কায়নাত_২,পর্বঃ_৫
লেখিকাঃ টিউলিপ রহমান
ইবাদতের ধীরে ধীরে জ্ঞান ফিরল। তাকাতে পারছে না। চোখের পলক যেন পাথর হয়ে গিয়েছে। তারপরও কষ্ট করে তাকিয়ে দেখে একটি মেয়ে দাড়িয়ে আছে ওর সামনে। তারপর নিজের হাতের দিকে তাকিয়ে দেখে আগুনের শেকল দিয়ে হাত পা বাধা। সোজা হওয়ার অনেক চেষ্টা করছে। তখনই মেয়েটা ধীরে ধীরে সামনে এসে বলল
— জান, কি হয়েছে? ব্যাথা পাচ্ছ? কষ্ট হচ্ছে?
–অনিশা তুমি? আমাকে এখানে বেধে রেখেছো কেনো? আমি কি করেছি?
–তুমি জানো না তুমি কি করেছো? ঐ বজ্জাত মেয়েটাকে যেভাবে আদর করেছো গতকাল রাতে, এখন আমাকে ঠিক ঐ ভাবে আদর করো!
— কি বলছো? মাথায় সমস্যা আছ কোনো? ও আমার স্ত্রী।
–স্ত্রী না ছাই! ও না থাকলে তো আমাকেই বিয়ে করতে! তাই নয় কি!
— আমি ওকে ভালোবাসি।
— আমাকেওও ভালোবাসোনা, তোমাকে কে মানা করেছে!(বলে অনিশা নিজের শরীরের কাপড় এক ঝটকায় খুলে ফেলল)
ইবাদত মাথা নিচু করে বলছে — ছি! ছি! জঘন্য একটা মেয়ে তুমি!
–কেনো, সমস্যা কি? আমার মধ্যে কি এমন নেই যা ওর মধ্যে আছে? ও কি আমার থেকে বেশী সুন্দরী?
— আগে নিজের কাপড় পরো। আর হ্যাঁ শুনতে চাচ্ছো তো, হ্যাঁ কায়নাত তোমার থেকে অনেক বেশী সুন্দরী। আর ওর মনটাও অনেক ভালো, তোমার মত এত নোংরা নয়।
— কি! এত বড় কথা? (ইবাদতের চুলের মুঠি ধরে বলছে) জানো এটা কে? ( ঐ সাপটাকে দেখিয়ে বলছে)
ইবাদত ভালো করে দেখে বলল –তুই একবার আমার হাত থেকে বেঁচে গিয়েছিস তবে এইবার যদি তোকে ধরি, কসম সেই আল্লাহর যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন, তোকে জানে মেরে ফেলবো। একবার আমি শুধু মুক্ত হই।
অনিশা আর ঐ সাপটা খিক খিক করে অট্টহাসিতে ফেটে পরল। তারপর বলল
— তোর ওটা স্বপ্নই থেকে যাবে। কারন তুই এখান থেকে বেরই হতে পারবি না। তার আগেই তোর খেল খতম করে ফেলব।
বলে ঐ সাপটা হুবুহু ইবাদতের আকার ধারন করেছে। তারপর বলল
–দেখ তো আমাকে চিনতে পারিস কিনা!( হো হো করে হেসে)
— ইবাদত, আমি এখন তোমার সাথে এইখানে মজা করবো আর ও তোমার বউয়ের সাথে ঐ খানে মজা করবে , খুব ভালো একটা ব্যাপার, তাই না? (অনিশা)
— ছি! মেয়ে হয়ে আরেকটা মেয়ের জীবন নষ্ট করতে খারাপ লাগে না?
–কে বলেছে আমি মেয়ে? আমি একজন সুন্দরো পরী। আমার সাথে ঐ ফালতু মেয়ে মানুষের তুলনা দিবে না খবরদার!( অনিশা)
— ঠিকই বলেছো, তোমার সাথে ওর কখনো তুলনাই হতে পারে না। কারন ও অতুলনীয় একজন মানুষ। ছি! ঘৃনা হচ্ছে তোমার উপর আর নিজের উপর। একসময় আমরা ভালো বন্ধু ছিলাম।এটা ভাবতেও আমার গা গুলিয়ে যাচ্ছে। (ইবাদত)
–এত ছি! ছি করো না। ছি! ছি! তো করবে লোকে যখন জানতে পারবে স্বামী হারিয়ে পরপুরুষের সাথে রাত যাপন করছে তোমার প্রিয় বউ!( অনিশা)
ইবাদত রুপী সেই জ্বীন বলছে
— কতদিন পর সেই শরীরটাকে দেখবো আবার, আহ! কতবার ছুঁতে চেয়েছি কিন্তু তোর( ইবাদত)কারনে পারিনি। তবে আজ আমার সেই মনোকামনা পূরন করবো। কেও জানবে না, বুঝবে না আর কাজ হয়ে যাবে! ওয়াহ!(বদজ্বীন)
–ইবাদত, তোমাকে একটা সুযোগ দেই। যদি তুমি বাঁচতে চাও তাহলে কায়নাতের সাথে তোমার সম্পর্ক ত্যাগ করে আমাকে বিয়ে করো।
— অসম্ভব! কায়নাত আমার জান। আমি বেঁচে থাকতে ওর কিছুই হতে দিবো না আর ওর ভালোবাসার মানুষকেও কিছু হতে দিবো না।
— একটা সুযোগ দিলাম তাও কাজে লাগাতে পারলে না।এটাই তোমরা প্রেমিক -প্রেমিকারা ভুল করো।বেশ ভালো ! তাহলে দেখো আমি এখন কি করি। এখন আমি যা করবো সেটা হলো তোমাকে এই পানীয় খাইয়ে সব কিছু ভুলিয়ে দিবো। আর তোমাকে চিরজীবনের জন্য আমার করে নিবো। আর ঐ জ্বীন যায়েদ, তোমার স্ত্রীর সাথে রঙ্গলীলায় মেতে উঠবে, ওকে উপভোগ করবে। তারপর যদি ওর মন ভরে তাহলে হয়তো ছেড়ে দিবে বা মেরে ফেলবে।
এখন বলো কেমন হলো আমাদের প্ল্যান!
— খুবই জঘন্য! তোমাদের দ্বারা আর কি হতে পারে! খারাপ সবসময় খারাপই চিন্তা করে। আমাকে পাওয়ার জন্য এতো কষ্ট! কিন্তু আমি তোমাকে ভালোবাসি না। তবে আমার স্ত্রীর গায়ে যদি ও হাত দেয় তাহলে ওকে শেষ করে ফেলবো।
অনিশা আর যায়েদ হেসে বলল– দেখো!
বলে দেওয়ালে অনিশা আলো ফেলে দেখালো কায়নাত রুমে বিছানায় বসে কাঁদছে। ইবাদতের খুব খারাপ লাগল কায়নাত কে দেখে। বিয়ে হলো মাত্র একদিন হলো, আর এক্ষুনি কত দুঃখ যন্ত্রনা সইতে হচ্ছে। বেচারির হাতের মেহেদীর রংও এখনো যায়নি!আর ওর উপরএত বড় ঝড় নেমে এলো!
— এখন দেখবে আসল খেল! যদি আমার কথায় রাজি হও তাহলে আমি ওকে মাফ করে দিবো।
–কিসে রাজি হবো?
— এই ধরো আমাকে ভালোবাসবে, তারপর আমাকে বিয়ে করবে, সংসার করবে! আমাদের অনেকগুলো বাচ্চা হবে। এগুলো আরকি। তাহলে আমি তোমাকে ভুলে যাওয়ার পানীয় খাওয়াবো না আর কায়নাত কেও কিছু করবো না।মাফ করে দিবো। ওকে তোমার স্ত্রী হিসেবেই রাখবো তবে দাসী বানিয়ে। আমাদের গোলাম বানিয়ে রাখবো। এখানে তোমার চোখের সামনেও থাকলো আবার ক্ষতিও হলো না! কি, বলো রাজি?
–কখনোই না।
— বোকা জ্বীন! এতে কিন্তু তোমারই লাভ আছে! আমাকেও পেলে আবার উপর থেকে কায়নাত জানেও বেঁচে গেল। মাথায় ওর কলঙ্কের দাগও লাগলো না। আর তুমি কিন্তু এখান থেকে কোন ভাবেই ছুটতে পারবে না। যদি মনে করো অলৌকিক কোনো শক্তি তোমাকে বাঁচাবে তাহলে তোমার ভুল ধারনা।আমি তোমাকে এইভাবেও পাবো ঐভাবেও পাবো, এখন ডিসিশন তোমার! জল কি পরিষ্কার করে খাবে না ঘোলা করে?
–দেখো অনিশা ছোটবেলা থেকেই আমি তোমাকে ভালো বন্ধু হিসেবে ভালোবেসেছি। কখনো ঐ নজরে দেখিই নি। আমার বন্ধু সুলভ আচরণে যদি তুমি মনে করো সেটা ভালোবাসা তাহলে আমি সত্যিই দুঃখিত।
— এখন এসব কথায় চিড়া ভিজবে না, জান। তোমাকে অনেকভাবে বোঝানোর চেষ্টা করলাম কিন্তু তুমি, তোমার লাইনেই আছো। ভালো! আমিও এখন তোমাকে পাওয়ার জন্য কাজ শুরু করে দিবো। এতে তোমার ক্ষতির পরিমান বেশী হবে।
অনিশা যায়েদকে হাত দিয়ে ইশারা করে যেতে বলল। আলোর সেই স্ক্রিনে দেখা যাচ্ছে যায়েদ ইবাদতের রুপ ধরে কায়নাতের সামনে হাজির হলো। কায়নাত তখনও বিছানায় বসে বসে কাঁদছে।
————————————————————————
দরজায় কড়া নড়ার শব্দে কায়নাত দৌড়ে দরজা খুলে দেখে সামনে ইবাদত! ইবাদত কে জড়িয়ে ধরে বলছে
–কোথায় চলে গিয়েছিলে? আমাকে এভাবে একা রেখে তুমি কোথায় গিয়েছিলে?
— এইতো একটু কাজ ছিল।
–কাজ ছিল মানে? বাড়ির কেও জানে না তুমি কোথায় আর সেজন্য আমাকে কত কথা শুনতে হলো!
— কি হয়েছে! আমার জন্য না হয় একটু কথা শুনলে।সমস্যা কোথায়?
বলে আমার পিঠে বাজে ভাবে স্পর্শ করছে। ওর স্পর্শে কেমন যেনো আমি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছি না। কেনো যেনো ওকে খুব বিরক্ত লাগছে। তারপর বললাম
— তুমি গোসল টা সেরে আসো তোমার শরীর থেকে বোটকা একটা গন্ধ আসছে।
–তুমি আমাকে গোসল করিয়ে দিবে? চলো না!
বলে আমার শাড়ির আঁচল ধরে টেনে অর্ধেক খুলতে যাচ্ছিল আর আমি ওকে বললাম
— তুমি বাড়িতে এসেছো বাবা মা কি জানে?
–কি দরকার ওদের জানার!
— সবাই অনেক চিন্তা করছিল, আমি তাদের বলে আসি যে তুমি ফিরে এসেছো, ততক্ষনে তুমি ফ্রেশ হয়ে নাও।এটা বলে যাচ্ছিলাম আর ও পেছন থেকে আমার চুলের মুঠি ধরে বলল
–হারামজাদী, আমি একদিন পর আসলাম আর আমাকে একা রেখে ওদিকে তুই কার কাছে যাচ্ছিস? মেরে তোকে তক্তা বানাবো।
বলে আমাকে বিছানায় ছুড়ে ফেলল। তারপর ও বায়ুর কুন্ডলীতে পরিনত হয়ে আমার শরীরের উপর পড়ল। ইবাদতের এই রুপ আমি আজই প্রথম দেখলাম।এখন পর্যন্ত যতবার ওর সাথে দেখা হয়েছে কখনো গালি দেয়নি। ওর কি শরীর খারাপ করছে তাই এমন করছে না অন্য কিছু! আমাকে আজ গালি দিল আর ওকে দেখে আগে মনেও হয়না যে ও গালি দেয়। তাহলে কি হলো ওর? এক টানে আমার শাড়ি টেনে খুলে ফেলল। তারপর লোলুপ দৃষ্টিতে আমার শরীরের দিকে তাকিয়ে রইল। ও তো এমন না! যেই আমার উপর পরতে যাবে আর তখন কি যেনো হলো আর থেমে গেল। উপরে তাকিয়ে চোখ কিটমিট করতে লাগল। তারপর আবার আমার উপর পরতে যাবে আর দেখলাম ও পিছনে ছিটকে পড়ে গেল। ও উঠে সোজা রুম থেকে বের হয়ে গেল। আমি বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম। কি হলো কিছুই বুঝলাম না। শাড়িটা শরীরে কোনো রকম পেচিয়ে রুম থেকে বের হলাম ওকে দেখতে। কিন্তু পেলাম না।খুবই অবাক হলাম। ইবাদতের এই চেহারা আমি আগে কখনো দেখিনি। ও ঝড়ের বেগে এসে আমার সাথে এগুলো কি করে গেলো?
————————————————————————
যায়েদ যখন ইবাদতের বেশে কায়নাতের কাছে গিয়েছিল তখন অনিশা আর ইবাদতের কথোপকথন।যায়েদের কার্যকলাপ দেখে ইবাদত বলল
— অনিশা! যায়েদকে থামতে বলো, প্লিজ! আমার কায়নাতের এভাবে সর্বনাশ করো না।
— তাহলে তুমি কি আমার কথায় রাজি?
ইবাদত চুপ করে রইল।
— চুপ করে থেকো না। যদি রাজি থাকো তাহলে এখনই যায়েদকে সরে যেতে বলবো। নতুবা তোমারই সামনে, তোমারই কারনে তোমার স্ত্রীর ধর্ষণ হবে আজ । বলে চিৎকার করে হাসতে থাকলো।
ইবাদত নিজেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার খুব চেষ্টা করছিল কিন্তু কিছুতেই যেনো পারছে না। ওদিকে যায়েদ কায়নাতের কি না ক্ষতি করে! আর কোনো চিন্তা না করেই ইবাদত অনিশা কে বলল
–আমি তোমার কথায় রাজি। যায়েদকে সরে যেতো বলো, এখনই।
— এইতো, আমার লক্ষী জ্বীন। ওকে এখনই সরে যেতে বলছি।
অনিশা সেখানে দাড়িয়েই যায়েদকে বলছে
–থামো! কিছু করতে হবে না। কাজ হয়ে গিয়েছে, চলে এসো।
যায়েদ কিছুক্ষন উপরের তাকিয়ে আবার যেই কায়নাত কে স্পর্শ করতে গেলো, আর তখনই অনিশা ওকে পিছনে ছুড়ে ফেলল। তারপর বলল
–বদজ্বীন! তোকে আমি ফিরে আসতে বলেছি, ফিরে আয় এক্ষুনি! এটা আমার হুকুম।
তারপর অনিশা হেঁটে গিয়ে ইবাদতের হাতের আগুনের বাঁধন খুলে ওর কপালে একটা চুমু খেলো।তারপর বলল
— এখন থেকে তুমি আমার সাথেই থাকবে, যেভাবে আমি বলবো সেইভাবেই থাকবে। কায়নাতের সাথে দাসীর মত ব্যবহার করবে। যদি কোনো চক্রান্ত করো বা কাওকে কোনো কিছু বলার চেষ্টা করো তাহলে এক ঝটকায় কায়নাত কে মেরে ফেলবো। তখন তুমি এমনেই আমার হবে চিরদিনের জন্য। তোমার উপর আমার নজর থাকবে, সুতরাং চালাকি করার চেষ্টা করবে না।মনে থাকবে?
ইবাদত অনিচ্ছা স্বত্ত্বেও অনিশার কথা মেনে নিল। কায়নাতের জন্য ও সবকিছুই করতে রাজি। মেয়েটাকে বড্ড ভালোবাসে সে। অনিশা ইবাদতের হাত ধরে তুড়ি বাজিয়ে বাড়ির প্রবেশদ্বারে পৌঁছে গেল।অনিশা আজ খুব খুশি। ছলনা করেই হোক আর জোর করেই হোক ওর ভালোবাসার মানুষটাকে তো পেয়েছে হাতের মুঠোয়! ওরা দাদাজানের কাছে গিয়ে দাড়ালো
–দাদাজান, এই যে আমি ইবাদত কে পেয়েছি। গহীন জঙ্গলে নিরালায় বসে ছিল। কারন জানতে চাইলে বলল ও আমাকে ভালোবাসে। শুধুমাত্র কায়নাতের বাবার ঋন শোধ করার জন্য ওকে বিয়ে করেছে। কিন্তু এখন বিয়ে করে পস্তাচ্ছে। কিছুতেই প্রাসাদে আসবে না। কারন কায়নাতের সাথে এক ছাদের নিচে নাকি ওর পক্ষে থাকা সম্ভব নয়। ওকে অনেক বুঝিয়ে সাজিয়ে জোর করে ধরে আনলাম।
— ভালো করেছো। এই হইলো আসল জ্বীনের রক্ত!আমরা জ্বীন জাতি মানুষকে কখনো ভালোবাসতে পারি না। ওরা আমাদের অযোগ্য। আয় ইবাদত আমার বুকে আয়! বলে দাদাজান জড়িয়ে ধরলো।
কায়নাত দৌড়ে এলো। ইবাদত ওকে একবার দেখে অনিশার পাশেই মাথা নিচু করে দাড়িয়ে রইল। অনিশা কায়নাতকে দেখে ইবাদতের হাত ধরলো। তারপর বলল
–দাদাজান আমরা খুব শীঘ্রই বিয়ে করতে চাই, সম্ভব কি?
কায়নাত ওদের কথা কিছুই বুঝতে পারছে না। দাদাজান বলল
— ইবাদত? আবার কি বিয়ের পিঁড়িতে বসবে নাকি ভাই?
ইবাদত কায়নাতের চোখের দিকে তাকিয়ে আবার মাথা নিচু করে চুপ করে দাড়িয়ে রইল। পাশ থেকে অনিশা বলছে
–ওকে জিজ্ঞেস করার কি আছে। সারাজীবন কি ও একটা মানুষের সাথে ঘর করবে নাকি? দাদাজান আপনি বিয়ের আয়োজন শুরু করে দিন। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমরা কবুল বলতে চাই।কি ইবাদত? তুমি কিছু বলো?
আমি দৌড়ে এসে ইবাদত কে ধরে বললাম
— এইসব কি শুনছি? আমি কি এমন ভুল করলাম যার শাস্তি তুমি আমাকে দিচ্ছ? আমাদের বিয়ে হয়েছে মাত্র দুইদিনই তো হলো আর এখনই এত পরিবর্তন??
— আই মেয়ে তুই ওর গায়ে হাত দিয়েছিস কেনো? খবরদার ওর গায়ে হাত দিবি না। আর আমাদের কথার মাঝেও আসবি না। তুই শুধু এখানে মা ত্রএকজন দাসী।শুধুই দাসী। রাজরানীর স্বপ্ন দেখা ছেড়ে দে।যা, তোর কাপড়ের বোঝা নিয়ে সোজা দাসী কলোনীতে চলে যা। যা!
আমি অবাক হয়ে দেখছিলাম। ইবাদত কোন কিছুই বলছে না। পুতুলের মত নিশ্চুপ দাড়িয়েই রইল। মানে ওর কোনো কিছুই বলার নেই, কোনো কিছুই করার নেই।কোনো সমস্যাই নেই!
ইবাদতের মা বলল
— এইসব কি ইবু, তুই না কায়নাতকে অনেক ভালোবাসিস? তাহলে একদিন যেতে না যেতেই কি এমন হলো?কথা বল?কথা বলিস না কেনো?
–মা, অনিশা যা বলছে তাই হবে। আমি সবকিছুতেই রাজি।আমাকে আর বিরক্ত করো না।
বলে ও সোজা হেঁটে বাড়ির বাহিরে চলে গেল।ইবাদতের পথে অবাক হয়ে চেয়ে রইল কায়নাত।।
(চলবে)