তবুও_তুমি💖
পর্ব_১০
#লেখিকা-লামিয়া রহমান মেঘলা
ছোঁয়া রোদের কাছে রোদের হুরপরী।
এই হুরপরী যে এতো সুন্দর এতো মায়া তার মুখে এতো মমতা তার বুকে। এটা আসলে শুধু রোদ উপলব্ধি করতে পারে।
রোদ তো ছোঁয়া কে দেখতে দেখতে সারা জীবন কাটিয়ে দিতে রাজি।
রোদ যখন ছোঁয়াকে দেখে তখন পাশ থেকে কেউ ওর হুস না ফেরালে ওর হুস ফিরে না।
ঠিক এতোটা ভালোবাসে সে ছোঁয়া কে।
★★★
চুল আঁচড়াতে আঁচড়াতে মনে পরলো এ বাসায় তো কেউ নেই খাবার রান্না তো আমাকে করতে হবে।
দেখো কি পাজি লোকের সাথে আমার বিয়ে হইছে শুধু শুধু এই ১২ টা পর্যন্ত টেনে বিছনায় রাখার কোন মানে আছে হ্যাঁ।
চিরুনি টা হাত থেকে রেখে বাইরের দিকে পা বাড়ালাম।
★★★
ছোঁয়া কে নড়তে দেখে রোদের হুস আসলো।
ছোঁয়া রুম থেলে বেরিয়ে গেল।
এদিকে রোদ রুমে এলো।
সেও ওয়াসরুমে চলে গেল,
★★★
সকালের খাবার রান্না করছি।
রান্নার কাজ করছি আর ভাবছি রোদ আমাকে সত্যি একটুও বিশ্বাস করলো না।
ওর কি মনে হলো আমি সবটা ওকে মিথ্যা বললাম।। কিন্তু কেন ওর এমন মনে হলো
ও কি তাহলে আমাকে ভলোই বাসে না।
ভালোবাসলে ভালোবাসার মানুষ কে বিশ্বাস করতে হয়।
কিন্তু নাহ আর ভাবতে পারছি না।
আমাকে এখন যে কোরে হোক ভাইয়ার সাথে কথা বলতো হবে ভাইয়ার সাথে কথা না বলতে পারলে কিছু হবে না।
আমি একটা রান্না চাপিয়ে দিয়ে।। দৌড়ে এ বাসায় থাকা টেলিফোনের কাছে গেলাম।
আমার ফোন টা সেই বিয়ের দিন রাগে রাগে রোদ টুকরো টুকরো করে ছেড়েছিল।। পরে আর পরিস্থিতির চাপে সময়ের পরিবর্তনে রোদকে বলা হয় নি।
বলব কি করে যা হচ্ছে বিগত কিছু দিন।
ভাইয়ার নাম্বার ডায়েল করলাম,
কিছু সময় রিং হবার পর ভাইয়া ফোন ধরলো,
–হ্যালো।
–হ্যালো আসসালামু আলাইকুম ভাইয়া।
–কে ছোঁয়া।
–হ্যা রে ভাইয়া।
–কেমন আছিস তুই বোন কই আছিস সোনা আমার।
–ভাইয়ারে রোদ আমাকে বিশ্বাস করে নাই।
–মানে তুই ওকে সব বলেছিস।
–হ্যাঁ।
–কেন বলছিস ছোঁয়া আমি জানতাম ও বিশ্বাস করবে না।
–ভাইয়া তুই বর্ষাকে নিয়ে দেশের বাইরে চলে যা প্লিজ। (কেঁদে)
–আমি তোকে ফেলে কোথাও যাবো না ওরা তোকে মেরে দিবে। (ভয় পেয়ে)
–দিলেও কোন সমস্যা নাই তোরে আমার কসম লাগি তুই বর্ষা কে নিয়ে চলে যা। (কেঁদে)
–তুই এটা কি করলি ছোঁয়া কসম কেন দিলি।(হতভাগ হয়ে)
–হ্যাঁ ভাইয়া তুই চলে যা রোদের হাতের কাছে তুই পরলে তোকে মেরে দিবে।
আর ওর দাদা জানকে জানালে তো সব শেষ। আমার চিন্তা করিস না তুই সব সময় ভাব্বি আমি যেখনে আছি ভালো আছি।
তোকে আমি কসম দিছি তুই না গেলে আমার মরা মুখ দেখবি।
–ছোঁয়া………
–হতাস হস না ভাই আমি সব সময়, প্রান দিয়ে না পারি মন দিয়ে তোর সাথে থাকবো।
যদি কখনো দেখিস আমার কোন ফোন ১ মাসের মধ্যে আসতেছে না তখন বুঝিস তোর বোন আর নেই।
তুই এখনি রেডি হ বের হবি এখনি।
কথাটা বলে ফোনটা কেটে কান্না করতে লাগলাম।
খুব কষ্ট হচ্ছে আমার।
ভিশন কষ্ট হচ্ছে।
কেন এতো কষ্ট হচ্ছে জানি না।। পৃথিবীতে মৃত্যুর থেকে বড়ো সত্যি হয়তো কিছু নেই।
আজ সেই সত্যির মুখোমুখি হতে তবে কেন এতো কষ্ট।
এ দুনিয়ার মায়াতে জড়িয়ে গেছি।
ভাইয়ার সাথে কাটানো শেষের একটা বছর সত্যি ভালো ছিল।
রোদ আমার জীবনে আসায় ওর সাথে প্রতিটি মুহূর্ত আমার জন্য শুখের ছিলো।। পৃথিবীর সব শুখ আমাকে দিয়েছে ও।
কিন্তু চজ বড্ড ভয় হচ্ছে । ।।
হয় তো আমি বুঝতে পারছি আর সময় নেই।
,
,
,
,
বর্ষনের চোখ দুটো লাল হয়ে আছে।
হাতে ফোনটা নিয়েই সেভাবে বসে আছে।
বোনের বলা প্রতিটি কথা বুকের মধ্যে হাজার টা চাকু ঢুকিয়ে দিয়েছে বর্ষনের।
কি করবে কি না করবে কিছুই বুঝতে পারছে না সে।
বোন কেন কসম দিলো।
কি দরকার ছিল।
বর্ষা বর্ষনের কাছে এসে ওর ঘাড়ে হাত দেয়।
এতো সময় সব কথাই বর্ষা শুনেছে।
ফোনটা লাউডে ছিল।।
বর্ষন বর্ষার ছোঁয়া পেয়ে বর্ষাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।
আর শব্দ করে কেঁদে দেয়।
তা দেখে বর্ষাও কেঁদে দেয়।
কি বলে শান্তনা দিবে বর্ষা বর্ষন কে সে নিজেও জানে না।
,
,
,
,
রান্না শেষ করে হাত মুখ ধুয়ে মুছে নিলাম।
রোদ এলো আমার পাশে দাঁড়ালো।
আমি ওর দিকে তাকাতে আমার কোমড় জড়িয়ে নিলো।
আমি ড্যাবড্যাব চোখে ওর দিকে তাকিয়ে আছি।। ওর মতিগতি বোঝার চেষ্টা করছি।
–মনে পরে ছোঁয়া আমাদের প্রথম দেখার কথা।
ওর কথায় ওর চোখের দিকে তাকিয়ে আমার মনে পড়ে গেল।
আমাদের প্রথম দেখার কথা,
৫ বছর আগের কথা,
আমি ক্লাস ১০ এ পড়ি,
অতিত,
বৃষ্টির দিনে বান্ধবী বর্ষার সাথে ছোঁয়া
(বিঃদ্রঃ এই বান্ধবী বর্ষাই কিন্তু বর্ষনের স্ত্রী,)
হেঁটে বাসায় ফিরছে স্কুল থেকে।
ছোঁয়া এই বৃষ্টির রাস্তা দিয়ে লাফাতে লাফাতে হাঁটছে ।
তা দেখে বর্ষা বলল,
–কি রে কি সমস্যা তোর পেছনে ফিরে হাঁটছিস কেন পরে যাবি ত।
–না পড়বো না পড়লে আমার বর ধরবে।। কথাটা বলতে না বলতে ছোঁয়া পেছনে থাকা কিছু সাথে ধাক্কা খেয়ে যেই না নিচে পরবে,
বর্ষা এগিয়ে আসতে আসতে,
ছোঁয়াকে কেউ ধরে বসে।
ছোঁয়া ভয়ে চোখ বন্ধ করে নেয়।
কিন্তু কিছু সময় পর বুঝতে পারে ওকে কেউ ধরেছে।
যার জন্য ও নিচে পরে নি।
যাক বাবা এবারের মতো কোমড়টা বেঁচে গেছে।
এই রাস্তায় পরলে একে কোমড় দুই কাটা ছেড়া ফ্রি।
ধিরে ধিরে চোখ মেলে তাকায় ছোঁয়া।
একটা লম্বা উজ্জ্বল ফর্সা মতো করে একটি ছেলের বুকের মধ্যে লেপ্টে আছে ছোঁয়া।
ছোঁয়া নিজেকে সামলে সরে আসে,
ছেলেটি হাত দুটো বুকে বেঁধে ছোঁয়ার দিকে তাকায়,
–রাস্তা দিয়ে এভাবে নাচানাচি করবে আর বলবে পড়ে গেলে আমার বর ধরবে।
ভালোই বুদ্ধি।।
–দেখুন আমি সরি খেলায় করি নি আর আপনি এগুলা কি করে শুনলেম আপনি কি আমাদের ফলো করছেন?
–যাহ বাবা তোমাকে এই বিপদ থেকে বাঁচালাম আর তুমি কই ধন্যবাদ দিবা তা না আচার বিচার শুরু করেছো।
–প্রথমত আমি আপনাকে চিনি না আপনি আমায় তুমি করে কেন বলছেন?
–এই দেখো তুমি তো বললে পড়ে গেলে আমার বর ধরবে।
তো পরে গেলে ধরলাম আমি হলাম তোমার বর নাকি।।
ছেলেটার কথা শুনে বর্ষা আর ছোঁয়া দুজনের চোখ রসগোল্লা হয়ে গেছে।
কি বলে কি এই ছেলে।
–এই ছেলে এই মুখ সামলে কথা বলুন।। কি আজব কথা বলছেন আপনি।
এই বর্ষা৷ চল তো।।
ছোঁয়া পাশ কাটিয়ে চলে আসতে গেলে ছেলেটি ছোঁয়ার হাত ধরে বসে,
আর নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়,
–পালিয়ে লাভ নেই পারবা না আমার থেকে পালাতে।
তুমি আমারি হবে শুধুই আমার।
ছোঁয়া জোড়াজুড়ি শুরু করে নিজেকে ছাড়ানোর।।
কিছু সময় পর ছেলেটা ছোঁয়া কে ছেড়ে দেয়।
আর ছোয়া বর্ষাকে নিয়ে বাসার দিকে চলে আসে।
ছেলেটা ছোঁয়ার যাবার দিকে তাকিয়ে থাকে,
বর্তমান।
ঠোঁটের উপর কিছু অনুভব হতে ভাবনা জগৎ থেকে বর্তমানে ফিরে দেখি।
মহাশয় আমার উপর হামলা চালিয়েছে।। এই ছেলে জীবনে শুধরাবে না।
চলবে,