#গল্প_স্যার I Love You,পর্ব_১৫,১৬
#শারমিন_আক্তার_বর্ষা
#পর্ব_১৫
একটু ভালো করে দেখতে লাগলাম।
হ্যা এতো স্যারই বাহ বেশ হ্যান্ডসাম লাগছে তো।
আমি স্যারের দিকে হা করে তাকিয়ে আছি।
স্যার হেঁটে আমার সামনে এসে দাঁড়ায় কিছু বলতে এমন সময় স্যার আমার পা থেকে মাথা পর্যন্ত লক্ষ্য করে। এখন দুই জনেই দুই জনেরই দিকে মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে আছি..!
কিছুক্ষণ পর আশেপাশের মানুষের কথায় আমাদের দু’জনেরই ধ্যান ভাঙ্গে.!
স্যার- আজ হঠাৎ শাড়ি?
আমি- ইচ্ছে হলো তাই পরেছি।
স্যার- ওও তাহলে এটা বলো কেনো আসতে বলেছো।
আমি এদিকে সেদিক ভালোভাবে তাকালাম কেউ দেখছে না তো। না কেউ দেখছে না।
বলেই স্যারের পায়ের সামনে এক হাঁটু গেড়ে বসে পরলাম।
স্যার- কি করছো ইতি মানুষ কি ভাববে উঠো বলছি।
আমি- স্যার ওয়েট।
এক দীর্ঘশ্বাস নিয়ে নিলাম। জানি না এখন কি ঘোড়ার ডিম উগান্ডা বলবো। ★★★
আমি- স্যার আপনি আমার লাইফে আসার পর থেকে আমার লাইফের সব কিছু পাল্টে গেছে আজ থেকে ৩মাস আগে যেমন ছিলাম এখন আর তেমন নেই আর সবটা হয়েছে আপনার জন্য আপনার জন্য আমি পাল্টে গেছি আপনাকে প্রথম দিন যেদিন জানতে পারি আপনি আমার স্যার সেদিন খুব করে চেয়েছিলাম আপনাকে কিভাবে তাড়াবো তারনপরেই আপনার কিছু কথা শুনে আমার মন পাল্টে যায় নিজের ভুল বুঝতে পারি আর তারপর থেকেই আমার আপনার প্রতি কিছুটা ভালোলাগা কাজ করে আর সে ভালোলাগা ধীরে ধীরে ভালোবাসায় পরিনত হয়েছে আমি জানি আপনি ও আমাকে ভালোবাসেন আর যদি তাই হয় তাহলে প্লিজ আমার ভালোবাসা কবুল করে নিন আমার আব্বু আম্মুকে আমি রাজি করাবো স্যার আপনি যদি আমাকে ভালোবাসেন তাহলে আমার প্রপোজ করার সাথে সাথেই এক্সেপ্ট করবেন।
বলেই চুলের খোঁপা থেকে গোলাপ ফুলটা খুলে নিলাম আর দুইহাত দিয়ে গোলাপ ফুলটাকে ধরলাম আর বললাম।
আমি- স্যার I Love You….
স্যার আমার হাত থেকে ফুলটা নিয়ে বললো।
স্যার- ইতি I love you too….
স্যারের মুখে ভালোবাসি শুনে উঠে দাঁড়িয়ে সোজা ঝাপিয়ে পরলাম স্যারের বুকে মানে জরিয়ে ধরলাম।
স্যারও আমাকে দুই হাত দিয়ে শক্ত করে জরিয়ে ধরলো আর বললো।
স্যার- আমিও তোমাকে অনেক বেশি ভালোবাসি ইতি। সারাজীবন আমার বুকের মধ্যে খানে তোমাকে জরিয়ে ধরে রাখবো।
বলেই স্যার আমার দুই গালে হাত দিলেন আর স্যারের মুখ বরাবর ধরলেন স্যার কিছুক্ষণ আমার দিকে তাকিয়ে রইলেন আর বললেন।
তোমার এই চোখ তোমার এই ঠোঁট আমাকে জেনো পাগল করে দেয়।
বলেই স্যার স্যারের ঠোঁট জোড়া আমার ঠোঁট জোড়ার সাথে মিশিয়ে ধরলেন।
পাগলের মতো কিস করতে লাগলেন।
আমার ঠোঁটের সব লিপস্টিক খাইয়া ফেলতাছে রে। (মনে মনে)
স্যার স্যারের মতো কিস করতে ব্যস্ত।
পাঁচ মিনিট পর স্যার আমাকে ছেড়ে দিলো। তারপর স্যার উনার এক হাত দিয়ে আমার কোমড় চেপে ধরলো আর আরেক হাত দিয়ে আমার চুলের খোঁপা ধরলো আমাকে আবারও উনার কাছে নিয়ে বুকের সাথে মিশিয়ে নিলো আবারও আমার ঠোঁটে উনার ঠোঁট ডুবিয়ে দিলো।।।
এদিকে আমি সহ্য করতে না পেরে কোলবালিশ কে শক্ত করে জরিয়ে ধরে পুরো বিছানায় গড়াগড়ি করতে লাগতাম আর কোলবালিশ কেই পাপ্পি দিতে শুরু করলাম। বেচারা কোলবালিশ নিজের ইজ্জত যেতে দেখে সহ্য করতে পারলো না তাই খাট থেকে পরে সুইসাইড করতে চাইলো।
গড়াগড়ি করতে করতে বেডের সাইডে এসে পরি আর কোলবালিশ নিয়ে ঠাসসসস করে ফ্লোরে পরে যাই।
ফ্লোরে পড়ার সাথে সাথেই চিৎকার দিয়ে বসে পরি।
আমি- ওরে আল্লাহ গো মাজা ডা মনে হয় ভাইঙ্গাই গেছে গা রে। এক মিনিট আমি ফ্লোরে কি করছি আর এই কোলবালিশ আমার পায়ের কাছে কি করে আর আমি আমার রুমে কেন আমি না স্যারের রুমে আছিলাম তাইলে কেমনে কি এদিকে ফোনের এলার্ম বেজে উঠে ফোনের এলার্ম বন্ধ করে মানে মাত্র ৬টা বাজে। আর আমি এতক্ষণ স্বপ্ন দেখতে ছিলাম।
এত রোমান্টিক এটা স্বপ্ন ছিলো বাস্তব কেনো হলো না। হায় কি কিউট লাগতাছিলো আমারে আর স্যারকে কত হ্যান্ডসাম লাগতাছিলো।
কি রোমান্টিক স্বপ্ন ভাবতে ভাবতে ফ্লোরে বসেই আবার কোলবালিশকে টেনে বুকের সাথে মিশিয়ে জরিয়ে ধরি।
দুই মিনিট পর চোখ যায় কোলবালিশের উপর।
আমি: ইয়াক থু….. আমি আবার কোলবালিশ কে জরাই ধরছি কেউ দেখলে ইজ্জতের ফালুদা হইয়া যাইবো এই কোলবালিশ তোর জন্য যদি আমার মান ইজ্জত নিয়া টানাটানি হয় তোরে দেখিস ফাঁসিতে ঝুলাইয়া দিমু। বলেই দিলাম বিছানার উপর ঢিলা। মানে বেডের উপর ছুরে মারলাম।
আর চলে আসলাম ওয়াশরুমে কি রোমান্টিক স্বপ্ন।
★ওইদিকে কোলবালিশ যদি কথা বলতে পারতো তাহলে এটা ঠিকই বলতো
এতক্ষণ আমার ইজ্জতের ফেলুদা বানাইয়া এখন ঢিলা দিয়া ফালাইয়া দেওয়া। যাকে বলে জুতা মেরে গরু দান। ঘুমের মধ্যে এত আদর সোহাগ করলা আর ঘুম থেকা উঠলেই লাথি মাইরা ছু্ড়ে ফেলে দিলা।★
আমি সিউর বলতো.!
ব্রেকফাস্ট করে কলেজ চলে আসলাম।
কলেজ ছুটি হতেই সব গুলা মিললা ক্যাফে তে চলে আসলাম আর ওদেরকে স্বপ্নের কথা বললাম।
★ আমার পাঠক পাঠিকারা আবার ভাইবো বা কিসমিস করছে ওইগুলাই বইলা দিছে ওইগুলা আবার সাথে বলা যায় না আর তোমরাও বইলো না যত হোক ইতি আর স্যারের মান সম্মানের প্রশ্ন বইলো না কিন্তু 😁.!★
ওরা সবাই বললো এবার আমাকে স্যারকে সব পরিস্কার করে বলে দেওয়া উচিত..! আমিও ঠিক করি আগামী শুক্রবার স্যারকে সব বলে দেবো আনার ফিলিংসের কথা আমি উনার জন্য যা ফিল করি সব বলে দেবো আর স্বপ্নে যেভাবে দেখেছি ঠিক সেভাবেই সেজে যাবো।
আজ থেকে স্যার পড়াতে আসছেন।
এভাবেই চলছে দিন আর শুক্রবার ও গনিয়ে আসছে স্যারের মায়ের অবস্থা তেমন ভালো নয় ভালো ডাক্তার দেখাতে হবে।
আর গাজীপুরে উনার রোগ কোনো ডাক্তারই দরতে পারছেন না। স্যার মনে মনে প্ল্যান করে শনিবার দিন সকালে উনার মা কে নিয়ে মাদ্রাস চলে যাবেন। আর এই বিষয়ে স্যার ছাড়া কেউ জানে না। স্যার বাড়িওয়ালার কাছেও বলে দিয়েছে উনারা বাড়ি ছেড়ে শুক্রবার দিন সকালে চলে যাবে।
বাড়িওয়ালা ও দ্বিমত করে না কারণ নেই কোনো দ্বিমত করার কারণ উনি তো উনার বাড়ি ভাড়া পেয়েই গেছেন।
কাল বৃহস্পতিবার স্যার ভাবে কালকে ইতির বাবার কাছে জানিয়ে দেবে সে যে আর ইতিকে পড়াতপ পারবে নি কিন্তু স্যার ডিরেক্টর ইতিকে এ কথা বলতে পারবে না কারণ স্যারও যে বুঝে গেছে সে ইতিকে নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসে কিন্তু ইতি আর স্যারের মিক হবে না কারণ ইতি যে বড়লোক বাপের এক মাত্র মেয়ে আর স্যার যে মধ্যবিত্ত।
রাতে খেয়ে শুয়ে পরে ইতি আর এদিকে স্যার সব কিছু প্যাকিং করছে।
To Be Continue…..?
#গল্প_স্যার I Love You
#রাইটার_শারমিন আক্তার বর্ষা
#পর্ব_১৬
আজ বৃহস্পতিবার…!
রোজ দিনের মত আজও ব্রেকফাস্ট করে কলেজ চলে আসি।
কলেজ শেষ হতেই সবাই বসে গল্প করছি আজ সবাই আমাকে খোঁচাচ্ছে কারণ আমি সব কাজই ওদের কে বলে এবং জানিয়ে করি কাল যে স্যার কে প্রপোজ করবো আর সেটা নিয়েই বকবক করছে সব কিছু নিয়ে আমার তো প্রচুর হাসি সাথে একটু একটু রাগ ও হচ্ছে কারণ ওরা এখন একটু বেশিই কথা বলছে।
তারপর সবাই এক সাথে হাঁটতে হাঁটতে চলে এলাম ফুচকা খেতে হিহিহি।
সবাই ফুচকার অর্ডার তো দিলাম কিন্তু এখনো আসছে না।
অপেক্ষা করছি অপেক্ষার প্রহর শেষ করে ছয় প্লেট ফুচকার জায়গায় দিয়ে গেলো তিন প্লেট ফুচকা কি আর করার আমরা তিন ওদের তিনজনের প্লেট থেকে নিচ্ছি আর খাচ্ছি।
রুবেল, মুন্নি, মিম… আমরাও কিন্তু তোদের প্লেট থেকে খাবো।
আমি, আব্রু, নাঈম– আরে খাইস খাইস আগে ফুচকা আসতে তো দে… না জানি কোন প্লেনে করে আসবে।
সবাই হাসাহাসি শুরু করে দিলাম।
দোকান একটাই আর আমরা ছাড়াও অনেক মানুষ আছে ভিড় বেশি তাই আমরা আর ওয়েট না করে তিনটার বিল দিয়ে আর তিনটা ক্যানসেল করে চলে আসি।
রাস্তার পাশা সব গুলা একটা আরেকটার পেছনে দৌড়াদৌড়ি করছি ৩০ মিনিট পর।
মুন্নী, মিম- হাঁপাই গেছি আর দৌড়াতে পারবো না।
আমি, আব্রু- গলা শুকাইয়া কাঠ হইয়া গেছে।
নাঈম, রুবেল- ঠান্ডা খাওয়া দরকার। চল সবাই মদির দোকানে।
সবাই চলে আসলাম। মদির দোকানে এখন টোস হবে বিল কে দেবে যার নাম উঠবে বিল তার দিতে হবে আর বাকিদের যা যা নিতে নিচ্ছে হবে সব নিতে পারবে কেউ কিচ্ছু বলতে পারবে না।
তো দোকানদারের কাছ থেকে একটা কাতার পেইজ আর একটা কলম নিয়ে আমাদের ছয় জনের নাম লিখলাম কাগজ গুলো বাজ করে টেবিলের উপর ফেললাম।
আব্রু- আজ আমি কাগজ উঠাবো, গতবার মুন্নী উঠাই ছিলো।
সবাই উঠা…!
আমি- আল্লাহ আল্লাহ আমার নাম জেনো না উঠে, উঠলে আজকা আমারে ফকিন্নি বানাইয়া দিবো। (চোখ বন্ধ কইরা মনে মনে বলতে লাগলাম)
আব্রু- ওওও ইতিইইই….! বিল দিবে আজকা।।
আমি চোখ খোলে তাকালাম..!
আমি- হোয়াট…?
রুবেল- এত অবাক হচ্ছিস কেনা আজ প্রথম মনে হয় বিল দিবি।
আমি- হো তোরা যেই রাক্ষস!
সবাই একটার বদলের তিন তিন তিন টা কইরা 7up coca cola speed তো আছে চিপস টিপস আরও যা যা আছে সব কিছু চার পাঁচটা কইরা নিছে।
মুন্নী- মামা কয়েকটা আইসক্রিম দাও তো।
আমি- আবার আইসক্রিম কেন? এত এত কিছু তো নিছিস-ই।
রুবেল, নাঈম- ট্রিট।
আমি- কিসের ট্রিট?
মুন্নী, আব্রু, মিম- কাল যে স্যার কে প্রপোজ করবি তার অগ্রিম ট্রিট হিহিহি।
আমি- প্রপোজ করি না আর তার আগেই তোরা।
মুন্নী- হইছে এখন টাকা দে যা।
আমিও আইসক্রিম নিলাম।
তারপর সব কিছুর বিল দিয়ে সেখান থেকে চলে আসি।
একটা খেলার মাঠে সবাই বসে আছি আর সব কিছু ভাগ করে সবাই মিলে খাচ্ছি.!
আমি- এই ৩টা বেজে গেছে ৪টা বাজে স্যার আসবে। এখন যেতে হবে রে। উঠ উঠ সবাই।
তারপর সবাই উঠে যার যার গাড়িতে উঠে চলে আসলাম।
আসার আগে সবাি আবারও স্যারকে নিয়ে ইয়া এত্তো গুলা কথা শুনাইছে।
মুন্নী, আব্রু, মিম তো একটু বেশিই বলে ফেলছে।
স্যার যখন প্রপোজাল এক্সেপ্ট করবে তখন স্যারকে জরিয়ে ধরে চুম্মা দিতে। ইশশশ কি লজ্জার কথা ফাজিল গুলা বইলা হাসতে হাসতে গাড়িতে উঠে যায়।
ভাগ্যিস ওদেরকে স্বপ্নের কথা বলি নাই। বললে তো আমি শেষই হয়ে যেতাম।
যাক এত কিছু ভেবে কাজ নেই বাড়ি চলে আসছি।
বাড়িতে ঢুকে আম্মুকে জরিয়ে ধরলাম আর একটা চুম্মা দিলাম সাথে আব্বু কেও জরিয়ে ধরে চুমু দেই।
আব্বু, আম্মু- কি আমাদের মামনি আজ এতো খুশি কেনো?
আমি- আম্মু আব্বু আমি আজ খুব খুশি খুব খুব।
আব্বু- কারণ টা কি এত খুশির?
আমি- ওইটা কালকে বলবো। হিহিহি
বলেই দৌড়ে সিঁড়ি বেয়ে উপরে রুমে চলে আসি।
ফ্রেশ হয়ে খেয়ে টেবিলে বসে আছি।
কিছুক্ষণের মধ্যে স্যার চলে এলেন।
স্যারকে দেখে আমি হেঁসে দিলাম স্যার কিছুক্ষণ আমার দিকে তাকিয়ে রইলেন।
তারপর পড়াতে বসেন। স্যারকে আজ কেমন জেনো লাগছে অচেনা অচেনা স্যার তো এমন ছিলো না তাহলে আজ কি এমন হলো যে স্যারকে আজ এমন লাগছে। পড়ানো শেষ হতেই স্যার উঠে যেতে নিলে স্যারকে আমি ডাক দেই।
স্যার পেছনে ঘুরে তাকায়।
স্যার- কিছু বলবে?
আমি- স্যার কালকের সন্ধ্যার পর ৩০ মিনিট সময় আমাকে দিবেন প্লিজ.!
স্যার- কিন্তু আমার কাল কাজ আছে।
আমি- প্লিজ স্যার প্লিজ..! খুব করে রিকুয়েষ্ট করলাম স্যার হয়তো আমার ফেস দেখে না করতে পারেনি ঠিক আছে বলে চলে গেলো।
একটু ফুচি দিয়ে দেখলাম স্যার আব্বুর সাথে কথা বলছে। কি কথা বলছে যেই কথা ইচ্ছা সেটা বলুক তাতে আমার কি। বেডের উপর শুয়ে ফোন টিপছি আর উদেরকে মেসেজ দিয়ে বললাম স্যার কাল আসবে।
ফোন টিপতে টিপতে বেডের উপর শুয়েই ঘুমিয়ে পরি।
গভীর রাত …. রাত ৩টা ঘুম ভেঙে গেলো এখন কি করবো কোনো কাজই তো নাই এত রাতে কি করবো ধুততত ভাল্লাগে না।
বসে বসে ফোন টিপছি রুমের এপাশ ওপাশ পায়চারি করছি ঘুম বাবা জি প্লিজ আসো না প্লিজ।
দীর্ঘ দুই তিন ঘন্টা পর ঘুম আসে।
ঘুমিয়ে পরি সকালে আর উঠতে পারেনা।
ঘুম ভাঙ্গলো তো সকাল ১১টায়।
ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করলাম আর রেডি হয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পরলাম।
ফাস্ট মার্কেট গেলাম অনেক বেছে একটা শাড়ি কিনলাম.! মার্কেট থেকে বেরিয়ে গোলাপ ফুল। তারপর বাড়ি ফিরে এলাম।
দুইদিন ধরে আমাকে এত খুশি দেখে আব্বু আম্মু তো অবাক কারণ ছাড়া এত খুশি কেন নাকি কারণ আছে যেটা আমি উনাদের কে বলছি না কোনটা।
দুপুরে লাঞ্চ শেষ করে রুমে চলে আসি।
এখনই রেডি হবো কিন্তু সন্ধ্যে হতে তো অনেক দেরি।
কি করবো এই সময় তো জেনো কাটছেই না।
এদিকে ওরা পাঁচ জন একে একে কল দিয়েই যাচ্ছে মনে হচ্ছে আজ আমার বিয়ে আর ওরা আমাকে বিদায় দিচ্ছে ব্যাপারটা এমন দাঁড়িয়েছে।
অনেক কষ্টের পর এখন সময় হয়েছে রেডি হওয়ার।
গোলাপি রাঙা শাড়ি পরেছি.
দুই হাত ভর্তি চুড়ি. চোখে গাড় করে কাজল!
ঠোঁটে হালকা গোলাপি লিপস্টিক.!☺
আর চুল গুলো খুব সুন্দর ভাবে ফুলিয়ে খোঁপা করে বেধে নিয়েছি!
আর সামনে দিয়ে কয়েকটা চুল বার করে রেখেছি! (স্টাইল)
কানে স্যারের দেওয়া ঝুমকো ঝোড়া পরেছি!
খোঁপায় ফুল বেঁধেছি।
টোটাল রেডি হয়ে স্যারকে মেসেজ করে দেই আমি রেডি আপনি রেডি হয়ে রাস্তার মোড়ে অপেক্ষা করুন আমি আসছি।
আব্বু আম্মু এই সন্ধ্যে বেলা সেজে গুজে বেরো তে দেখে একশো টা প্রশ্ন করে। আমি তাদের জরিয়ে ধরে চুমু দিয়ে তাদেরকে অপেক্ষা করতে বলে চলে যাই।
গাড়ি থেমেছে স্যার গাড়িতে উঠতে যাবে।
স্যার- ড্রাইবার কাকা ইতি কোথায়..!
ড্রাইবার কাকা- ইতি মামনি হাইওয়ে রাস্তার পাশে আপনার জন্য অপেক্ষা করছে আর আমাকে আপনাকে নিতে পাঠিয়েছে।
স্যার- আচ্ছা চলুন।
কিছুক্ষণ পর…. স্যার চলে আসেন কোথায় ইতি।
ড্রাইবার- ওই তো মামনি ওই যে দাঁড়িয়ে আছে।
স্যার- আচ্ছা আমি যাচ্ছি।
স্যার- ইতি….
স্যারের ভয়েস শুনে পেছনে তাকালাম।
ওয়াও… কি সুন্দর লাগছে স্যার কে এই প্রথম পাঞ্জাবিতে দেখলাম তাও আবার ব্লাক পাঞ্জাবি।
স্যার- শাড়ি…?
আমি- হুম কেনো আমাকে ভালো লাগছে না।
স্যার- আমি কিন্তু সেটা বলিনি। খুব সুন্দর লাগছে। তো বলো কেনো আসতে বলেছো।
আমি- আপনার হাত ধরে রাতের রাস্তায় হাঁটবো।
স্যার- কিহহহহহ।
আর কিছু না বলে স্যারের হাত ধরে নিলাম। চলুন আমার সাথে হাঁটুন।
স্যার- কিন্তু ইতি সবাই দেখছে।
আমি- চুপ দেখুক।
দু’জনেই পাশাপাশি হাঁটছি স্যার আমার দিকে তাকিয়ে আছে আমিও স্যারের দিকে তাকিয়ে আছি।
হাঁটতে হাঁটতে কিসের সাথে জেনো পা আঁটকে পরে যেতে নিলাম আর স্যার আমাকে ধরে নিলো।
আবারও আমাদের চোখে চোখ পরলো।
স্যার আমাকে উঠিয়ে দাঁড় করিয়ে দিলো।
স্যার- আমরা কি এখানে শুধু হাঁটতে আসছি নাকি অন্য কিছু..!
বলতে বলতেই আমি স্যারের সামনে হাঁটু গেড়ে বসে পরলাম পুরো ফিল্মি স্টাইলে।
খোঁপা থেকে গোলাপ ফুল নিয়ে স্যারের দিকে বাড়িয়ে বললাম।
আমি- স্যার I Love You……
লাইক অনেক আগে থেকে কখনো বলার সাহসই হয়ে উঠেনি কিন্তু আজ আমি বলতে চাই পুরো পৃথিবীর সামনে চিৎকার করে বলতে চাই।
সেখানেই উঠে দাঁড়িয়ে আশে পাশের মানুষগুলোকে ডাক দিলাম। সবাই আমাকে দিকে তাকালো।
আবারও সবার সামনে হাঁটু গেড়ে বসে পরলাম। আর চিল্লিয়ে বললাম।
– এই ছেলেটা হচ্ছে আমার স্যার আর আমি উনাকে অনেক বেশি ভালোবাসি।
I Love You স্যার…
স্যার আমাকে কিছু বলে না অন্য দিকে ঘুরে হাঁটতে শুরু করে।
স্যারের এমন আচরণ সবটা আমার মাথার উপর দিয়ে গেলো। আমি উঠে শাড়ির কুচি ধরে স্যারের পেছনে ছুটতে লাগলাম। কয়েকবার ডাক দিয়েছি কিন্তু স্যার পেছনে তাকায়নি।
আমি দৌঁড়ে স্যারের হাত ধরে স্যারকে আমার দিকে ঘুরালাম।
স্যারের চোখে পানি স্যার হাত দিয়ে পানি মুছে নিলো।
আমি- স্যার আপনি এভাবে চলে এলেন কেনো কিছু বলছেন না কেনো আপনার আমাকে পছন্দ নয় আপনি আমাকে ভালোবাসেন না।
স্যার- ইতি ছাড়ো আমার হাত।
– ছাড়বো না আপনাকে বলতেই হবে আপনি আমাকে ভালোবাসেন কি না আমি আপনার চোখে আমার জন্য ভালোবাসা দেখেছি। প্লিজ স্যার.!
স্যার- কথা ভালোবাসার নয় ইতি.!
– মানে আপনি আমাকে ভালোবাসেন তাহলে সমস্যা কোথায়?
স্যার- হ্যাঁ আমি তোমাকে ভালোবাসি কিন্তু তোমার আমার যায় না।
– কেনো যায় না আমি আপনাকে ভালোবাসি। স্যারের দুই হাত চেপে ধরে বললাম। আর চোখ বেয়ে অনবরত পানি ঝড়ছে।
স্যার- তুমি আর আমি এক না। তুমি অনেক
– অনেক কি? কি আমি অনেক?
স্যার- তুমি অনেক বড় বিজনেস ম্যান কোটিপতি বাবার এক মাত্র মেয়ে আর আমি সাধারণ মধ্যবিত্ত ছেলে আমার কাছে কোনো ভালো জবও নেই ইতি বুঝতে হবে আমি তোমার যোগ্য নই ইতি তুমি আরও ভালো ছেলে ডিজার্ভ করো আমাকে প্লিজ ভুলে যাও।
– আমি কোনো কিছু শুনতে চাই না। আমি শুধু আপনাকে ভালোবাসি আমি সব কিছুর বিনিময়ে হলেও আপনাকে চাই আমি আপনার সাথে আপনার জীবনসঙ্গী হয়ে থাকতে চাই প্লিজ স্যার আমাকে ফিরিয়ে দিবেন না। আমি আপনাকে ভালোবাসি আপ,, আপনি আমাকে ভালোবাসেন না স্যার আপনি আমাকে ছাড়া থাকতে পারবেন আপনি কি একটুও আমাকে ভালোবাসেন না। প্লিজ আমাকে ছেড়ে যাবেন না,, কাঁদতে কাঁদতে স্যারের হাত ধরে মাটিতে বসে পরলাম।
স্যার ও কাঁদছে ভালোবাসার মানুষ কে ছেড়ে যাওয়া অনেক কষ্টের আর সেটা শুধু ছেড়ে যাচ্ছে যোগ্য নই বলে। বাক্ষ্মণ হয়ে চাঁদে হাত দেওয়ার ফল যে খুব একটা ভালো হয় না।
স্যার- ইতি নিজের থেকেও বেশি তোমাকে ভালোবাসি কিন্তু তোমাকে আমি আমার করতে পারবো না আমি কখনো তোমার যোগ্য নই তুমি কোথায় আর আমি কোথায় প্লিজ আমাকে ভুলে যাও।
বলেই স্যার উনার হাত আমার হাত থেকে ছাড়িয়ে হাঁটতে শুরু করেন।
মাটিতে বসে চিল্লিয়ে কাঁদছি আশেপাশের লোকেরা সবাই আমাকে দেখে আফসোস করছে।
আমি কেঁদেই যাচ্ছি কান্না যেনো থামছেই না স্বপ্নে কি দেখেছিলাম আর বাস্তবে হলো সম্পূর্ণ উল্টা..!
আর কিছুই ভাবতে পারছি।
স্যারকেও আর দেখতে পারছি না।
রাস্তার সাইডে বসে চিল্লাতে শুরু করলাম।
– আমি আপনাকে ভালোবাসি স্যার আপনি না বাসলেও আমি আপনাকে ভালো বাসি আমি আপনাকেই ভালোবাসি আর আপনাকেই ভালো বাসবো এই ইতি আপনাকে ছাড়া আর কখনো কারো হবে না আমি সারাজীবন আপনার জন্য অপেক্ষা করবো স্যার I Love You….
I Love You স্যার….!
আআআহহহহহহহহহহহহহহহ
সব শেষে চিৎকার দিলাম অনেজ জোরে…!
– শাওওওওওওনননননননন স্যার আআহহহ😭 I Love You…..
কাঁদতে কাঁদতে সেন্সলেস হয়ে সেখানেই পরে যাই তরপরে আর কিছুই বলতে পারি না।
পরেরদিন দুপুরে…!
To Be Continue…..?