টক্কর,২য় পর্ব
সাহেরা_খান
তিমন জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যেতেই সবাই আতঙ্কিত হয়ে চিৎকার জুড়ে দেয়। তিমনের মায়ের স্তিমিত কান্না মুহূর্তেই কয়েক ধাপ বেড়ে আহাজারিতে পরিণত হয়েছে। কান্নার সাথে বিলাপ জুড়ে পরিবেশটা আরো খানিক ভারী করে তুললেন। সকলে ব্যতিব্যস্ত হয়ে তিমনকে হাসপাতালে নেওয়ার তোড়জোড় শুরু করে। তিমনের বাবা ছেলের এমন আকস্মিক অসুস্থতায় হতবিহ্বল হয়ে পড়েছেন। ছেলের বউয়ের খুন হওয়ার সংবাদ এবং পরপর ছেলের জ্ঞান হারানোতে তিনি নিজেকে সামলে উঠতে পারছেন না। কেউ একজন অ্যাম্বুলেন্সে কল করে দিয়েছিল। অ্যাম্বুলেন্সের শব্দে সম্বিত ফিরে পেয়ে নিজেকে কিছুটা ধাতস্থ করে নিলেন। তিমনের মা-কে তাড়া দিয়ে এগিয়ে গেলেন অ্যাম্বুলেন্সের দিকে।
সকলের সহোযোগিতায় ব্যক্তিগত হাসপাতালে তিমনকে ভর্তি করানো হলে, কর্তব্যরত চিকিৎসক তড়িৎ গতিতে চিকিৎসা শুরু করেন। বাড়িতে এত বড়ো দুঃসংবাদ আসতে না আসতেই আরেকটি দুর্ঘটনায় সবাই মুষড়ে পড়ে। চিকিৎসকদের ছুটোছুটি ক্রমেই বাড়তে থাকে। তিমনের বাবা চেষ্টা করেও জানতে পারলেন না কিছু। তারা সবাই ভীষণ দুশ্চিন্তায় পড়ে যান। করিডরে বসে অপেক্ষা করা ছাড়া কিছুই করার নেই আপাতত। তিমনের মা এবং আবিরার মা সমান তালে বিলাপ করে যাচ্ছেন। কেউ তাদের থামানোর চেষ্টাও করছে না। এ কান্না যে সন্তানের জন্য মায়ের কান্না, এই কান্না থামার নয় আপাতত।
ওদিকে তিমনের অবস্থা ক্রমশই অবনতির দিকে যাচ্ছে। বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে জানা গেল সাধারণ কোনো অসুখ দানা বাঁধেনি। সে মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণজনিত সমস্যায় ভুগছে। এ যেন মরার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাড়ির লোকজনকে পুরোপুরি না জানালেও সামান্য ইঙ্গিত দেওয়া হলো। যেটুকু আশা ছিল ছেলে অসুস্থ হয়ে পড়তেই তা-ও যেন ধুলোর সাথে মিশে যাচ্ছে। হাহাকার করে ওঠে সবাই। আত্মীয় স্বজনরা তড়িঘড়ি করে উপস্থিত হয়ে জটলা বাঁধিয়ে ফেলল হাসপাতালে।
*
তদন্ত কর্মকর্তা কিবরিয়া তিমনকে পরবর্তী কলে না পেয়ে বাড়িতেই উপস্থিত হয়। তদন্তর তোড়জোড় শুরু হয়ে গেছে আগেই। তারই পরিপ্রেক্ষিতে সে এখন এখানে। বাড়িটি নিস্তব্ধ হয়ে আছে। গা ছমছমে পরিবেশ লক্ষ করল কিবরিয়া। অবাক হয়ে চারপাশে ঢুঁ মারল। কোনোকিছুরই চক্ষুগোচর হলো না। হতাশ হয়ে সে বেরিয়ে আসে। ঘরের দরজায় বড়ো তালা ঝুলতে দেখে যারপরনাই অবাক হয়েছে সে। প্রধান গেইট হাট করে খোলা রেখে সবাই এক দিনে কোথায় উধাও হয়ে গেল! ভাবতে ভাবতে বাড়ির বাইরেই জিজ্ঞেস করার উদ্দেশ্যে কাউকে খুঁজতে শুরু করে। সামনে ভদ্রলোক গোছের একজনকে দেখে বিনয়ের সাথে প্রশ্ন করল,
‘চাচা, আপনি কি জানেন এই বাড়ির লোক সব কোথায় গেছে?’
লোকটি কিবরিয়ার কথা শুনে ভারাক্রান্ত হৃদয়ে বলল,
“আর বইলেন না! কী যে বিপদ এসে উপস্থিত হলো বাড়িটার উপর। এই বাড়ির বউটা খুন হতে না হতেই ছেলেটাও হাসপাতালে ভর্তি হলো।”
কিবরিয়া চমকে ওঠে। অপ্রত্যাশিত খবরটি পেয়ে সে খানিক বিমর্ষ হয়। তৎক্ষনাৎ নিজেকে গুছিয়ে নিয়ে বলল,
“এত বড়ো কাণ্ড ঘটে গেছে! আপনি কি জানেন কোন হাসপাতালে আছে তারা?”
মাথা নাড়িয়ে ভদ্রলোক বললেন,
“ওদের নিজেদের হাসপাতালেই ভর্তি করেছে। সামনে এগিয়ে গেলেই আইবি হাসপাতাল পেয়ে যাবেন।”
কিবরিয়া ভদ্রলোককে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে হাসপাতালের উদ্দেশ্যে ছুটল। পথে সবটা জানিয়ে ওসি সাহেবকে একটা মেসেজ পাঠিয়ে দিলো সে।
*
হাসপাতালের করিডরে চিন্তিত মুখে পায়চারি করছে কিবরিয়া। কেইসের মোড় কোন দিকে ঘুরবে সেটা নিয়েই ভাবছে সে। তদন্তের স্বার্থে তিমন হচ্ছে তুরুপের তাস। তাকেই যদি হারিয়ে ফেলে, বেশ বিপাকে পড়তে হবে। মাথা থেকে চিন্তা ঝেড়ে ফেলে ডাক্তারের সাথে কথা বলার সুযোগ খোঁজে। সকাল থেকে পেটে কিছু পড়েনি। খালি পেটে থাকায় হাসপাতালের ফিনাইলের গন্ধে নাড়িভুঁড়ি বেরিয়ে আসার উপক্রম হচ্ছে। অনেক কষ্টে নিজেকে দমিয়ে রেখেছে সে।
রিসিপশনিস্ট থেকে তিমনের রুম নাম্বার জেনে নিয়ে তিনি সেদিকে পা বাড়াল।করিডরে বিদ্ধস্ত মানুষগুলোকে দেখে এস আই কিবরিয়া কিছুটা আবেগী হয়ে পড়ল। তিমনের মা-বাবা, শ্বশুর-শাশুড়ির সাথে কথা বলে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করল তাদেরকে। যদিও কোনো কাজ হলো না তাতে। তারা কথা বলার মতো অবস্থায় নেই এই মুহূর্তে। সে ফিরে এসে ডাক্তারের সাথে দেখা করার সিদ্ধান্ত নিলো। নার্সের মাধ্যমে খবর পাঠিয়ে করিডরে পেতে রাখা আসনে বসে পড়ল। মাথায় বেশখানিক জট লেগে আছে তার।
বেশ কিছু সময় অতিবাহিত হতেই ডাক্তার রঞ্জন বিশ্বাস এসে হাজির হলেন। এস আই কিবরিয়াকে দেখে তিনি হাত বাড়িয়ে দেন। আন্তরিকতার সাথে কথা শুরু করে এস আই। তিমন এর অবস্থা জানতে চাইলে তিনি হতাশার বাণী শোনালেন। রোগীর অবস্থা শোচনীয়। সে আদৌ সুস্থ হবে কি না তা এখনি বলা যাচ্ছে না। চেতনা ফেরানোর চেষ্টা করেও লাভ হয়নি। ডাক্তার আশঙ্কা করছেন সে হয়তো কোমায় চলে যাবে। ভয়াবহ স্ট্রোক করেছে।
ডাক্তারের কথা শুনে এস আই কিবরিয়া দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে সিদ্ধান্ত নিলো থানায় ফেরার। এই পরিস্থিতিতে বাড়ির সদস্যদের সাথে কথা বলার চেষ্টা করতে ইচ্ছে হলো না আর। ময়নাতদন্তের ফলাফল খতিয়ে দেখে, ওসি স্যারের সাথে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া যাবে।
ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে থানায় ফিরে এসে, এস আই কিবরিয়া সরাসরি ওসি সাহেবের কেবিনে চলে গেল। ওসি সাহেব হাবিলদারকে ডেকে চা পাঠাতে বললেন দুজনের জন্য। কিবরিয়া উসখুস করছে দেখে ওসি সাহেব ভ্রু কুঁচকে তাকালেন। এস আই কিবরিয়া সবটা খুলে বললেন স্যারকে। ওসি সাহেবের গম্ভীর, চিন্তামগ্ন চাহনি দেখে অপ্রস্তুত হেসে সে বলল,
“স্যার, আপনার কী মনে হয়? প্রথমে আমার সন্দেহ তিমন সাহেবের উপর থাকলেও এখন যেন গোলমেলে লাগছে। দেখে তো লাইলি মজনু মনে হলো। বউকে এত ভালোবাসে যে একবারে কোমায় চলে যাচ্ছে।”
ওসি সাহেব কথাগুলো মস্তিষ্কে গেঁথে নিলেন। তিনিও প্রথমে তাকেই সন্দেহ করেছিলেন। স্বামী স্ত্রীর মধ্যে একজন খুন হলে স্বাভাবিকভাবেই অপরজনের উপর সন্দেহ আসবে। এখানেও ভিন্ন ছিল না। যদিও এখনো তদন্ত কিছুই আগায়নি; তবে সন্দেহভাজন হিসেবে সবাইকে লিস্টে রাখতে চান।
এস আই কিবরিয়ার হঠাতই মনে হলো রিপোর্টের কথা। বেমালুম ভুলে বসে আছে সে। তার হাতেই রয়েছে রিপোর্টটা। আসার সময় নিয়ে এসেছিল একবারেই।
টেবিলের ওপর দিয়ে রিপোর্টটা ঠেলে এগিয়ে দিলো ওসি সাহেবের দিকে। রিপোর্টটা হাতে তুলে নিলেন ওসি সাহেব। বিস্তারিত দেখার দেরি সহ্য হচ্ছে না তার। অনেক কৌতুহলী হয়ে আছেন খুনের ঘটনায়। জীবনে অনেকগুলো কেইসের সমাধান করলেও এটার প্রতি তীব্র আকাঙ্ক্ষা দেখা দিচ্ছে তাঁর। খামের মুখটা যত্ন করে খুলে ফেললেন। সাদা কাগজে কালো কালিতে গোটা অক্ষরে টাইপ করা শব্দগুলো দেখে উত্তেজনা বেড়ে গেল। এই বয়সেও এখনো রোমাঞ্চকর অনুভূতি হচ্ছে তাঁর।
বিস্তারিত পড়া শেষ করে মুখটা ঘোর অমানিশায় ছেয়ে গেল। মৃত ব্যক্তির জন্য ভীষণ খারাপ লাগল তাঁর। কতটা যন্ত্রণাদায়ক মৃত্যু ছিল ভেবেই শিউরে উঠেছেন। কিবরিয়ার দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে তিনি বললেন,
“বুঝলেন মি. কিবরিয়া দেশটা রসাতলে যাচ্ছে। দিনে দিনে কত কিছু চক্ষুগোচর করতে হবে ভাবতে পারছি না। ভালো হয়েছে তিমন সাহেব কোমায় গিয়েছেন। তিনি যদি রিপোর্ট পড়ে দেখতেন তাহলে মনে হয় না নিশ্বাস নিতে পারতেন।”
এস আই কিবরিয়া ভীষণ অবাক হয়ে হাঁ করে তাকিয়ে থাকল। বিস্ময়ে বিমুঢ় হয়ে গিয়েছে সে। কতটা ভয়ংকর তথ্য আছে রিপোর্টে তা না শুনেই অনুমান করার চেষ্টা করছে।
ওসি সাহেব বেশ রহস্য করে যাচ্ছেন। সহজে মুখ খুলছেন না। এদিকে এস আই কিবরিয়াও অস্থির হয়ে উঠছে। ইতি-উতি তাকিয়ে শেষে জিজ্ঞেস করেই ফেলল,
“ব্যাপারটা কী স্যার? একটু খুলে বলেন। আমি আর অপেক্ষা করতে পারছি না।”
ওসি সাহেব হাসি ঝুলিয়ে রেখে বললেন,
“চা এসে গেছে। আগে আয়েশ করে পান করি তারপর না হয় বলি।”
এস আই কিবরিয়া মনে মনে ভীষণ ক্ষুব্ধ হলেও তা প্রকাশ করার সাহস পেল না। ওসি সাহেব চায়ে চুমুক দিচ্ছেন বেশ উৎসাহ নিয়ে। মনে হচ্ছে কত মজা লুকিয়ে আছে চায়ে। সেই মজা ধীরে ধীরে আস্বাদন না করলেই নয়! দ্রুতই ফুরিয়ে যাবে তাড়াহুড়ো করলে। চা শেষ হতেই তিনি এস আই কিবরিয়ার দিকে তাকিয়ে বললেন,
“কঠিন শত্রুতা ছিল মেয়েটার সাথে। খুন তো করেছেই গণধর্ষণও করেছে। অত্যাচার করেছে খুব জঘন্যভাবে। তিলে তিলে কষ্ট দিয়ে তারপর মৃত্যু নিশ্চিত করেছে।”
কিছু সময় ধ্যান ধরে থেকে আবার মুখ মুখলেন,
“আপনি ভাবতে পারবেন না কী করেছে! ধর্ষণ তো করেছেই তা-ও সাধারণ না অনেক কষ্ট দিয়েছে। আমরা তো কাপড় পরা থাকায় দেখিনি। শরীরের চামড়া টেনে তুলেছে জীবিত অবস্থায়ই। পেটে আর পিঠে কুৎসিতভাবে আঘাত করেছে। আমি পড়তে গিয়েই শিউরে উঠেছি। বেচারি কীভাবে সহ্য করেছিল এটাই ভাবছি।”
ওসি সাহেব কথাগুলো বলেই অন্য ভাবনায় হারিয়ে গেলেন।
এস আই কিবরিয়া ঢোক গিলে ফেলল। সে আফসোস করে বলল,
“আমারও মনে হচ্ছে তিমন সাহেব কোমায় গিয়ে আরো ভালো আছেন। যতটুকু জেনেছি তাতে বুঝতে পারছি তিমন সাহেবের উপর কী ঝড় যাচ্ছে। ৮ বছরের সম্পর্ক চুকিয়ে ১ বছর হলো সংসার করেছেন।”
“আর কিছু জেনেছেন? এত গভীর সম্পর্ক ছিল যেহেতু কোমায় যাওয়া অবিশ্বাস্য না।”
ওসি সাহেবের প্রশ্নে তিনিও বিষাদের সুরে বললেন,
“হাসপাতালে আসা আত্মীয় স্বজনরা যা বলাবলি করেছে তাতে এতটুকুই জেনেছি। সবাই খুব প্রশংসা করেছিল দুজনের। কোনো ত্রুটি ছিল না সম্পর্কে। আমার মনে হয় না তিমন সাহেব জড়িত আছে এতে।”
“এখন যা অবস্থা তার, তাতে সন্দেহ করে লাভ হবে কি না জানি না। কিন্তু তালিকা থেকে বাদও দিচ্ছি না। যদি তদন্তে কিছু বের হয়ে আসে। আপাতত সবাইকে সাসপেক্ট হিসেবে ধরে এগোতে হবে। শুধু পরিবার নয় অন্য কেউ জড়িত আছে কি না তা-ও খতিয়ে দেখতে হবে। এক জায়গায় পড়ে থাকলে দেখা যাবে মাঝ সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছি। কোনো কূল পাচ্ছি না।৷ তাই প্রতিটি তথ্য সংগ্রহ করেন। সিসি টিভি ফুটেজসহ কল লিস্ট সব।”
ওসি সাহেব উঠে দাঁড়িয়ে বললেন,
“চলেন আবার যাই স্পটে। সেদিন ভালো করে দেখতে পাইনি কিছুই, আজ যদি চোখে পড়ে।”
এস আই কিবরিয়াও উঠে দাঁড়িয়ে সম্মতি জানালে দুজনেই বের হয়ে গেল।
*
যেখান থেকে লাশটা উদ্ধার হয়েছে সেখানেই দুজনে দাঁড়িয়ে আছে এখন। শপিংমল থেকে ২০ মিনিটের দূরত্ব হবে মাত্র। এদিকের রাস্তা বেশিরভাগ সময় নির্জন থাকে। সিসিটিভিও চোখে পড়ছে না। অপরপাশে উন্নতি চোখে পড়লেও এইপাশে বেশ অবহেলা করেছে। ওসি সাহেব কিবরিয়াকে নির্দেশ দিয়ে নিজেও খুঁজতে শুরু করেন। অনেক সময় ধরে খোঁজাখুঁজি করলেও লাভ হলো না। নজরে এমন কিছু আসলো না যা দিয়ে কোনো ক্লু মিলবে।
দুজনে হতাশ হয়ে রওনা দিলো শপিংমলের দিকে। কিবরিয়ার পরিচিত থাকায় অসুবিধে হলো না। দুজনে ঢুকতেই আন্তরিক অভ্যর্থনা পেল। দোকানী তোড়জোড় শুরু করে আপ্যায়নের জন্য। ওসি সাহেব থামিয়ে দিয়ে তাকে শান্ত হতে বললেন। তিনি আন্তরিকতার সাথে জিজ্ঞেস করলেন,
“মিসেস আবিরা আপনার দোকানেই এসেছিল তাই তো? আপনি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যা যা হয়েছে বলেন তো একবার।”
দোকানী কিছুক্ষণ ভেবে বলল,
“ম্যাডাম ১০ টার দিকে এসেছিলেন। তিনি বললেন দামি কিছু গয়না নিতে চান। আমি বেশ কিছু গয়না দেখালাম। তিনি পছন্দমতো প্রায় ১১ লাখ টাকার গয়না নিয়েছিলেন। এরপর তিনি চলে যান।”
“আপনি কি তাকে একবারে স্বাভাবিক দেখেছিলেন? আর আশেপাশে এমন কাউকে দেখেছিলেন সন্দেহজনক? যেমন তাকে হয়তো ফলো করছিল কেউ।”
দোকানী মাথা নাড়িয়ে বললেন,
“না স্যার, আমি তো ব্যস্ত ছিলাম। আপনি সিসিটিভি ফুটেজ দেখলে হয়তো কিছু পেতে পারেন।”
ওসি সাহেব ফুটেজের জন্য তাড়া দিলেন কিবরিয়াকে। তিনি বেরিয়ে আশেপাশের সিকিউরিটি গার্ডকে ডাকলেন। তারা আসতেই ছবি দেখিয়ে সরাসরি জিজ্ঞেস করলেন,
“সেদিন এই মহিলা যখন বেরিয়ে যায় তখন কি আপনারা কোনো অসঙ্গতি লক্ষ করেছিলেন? যেমন ধরেন কেউ ফলো করছিল কি না বা তার সাথে কেউ গাড়িতে উঠেছিল কি না?”
সবাই এক কথায় না জানিয়ে দিলো। কারো থেকে কোনো সাহায্য না পেয়ে তিনি কিবরিয়াকে বললেন কল লিস্টের খোঁজ নিতে। থানায় ফিরে গিয়ে এসব ব্যাপারে আলোচনা করার সিদ্ধান্ত নিলেন।
থানায় ফিরে আসতেই কল লিস্ট হাতে পেয়ে গেলেন। দুজনে মনোযোগ সহকারে খতিয়ে দেখতে শুরু করেন। তিমনের কল লিস্ট পুরোপুরি পরিষ্কার পাওয়া যায়। তাকে কল লিস্টের মাধ্যমে সন্দেহ করা গেল না। আবিরার কল লিস্ট চেক করে চমকে যান ওসি সাহেব…।
চলবে…