#তুমি_শুধু_আমারই_হও লেখনীতে- অরনিশা সাথী |২|

#তুমি_শুধু_আমারই_হও
লেখনীতে- অরনিশা সাথী

|২|

ভার্সিটি থেকে বাসায় ফেরার সময় মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়। বৃষ্টি দেখে অর্নিকে আর থামানো যায়নি। রিকশা থেকে নেমে গিয়ে বৃষ্টিতে ভিজতে শুরু করে। রুশান বাঁধা দিলে অর্নি রুশানকেও টেনে নামায় রিকশা থেকে। বৃষ্টির কারনে রাস্তায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রাস্তায় থাকা মানুষজন আশেপাশের দোকানের ছাউনির নিচে গিয়ে দাঁড়ায় নিজদের বৃষ্টি থেকে বাঁচাতে। অর্নির পাগলামো তে রুশান বুঝলো আজকে সহজে অর্নিকে বাসায় নেওয়া যাবে না। তাই রুশান রিকশা ভাড়া মিটিয়ে দিতেই রিকশাওয়ালা চলে গেলেন ওখান থেকে। রুশান গিয়ে একটা ছাউনির নিচে দাঁড়ালো।

মাঝরাস্তায় অর্নি এদিক ওদিক লাফাচ্ছে আর দুহাত মেলে বৃষ্টির ফোঁটার সাথে নিজেকে মিশিয়ে দিচ্ছে। রুশান অর্নির হাত ধরে বললো,
–“অনেক ভিজেছিস, এখন বাসায় চল।”

অর্নি রুশানের থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে নিয়ে আবারো বললো,
–“উঁহু। আর একটু প্লিজ?”

–“অর্নি প্রায় এক ঘন্টা যাবত বৃষ্টিতে ভিজছিস তুই। শরীর খারাপ করবে তো। এমনিতেই ঠান্ডার সমস্যা আছে তোর।”

–“একদিন ভিজলে তেমন কিছুই হবে না। বাসায় তো আম্মু ভিজতে দেয় না। আজকে সুযোগ পেয়েছি ভেজার। তুই প্লিজ আর না করিস না ইয়ার।”

–“তোর যা ইচ্ছে তুই তা কর। আমি চললাম।”

এইটুকু বলে রুশান চলে যাচ্ছিলো ওখান থেকে। রুশানের ফোন বেজে উঠে। অর্নিকে নিয়ে আসতে গিয়ে প্রায় অনেকটাই ভিজে গিয়েছে। দৌড়ে ছাউনির নিচে গিয়ে পকেট থেকে ফোন বের করে দেখলো নূরের নাম্বার। রুশান ফোন রিসিভ করে বললো,
–“হ্যাঁ নূর বল।”

–“কোথায় রে তুই? অর্নি কোথায়? আন্টি বারবার ফোন করছে আমাকে। অর্নি নাকি এখনো বাসায় ফিরেনি? তোদের তো অনেক আগেই বাসায় পৌঁছে যাওয়ার কথা। তাহলে এখনো বাসায় যায়নি কেন অর্নি?”

–“যেই একটা ফ্রেন্ড জুটাইছি কপালে। ওইটার জ্বালায় অতিষ্ঠ হয়ে গেলাম আমি।”

–“কেন তোর আবার কি হইছে? আচ্ছা কোথায় তুই?”

–“ছাউনির নিচে দাঁড়িয়ে আছি। আর ওদিকে অর্নি বৃষ্টিতে ভিজছে। গত এক ঘন্টা যাবত।”

–“কিহ? তুই ওকে বৃষ্টিতে ভিজতে দিয়েছিস কেন? জানিস না ওর ঠান্ডার সমস্যা আছে?”

–“আমার কথা শুনলে তো।”

–“আচ্ছা রাগ করিস না দোস্ত। তোরা কোথায় আছিস সেইটা বল?”

–“তোদের বাসার গলি ছাড়িয়ে আরো দুটো গলি সামনে।”

–“আচ্ছা থাক। আমি আসছি।”

–“আসতে হবে না। আমি দেখছি নিতে পারি কিনা।”

–“এই বৃষ্টিতে তো রিকশা পাবি না। ওয়েট আমি ভাইয়াকে পাঠাচ্ছি। গাড়ি করে তোদের বাসায় পৌঁছে দিবে।”

–“লাগবে না। তুই রাখ। আমি ওকে নিয়ে বাসায় যাচ্ছি।”

–“চুপ একটা কথাও বলবি না। বলেছি না আমি ভাইয়াকে পাঠাচ্ছি ভাইয়া গাড়ি নিয়ে যাবে।”

কিছুক্ষণ বাদে ছাউনির সামনে গাড়ি থামালো উৎসব। গাড়ির গ্লাস নামিয়ে রুশানকে বললো,
–“গাড়িতে এসে বসো।”

রুশান বিনাবাক্যে গাড়িতে উঠে বসলো। উৎসব রুশানকে অর্নির কথা জিজ্ঞেস করাতেই রুশান সামনের দিকে ইশারা করলো। উৎসবের চোখ অর্নির উপর পড়তেই থেমে গেলো। পড়নে শাড়িটা গায়ের সাথে লেপ্টে আছে। আর উনি বৃষ্টিতে লাফিয়ে লাফিয়ে ভিজছে। পাশের একটা দোকান থেকে দুটো ছেলে চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছে। রাগে উৎসবের কপালের রগ ফুলে উঠলো মূহুর্তেই। গাড়ি স্টার্ট দিয়ে অর্নির কাছে চলে গেলো। গাড়ির গ্লাস নামিয়ে অর্নিকে বললো,
–“গাড়িতে উঠো।”

রাগ মিশ্রিত গম্ভীর পুরুষালী কন্ঠে অর্নি চমকে পাশ ফিরে তাকিয়ে উৎসবকে দেখে ভয় পেয়ে চমকে দু কদম পিছিয়ে যায়। উৎসব আবারো রাগী স্বরে বলে,
–“এই মেয়ে কি বললাম তোমাকে শুনতে পাওনি?”

–“আ্ আমি বৃষ্টিতে ভিজবো। আর তাছাড়া আমি আপনার সাথে যাবো না ভাইয়া৷ রুশা__”

–“রুশান গাড়িতেই আছে। উঠে এসো তুমি।”

উৎসবের কথায় অর্নির মেজাজ খারাপ হলো। রুশান আগে থেকেই গাড়িতে উঠে বসে আছে? এই ছেলেটা জানে না ও উৎসবকে দেখে পালিয়ে বেড়ায়। তারপরও রুশান উনার গাড়িতেই উঠে বসে আছে? অর্নির ইচ্ছে করছে রুশানকে মেরে আলু ভর্তা বানাতে। কিন্তু আফসোস এখন সেটা পারছে না। উৎসব আবারো বাজখাঁই গলায় ধমকে উঠতেই অর্নি গাড়ির দরজা খুলে গাড়িতে উঠে বসে।

বিকেল চারটা বেজে সাইত্রিশ মিনিট। বাইরে এখনো গুড়িগুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। কাঁথা মুড়ি দিয়ে গুটিশুটি মেরে শুয়ে আছে অর্নি। ভার্সিটি থেকে ফিরেছে আধ ঘন্টার মতো হবে৷ ভার্সিটি থেকে ফিরে শাওয়ার নিয়েই শুয়েছে অর্নি। অর্নিকে খাওয়ার জন্য ডাকতে ডাকতে রুমে এলেন ওর আম্মু মিসেস অদিতি। দেখলেন মেয়ে কাঁথা মুড়ি দিয়ে ঘুমোচ্ছে। ওয়াশরুমের দরজাটা খোলা। তিনি এগিয়ে এসে ওয়াশরুমের দরজা আটকাতে গেলেই দেখলেন বালতিতে ভেজা জামাকাপড় রয়েছে। বিড়বিড় করে কিছু একটা বলে সেগুলো ধুয়ে ব্যালকোনিতে মেলে দিলেন শুকানোর জন্য।

অর্নির কাছে গিয়ে অর্নিকে ডাকলেন খাওয়ার জন্য। কিন্তু অর্নি কোনো সারা দিলো না। মিসেস অদিতি ওর পাশে বসে মাথায় হাত বুলিয়ে দিতেই চমকে উঠলেন। জ্বরে গাঁ পুড়ে যাচ্ছে একেবারে। মিসেস অদিতি উনার রুমে চলে গেলেন ছেলেকে ফোন করার জন্য। অর্নির বড় একটা ভাই আছে। নাম অর্নব। ওদের বাবা নেই তাই পুরো সংসার অর্নব নিজেই সামলায়। এই সময়ে অর্নব অফিসে আছেন। মিসেস অদিতি ফোন দিলেন ছেলেকে। অর্নব ফোন রিসিভ করতেই তিনি বললেন,
–“অর্নব তুই কি একটু বাসায় আসতে পারবি এক্ষুনি?”

–“কেন আম্মু কিছু হয়েছে?”

–“ভার্সিটি থেকে ফেরার পথে বৃষ্টিতে ভিজেছে। জ্বরে অর্নির গাঁ পুড়ে যাচ্ছে। বৃষ্টি হচ্ছে বাহিরে। ডক্টর ডাকাও দরকার।”

–“আচ্ছা তুমি অর্নিকে তুলে খাওয়াতে থাকো আমি ডক্টর নিয়েই বাসায় আসছি।”

অর্নিকে কিছু মেডিসিন লিখে দিয়ে চলে গেলেন ডক্টর। জ্বর ১০২°। মিসেস অদিতি তো মেয়েকে বকাবকি শুরু করে দিয়েছেন। অর্নি অর্নবকে জড়িয়ে ধরে চুপচাপ বসে আছে। অর্নব মিসেস অদিতিকে থামিয়ে দিয়ে বললো,
–“আহ আম্মু! দেখছো এমনিতেই ওর এত জ্বর। তার উপর আবার তুমি বকাবকি করছো কেন?”

–“বকবো না তো কি করবো? এই মেয়েটা আমাকে একদম শান্তি দেয় না। ও জানে না বৃষ্টিতে ভিজলেই ও অসুস্থ হবে? ঠান্ডার সমস্যা আছে ওর ও জানে তো। তাহলে এরপরও বৃষ্টিতে ভিজে অসুখ বাঁধালো কেন ও? তোদের দুই ভাই বোনকে নিয়ে আমার চিন্তার কোনো শেষ নেই। কোথায় তোরা আমাকে একটু শান্তি দিবি তা না। তোদের চিন্তায় আমার ঘুম হারাম হয়ে যায়।”

–“আচ্ছা আম্মু এখন বকলে কি সবটা ঠিক হয়ে যাবে? অর্নির জ্বর সেরে যাবে? যাবে না তো। তাহলে অযথা কেন বকাবকি করছো? বাদ দাও না।”

–“তোদের দুই ভাই বোনের যা ইচ্ছে কর। আমি আর কিচ্ছু বলবো না তোদের।”

কথাগুলো বলে মিসেস অদিতি রুম থেকে বেরিয়ে গেলেন। অর্নব অর্নিকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললো,
–“এত বাচ্চামি কেন করিস বল তো? জ্বর বাঁধিয়ে ফেললি তো। জানিস না তোর কিছু হলে আমি বা আম্মু কেউ বাঁচতে পারবো না?”

–“ভাইয়া তুমিও এখন আম্মুর মতো বকাঝকা করবে?”

–“বকছি না পাগলী। ভয় হয় খুব। যদি তোর কিছু হয়ে যায়? আব্বুর মতো করে যদি তোকেও হারিয়ে ফেলি তখন কিভাবে থাকবো আমি আর আম্মু?”

কথাগুলো বলতে বলতে অর্নবের চোখ পানিতে ভিজে উঠলো। অর্নি উঠে বসে অর্নবকে জড়িয়ে ধরে কান্না মিশ্রিত কন্ঠে বললো,
–“এভাবে বলো না ভাইয়া। তোমাদের ছেড়ে আমিই বা কিভাবে থাকবো বলো? আর এত চিন্তা করো না। এত সহজেই তুমি আর আম্মু আমার জ্বালানোর হাত থেকে বাঁচবে না। এখনো প্রচুর প্রচুর জ্বালানো বাকী আছে তোমায় আর আম্মুকে। তারপর তোমাকে বিয়ে করিয়ে ভাবী আনবো ভাবীর সাথে ঝগড়া করবো।”

কথাটা বলেই অর্নি হেসে উঠলো। অর্নব হেসে অর্নির কান টেনে ধরে বললো,
–“বড্ড ফাজিল হয়েছিস তাই না? কান টেনে ছিঁড়ে ফেলবো।”

–“আহ ভাইয়া! ছাড়ো, লাগছে তো আমার।”

কথাটা শুনে অর্নব অর্নির কান ছেড়ে দিয়ে ওকে বুকে আগলে নিলো। অর্নি অর্নবের বুকের সাথে লেপ্টে আছে। অর্নব বোনের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। দরজার কাছ থেকে মিসেস অদিতি ভাইবোনের খুনশুটি দেখে কান্না ভেজা চোখেই মৃদু হাসলেন। আচল দিয়ে চোখের পানিটুকু মুছে বললেন,
–“বাবা মরা ছেলেমেয়ে দুটোকে তুমি এভাবেই সবসময় দেখে রেখো আল্লাহ। ওদের বন্ধন টা যেন আমৃত্যু এমন থাকে। আমার এই ছোট্ট সংসারকে তুমি আগলে রেখো। ভাই বোনের ভালোবাসার উপর কারো নজর না পড়ুক। আমার মেয়েটার জীবনে এমন একজন মানুষকে দিও সে যাতে আমার মেয়েটাকে আগলে রাখে। আর আমার ছেলেটার জীবনে একজন তো আছেই। দুজনেই যেন সবসময় ওদের আগলে রাখে। ওদের ভাই বোনের সম্পর্কে ফাটল না ধরায়। খুব ভালো রেখো ওদের।”

কথাগুলো বলে মিসেস অদিতি চলে গেলেন নিজের রুমে। একটু বাদেই আবার রাতের রান্নার তোরজোর করতে হবে।

এগারোটা বেজে সাইত্রিশ মিনিট। অর্নির ঘুম আসছিলো না তাই অনলাইনে গেলো। অর্নিকে এই সময় অনলাইনে দেখে গ্রুপে ভিডিও কল দিলো নূর। কিছুক্ষণের মাঝেই অর্নি আর রুশান দুজনেই জয়েন হলো। নূর কপাট রাগ দেখিয়ে বললো,
–“ক’টা বাজে ঘড়ির দিকে তাকিয়েছিস একবার? এই জ্বর শরীর নিয়ে এখন অনলাইনে কি করছিস তুই?”

–“ঘুম আসছিলো না তাই আর কি__”

–“তাই অনলাইনে চলে এলি ছেলেদের সাথে লাইন মারার জন্য তাই না?”

রুশানের কথায় অর্নির মেজাজ গরম হলো। দুটো গালি দিয়ে বললো,
–“শালা তুই জানিস আমি ছেলে দের সাথে লাইন মারার জন্য অনলাইনে এসছি? তুই কি করছিস এতরাতে অনলাইনে? কোন মেয়ের সাথে ফ্লার্ট করছিস?”

–“এই অর্নি শোন, এরকম নাউজুবিল্লাহ টাইপ কথাবার্তা বলবি না আমাকে। আমার মতো এত ভালো ছেলেটাকে তুই এরকম উল্টাপাল্টা কথা বলতে পারিস না।”

–“ভালো না ছাই। তুই যে কত ভালো তা আমার থেকে ভালো কেউ জানে না। সেই তো দিনরাত মেয়েদের নিয়ে পড়ে থাকিস। আজ একজন তো কাল অন্যজন।”

–“অর্নির আব্বুর বাচ্চা তোরে কালকে ভার্সিটির ছাদে থেকে লাত্থি দিয়ে আমি নিচে ফেলবো দে___”

অর্নি আর রুশানের ঝগড়া শুনতে শুনতে নূরের কান পঁচে গেলো। দুটো একসাথে হলেই শুধু ঝগড়া আর ঝগড়া। নূরের কাজিনরা সকলে চোখ বড় বড় করে অর্নি আর রুশানের ঝগড়া শুনছে। শেষমেশ নূর না পেরে চিৎকার করে বলে উঠলো,
–“আহ! থামবি তোরা? সবসময় খালি ঝগড়া করস। ভাল্লাগে না বা’ল। আর অর্নি তুই এরকম জ্বর শরীর নিয়েও এত ঝগড়া করার এনার্জি পাচ্ছিস কিভাবে?”

অর্নি মাথা নিচু করে মলিন কন্ঠে বললো,
–“আমি ঝগড়া করলাম কই? রুশাইন্না-ই তো আমার পিছে লাগছে।”

রুশান আবারো কিছু বলতে গেলেই নূর চোখ রাঙিয়ে তাকায়। ফলে রুশান মুখে আঙুল দিয়ে চুপ হয়ে গেলো। অর্নি নূরকে ভালো করে দেখে বলল,
–“নূর এত রাতে ছাদে কি করছিস তুই?”

–“ভাইয়া এসেছে বলে সব কাজিনরা বাসায় এসেছে আজ। তাই সবাই আড্ডা দিচ্ছি একসাথে বসে।”

–“ওহ! আচ্ছা শোন না।”

অর্নির কথায় নূর ল্যাপটপের দিকে কিছুটা ঝুকে গেলো। তারপর বললো,
–“বল কি বলবি?”

–“আশেপাশে কি উৎসব ভাইয়া আছে?”

–“নাহ তো! কেন?”

–“এমনি। আচ্ছা জানু ভাইয়ার জন্মের সময় কি আন্টি ভাইয়ার মুখে মধু দেয়নি?”

অর্নির প্রশ্নে নূর ভ্রু কুঁচকে তাকালো। আর ওর সব কাজিনরা কান খারা করলো অর্নি কি বলে সেটা শোনার জন্য। রুশান তো মুখ টিপে হাসছে। কেননা ও কিছুটা আন্দাজ করতে পেরেছে। নূর অবাক হয়ে বললো,
–“হঠাৎ এই প্রশ্ন করছিস কেন?”

–“না মানে আজকে উনি আমাকে শুধু শুধু ধমক দিয়েছে। একবার না গুনে গুনে তিনবার। জানিস ভয়ে আমার আত্তা লাফিয়ে উঠেছিলো। দেখতে তো মাশাল্লাহ, তার কথাবার্তা এরকম করল্লার মতো তিতা কেন? ওয়েট আমি সময় করে একদিন গিয়ে আন্টিকে জিজ্ঞেস করবো জন্মের পর কি উনাকে করল্লার রস খাইয়েছিলো নাকি? এরকম তিতা তিতা কথা বলেন কেন উনি?”

উৎসব তখনই গিটার হাতে ছাদে এসেছে। এসেই ল্যাপটপ স্ক্রিনে ভিডিও কলে অর্নিকে দেখতে পায়। জ্বরে মুখটা একদম শুকিয়ে গেছে। চুলগুলো এলোমেলো। কাঁথা মুড়ি দিয়ে শুয়ে শুয়ে কথা বলছিলো নূর আর রুশানের সাথে। অর্নির এরকম শুকনো মুখটা দেখতেও উৎসবের কেমন যেন অদ্ভুত ভালো লাগছিলো। কিন্তু ওর সেই ভালো লাগাটা বেশিক্ষণ স্থায়ী হলো না অর্নির কথা শুনে। মেজাজ তুঙ্গে উঠে গেলো। অর্নির কথায় রুশান আর নূরসহ ওর সকল কাজিনরাও উচ্চস্বরে হেসে উঠলো। ওদের সকলের এই হাসিটা যেন আগুনে ঘী ঢালার মতো কাজ করলো। উৎসব রেগে ক্ষানিকটা চিৎকার করে বললো,
–“হোয়াট ননসেন্স?”

উৎসবের এমন বাজখাঁই গলায় চিৎকার শুনে নূর ওরা সকলে পিছন ফিরে তাকিয়ে উৎসবকে দেখতে পেয়ে হাসি থামিয়ে দিয়ে কাচুমাচু হয়ে বসে রইলো। অর্নি নূরের পিছনে উৎসবকে দেখে ভয়ে একটা শুকনো ঢোক গিললো। উৎসব ল্যাপটপের দিকে এগিয়ে আসতেই অর্নি ভয়ে কল কেটে দিলো।

চলবে~

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here