তুমি_আমার_অধিকার 🍂,পার্টঃ7,8

তুমি_আমার_অধিকার 🍂,পার্টঃ7,8
লেখক_সাব্বিরআহাম্মেদ

অন্তীর পচন্দইদ্রয়ী কাজ করছে না । নিলয়ের নিথর দেহটা রাস্তার মেঝে পড়ে আছে মাথার দিকে রক্তের ফিনকি ঝড়ে পড়ছে নিলয়ের। অন্তী দৌড়ে এসে নিলয়কে কোলে নিলো নিলয়ের মাথায় তার হাত চেপে রক্ত বন্ধ হওয়ার চেষ্টা করলো.

এইই কি হয়েছে তুমার, আর আপনারা কি ক রছেন দাড়িয়ে আমাকে একটু হেল্প করুন দ্রুত । ভীড় থেকে দুই তিনজন লোক এসে নিলয়কে ধরলো অন্তী তার ড্রাইবারকে কল করলো নিলয়কে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হলো ।

যেই হাসাপাতালে নেওয়া হয়েছে ওইখানে নিলয়কে ভর্তি করানো যাবে না সাফ জানিয়ে দিয়েছে ডাক্তাররা
অন্তীতো এক প্রকার চিৎকার চেচামেচি জুড়ে দিয়েছে হাসাপাতালে । অন্তী তার বাবাকে কল দিলো তার বাবা পুলিশের এসপি ওনি অন্তীর কল পেয়ে দ্রুত হাসপাতালের সার্জনকে কল দিলো

ডাক্তার দ্রুত অন্তীর বাবার কল পেয়ে নিলয়কে ভর্তি করালো..

এর ‌মধ্যে আবির অথৈ এবং নিলয়ের বাবা মা ভাই বোন আত্নীয়স্বজন যারা আছে সবাই চলে আসলো হাসপাতালে.
এর মধ্যে নিলয়ের আম্মুর অবস্থা তো শোচনীয় পর্যায়ে চলে গেছে ওনি বারবার মূর্চা যাচ্ছে । নিলয়ের ছোট ভাই বোন কেদে প্রায় পাগলপাড়া । নিলয়ের আম্মু হাসাপাতালের বারান্দায় অন্তীকে ছুটে গেলেন

_ এই তুমি অন্তী না …

অন্তী তো নিলয়ের আম্মুকে ধরে কেদে দিলো আন্টি নিলয়
ওর কি হয়ে গেলো । ও । তার কিছু হয়ে গেলে আমি কিভাবে বাচবো ।

নিলয়ের আম্মু নিজেই তো পেরেশান তার মধ্যে সে অন্তীকে কিভাবে সামলাবে ওনি এর মধ্যে অন্তী অজ্ঞান হয়ে পড়লো ।
অন্তীর বাবা হারুন সাহেব চলে আসলো

ওনি অন্তীকে অন্য কেবিনে নিয়ে গেলো ।
অপরেশন থিয়েটারের সামনের চেয়ারে আবির আর অথৈ বসে আছে । নিলয়ের আম্মুকে দেখে তারা দুজনে দাড়িয়ে গেলো ।
তুমরা থাকতে আমার নিলয়ের এই অবস্থা কি করে হলো হুম
তুমাদের দুজনকে আমি আমার নিজের সন্তানের মতো দেখতাম । আর তুমরা থাকতে আমার নিলয় আজ মৃত্যুর সাথে লড়াই করছে ।

আবিরঃ- আসলে আন্টি?? এতটুকু বলতে অথৈ আবিরের হাতটা চেপে ধরলো আবির বলতে গিয়ে থেমে গেলো..
নিলয়ের আম্মুর চোখে বিষয়টা এড়ালো না
ওনি আবির কে আবার জিজ্ঞাসা করলেন দেখো কি হয়েছে তুমরা যা জানো সব আমাকে বলো??
আন্টির এইরকম পিড়াপীড়িতে আবির প্রথম থেকে সব খুলে বললো ।

নিলয়ের আম্মু সব শুনে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাদতে লাগলো
ছেলেটার ওপর এতো ঝড় গেলো অথচ তাদেরকে কিছু জানালো চুপ করে সহ্য করে গেলো ।

_ ছোটবেলা থেকে নিলয় চাপা স্বাভাবের আঘাত পেলে কাউকে কিছু বলে না ।
ছোট কালে একবার খেলতে গিয়ে পা কেটে গিয়েছিলো । দুই দিন পর ওনি জানতে পারলো যখন সে ব্যাথা কাতরাচ্ছে তখন সে বলে নাই , এই হলো নিলয়ের স্বাভাব ।
নিরা এমন মেয়ে তার নিলয়ের মা ভাবতে পারছে না । নিলয়ের আব্বুকে কিভাবে বলবে ওনি এইসব তবে হ্যা একটা কথা ওই মেয়ের সাথে নিলয়ের আর সম্পর্ক রাখতে দিবে না..
নিরার বাবা মা এইসব জানতে পারলে নির্ঘাত তারা শকড হবে তাদের মেয়ে এমন হলো কিভাবে??

_ রাত বারোটা বেজে গেলো কারো চোখে ঘুম নেই । নিলয়কে এখনো তারা অপরোশেন থিয়েটারে থেকে বের করে নাই ।

আবির আর নিলয়ের আব্বু এই‌মাএ এশারের নামাজ পড়ে তাহাজ্জুদও পড়ে নিলো । আদরের সন্তানের জন্য প্রাণ ভরে দোয়া করলো ।

অন্তীর এখনো জ্ঞান ফিরেনি , হারুন সাহেব আর অন্তীর পাশে বসে মাথায় হাত বুলাচ্ছে । একটু পর ডাক্তার অন্তীকে চেক আপ করে দিয়ে বললো আপনারা ওনাকে এখন নিয়ে যেতে পারেন । চিন্তা করার কেনো কারণ নেই, অতিরিক্ত টেনশনের কারণে এমন হয়েছে । হারুন সাহেব পরম মমতায় অন্তীর মাথায় হাত বুলাচ্ছে, মেয়েটাকে নিজের সন্তানের থেকে বেশি আদর করে তারা দুজন, কেনো কিছুর কমতি রাখে নাই । অন্তীও তাদের সাথে ভালোভাবে মিশে গেছে সারাদিন অন্তীর সাথে দৌড়াদৌড়ি করে ওনাদের দিন যায় ।

হারুন সাহেব অন্তীকে নিয়ে গেলো বাসায় ।

আজ দুই দিন হয়ে গেলো নিলয়ের জ্ঞান ফেরার নাম গন্ধ নেই. এই দুই দিনে অন্তীকে কেউ এক পা নড়াতে পারলো না নিলয়ের কাছ থেকে । তার একটিই কথা সে নিলয়ের পাশ থেকে কোথাও যাবে না । হারুন সাহেব অব্যশই অনেক জোড়াজোড়ি করেছে কিন্তু কাজ হয় নি দেখে ওনিও দুইদিন ধরে হাসপাতালে রয়ে গেলেন । নিলয়ের আব্বু আম্মুও কিছু বললো না ।

_ তিনদিন পর সকালের মৃদু হাওয়া জানালা দিয়ে সাই সাই করে ভেতরে আসলো ।আকাশটার যেনো আজ মন পরিষ্কার.
সূর্যের আলো নিলয়ের চোখে পড়ছে হালকা ভাবে । সে একটু একটু করে চোখ খুলতে লাগলো । বুকের ওপর ভারী কিছু অনুভব করলো ।
চোখটা মেলে তাকিয়ে দেখলো অন্তীর মাথায় তার বুকে, কত সুন্দর ভাবে ঘুমাচ্ছে মেয়েটা । মেয়েটাকে দেখতেই এমনি মায়াবি লাগে তারপর ঘুমালে তো তার রুপ ফুটে । নিলয় পরম আদরে অন্তীর চুল গুলোতে হাত বুলাচ্ছে মুখটা শুকিয়ে গেছে চোখের নিচে কালো দাগ জমে গেছে মনে হচ্ছে কতদিন ধরে মেয়েটার চোখে ঘুম নেই । আজ রাজ্যের ঘুম তার চোখে ভর করেছে, এই ভাবছে আর অন্তীর মাথায় হাত বুলাচ্ছে চুলগুলো উসখুসকো ভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ।

মেয়েটাকে নিলয় প্রথম যেইদিন দেখেছে সেই থেকে এক মায়া কাজ করছে তার প্রতি । অব্যশই সেও চেয়েছিলো অন্তীকে জিবনসঙ্গীনি হিসাবে রাখতে । কিন্তু বাবার কারণে আর অন্তীর উধাও হওয়ার কারণে তা হয়ে উঠে নাই ।
তারপর যখন অন্তী আসলো আর নিলয়ের কেনো কিছু করার ছিলো না । আজ বহুত বছর অন্তীকে সে প্রাণভরে দেখছে ।

এর মধ্যে আবির আর অথৈ কেবিনে ডুকলো । ডুকেই তারা চমকে গেলো নিলয়ের জ্ঞান ফিরেছে । আবির জোরে চিৎকার করবে নিলয় আঙ্গুল দেখিয়ে থামিয়ে দিলো অন্তী ঘুমাচ্ছে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটবে ।

আবির আর অথৈ নিলয়ের পাশে এসে বসলো, এখন কেমন আছিস,
_হুম কিছুটা সুস্থ আছি ।..
আচ্ছা কি হয়েছে নিলয় হঠৎা করে দুর্ঘটানাটা কিভাবে ঘটলো কিভাবে বলতো..????

নিলয় একরাশ চাপা শ্বাস ছেড়ে বলা শুরু করলো..
ওইদিন অফিস করে ক্লান্ত শরীর নিয়ে সে তাড়াতাড়ি বাসায় প্রবেশ করলো । বাসায় প্রবেশ করে দেখে নিরা তার ব্যাগ গুচাচ্ছে,
নিলয়ঃ- কি হলো তুমি ব্যাগ গুচাচ্ছো কেনো? কোথায় যাচ্ছো.
নিরাঃ- হদয়ের কাছে যাচ্ছি খুশির স্বরে বললো.
নিলয়ঃ- না তুমি এমনটি করতে পারো না । আমাকে ছেড়ে কোথাও যেতে পারে না । নিলয় নিরার হাত ধরে

নিরাঃ- আমার হাত ছাড়ো তুমি কোন সাহসে আমার হাত ধরো তুমি । আমি তুমাকে ভালোবাসি না কতবার বলবো আমি হদয়কে ভালোবাসি..

নিলয়ঃ- তুমি কিছুদিন আগে বললনা হদয় তুমার সাথে চিট করেছে । তাহলে এখন কেনো আবার যাচ্ছে আর হদয় ছেলেটা ভালো না । যেয়ো না তুমি..
. নিরাঃ- আমি যাবো, আমার পথ আটকাবে না এই বলে সে চলে যাচ্ছে.
নিলয় তার হাত ধরলো আবার, এইবার নিরা নিলয়কে ঠাস করে থাপ্পড় দিয়ে বসলো কোন অধিকারে তুমি আমার হাত ধরো আমার পথ আটকাও হুম…

বাসার সব সার্ভরা চেয়ে রইলো সব নিস্তব্দ হয়ে গেলো

_ নিলয় এইবার আর চুপ থাকতে পারলো না. সে ও‌ নিরাকে কষে থাপ্পড় মারলো..

ভাগ সালি বহুত হয়েছে আর মেনে নেওয়া যায় না । আজ থেকে তোকে এই বাড়িতে যেনো না আর না দেখি । আর ভুলেও কখনো আমার কাছে আসবি না ।

নিরা এক দৌড়ে চলে গেলো, আর মনে মনে সে ভাবলো যাক আপদ থেকে মুক্তি পেয়েছি ।

সব তো শুনলাম তো তুই এক্সিডেন্ট হলি কিভাবে ।
নিলয়ঃ- হুম বাসা থেকে বের হয় দোকান থেকে সিগারেট নিয়ে রাস্তা দিয়ে বাসায় আসতেছিলাম তারপর অন্যমনষ্ক নাকি কি হয়েছে আমি নিজেও জানি না । তবে এইটুকু খেয়াল আছে আমার সামনে খুব জোড়ে ধেয়ে আসছিলো কার্ভাড ভ্যান তারপর আর কিছু খেয়াল নেই ।

নিলয়ের জ্ঞান ফিরেছে শুনতে পেয়ে নিলয়ের আব্বু আম্মু ভাই বোন সবাই হুড়ুমড়িয়ে কেবিনে ডুকলো ।
নিলয়ের আম্মু তো নিলয়কে ধরে কেদে দিলো বাবা তর কিছু হয়ে গেলে আজ আমরা কিভাবে থাকতাম । এই বলে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাদতে শুরু করলো ।

নিলয়ঃ- মা মা, কেদো না এখন তো আমি সুস্থ?? আর বেশি কাদলে তুমি অসু্স্থ হয়ে যাবে.. নিলয়ের আম্মু অন্তীর দিকে তাকিয়ে বললো মেয়েটা আজ তিন চারদিন হলো কোথাও যায় নি কিচ্ছুটি খায় নি ।

অন্তীর এইবার ঘুম ভাঙ্গলো, ঘুম ভেঙ্গে দেখে সে নিলয়ের বুকে শুয়ে আছে । সে নিজেও তা খেয়াল করিনি, হুড়মুড়িয়ে উঠে গেলো সে । আর উঠে দেখে তাজ্জব কেবিনে সবাই তার পাশে দাড়িয়ে আছে আর মুচকি মুচকি হাসছে । অন্তীর এইরকম অবস্থা দেখে নিলয় সবাইকে বের হতে বললো, সবাই চলে গেলো

আবির যাওয়া র‌ আগে নিলয়ের কানে কানে বললো বেস্টআফ লাক মামা । নিলয় রাগাণ্তিত ভাবে আবির দিকে তাকালো ।

সবাই চলে যাওয়ার পর অন্তী চুপ করে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে ।

নিলয় এইবার বলা শুরু করলো, হুম যে মেয়েটি সারা রাত আমার বুকে শুয়ে ছিলো আর এখন ঢং করা হচ্ছে ।
অন্তী কুওা বলে নিলয়ের বুকে কিল ঘুষি মারা শুরু করলো
নিলয়ঃ- আরে আস্তে আস্তে ব্যাথা পাবো তো
অন্তী:- পেলে পাবা হুম… এখন ওই ডাইনিটার কাছে আবার গেলে মেরে ফেলবো.

নিলয়ঃ- কি এতো সাহস, কোথার থেকে এলো মেম হুম..
নিলয় দুষ্টামি স্বরে বললো যাবো.. ( আস্তে বললো).
অন্তীঃ- কি বললা তুমি এইবার সে নিলয়ের গলা ধরলো আবার বলল কি বললি আবার বলল ।
নিলয়ঃ- আচ্ছা বাবা বলবো না ।
অনেকক্ষণ তাদের দুজনের খুনসুটি চলতে লাগলো ।
এরপর ডাক্তার তাদের কেবিনে ডুকলো অন্তী ডাক্তারকে দেখে সরে দাড়ালো । আচ্ছা ওনার গার্জিয়ান কোথায়
অন্তী নিলয়ের বাবা মা কে ডেকে আনলো…
ডাক্তারঃ- এখন ওনি মোটামোটি সুস্থ মাথায় ব্যান্ডেজটা দুই তিন পর এসে খুলে দিবো । আর তাকে আপনারা বাসায় নিয়ে যেতে পারেন.

নিলয়ের আব্বুঃ- থ্যাংকুইউ ডাক্তার আচ্ছা ওর বিলটা কত হলো আমরা পে করে তাকে নিয়ে যাচ্ছি ।
ডাক্তারঃ- তার কেনো দরকার নেই হারুন সাহেব ( অন্তীর বাবা) দিয়ে দিছে
নিলয়ের আব্বু:- তার কি দরকার হারুন সাহেব আপনারা আমার ছেলের জন্য যা করছেন তার জন্য আমরা অনেক ঋণী হয়ে আছি । সময় পেলে আমাদের বাসায় আসবেন দাওয়াত রইলো । আর অন্তী মা তুমি অনেক ক্লান্ত যাও বাসায় চলে যাও তুমার বাবার সাথে ।

অন্তী প্রথমে যেতে চায়ছে না নিলয়ের দিকে তাকালো নিলয় তাকে চলে যেতে বললো, অন্তী রাগ করে রুম থেকে বের হয় গেলো পিছু পিছু হারুন সাহেব ও‌ তার বউ চলে আসলো ।

_ নিলয়কে কাছে পেয়ে তার ছোট দুই ভাই বোন দুষ্টামি আর খুনসুটিতে মেতে উঠলো ।

নিলয়ের আম্মুঃ- আরে কি করছিস, তর ভাই ব্যাথা পাবে তো.
নিপাঃ- কিছু হবে না ভাইয়াকে আর কোথাও যেতে দিবো না.

তাদের ভাই বোনের খুনসুটি দেখে নিলয়ের বাবা মা হে হে করে হেসে উঠলো । অনেক দিন পর তারা একসাথে হলো..

এইদিকে অন্তী বাসায় গিয়ে নিজের রুমে গিয়ে দরজা লাগিয়ে দিলো । হারুন সাহেব মেয়ের এমন আচারণ দেখে থতমত হয়ে গেলো ।

অনেকক্ষণ নিরা দাড়িয়ে রয়েছে হদয়ের আসার কেনো খোজ নেই…..

চলবে…

#তুমি_আমার_অধিকার🍂
#লেখক_সাব্বির আহাম্মেদ
#পার্টঃ8

নিরা অনেকক্ষণ ধরে ওয়েট করছে হদয়ের জন্য হদয়ের আসার নাম গন্ধ নেই । নিরা হদয়ের নাম্বারে কল দিলো
হ্যালো কই তুমি হুম…

-এইতো বেবি চলে আসছি একটু ওয়েট ”

আজকে তাদের বিয়ে করার কথা ছিলো…
কিছুক্ষণের মধ্যে হদয় চলে আসলো ।
নিরাঃ- এতক্ষণ লাগে তুমার সেই কখন থেকে ওয়েট করছি আমি । এই কড়া রোদে আমি ঘেমে গেছি জলদি চলো

নিরা তার সাথে করে অনেক টাকা পয়সা আর গহনাঘাটি নিয়ে এসেছে । এটা হদয়কে সে বলেনি কিন্তু হদয় এই বিষয়টা আগে থেকে জানে । সে এই দিনটির জন্য অনেক আগে থেকে প্লান করে নিয়েছে ।

আচ্ছা এইবার নিরার সম্পর্কে কিছুটা জেনে নেই আমারা
নিরা আর নিলয়ের বাবা ব্যবসায়িক সূএে বন্ধু ছিলো সে থেকে তাদের পরিচয় । তারপর দুই বন্ধু মিলে নিলয় আর নিরাকে একসাথে করার ডিসিশন নিলো ।

নিরার বাবার আগে থেকে নিরা আর হদয়ের সম্পর্কটা কথাটা জানতো কিন্তু ওনি নিলয়ের বাবার কাছে বিষয়টা চেপে গিয়েছিলেন ।

আচ্ছা আমরা কোথায় যাচ্ছি হদয়… আমাদের তো আজ বিয়ে করার কথা ।

_হুম তবে এতো তাড়াহুড়ার কি আছে সবেমাএ তুমি মুক্তি পেয়েছো একটু চিল করো ।

হদয়ের কথার ধরণ গুলো নিরার থেকে অদ্ভুত মনে হচ্ছে আজকে । সে আর. তেমন কিছু বললো না হদয়কে ।

নিরা আর হদয় বাইকে করে এসে হোটেলের সামনে দাড়ালো

হদয়ঃ আজ রাতটা এই হোটেলে কাটিয়ে কালকে তুমায় নিয়ে কোথাও ঘুরতে যাবো ।

নিরাঃ- কি বলো সত্যি নাকি ( এক প্রকার লাফিয়ে হদয়কে জাপটে ধরলো)
হদয়ঃ- হুম সত্যি ।

এইদিকে আমাদের হিরোইন অন্তী আজ দুই দিন ধরে কিচ্ছুটি খাচ্ছে না । সারাদিন রুমের দরজা‌‌ দিয়ে বসে থাকে ।

অন্তীর বাবা হারুন সাহেব বুজতে পারলেন তাদের মেয়েটার রাগ এইভাবে ভাঙ্গানো যাবে না । তারা নিলয়ের বন্ধু অথৈ আর আবির কলে দিয়ে তাদের বাসায় আসতে বললো ।

আবির আর অথৈ তো কিছুই বুজতে পারলো না হঠৎা করে তাদেরকে তলব করার মানে কি..?? তবে অথৈ খুব খুশি প্রিয় বন্ধুর সাথে তার দেখা হবে ।

_ তারা দুজনে এখন অন্তীদের বাসার সামনে দাড়িয়ে দরজা নক করতেই হারুন সাহেব দরজা খুলে দিলো ।

অথৈঃ- আসসালামু ওয়ালাইকুম…….. কেমন আছেন আংকেল

হুম ভালো ভেতরে আসো তুমরা ।
তারা ভেতরে ডুকলো । আচ্চা আংকেল অন্তী কোথায় তাকে দেখছি না যে,

সেটার জন্য তুমাদের দুজনকে আসতে বললাম ।

আজ দুই দিন ধরে রুমের দরজা দিয়ে বসে আছে । আমাদের সাথে কথাও বলছে না খাবারও ঠিক মতো খাচ্ছে না ।

আবিরঃ- এখন কোথায় সে??

ওই যে সামনের রুম দেখো কি হয়েছে তার ।

অথৈ আর আবির তারা দুজনেই অন্তীর রুমের সামনে দাড়িয়ে বললো
এই অন্তী দরজা খুল….
এই দেখ আমরা চলে আসছি, প্লিজ দরজা খুল!!
রুম থেকে অন্তীর কেনো সাড়া শব্দ নেই,
অনেকক্ষণ পর অন্তীর সাড়া শব্দ না‌ পেয়ে আবির আর অথৈ হতাশ । তারপর অথৈ নিলয় বলছে তোকে নিয়ে যেতে এটা বলতেই ঠাস করে দরজা খুলে গেলো ।

আবির আর অথৈ ধড়ফড়িয়ে রুমে ডুকলো । রুমের চারদিকে আসবাবপএ গুলো এলেমেলো হয়ে আছে, সুনসান নির্জন হয়ে পুরো রুমটা । খাটের এক কোণে এক বসে আছে অন্তী..
~~~

_ অন্তীর চেহারা দেখে মনে হচ্ছে এই কয়েকদিনে মেয়েটা না খেয়ে কতটা শুকিয়ে গেছে ।

_ কিরে কি হয়েছে তর কতটা শুকিয়ে গেছিস তুই তর খেয়াল আছে হুম…

_ অন্তী অথৈর দিকে চেয়ে রইলো কেনো কথা বললো না ।

আচ্ছা বাবা । চল এখন আর কিছু খেয়ে নে নিলয়ের বাসায় যামু ।

_ এতক্ষণে মনে হলে অন্তী তার প্রাণ ফিরে পেয়েছে সে একপ্রকার ঝাপিয়ে পড়লো অথৈর দিকে সত্যি তুই আমায় নিয়ে যাবি হুম..

_ আরে বাবা হুম নিয়ে যাবো । এখন লক্ষী মেয়ের মতো যা যা বলছি তা করে রেডি হয়ে আয় ।

_অন্তী এক লাফে খাট থেকে নেমে তুই দাড়া আমি এক্ষুণি আসতাছি..

অথৈঃ- আরে ধীরে সুস্থে যায় পড়ে যাবি হা হা হা করে হেসে উঠলো অথৈ আর আবির ।

হারুন সাহেব এতক্ষণ অন্যকাজে বিজি ছিলো । অন্তীর এই হন্তদন্ত দেখে সে তো পুরাই টাস্কি খেয়ে গেলো । তবে মনে মনে খুশি হলো মেয়েটার অবশেষে রাগ ভাঙ্গলো ।

*
*

*
= এই দিকে রাতে খেয়ে দেয়ে নিরা আর হদয় রুমে আসলো ।

হদয়ের হাবভাব দেখে নিরার তেমন সুবিধার মনে হচ্ছে না ।
শোয়ার সময় হদয় নিরার কাছে আসলো ।

– কি হলো তুমি কাছে আসছো কেনো??
– না তেমন কিছু না । ( হদয়)

আচ্ছা শুনো না নীরা । তুমি কি আমায় বিশ্বাস করো??
নীরাঃ- কি বলো এইসব তুমাকে বিশ্বাস করবো না কেনো??
হদয়ঃ- তাহলে আমি যেটা চাইবো দিবে??

নীরাঃ- কি চাও আমার থেকে তুমি..

_ দেখো আমরা তো বিয়ে করবো । তো আজ আমি যা চাইবো তা দিতে হবে । এই বলে হদয় নিরার ওপর ঝাপিয়ে পড়লো ।
নিরা কিছু বুজার উঠার আগেই হদয় নীরার ঠোটে ঠোট মিলিয়ে দিলো । নীরা বাধা দিতে চাইলে আবার দিলো না ভাবলো সে তো আমায় বিয়ে করবে তাহলে এইগুলো করলে সমস্যা কি??

_ নীরাও হদয়ের সাথে তাল মিলিয়ে দিলো হারিয়ে গেলো দুজন দুজনাতে..

______

অথৈ আবির অন্তী নিলয়দের বাসার সামনে এসে দাড়ালো ।
অন্তী হাত কচলাচ্ছে তার মন চাচ্ছে এই গেট দরজা ভেঙ্গে নিলয়ের কাছে ছুটে যেতে..

অতঃপর অন্তী নিলয়ের বাবা মা ভাইবোন সবার সাথে দেখা করে নিলয়ের রুমের সামনে এসে দাড়ালো ।

_ নিলয় পুরাপুরি সুস্থ হয় নি তবে মোটামোটি বললে চলবে.
রুমের দরজা খুলা ছিলো । অন্তী এক দৌড়ে তার বুকের ওপর পড়লো ।

_ এইদিকে নিলয়ের বেচারার তো জানটা প্রায় গেলো ।
অন্তীর এই কাহিনি নিলয় বড় বড় চোখ করে অন্তীর দিকে তাকালো ।

_ কি করছো তুমি?? ছাড়ো মরে যাবো তো..
_ না ছাড়বো না মরে গেলে যাও! তুমার কত সাহস আমাকে তখন যেতে বললা । আর এতোদিন কেনো খোজ নিলা না ।

_ আজ তুমাকে মেরে ফেলবো । এই বলে অন্তী আরো চেপে ধরলো নিলয়কে ।

আবির আর অথৈ এতক্ষণ ধরে আংকেল আন্টির সাথে কথা বলে রুমে ডুকলো ।
অথৈ চোখে হাত‌ দিয়ে বললো এইইইইইইই আমরা কিছু দেখিনি আর অন্তী মেম অনকে হয়েছে এইবার রোমান্টিকতা থামান ।

অন্তী অল্হাদ স্বরে বলে উঠলো থামবো না । তুই এসেছিস কেনো কুওী চলে যায় ।

অথৈঃ- ওমা, এই মেয়ে দেখি পুরা ডেন্জারাস হয়ে গেছে এখন।

এতক্ষণ পর নিলয় বেচারার মুখে খই ফুটলো নীরার সাথে এখনো আমার ডিভোর্স হয় নি তবে পেপার চলে এসেছে সাইন দেওয়া বাকি ।

_অন্তীর এতক্ষণের দুষ্টামি এখন চুপসে গেলো সে নিলয়ের থেকে সরে বসলো ।

আবিরঃ- নিলয় আমি একটা প্লান ভেবে রেখেছি ।
নিলয়ঃ- কি প্লান শুনি

চল কোথাও ঘুরতে যাই । তুই অনেক দিন ঘরে কাটিয়েছিস আর মনটাও ভালো হয়ে যাবে ।

_ এইবার ঘুরার কথা শুনে অন্তীর মনটা নেচে উঠলো তবে কাউকে বুজতে দিলো না ।

_ নিলয়ঃ- হুম কোথায় যাওয়া যায় ঠিক হয়েছে??
আবিরঃ- হুম কক্সবাজার যাওয়া যায়, কি বলিস সুমদ্র সৈকত দেখা যাবে ।

নিলয়:- হুম ঠিক বলছিস, কালকেই রওয়ানা হই ওকে ।

অনেকক্ষণ আড্ডা দেওয়ার পর সবাই বাসায় চলে গেলো । অন্তীও তেমন সমস্যা করলো না সেও চলে এলো..
*

*

*
এইদিকে হদয় আর নীরা সকাল সকাল উঠে গেলে । হদয় কাকে যেনো কল দিলো একটু পর একটা প্রাইভেট কার চলো আসলো সাথে দুইজন ছেলে ।
_ হদয় নীরার দিকে তাকিয়ে হেসে বললো এইগুলো আমার ফ্রেন্ডস তারাও যাবে আমাদের সাথে আমরা আজকে থেকে কালকে রওয়ানা দিবো কক্সবাজারের উদ্দেশ্য..

নীরাঃ- হুম ওকে ।

নদীর পাশে নিলয় অনমনা হয়ে বসে আছে । অন্তীর পাগলামো দিন দিন বেড়ে চলছে । আগে অধিকার কম দেখাতো কিন্তু এখন তো জোর করে অধিকার দেখাতো শুরু করে দিয়েছে । অন্তীকে কল দিয়েছে আসতে বলেছে সে ।

চলেব..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here