তুমি_বলে_ডেকো,০২

#তুমি_বলে_ডেকো,০২
সবুজ আহম্মদ মুরসালিন

আজ সকালে আবার রাসেলের জ্বর বেড়েছে। ভোর রাতে একবার অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলো সে। ভাগ্য ভালো গতকাল রাতেই তার রুমমেট গ্রামের বাড়ি থেকে চলে এসেছে। সে এখন অবচেতন হয়ে শুয়ে আছে। সকালে হোটেল থেকে রুটি, সবজি, ডিম এনেছিলো আরিফ। কোনো রকম একটা রুটি খেয়ে ওষুধগুলো খেয়েছে। সেই ভোর বেলা জ্বর বেড়েছে এখনো কমেনি। সকালে আরিফ ডাক্তার নিয়ে এলে তাকে দেখে ওষুধ দিয়ে গেছে। সে জরুরী হলে, জ্বর বাড়লে হাসপাতালে ভর্তি করানোরপরামর্শ দিয়ে গেছে।

একটা দীর্ঘঘুম দিয়ে রাসেল দুপুরের দিকে উঠেছে। তার এখন ভাল লাগছে। ফ্রেশ লাগছে। কপালে হাত নিয়ে জ্বর আছে কিনা সেটা বোঝার চেষ্টা করল নিজেই। না নেই। সে নিজেকেই বলল। মাথা ব্যথাটাও নেই।

সে বিছানায় উঠেই হাত বাড়িয়ে বালিশের পাশে থেকে ফোন নিয়ে লক খুলতেই দেখলো আনিকা কোনো মেসেজ আছে কি-না। না নেই। তার মন খারাপ হলো। আনিকা কোনো উত্তর দিলো না। সে মন খারাপ করে আবার শুয়ে পড়লো। সারাদিন এভাবে শুয়ে থাকতে ভালো লাগে না৷ তবুও কিছু করার নেই। জ্বরটা বাড়ে, কমে। এভাবেই চলছে।

এখন ক’টা বাজে সে জানেনা। রুম অন্ধকার। লাইট বন্ধ। রাত হয়ে গেছে? সে আজকে কেমন ঘোরের মধ্যে আছে। কখন সকাল হচ্ছে, কখন দুপুর, কখন রাত সে বুঝছেই না। সে ফোন হাতে নিয়েই দেখল, আনিকা মেসেজ দিয়েছে বেশ কিছুক্ষণ আগে। আনিকা জানতে চেয়েছে, জ্বর কমেছে কি-না?

রাসেল মিথ্যে করে উত্তর দিলো,
— হুম, এখন মোটামুটি সুস্থ।

আনিকার জিজ্ঞাসা করলো,
— মন খারাপ?

রাসেল বলল,
— কিছুটা!

দীর্ঘ সময় দুইজনই নিরব। কেউ কাউকে মেসেজ দিলো না। নিরবতা ভেঙে আনিকা মেসেজ দিলো,
— শুনুন

রাসেল উত্তর দিলো,
— হ্যাঁ, বলুন।

আনিকা বলল,
— আপনি ইচ্ছে করে আর জ্বর বাধাবেন না এবং
“আমি আপনাকে ভালোবাসি” এটা আপনাকে আর হেলোসিনেশন বা কল্পনা করতে হবে না!
আনিকা আবার মসেজ দিলো,
— “আমি সত্যি আপনাকে ভালোবাসি। আজ থেকে আমাকে তুমি বলে ডেকো।”

আনিকার মেসেজ পড়তেই রাসেলের হাত থেকে ফোন পরে গেলো বিছানায়। সে নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না। আনিকা কি সত্যি বলছে? সে এতো দিন যেটা চেয়েছিলো আজকে সে সেটা পেলো। আনিকাকে সে সাথে সাথেই ফোন দিলো।আনিকার ফোন বন্ধ। রাসেল বারবার আনিকাকে কল দিতে থাকলো কিন্তু প্রতিবার বন্ধ।

রাসেল মন খারাপ করে আবার শুয়ে পড়লো। শুয়ে শুয়ে আনিকার কথা ভাবছে। সে আনিকাকে এতোদিন একতরফা ভাবে ভালো বেসে এসেছে। আজ আনিকা নিজে তাকে বলেছে, ভালোবাসে। এর চেয়ে বড় প্রাপ্তি তার জীবনে নেই। সে আজ পৃথিবীর সবচেয়ে সুখি মানুষ। তার মত সুখি কেউ নেই পৃথিবীতে। সে আনিকার কথা ভাবতে ভাবতে একটা সময় আবার ঘুমিয়ে গেলো।

চলবে…!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here