিলো সে হাত দিতে সিটটা ধরে রাখলো নিলয়ের জন্য ।
_নিলয় বাসে উঠে অন্তীর পাশ কাটিয়ে অপর সিটে বসতে যেতেই অন্তী পিছন থেকে টান মেরে নিলয়কে তার সিটে বসিয়ে দিলো ।
উঠার চেষ্টা করলে সবার সামনে কিস দিয়ে দিবো..
নিলয় বলে উঠলো – কি সাংঘাতিক মেয়েরে বাবা..
অন্তী হো হো করে হেসে উঠলো…
_ নিরা কেনো মতে বাসায় আসলো সে তার প্রতিটি কাজের জন্য অনুশোচনা করতে লাগলো সে তার ফোনটা বের করে নিলয়ের নাম্বারে কল দিলো…
চলবে