তুমি_শুধু_আমারই_হও লেখনীতে- অরনিশা সাথী |৩৩|

#তুমি_শুধু_আমারই_হও
লেখনীতে- অরনিশা সাথী

|৩৩|

শাওয়ার নিয়ে বেরিয়ে অর্নি সোজা নিচে চলে গেলো। উৎসব এক পলক তাকালো ওর দিকে। কিছু বললো না। ও নিজের কাজে মনোযোগ দিলো আবারো। শায়লা বেগমের সাথে সবকিছু হাতে হাতে করছে অর্নি। রাতের খাওয়ার সময় ঘনিয়ে এসেছে। হাতের কাজ শেষ করে নূরের ঘরের দিকে পা বাড়ালো অর্নি। পথিমধ্যে দেখা হলো ইশার সাথে। ইশা অর্নিকে আগাগোড়া দেখে তাচ্ছিল্য হেসে বললো,
–“কিভাবে বশ করেছো আমার উৎসবকে? তোমার থেকে তো কোনো অংশে কম সুন্দরী না আমি। বরং একটু বেশিই। তাহলে উৎসব আমার প্রপোজাল এক্সেপ্ট না করে তোমায় বিয়ে করলো কি করে? তাবিজ টাবিজ করছো? নাকি বিয়ের আগেই সোজা বিছানায় নিয়ে____”

ইশা কথাটা সম্পূর্ণ করার আগেই সজোরে চ/ড় বসালো ওর গালে। ইশা গালে হাত দিয়ে রাগী চোখে তাকালো অর্নির দিকে৷ অর্নিকে বললো,
–“হাউ ডেয়ার ইউ? তোমার সাহস হলো কি করে আমায় চ/ড় মারার?”

কথাগুলো বলে ইশা হাত উঠালো অর্নিকে মারার জন্য। অর্নি ইশার হাত মুচড়ে ধরে দাঁতে দাঁত চেপে বললো,
–“আপনি আমার থেকে বয়সে অনেকটাই বড় এটা আমি জানি। কিন্তু আপনি যতবার আমাকে আর আমার হাজবেন্ডকে নিয়ে নোংরা কথা বলবেন ঠিক ততবারই আমার হাত উঠবে আপনার উপর।”

বলেই ইশার হাত ছেড়ে দিলো। ইশা আবারো কিছু বলতে গেলে অর্নি বলে,
–“কি যেন বললেন? আপনি আমার থেকে বেশি সুন্দরী তবুও উৎসব কেন আপনাকে ভালো না বেসে আমার কাছে আসলো? জানতে চান এইটা? বাহ্যিক সৌন্দর্যই সবকিছু না। আপনি বাইরে থেকে অনেক সুন্দরী হলেও আপনার ভিতরটা একদম কুৎসিত, নোংরায় ভরা। যার কারণে আপনি আজ এসব নোংরা ওয়ার্ডস ইউজ করেছেন। ভালোবাসাটা বাহ্যিক সৌন্দর্য দেখে হয় না। মনের মিল লাগে। সুন্দর মন মানসিকতা লাগে যা আপনার মাঝে নেই।”

কথাগুলো বলে অর্নি চলে আসতে নিলেও আবারো পিছিয়ে ইশার সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। ইশাকে বললো,
–“নেক্সট আপনাকে যেন একদম আমার বরের পাশে না দেখি। নয়তো এর ফল আরো খারাপ হবে। মাইন্ড ইট।”

কথাগুলো বলে হনহনিয়ে নূরের ঘরে চলে গেলো অর্নি। রাগে ফুঁসছে ও। ইশার এরকম বাজে ওয়ার্ডস শুনে অর্নির রাগে শরীর রিঁ রিঁ করছে৷ ইচ্ছে করছে মেয়েটাকে খুন করে ফেলতে। নূর অর্নির কাঁধে হাত রাখতেই অর্নি বললো,
–“দেখ ইশার বিষয়ে কোনো কথা বলতে চাচ্ছি না আমি। এই টপিক ভুলে থাকতে চাই। তোর কাজিনের ওসব নোংরা ওয়ার্ডস মনে রাখতে চাই না আমি।”

নূর কিছু না বলে জড়িয়ে ধরলো অর্নিকে৷ নূরের সান্নিধ্য পেয়ে অর্নি হুঁ হুঁ করে কেঁদে উঠলো। নূর অর্নির পিঠে হাত বুলিয়ে বললো,
–“কাঁদিস না দোস্ত। ইশা আপুর হয়ে আমি ক্ষমা চাচ্ছি৷ প্লিজ মন খারাপ করিস না।”

অর্নি চোখের পানি মুছে বললো,
–“সব দোষ তোর ভাইয়ের। উনি কেন আমাদের বিয়ের বিষয়টা জানায়নি সকলকে? আর সেদিন ইশা উনাকে প্রপোজ করার পর উনি কোনো কিছু না বলে ঝুলিয়ে রেখেছিলো? কেন সেদিনই এক্সেপ্ট বা রিজেক্ট করে দিলো না সরাসরি? তাহলে তো আজ এসব শুনতে হতো না আমার।”

দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে এসব কথা শুনে রাগে হাত মুষ্টিবদ্ধ করে নিলো উৎসব। অর্নিকে ইশা এত বাজে বাজে কথা শুনিয়েছে জেনে রাগে ওর ইশাকে এই মূহুর্তে খুন করতে ইচ্ছে করছে। রেগেমেগে সরে গেলো ওখান থেকে। ইশার ঘরে গিয়ে দেখলো ইশা উপুড় হয়ে শুয়ে কাঁদছে। উৎসব একটানে ইশাকে দাঁড় করালো। ইশা উৎসবকে দেখতে পেয়ে হামলে পড়লো উৎসবের বুকে। উৎসবকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বললো,
–“উৎসব জানো? ওই মেয়েটা, ওই মেয়েটা মেরেছে আমাকে।”

উৎসব ধাক্কা দিয়ে ইশাকে নিজের থেকে সরিয়ে দিলো। চিৎকার করে বললো,
–“যাকে তুই ওই মেয়েটা ওই মেয়েটা বলছিস সে আমার বিয়ে করা বউ। ভাবী হয় তোর। সম্মান দিয়ে কথা বলতে পারলে বলবি নয়তো কথা বলার দরকার নেই তোর।”

–“উৎসব তুমি___”

উৎসব ইশার গাল চেপে ধরে বললো,
–“তোর সাহস হয় কি করে অর্নিকে ওসব বলার? ভালোবেসে বিয়ে করেছি ওকে আমি। তুই আমার ভালোবাসাকে অপমান করিস কিভাবে? হাউ?”

উৎসবের ধমকে কেঁপে উঠলো ইশা৷ উৎসব আবারো বললো,
–“তুই থাকবি না এ বাড়িতে। কাল ঘুম থেকে উঠে যেন তোকে আর এ বাড়িতে না দেখি আমি। এখনই ব্যাগপত্র গুছিয়ে রাখবি সকাল হলেই কেটে পড়বি এখান থেকে।”

কথাটা বলে দরজা অব্দি গিয়ে আবারো থেমে গেলো উৎসব৷ ইশার কাছে এসে বললো,
–“না যাবি না। অনেক কিছু দেখার আছে তো তোর তাই না? আমাদের হলুদ, বিয়ে, বাসর সেসবের কিছুই তো দেখিসনি। শুধু আমাকে আর অর্নিকে একঘরে থাকতে দেখেছিস। এখন সবকিছু দেখাবো তোকে। হলুদ বিয়ে বাসর সবকিছুর আয়োজন তুই নিজ হাতে করবি নূর ওদের সাথে। তারপর সব মিটে গেলেই বিদায় হবি এখান থেকে।”

উৎসব যেতেই ইশা দরজা আটকে দিয়ে ফ্লোরে বসে পড়লো। কাঁদছে ও। ও তো সত্যিই ভালোবেসেছে উৎসবকে৷ তাই তো হুট করেই উৎসবের বিয়ের কথাটা মানতে না পারে যা-তা বলে ফেলেছে অর্নিকে। কিন্তু ও কি করবে? ও উৎসবকে ভালোবাসে, অনেকটা ভালোবাসে।

অর্নি রুমে এসে চুপচাপ শুয়ে পড়লো। উৎসব ওর সাথে কথা বলতে চাইলেও বলতে পারলো না। অর্নি কথা বলার কোনো স্কোপই দেয়নি। উৎসব অর্নিকে টেনে নিজের দিকে ঘুরালো। দুহাতে অর্নির গাল স্পর্শ করে নরম স্বরে বললো,
–“কথা বলছো না কেন? অন্যের কথায় কেন মন খারাপ করছো? তুমি প্রতিবাদ করেছো তো, সাথে আমিও। তাহলে এরপরও আমার উপর রেগে থাকার কোনো মানে হয়?”

অর্নি কিচ্ছু বললো না। উৎসব অর্নির কপালে কপাল ঠেকিয়ে বললো,
–“আমায় কষ্ট দিচ্ছো কেন? আমি তো ভালোবাসি তোমায়।”

–“আমি কাউকে কষ্ট দিচ্ছি না। সব দোষ আপনার। আপনি কেন সবাইকে জানাননি আমাদের বিয়ের কথা? কেন? সেদিন বিয়ের জন্য এত তাড়াহুড়ো কেন করেছিলেন? কথা ছিলো তো পরে অনুষ্ঠান করে এ বাড়িতে পা রাখবো আমি। নিজের জেদে আমাকে তার আগেই কেন এই বাড়িতে নিয়ে এলেন আপনি? আর সব যেহেতু করেছেনই তাহলে জানাননি কেন সবাইকে? সবাইকে জানানোর ব্যাপারটা কেন বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য রেখে দিয়েছিলেন? আর সেদিন ইশার প্রপোজাল এক্সেপ্ট বা রিজেক্ট না করে ঝুলিয়ে রেখেছিলেন কেন আপনি? আপনি ওর থেকে সময় কেন নিয়েছিলেন? ও তো ভেবেই বসেছে আপনি ওকে ভালোবাসেন বলেই সময় নিয়েছেন। কেন করেছেন এমন? আমায় জেলাস ফিল করানোর জন্য? করে লাভ হলো কি? সেদিন যদি সরাসরি সবটা ওকে বলে দিতেন তাহলে আজকে এসবের কিছুই হতো না। আপনার জন্য, শুধুমাত্র আপনার জন্য আমায় আজ এসব নোংরা কথা শুনতে হয়েছে।”

–“আমি এতকিছু ভাবিনি অর্নি। ইশার বাবা মা সবাই জানে, আমি ভেবেছি ইশা নিজেও জানে আমাদের বিয়ের কথা, আমি সেদিন সামনাসামনি ওকে বলিনি এই কারনে ও কষ্ট পাবে৷ আর তোমাকেও দেখানোর ছিলো কিছুটা৷ ভেবেছিলাম পরে সময় করে বলে দিবো৷ কিন্তু ও তার আগেই চলে যায়৷ আর তোমার সবকিছু মেনে নিয়েও হঠাৎ পালটে যাওয়াতে ওই কথাটা মাথা থেকে বেরিয়ে গেছিলো আমার। আমি তো তোমায় ভালোবাসি তাহলে___”

অর্নি এবার ঝাড়া মেরে ছাড়িয়ে নিলো নিজেকে। উৎসবের কলার চেপে ধরে বললো,
–“ভালোবাসেন? কি দেখে ভালোবাসেন? আমি তো ইশার মতো অত সুন্দরী না। ইশাকে রিজেক্ট করে আমাকেই কেন ভালোবাসলেন? আমার জানামতে তো আমি না আপনাকে শরীর দেখিয়েছি আর না বিয়ের আগে বিছানায়___যান না যান, ইশার কাছে যান আপনি। ও আপনাকে ভালোবাসে। ওকেই বিয়ে করুন, ছেড়ে দিন আমা___”

উৎসব রেগে গিয়ে থাপ্পড় মারলো অর্নিকে। অর্নি গালে হাত দিয়ে অবাক চোখে দেখছে উৎসবকে। উৎসবের চোখজোড়া ভীষণ লাল হয়ে আছে। রাগে রীতিমতো থরথর করে কাঁপছে ছেলেটা৷ উৎসব দাঁতে দাঁত চেপে তাকিয়ে আছে অর্নির দিকে। এই প্রথম উৎসব ওর গায়ে হাত তুললো। চোখ বেয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে। অর্নি কাঁপা কাঁপা স্বরে বললো,
–“আপ্ আপনি আমাকে মা্ মারলেন?”

–“হ্যাঁ মারলাম তোমাকে। ইশার মতো একই ওয়ার্ডস তো এখন তুমি নিজেও ইউজ করছো। আমি একবারো বলেছি বিয়ের আগে তোমার___ইশা নোংরা কথা শুনিয়েছে তোমায়, এতে তুমি হার্ট হয়েছে আই নো৷ কিন্তু তুমি বা আমি কেউ-ই তো ছেড়ে দেইনি ওকে। এখন ওর উপর রাগ দেখিয়ে আবার এসব ফালতু কথা কেন তুলছো তুমি? আমার ভালোবাসা চোখে পড়ছে না, না? ওর নোংরা কথাগুলোই মাথায় ঘুরছে? আর কি বললে তুমি? তোমায় ছেড়ে দেওয়ার কথা? ইহকালে কেন? পরকালেও যদি আমার ক্ষমতা থাকে তো তোমায় ছাড়বো না আমি। ছেড়ে দেওয়ার জন্য ভালোবাসিনি, বিয়ে করিনি। সাহস হয় কি করে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলার? আর একদিন যদি এই কথা শুনেছি তো একদম মেরে ফেলবো।”

অর্নি কিছু না বলে উঠে চলে যাচ্ছিলো দরজা খুলে। উৎসব দ্রুত উঠে গিয়ে অর্নিকে ভেতরে এনে দরজা আটকে দিয়ে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে ওকে। অর্নি বারবার ছাড়ানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। উৎসব অর্নির ঘাড়ে থুতনি রেখে বললো,
–“বউ, স্যরি তো৷ মাথা ঠিক ছিলো না। তোমার ওসব কথা শুনে মাথায় রক্ত চেপে গেছিলো৷ প্লিজ রাগ করো না৷”

অর্নি তখনো চুপ করেই আছে৷ উৎসব অর্নির দুই গাল ধরলো। উৎসবের চোখদুটো লাল হয়ে আছে৷ চোখে পানি টলমল করছে। নরম স্বরে বললো,
–“স্যরি বউ, আমি তোমায় আঘাত করেছি রাইট? ওয়েট।”

এই বলে উৎসব দেয়ালে নিজের হাত পাঞ্চ মারতে লাগলো। অর্নি ছুটে গিয়ে উৎসবের হাত ধরে বললো,
–“পাগল হইছেন? কিসব করছেন?”

–“এই হাত দিয়ে মেরেছি না তোমায়? আয়নায় দেখো নিজেকে, গালে আমার থাপ্পড়ের দাগ বসে গেছে। তোমাকে আঘাত করেছি আমি।”

বলে আবারো পাঞ্চ মারতে গেলে অর্নি গিয়ে দাঁড়ায় দেয়ালের সামনে। ভয়ে চোখ বন্ধ করে আছে অর্নি। উৎসব অর্নি কপাল বরাবর হাত নিয়ে থেমে গেলো। হাত নিচে নামিয়ে অর্নিকে একটানে নিজের কাছে এনে জড়িয়ে ধরলো। অর্নি দুইহাতে উৎসবকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে পিঠের শার্ট খামচে ধরে কেঁদে দিলো। কাঁদতে কাঁদতে বললো,
–“আপনি থাপ্পড় মারাতে আমার কষ্ট হয়নি উৎসব কিন্তু ইশা, ইশা আমাকে ওসব___”

–“আ’ম স্যরি বউ, আমার জন্য তোমায় ওসব শুনতে হয়েছে৷ প্লিজ ফরগিভ মি।”

অর্নি কিছু বললো না৷ নাক টানছে শুধু। উৎসব অর্নির মাথায় চুমু খেয়ে বললো,
–“এবার সবাইকে জানানোর পালা। পুরো শহর জানবে আমাদের বিয়ের কথা। আমি চাইনা আর কেউ আমার বউকে আঘাত করে কোনো কথা বলুক। কারো কটু কথার জন্য আমার বউয়ের চোখের পানি পড়বে তা চাই না আমি৷ আর ওরকমটা কখনো হতেও দিবো না আমি।”

কথাগুলো বলে শক্ত করে জড়িয়ে নিলো অর্নিকে নিজের সাথে৷ অর্নি উৎসবের বুকের সাথে লেপ্টে থেকে হেঁচকি তুলছে বারবার।

পরদিন সবাই একসাথে টেবিলে বসেছে নাস্তা করার জন্য। ইশা আসেনি এখনো৷ নূর গিয়ে ডেকে আনলো ওকে৷ ইশার চোখমুখের বেহাল অবস্থা। কেঁদেকেটে চোখমুখ ফুলিয়ে ফেলেছে। উৎসব একপলক তাকিয়ে চোখ ফিরিয়ে নিলো। নূর, শায়লা বেগম, নিলয় আবরার সকলেই চুপ। কাল রাতে ওদের উৎসব আর অর্নির ঘর থেকে আসা চিৎকার চেঁচামেচি সবই শুনেছে উনারা। তাই মোটামুটি আন্দাজ করে নিয়েছে কি হয়েছিলো আর ইশার এই অবস্থা কেন। উনারা কেউ-ই এই বিষয়ে কোনরূপ কথা তুললেন না। চুপচাপ খাওয়ায় মনোযোগ দিলেন। অর্নি বেশ কিছুক্ষণ স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে রইলো ইশার দিকে৷ এবার অর্নির ইশার জন্য বড্ড খারাপ লাগছে৷ রাতে বলা ইশার কথাগুলো মূহুর্তেই ভুলে গেলো সব। মেয়েটা কেঁদে কি অবস্থা করেছে নিজের। উৎসবকে সত্যিই বোধহয় বড্ড ভালোবাসে৷ নয়তো এরকম অবস্থা হওয়ার কথা না৷ ভাবলো ও না থাকলে বোধহয় আজ ওর জায়গায় ইশা থাকতো। ইশা উৎসবের বউ হতো। কিন্তু কিছু করার নেই তো। অর্নিও উৎসবকে বড্ড ভালোবাসে। সবথেকে বড় কথা উৎসব অর্নি বলতে পাগল। ও কিছুতেই উৎসবকে ছাড়তে পারবে না৷ তাই অর্নির ইশার জন্য খারাপ লাগা স্বত্তেও সেটা নিয়ে বেশি ভাবলো না। ভেবে তো আর কিছু হবে না। উৎসব খেতে নিলয় আবরারকে বললো,
–“আমাদের বিয়ের অনুষ্ঠানটা সেরে ফেলতে চাই আব্বু। যত দ্রুত সম্ভব অর্নব আর আন্টির সাথে কথা বলে বিয়ের আয়োজন করো।”

উৎসবের কথায় সবাই বেশ অবাক হলো। পরবর্তীতেই অবাকের রেশ কাটিয়ে ফেললো কাল রাতে উৎসব অর্নির ঘর থেকে আসা কথোপকথন শুনে। নূর তো প্রচন্ড খুশি৷ অর্নি অবাক চোখে দেখছে উৎসবকে। এদিকে ইশা ছলছলে চোখে তাকালো উৎসবের দিকে৷ উৎসব চুপচাপ খাবার খাচ্ছে। শায়লা বেগম বললো,
–“অর্নবের বিয়ের সময় না একইসাথে অনুষ্ঠান করার কথা ছিলো? এখন হুট করে বললে কেমন দেখায় না?”

–“সেটা আমার 000প0দেখার বিষয় না। তোমরা কথা বলো ওদের সাথে। অর্নবও বিয়ে এখুনি করবে মেয়ে তো ঠিক করাই আছে সমস্যা কোথায়? আর যদি অর্নব এখন বিয়ে করতে না পারে তাহলে আমার আর অর্নির বিয়ের অনুষ্ঠানটাই হবে।”

–“কিন্তু___”

শায়লা বেগমকে সম্পূর্ণ কথা বলতে না দিয়ে থামিয়ে দিলে নিলয় আবরার। ছেলের দিকে তাকিয়ে বললেন,
–“আমি কথা বলবো বেয়ানের সাথে। কবে অনুষ্ঠান করতে চাচ্ছো তুমি?”

–“যত দ্রুত সম্ভব।”

কথাটা বলেই খাবার শেষ করে উঠে দাঁড়ালো৷ অর্নিকে বললো,
–“নাস্তা শেষ করে দ্রুত ঘরে আসো, অফিস যাবো আমি।”

এই বলে চলে গেলো উৎসব। ওর যাওয়ার দিকে অর্নি তাকিয়ে রইলো ক্ষানিকটা সময়। তারপর আবার নিজের খাওয়ায় মনোযোগ দিলো।

চলবে~

[ আশা রাখছি নাইছ নেক্সট না লিখে গল্প সম্বন্ধে ভালো খারাপ দুই চার লাইন লিখে যাবেন। ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here