তুমি_শুধু_আমারই_হও লেখনীতে- অরনিশা সাথী |৩২|

#তুমি_শুধু_আমারই_হও
লেখনীতে- অরনিশা সাথী

|৩২|

এর মাঝে আরো দুই দিন কেটেছে। ভার্সিটির মাঠে বসে আড্ডা দিচ্ছে অর্নি নূর তরী এবং রুশান৷ ইচ্ছে আছে ক্লাস বাঙ্ক করে ঘুরতে যাবে। দূরে কোথাও। নূর বললো,
–“আচ্ছা অর্নি ভাইয়া জানতে পারলে আবার কিছু বলবে না তো?”

অর্নি নূরের কাঁধ চাপড়ে বেশ ভাব নিয়ে বললো,
–“আরেহ চিল কর দোস্ত, তোর ভাইয়া জানার আগেই আমরা বাড়ি ফিরে যাবো। আর যদিওবা টের পেয়ে যায় তাহলে সবটা সামলে নিবো, ম্যা হু না?”

অর্নির কথা বলার ধরনে হেসে ফেললো সবাই। রুশান বললো,
–“আচ্ছা কোথায় যাওয়া যায়?”

আসলেই তো কোথায় যাওয়া যায়? সকলেই ভাবুক হয়ে উঠলো। নূর বললো,
–“শহরের আনাচে-কানাচে তো অনেক ঘুরলাম। আজ না হয় শহর ছেড়ে অনেক দূরের কোনো গ্রামের দিকে যাই?”

সহমত প্রকাশ করলো সকলে। তরী বললো,
–“আপু, গুড আইডিয়া। গ্রামের দিকেই যাবো আমরা।”

নূর চুপসে যাওয়া মুখে বললো,
–“কিন্তু টাকা? আজ তো কোথাও যাওয়ার প্ল্যান ছিলো না। টাকা আনিনি তো বেশি।”

সবার টনক নড়লো৷ আসলেই আজ কোনো প্ল্যান করে আসেনি। আগে থেকে প্ল্যান থাকলে এক্সট্রা টাকা রাখা যায় সাথে কিন্তু এখন? রুশান নিজের ওয়ালেট চেক করে বললো,
–“আমার কাছে দু/তিন হাজারের মতো আছে। হবে এতে?”

–“নাহ, গ্রামে যদি কোনো মেলা টেলা পেয়ে যাই? গ্রামের দিকে তো মেলা লেগেই থাকে। তখন অনেক কিছু কিনতে ইচ্ছে করবে তো। এই টাকায় হবে না।”

নূরের কথায় হতাশ হলো রুশান। তরী বললো,
–“তাহলে কি আজ যাওয়া ক্যান্সেল?”

এতক্ষণ সবটা চুপচাপ শুনছিলো অর্নি। ভাবছিলো কি করা যায়। তরীর কথার জবাবে বললো,
–“উঁহু, যাবো আমরা আর সেটা আজই। আমি টাকা আনানোর ব্যবস্থা করছি।”

–“কিভাবে?”

রুশানের প্রশ্নের জবাব দিলো না অর্নি। ফোন বের করে ডায়াল করলো উৎসবের নাম্বারে। ওপাশ থেকে ফোন রিসিভ হতেই অর্নি প্রথমে সালাম দিয়ে ভালো-মন্দ জিজ্ঞেস করলো। তারপর বললো,
–“উৎসব, শুনুন না__”

–“শুনছি তো বলো।”

–“ইয়ে মানে___”

–“কি লাগবে?”

অর্নি চমকালো। অবাকের রেশ কাটিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
–“আপনি বুঝলেন কি করে আমার কিছু লাগবে?”

–“আপনি তো আমায় এই সময়ে সচারাচর ফোন দেন না৷ আর আপনার কথার ধরণেই বুঝেছি৷ আপনার আগাগোড়া পুরোটাই তো আমার জানা।”

উৎসবের কথায় মুচকি হাসলো অর্নি। উৎসব ঘড়িতে সময় দেখে বললো,
–“অর্নি দ্রুত বলো কি লাগবে, আমি বিজি হয়ে পড়বো। আর্জেন্ট মিটিং আছে।”

–“টা্ টাকা___”

–“ক্যাশ নেই কাছে?”

–“উহুম, এখন কাছে নেই কালই ব্যাগ থেকে আলমারিতে তুলে রেখেছি। ভেবেছিলাম লাগবে না।”

–“বিকাশ___?”

–“শেষ।”

–“তোমাকে বলেছিলাম তো বিকাশে টাকা না থাকলে জানাবে আমায়৷ দিয়ে রাখবো। কখন কোন কাজে লাগে বলা যায় না।”

চুপ করে রইলো অর্নি। উৎসব বললো,
–“আচ্ছা, কত লাগবে?”

অর্নি তাকালো নূর রুশানের দিকে। ইশারায় জিজ্ঞেস করলো কত চাইবে? নূর দুই হাতের দশ আঙুল দেখিয়ে দশ হাজার বোঝালো। অর্নি ভ্রু কুঁচকে ফেললো। এত টাকা কেন? ওদিকে অর্নির কোনো সারা শব্দ না পেয়ে উৎসব আবারো বললো,
–“কি হলো দ্রুত বলো?”

–“আ্ আপনি যা দিবেন তাতেই হবে।”

–“আর ইউ সিয়র?”

–“হুম।”

–“আচ্ছা, এখন রাখছি তাহলে।”

অর্নি সম্মতি জানাতেই উৎসব লাইন কেটে দিলো। নূর রাগী চোখে তাকিয়ে বললো,
–“তোকে না বললাম দশ হাজারের কথা বলতে? তুই ভাইয়াকে ওই কথা বললি কেন? এখন যদি বেশি টাকা না দেয়?”

–“এত টাকাই চাইলে পড়ে জিজ্ঞেস করতো না কি করবে? তার থেকে বরং অর্নি উৎসব ভাইয়ের ইচ্ছের কথা বলেই ঠিক করেছে।”

নূরের কথার জবাবে বললো রুশান। অর্নি বললো,
–“উঁহু, জিজ্ঞেস করতো না কিচ্ছু। উনাকে চিনি আমি।”

ইতিমধ্যেই অর্নির ফোনে ম্যাসেজ টোন বেজে উঠলো। অর্নি চেক করে দেখলো টাকা এসেছে। এমাউন্ট দেখে হাসি ফুটলো অর্নির মুখে। অর্নি নূর রুশান ওদের সামনে ফোন তুলে দেখালো। মৃদু হাসলো সকলেই। পনেরো হাজার পাঠিয়েছে। তৎক্ষনাৎ অর্নির ফোন বেজে উঠলো আবার। রিসিভ করতেই উৎসব বললো,
–“টাকা পেয়েছো?”

–“এত টাকা কেন? কি করবো এত টাকা দিয়ে?”

–“যা ইচ্ছে।”

–“জানতে চাইবেন না টাকা কেন লাগবে?”

–“উঁহু।”

–“কেন?”

–“এমনি।”

–“এত টাকা প্রয়োজন ছিলো না।”

–“নূর তো সাথেই আছে রাইট? কিছু পছন্দ হলে কেনাকাটা করে নিও দুজনে।”

অর্নি প্রত্যুত্তরে কিছু বললো না। উৎসব আবারো বললো,
–“আচ্ছা রাখছি বউ, মিটিং শেষে কল ব্যাক করছি।”

–“হুম।”

–“ভালোবাসি বউ।”

অর্নি ক্ষানিকটা সময় নিরব থাকলো। একবার তাকালো নূর রুশান তরী ওদের দিকে। তারপর হঠাৎই বললো,
–“আমিও ভালোবাসি।”

উৎসব মুচকি হেসে লাইন কেটে দিলো। এদিকে নূর রুশান ওরা মুখ টিপে হাসছে। অর্নি ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলো,
–“হোয়াট?”

নূর বললো,
–“তুই আমাদের সামনে ভাইয়াকে ভালোবাসি বললি?”

–“হ্যাঁ তো? পরপুরুষকে তো আর বলিনি। নিজের বিয়ে করা বরকেই বলেছি।”

শহর ছেড়ে ঘন্টা দুইয়ের পথ পেরিয়ে এক গ্রামে এসেছে অর্নি ওরা। পুরো গ্রাম মোটামুটি ঘুরে দেখা শেষ। প্রচন্ড সুন্দর একটা গ্রাম। যেদিকেই চোখ যায় সবুজের সমারোহ। ধান ক্ষেতের মাঝ খান দিয়ে মাটির রাস্তা গেছে গ্রামের ভিতরে যাওয়ার জন্য। একটা রিকশা বা ভ্যান যাওয়া আসার মতো রাস্তা। রাস্তার দুই পাশে সারি সারি সুপারি, খেজুর, তাল গাছ দাঁড়িয়ে আছে। অর্নি ওরা এখন গ্রামটার শেষ প্রান্তে যাচ্ছে। লোকমুখে শুনেছে এই গ্রামের শেষ প্রান্তে বড় একটা মেলা বসেছে। এই মেলার স্থায়ী কাল তিনদিন। তার মাঝে দুদিন চলে গেছে। আজই শেষ দিন। অর্নি রুশান ওরা ঠিক করেছে ওরা মেলায় ঘুরবে। শহরের মেলায় তো সব এলাহি আয়োজন থাকে। চোখ ধাধানো সুন্দর হলেও তেমন তৃপ্তি মেলে না। গ্রামের মেলা নিশ্চয়ই গ্রামের মতোই সাধারণ আর অতিব সুন্দর হবে? ওরা আগে কখনো গ্রামের মেলায় আসেনি। তাই আজ এই সুযোগটা মিস করতে চাইলো না।

ছোট বড় সকলেই মেলায় ঘুরাঘুরি করছে। নাগরদোলায় উঠে বাচ্চা এবং বড়রা হই হুল্লোড় করছে। প্রতিটা দোকানেই ভীর। বিশেষ করে চুড়ির দোকানে। পা ফেলার জায়গা নেই একদমই। অর্নি নূর আর তরী ভীর ঠেলে চুড়ির দোকানেই গেলো চুড়ি দেখতে। এমন কোনো মেয়ে নেই যার চুড়ি পছন্দ না, যে চুড়ি দেখলে কিনতে না চাইবে। নূর তরী অর্নিও এর ব্যতিক্রম না৷ রুশান কালো রঙের রেশমি চুড়ি তুলে খুব যত্নসহকারে তরীর হাতে পড়িয়ে দিচ্ছে। তরী একধ্যানে রুশানের দিকে তাকানো। অর্নি মূহুর্তটাকে স্মরণীয় করে রাখতে দ্রুত ব্যগ থেকে ফোন বের করে ছবি তুলে নিলো। নূরও একমুঠো চুড়ি নিয়ে হাতে পড়ছে৷ অর্নি হাতে তুলে নিলো নীল রঙা রেশমি চুড়ি৷ চুড়ি পেয়ে তিনজনেই বেশ খুশি৷ অর্নির চোখ আটকায় একমুঠো কালো চুড়িতে। কালো স্টিলের উপর ডার্ক সিলভার কালার কিছুটা কারুকাজ করা তারপর আবার বেশ কটা কুচকুচে কালো পুথি বসানো। পুরো চুড়িটা ঘুরেই এভাবে কাজ করা। অর্নি রেশমি চুড়িগুলো হাত থেকে খুলে প্যাক করে দিতে বললো। তারপর কালো চুড়ি হাতে পড়লো। আরো কিছু কেনাকাটা করে দাম দিয়ে সরে এলো চুড়ির দোকান থেকে।

এবার ফুচকা স্টলে বসেছে ওরা। এখানে অনেক ভীর৷ অর্ডারের জন্য লাইন লাগিয়েছে অনেকেই৷ নূর বললো,
–“এই চল না এতক্ষণে আমরা নাগরদোলায় চড়ে আসি?”

–“ওয়াহ আপু গ্রেট! তুমি আমার মনের কথাটা বলছো।”

খুশি হয়ে বললো তরী৷ অর্নি নাকোচ করে বললো,
–“আমি উঠবো না।”

রুশান ভ্রু কুঁচকে বললো,
–“কেন?”

–“ভয় লাগে আমার, তোরা যা। আমি এখানেই বসছি।”

–“চল না দোস্ত। তুই ছাড়া জমবে না।”

অনুরোধের কন্ঠে বললো নূর৷ রুশান তরীও অনেক জোরাজোরি করলো। শেষে বাধ্য হয়েই রাজি হলো অর্নি। নাগরদোলা ঘুরতে শুরু করলো। রুশান তরী একপাশে অর্নি নূর একপাশে বসেছে। রুশান একহাতে তরীকে জড়িয়ে ধরে রেখেছে। এবং অন্যহাতে অর্নির হাত ধরে আছে শক্ত করে। নাগরদোলা উপড়ে উঠতেই অর্নি ভয়ে নূরের কাঁধে মুখ গুজে নূরের জামা খামচে ধরলো। এবং যে হাত রুশান ধরে রেখেছে সেই হাত দিয়েই রুশানের হাত খামছে ধরেছে। ভয়ে চিৎকার করছে। আর নূর তরী আনন্দে চিল্লিয়ে উঠছে। রুশান বললো,
–“ভয় পাস কেন অর্নি? আমরা আছি তো। ভয় না পেয়ে ওদের মতো তুইও এঞ্জয় কর।”

নূর ফোন বের করে ছবি তুললো চারজনের। ভিডিও করলো। অতঃপর বেশ কিছু সময় নাগরদোলায় চড়ে নেমে গেলো ওরা। ফুচকা স্টলে গিয়ে ফুচকা অর্ডার করলো। ফুচকা খেয়ে আরো একবার পুরো মেলা চক্কর দিলো চারজনে। তারপর বাসায় ফেরার জন্য উদ্যত হলো।

বাসায় ফিরতে ফিরতে মাগরিবের আজান দিয়ে দেয়। আজানের দশ মিনিট বাদে বাসায় ঢুকে অর্নি আর নূর। চিল মুডেই বাড়িতে ঢুকছে দুজনে। কারণ উৎসব তো আর আটটার আগে বাড়ি ফেরে না৷ তাই উৎসবের বকুনি, ধমকি নিয়ে কোনো চিন্তাই নেই৷ তবে ক্ষানিকটা চিন্তিত শায়লা বেগমকে নিয়ে৷ কলিংবেল বাজাতেই দরজা খুলে দিলো শায়লা বেগম। অবাক করা বিষয় হলো কোনো কিছু না বলে কোনরূপ প্রশ্ন না করেই দরজা খুলে দিয়ে কিচেনে চলে গেলো। যেন সবটা স্বাভাবিক। ওদের দুজনের এসময় বাড়ি ফেরাটাও স্বাভাবিক। অর্নি নূর দুজনেই ক্ষানিকটা অবাক হলো। পরে আবার হাসি ফুটলো এই ভেবে, যাক শায়লা বেগমও কিছু বলেনি। তারমানে আজ কারো বকুনিই খেতে হবে না। এই ভেবে দুজনেই নাচতে নাচতে উপরে চলে গেলো। অর্নি নিজেদের ঘরে গিয়ে দরজা আটকে দিলো। গুনগুন করে গান গাইছিলো ও। পেছনে ঘুরতেই গান বন্ধ করে ভয় পেয়ে ক্ষানিকটা পিছিয়ে গেলো। ভয়ে শুকনো ঢোক গিললো। উৎসব ঘরে? একপলক ঘড়ির দিকে তাকালো। আটটা বাজতে এখনো ঘন্টা দেড়েক সময় বাকী। আজ এত তাড়াতাড়ি বাসায় কেন? আজ আর রক্ষে নেই। উৎসব বিছানায় আয়েশ করে বসে বললো,
–“আসুন ম্যাডাম, আমার কাছে আসুন। আপনার জন্যই তো গত এক ঘন্টা যাবত অপেক্ষা করছি আমি। দাঁড়িয়ে পড়লেন যে? পা কি আর চলছে না আমাকে এখন বাসায় দেখে?”

অর্নি আমতা আমতা করে বললো,
–“না মানে হইছে কি___”

উৎসব দুই হাটুতে ভর রেখে দুই হাতে নিজের গাল ধরে উৎসুক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো,
–“হ্যাঁ বলো, কি হইছে?”

অর্নি কি বলবে ভেবে না পেয়ে চট করেই বললো,
–“আ্ আমাদের বাসায় গেছিলাম। আম্মু ছাড়তে চাইছিলো না কিছুতেই। আমিই জোর করে চলে এলাম। আপনি তো আবার আমাকে ছাড়া থাকতে পারেন না৷ আ্ আমাকে জ্ জড়িয়ে ধরে না শুলে তো আপনার আবার ঘুমই হয় না, তাই তো চলে আসলাম।”

কথাগুলো এক নাগাড়ে বলে শ্বাস ফেললো অর্নি। ইনোসেন্ট হাসি দিয়ে উৎসবের দিকে তাকালো৷ যেন এই মূহুর্তে অর্নির বলা এই কথাগুলোই একমাত্র সত্যি। উৎসব বেশ মনোযোগ সহকারে সবটা শুনলো। তারপর উঠে অর্নির দিকে এগিয়ে গিয়ে একটানে অর্নিকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরলো৷ অর্নি এক হাতে নিজের জামা খামচে ধরে আছে৷ উৎসব দাঁতে দাঁত চেপে বললো,
–“তোমার ফোনের লোকেশন অন করা, আর সেটা যে আমার ফোনের সাথে কানেক্টেড তা মেবি তুমি ভুলে গেছিলে।”

অর্নি এবার শুকনো ঢোক গিললো। আসলেই ভুলে গেছিলো। উৎসব বাজখাঁই গলায় চিৎকার করে বললো,
–“মিথ্যে বলা পছন্দ করি না আমি, জানো না তুমি? জেনেও বারবার মিথ্যেটা কেন বলো?”

–“না মানে___”

–“আমার অনুমতি ছাড়া বাসা টু ভার্সিটি বাদে অন্য কোথাও যেতে বারণ করেছিলাম তো আমি। মনে নেই সেই কথা?”

–“আ্ আমি___”

–“চুপ, একদম চুপ। এত সাহস হয় কোত্থেকে কাউকে কিছু না জানিয়ে শহর ছেড়ে বাইরে কোথাও ঘুরতে যাওয়ার? এত সাহস কোত্থেকে পাও তুমি? তোমার ভার্সিটি যাওয়াও বন্ধ করে দিচ্ছি আমি ওয়েট।”

কেঁপে উঠলো অর্নি। লোকটা ভীষণ চটে আছে। এই মূহুর্তে কিছু বললেই হিতে বিপরীত হবে৷ অর্নি আমতা আমতা করতেই উৎসব শক্ত হাতে অর্নির দুই বাহু চেপে ধরে বললো,
–“কাল থেকে আমি ভার্সিটি দিয়ে আসবো এবং ক্লাস শেষে নিয়ে আসবো৷ দুজনে একদমই পাকনামি করার চেষ্টা করবে না। নয়তো গার্ড রাখতে বাধ্য হবো।”

কথাগুলো বলেই অর্নিকে ধাক্কা দিয়ে নিজের কাছ থেকে সরিয়ে দিলো৷ টুপ করে দুই ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়লো অর্নির গাল বেয়ে৷ যা উৎসবের চোখ এড়ালো না৷ তড়িৎ গতিতে অর্নির সামনে গিয়ে আবারো চেপে ধরলো অর্নির বাহু। দাঁতে দাঁত চেপে বললো,
–“ডোন্ট ক্রাই৷ তুমি খুব ভালো করেই জানো তোমার চোখের পানি সহ্য হয় না আমার৷ চুপচাপ কান্না অফ করে শাওয়ার নিয়ে আসো। চোখ দিয়ে আর এক ফোঁটা পানি পড়লে খুব খারাপ হবে৷”

কথাটা বলে অর্নিকে ছেড়ে দিলো। বিড়বিড় করে বললো,
–“দোষ করবে নিজে আবার বকলে তখন ভ্যাঁ ভ্যাঁ করে নাকের জল চোখের জল এক করে ফেলে৷ ভালো করেই জানে কিনা ম্যাডামের চোখের জল সহ্য হয় না আমার৷ তাই বারবার এটাকে হাতিয়ার করেই পার পেয়ে যায়৷ কিন্তু এখন থেকে আর এমনটা একদম হবে না।”

উৎসব কথাগুলো বিড়বিড়িয়ে বললেও তা অর্নির কর্ণগোচর হলো। চোখ মুছে চুপচাপ কাবার্ড থেকে জামা নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো ফ্রেশ হতে৷ বুঝলো তার সাহেব ভালোই রেগে আছে৷ এখন বেশি ঘাটানো যাবে না৷ পরে ঠিক রাগ ভাঙিয়ে নিবে। অর্নি শব্দ করে ওয়াসরুমের দরজা লাগিয়ে দিলো। উৎসব সেদিকে তাকালো একবার। এই মেয়েটাকে একটু বকাও যায় না। অমনি রাগে অভিমানে গাল ফুলাবে। উৎসব তপ্ত শ্বাস ফেলে ল্যাপটপ নিয়ে বসলো। অফিসের কিছু কাজ পেন্ডিং হয়ে আছে৷ অর্নি শাওয়ার নিতে নিতে সেগুলো ক্ষানিকটা এগিয়ে রাখা যাক।

চলবে~

[ গত চারদিন গল্প না দেওয়ার জন্য দুঃখিত৷ ঈদের সময় বাড়িতে অনেক মেহেমান থাকে। ব্যস্ততায় কাটে দিন। আমারও সকলের মতোই ব্যস্ততায় দিন কেটেছে। ননদ ননাসেরা বেড়াতে এসেছিলো। আজ সকালে চলে গেছেন সবাই। তাই আজ থেকে ফ্রি। এখন থেকে আবার আগের মতোই রেগুলার গল্প পাবেন।

আর গল্পটা কেমন হচ্ছে অবশ্যই জানাবেন৷ নাইছ নেক্সট না লিখে গল্প সম্বন্ধে দুই/চার লাইন লিখে যাবেন। ধন্যবাদ, হ্যাপি রিডিং ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here