তপ্ত ভালোবাসা #লেখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া #পর্বঃ_২০

#তপ্ত ভালোবাসা
#লেখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া
#পর্বঃ_২০

.
🍁
গাড়ির পিছনে সিটে বসে আছি আমি, ড্রাইবার সাথে সামনের সিটে বসে আছে আসিফ নামক উনার বিশিষ্ট পদার্থ ব্যাক্তিটি, গাড়িটি আপন গতিতে ছুটে চলছে আমার বাড়ির দিকে আমি চুপ চাপ শূন্য অনুভতি নিয়ে বসে আছি আপাতত কোনো কথা বলার ইচ্ছা করছে না আমার কেন জানি নিজের ভিতর থেকে একটা খারাপ লাগা কাজ করছে হয়তো উনার বলা কথার জন্য এখনো এমনটা লাগছে আমার, উনার (রিদ) বলার কথা গুলো আমাকে এখনো জ্বালাচ্ছে গভীর ভাবে,,

.

আমার সচারাচর এমনটা কখনো হয়ে থাকে না কোনো বিষয় নিয়ে আমি বেশিক্ষণ ধরে মন খারাপ করে রাখতে পারি না বিষয়টি আমি অল্পতেই ভুলে যায় সেটা যত বড়ই হোক না কেন, কিন্তু এখন কেন পারছি না উনাকে ভুলে যেতে, হয়তো উনার করা অদ্ভুত আচরণ গুলো জন্য, আজ দুপুর থেকে সন্ধ্যা পযন্ত উনার সাথেই মাঝ রাস্তায় আটকে ছিলাম আমি, উনাকে এতোটা বিরক্ত করার পরও উনি আজকে আমার সাথে কোনো রকম খারাপ আচরণ না করলেও শেষ দিকে করেছে বাজে ভাবে পরে আমাকে উনার ভাইয়ের সাথে বিয়েটা করে নেওয়া জন্য বলে গেছেন সরাসরি,,,,

.

এই মূহুর্তে উনি আমার সাথে নেই, উনি (রিদ) অন্য গাড়ি নিয়ে উনার নিজ অবস্থানে ফিরে গেছে অনেক আগেই, আর আমাকে আসিফের সাথে সেইফলি বাসায় পৌছিয়ে দেওয়া হচ্ছে,, আসিফ ঘন্টা খানিক আগেই আমাদের খুঁজে পেয়েছে আমরা যখন রাস্তায় আটকা পড়ে কোনো রকম হেল্প পাচ্ছিলাম না প্রায় সন্ধ্যা হয়ে আসছিল তখনি আসিফ আমাদেকে খুঁজতে খুঁজতে রাস্তায় আটকা অবস্থায় পেয়ে যায়,, মানে যখন উনার সাথে কোনো রকম কন্টাক্ট করতে পারছিল না তখন উনাকে খুঁজা অনুসন্ধান জারি রেখে উনি (রিদ) যেই রাস্তা ধরে গাড়িটি নিয়ে বেড় হয়েছিল আসিফও উনাকে খুঁজার জন্য ঠিক একি রাস্তা ধরে বডিগার্ড নিয়ে বের হয় তাই আমাদের অতি সহজেই রাস্তায় আটকা অবস্থায় পেয়ে যায়,,,

.

আসিফ দুটো গাড়ি নিয়ে আসায় একটাতে আমাকে আর আসিফকে পাঠানো হয় অন্যটা উনি চলে যায় আর উনার আটকা পড়া গাড়িটি ড্রাইবার দিয়ে গ্যারেজ পাঠানো হয়,,

.

আসিফ আসার সাথে সাথে উনি আসিফের সাথে কি যেন কথা বলে আমাকে কিছু না বলেই চলে যাচ্ছিল, আমি উনাকে এমন করতে দেখে পিছন থেকে ডেকে বলে ওঠি…..

.
—” বাই না বলেই চলে যাচ্ছেন….

.

আমার এমন কথায় উনি আস্তে করে পিছন ফিরে তাকায় আমার দিকে পরে দায়সারা ভাব নিয়ে সোজাসাপটা উওর দিয়ে বলে উঠে……

.
—” বাই….

.
—” ব্যাস…. (করুন কন্ঠে)

.
আমার কথায় কপাল কুচকে এলো উনার উনি আমার দিকে কপাল কুচকে তাকিয়ে থেকে তিক্ত গলায় উস্কো মেজাজে বলে……

.

—” তো আরও কিছু শুনতে চাও নাকি তুমি, তোমার মতো মেয়েকে তিন ঘন্টা যাবত টলরেড করে এসেছি আমি দায়ে পরে নয়তো তোমার মতো মেয়েকে আমার চারপাশে ঘুরার সুযোগও পাই না, আমার চারপাশে ঘুরার জন্যও টপ লেভেল এর যোগ্যতা লাগে সবকিছুতেই যেটা তোমার নেই , আর তোমার সাথে থেকে এমনিতেই পাগল হয়ে গেছি আমি আরও পাগল বানানো জন্য তোমার সাথে আরও কিছুক্ষণ রাখতে চাও নাকি আমায়…..

.

উনার এমন কথায় মূহুর্তেই চোখে জল চলে আসে আমার, এতোক্ষণ তো উনি ভালোই ছিল হঠাৎ করে কেন আমাকে আমার অবস্থান বুঝাতে চাইছে উনি, আমি উনাকে দিকে তাকিয়ে থেকে কান্না আটকানো চেষ্টা করে চাপা স্বরে প্রতিবাদি গলায় বলে উঠি……

.

—” আমাকে তিন ঘন্টা যাবত দেখে রাখার জন্য ধন্যবাদ, আর হ্যাঁ আমার অবস্থান নিয়ে আপনাকে চিন্তা ভাবনায় না করলেও চলবে,,,

.
—” তো কে করবে রুদ্র, ওহ তোমার তো আবার বড়লোক ঘরে বিয়ে হচ্ছে কংগ্রাচুলেশন, বড়লোক স্বামী পেয়ে যাচ্ছো তুমি তোমার অবস্থান তো এমনই এমনই চেঞ্জ হয়ে যাচ্ছে তোমাকে তো আর কষ্ট করতে হচ্ছে না, সো লাকি টু ইউ এমন কপাল কই জনের হয় বলো, এখন তাড়াতাড়ি বিয়েটা করে নিয়ে আমার লাইফ থেকে দূর হও…..

.
উনার এমন সব কথায় আমি ভিতর থেকে রাগে ফেটে যাচ্ছি উনি আমার সাথে কেন এমন বাজে সব কথা গুলো বলছেন সেটা একমাত্র উনিই জানেন, আমি কি এমন করেছি উনার সাথে যে উনি পদে পদে আমাকে অত্যাচার নয়তো ছোট করে কথা বলে, আমি উনার দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে দাঁতে দাঁত চেপে বলি……

.
—” আমার কোনো রকম শকখ নেই আপনার মতো বাজে লোকের ফেসটাও দেখার, আর আমি কাকে বিয়ে করবো সেটা আপনাকে বলে করবো না অবশ্যই, আর বাকি রইল আমাকে নিয়ে চিন্তা ভাবনায় করার সেটা অনাহেশেই রুদ্রই করে থাকবে কারণ উনি কিছু দিন পর আমার বিয়ে করা স্বামী হবে…….

.

স্বামী কথাটা বলার সাথে সাথে মূহুর্তের মধ্যেই যেন উনি তেলেবেগুনে জ্বলে উঠে নিজের দুহাত মুষ্টি বদ্ধ করে লাল লাল চোখে আমার দিকে রাগি ভাবে তেড়ে আসতেই আসিফ পাশ থেকে দ্রুত এগিয়ে এসে উনার পথ আটকিয়ে কিছু বলে কানে কানে যাহ শুনে উনি মূহুর্তেই আমার দিকে রাগি ভাবে তাকিয়ে থেকে হনহন করে নিজের গাড়িতে উঠে চলে যায়, আর আমি আসিফ কে নিয়ে চলে আসি অন্য গাড়িতে…..

.

সিটে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে এমন সব চিন্তা ভাবনায় করে নিয়ে আস্তে করে উঠে বসি আমি পরে এক পলক সামনে আসিফ দিকে তাকিয়ে থেকে গাড়ির জানালা দিয়ে বাহিরের দিকে তাকায় শূন্য চোখে,, কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকার পর হঠাৎ করে পাশ থেকে উচ্চ স্বরে আমার ফোনটা বেজে ওঠে লাউডলি, কে ফোন করেছে না দেখেই আমি কলট রিসিভ করে আস্তে করে কানে ধরতেই কেউ ফোনের অপর পাশ থেকে উদ্বিগ্ন হয়ে দ্রুত বলে উঠে……

.

—” মায়াপাখি তুমি ঠিক আছো তো……..

.

কন্ঠটি বেশ অপরিচিত হওয়ার কপাল কুচকে তাকায় ফোনটির দিকে কে হতে পারে বিষয়টি জানার জন্য আবারও ফোনটি কানে ধরি, আমি কিছু বলতে যাব তার আগেই ওপাশ থেকে ব্যাক্তিটি খানিকটা শান্ত বগিতে বলে উঠে……..

.

—” মায়ুপাখি আমি রুদ্র,

.
—” ওহ আচ্ছা আপনি…..

.
—” হুমমম, মায়ুপাখি তুমি আমাকে না বলে রিদের সাথে কেন যেতে গেলে তোমাকে না পেয়ে আমি কতটা টেনশনে ছিলাম তোমাকে নিয়ে দুপুর থেকে তোমার কোনো আইডিয়া আছে……

.
উনার কথায় বুঝতে পারি উনার সাথে রিদ খাঁনের কথা হয়েছে রুদ্র রিদ খাঁন থেকেই জানতে পেরেছে যে আমি এতক্ষণ উনার সাথেই ছিলাম কিন্তু আমি কিভাবে রিদ খাঁনের গাড়িতে পৌছালাম সেটা জানে না রুদ্র তাই শরু থেকে সবটা খুলে বলি রুদ্রকে কিভাবে রিদ খাঁনের গাড়িতে পৌছালাম কিন্তু রিদ খাঁনের বলা বাজে কথা গুলো বলিনি রুদ্রকে, সবটা শুনে স্বস্থির নিশ্বাস ফেলে রুদ্র পরে শান্ত ভাবে আমাকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে…….

.

—” মায়ুপাখি আমার ভাই একটু একটু অন্য রকম মানে একটু বেশি রাগী মানুষ কখনো কাউকে আপন করে নিতে পারে না সহজ ভাবে তবে যদি একবার আপন করে নেই তাহলে তারজন্য সবটাই করবে নিজের মতো করে, আর তোমাকে রিদ এখনো ভালো করে চিনে না একবার আমার সাথে বিয়ে হয়ে গেলে তোমাকেও আপন করে নিবে দেখে নিও,,, আচ্ছা বাদ দাও সেসব কথা এখন শুনো আমি আসছি তোমাকে নিতে আসিফ তোমাকে আমার বলা লোকেশনে নিয়ে আসবে পরে আমি তোমাকে তোমার পরিবারের দিয়ে আসবো যাতে তোমার কোনো সমস্যা না হয়……

.
উনার এমন কথায় আমি আস্তে করে ছোট শব্দে বলে ওঠি……..

.
—” হুমমম……

গল্পের পেইজ লিংক
https://www.facebook.com/profile.php?id=100069402592136

.
চলবে…….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here