#নাম: এলাকার বড় আপু_2
#পার্ট: ৮
#লেখক: Osman
👉আমি পরদিন অফিসে যাই। গতকাল থেকে আজকে আমার মন বেশি খারাপ। অফিস শেষ করে চলে আসবো । একজন এসে বলে গেলো ম্যাডাম ডাকছে। আমি ম্যাডামের অফিসে গিয়ে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইলাম বলল।
ম্যাডাম: বসেন।
আমি আস্তে আস্তে বসলাম।
ম্যাডাম: এখন আপনি আমার সামনে হাসি দিবেন।
আমি: পারবো না।
ম্যাডাম: দেন বলছি! দেন বলছি! নাহলে আপনার চাকরি নট।
আমি হাসি দেওয়ার চেষ্টা করলাম। কিন্তু হাসির বদলে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না শুরু করলাম।
ম্যাডাম: এটা কি হলো? আমি বললাম হাসতে আর আপনি কিনা কাঁদছেন। প্লিজ কাঁদবেন না। প্লিজ
এই নেন টিস্যু।
👉টিস্যু নিয়ে আমি চোখ মুছলাম। ম্যাডাম বলল
ম্যাডাম: একজেক্টলি আপনি আপনার সমস্যা আমাকে খুলে বলবেন?
আমি: হুম।
ম্যাডাম: আপনার ওয়াইফ কি মারা গেছে?
আমি: না। তবে বেঁচে থেকেও আমার সাথে নেই।
ম্যাডাম: আমি বুঝছি। যান আপনাকে কিছুদিন ছুটি দিলাম বউকে নিয়ে কোথা হতে ঘুরে আসুন।
আমি: হুম।
👉আমি চলে আসলাম। কিন্তু পরের দিন আমি অফিসে যাই । ম্যাডাম অবাক হয়ে যায় । কিন্তু কিছু বললো না। আমি হিসেব করলাম নিলার নির্বাচন হতে আর সপ্তাহ সাতদিন আছে। কিছু ভালো লাগছে না । কেনো জানি মন চাচ্ছে নিলাকে আরেকটা নজর দেখতে । ধুর আমার বেহায়া মনে । আমি আর নিলার কথা মনে আনবো না। ভাবলাম আরেকটা বার দেখেই আসি । এটাই শেষ । পরদিন রেডি হয়ে রাতে বের হলাম। কিছুক্ষণ জার্নি করার পর এলাকায় পা রাখলাম। আমার উদ্দেশ্য বাসায় নিচে দাঁড়িয়ে তার হাঁসি মুখটা দেখে চলে আসবো। বাসার কাছে চলে আসলাম এমন সময় একটা নারী চিৎকার আসছে। আমি আস্তে আস্তে হেঁটে আরো কাছে গেলাম। চিৎকার চেনা চেনা লাগছে। কাছে
গিয়ে দেখি নিলা। আমার সাড়া শরীরে একটা হীম শীতল স্রোত বয়ে গেলো। দেখি চারজন ছেলে নিলাকে ঘিরে ধরেছে। একজন বলছে
ছেলে: তুই নির্বাচন করবি ? শালিকে ধর তার নির্বাচনের স্বাধ মিটিয়ে দেই।
👉ভাবলাম তারা বিপক্ষে দলের কেউ।একজন ছেলে নিলার দিকে আগাচ্ছে। আমি বুঝতে পারছি না নিলাকে তারা কি করবে ? দেখি ওড়না টান দিয়ে শরীয়ে দিতে চাইলো। আমার মাথায় রক্ত উঠে গেলো। ভাগ্যবসত আমার পাশে একটা বেলছা ছিলো । আমি মুখ ভালো ঢেকে যাতে নিল না বুঝতে পারে বেলছা নিয়ে আগালাম । যেহেতু চারদিকে অন্ধকার । তাই একদিক থেকে উদয় হয়ে যে নিলার ওড়না দিয়ে টান দিলো তার পিঠে গিয়ে আঘাত করলাম । সালা জোরে এক চিৎকার দিয়ে নিচে শুয়ে পড়লো। আমি আবার অন্ধকারে চলে গেলাম । আমি তাদের দেখছি কিন্তু তারা আমাকে দেখছে না। তারা সতর্ক হয়ে গেলো। আমি যায়গা পরিবর্তন করে আরেকটার পিছনে গিয়ে তার পায়ে আঘাত করলাম। সেও চিৎকার করে শুয়ে পড়লো। আমি আবার অন্ধকারে চলে গেলাম। আমি আবার যায়গা পরিবর্তন করে আরেকটার পিছনে গিয়ে তার ঘাড়ে আঘাত করলাম। সেও শুয়ে চিৎকার করতে লাগলো ওমা গো…ওমা ওমা গো… আমিার অন্ধকারে চলে গেলাম। যেহেতু শীতের রাত কুয়াশা কিছুই দেখা যায় না আবার রাত। আরেক হালা চিৎকার করে বলছে।
ছেলে: সালা কেরে তুই । সাহস থাকলে সামনে আয়।
👉আমি আস্তে আস্তে পা টিপে তার পিছনে গিয়ে তার পিছনে গিয়ে দাঁড়ালাম। শেষমেষ সে বুঝতে পারে কিন্তু ততক্ষণে আমার হাত রেডি সে ঘুরে আর আমি তার কানের নিচে নরম যায়গায় ঘুষি চালালাম । সে দাঁড়ানো থেকে অজ্ঞান হয়ে ডাইরেক্ট রাস্তায় পড়লো। এক জনকেও মাথায় আঘাত করলাম না যদি মারা যায়। আমি আবার অন্ধকারে চলে গেলাম। বাকি তিন জন। তাকে ওঠিয়ে দৌড়। তারা চলে গেলে আমি নিলার সামনে প্রকাশ হলাম। তার সামনে বেলচা ঢিল দিয়ে রাস্তায় ফেলে । ঘুরিয়ে ওলটো হয়ে হাটা ধরলাম। কিন্তু নিলার চালাক চোখ আমাকে চিনতে পারে । নিলা আমাকে ডাক দিলো মুরাদ…. মুরাদ…..এবার অনেক জোরে…… কিন্তু আমি আমার মতো হাঁটছি। নিলা কাঁদে আর ডেকেই যাচ্ছে… মুরাদ …. মুরাদ…. আমার কথা শুন….. কিন্তু আমি আমার হাঁটা থামালাম না। কারন পিছনে ফিরার টাইম নেই। আস্তে আস্তে নিলার মুরাদ মুরাদ ডাক মিলিয়ে গেলো। আমি আমার গন্তব্যের দিকে রওনা দিলাম।
👉মুরাদ…. মুরাদ ডাক ডেকেই যাচ্ছে নিলা। কিন্ত কে শুনে কার কথা । নিলা বাসায় এসে বিছানায় শুয়ে কাঁদতে লাগলো। কাঁদছে আর বলছে আমি কি দোষ করছিলাম কেনো তুই আমাকে এতো বড় শাস্তি দিচ্ছস। কে জানি দরজায় টোকা দিলো। খুলে দেখে জোৎস্না জোৎস্নাকে দেখে হাউমাউ করে কেঁদে ওঠলো । বলল
নিলা: মুরাদ ছিলো ওটা । মুরাদ আমার কাছে আসছিলো। আমাকে শয়তান গুলোর হাত থেকে রক্ষা করেছে।
জোৎস্না: কোথায় সে কই ? কখন দেখছত? আমাকে বুঝিয়ে বল।
👉নিলা: আমি ডাক্তারের দোকান থেকে আসছিলাম ঔষধ নিয়ে। তখন চারজন ছেলে আমাকে ঘিরে ধরলো আমি জুড়ে জুড়ে চিৎকার করতে লাগলাম ।
তখন কোথা থেকে জানি এক ছেলে তাদের মাইর দিলো। ছেলের মাইর সামলাতে না পেরে তারা চলে যায়। আমি ভালো করে খেয়াল করে দেখি ওটা মুরাদ । আমি কত বার যে ডাকলাম মুরাদ মুরাদ বলে । কিন্তু সে আসলো সে আসলো । সে আসলো না।
আবার কাঁদা শুরু করলো নিলা । জোৎস্না নিলা কে সান্তনা দিতে লাগলো।
জোৎস্না: দেখছত মুরাদ সারাক্ষণ তর ওপর চোখ রাখছে । তুই ভালো করে চল।
নিলা: আমি যে কাঁদছি কষ্টে সেকি শুনতে পাচ্ছেনা।
জোৎস্না: হয়তো। আর কাদিস না। ঘুমা দেখবি সব ঠিক হয়ে যাবে।
👉 নিলা শুয়ে পড়লো । শুয়ে ভাবতে লাগলো নিলা। মুরাদ আমার আশেপাশেই আছে । আমি যদি মুরাদের কথা মতো চলি হয়তো মুরাদ আবার আমার কাছে ফিরে আসবে। আমি সেটাই করবো । নিলা বুঝতে পারছে ঘরের মধ্যে ছেলে মানুষের কি দরকার । এখন নিলা বুঝতে পারে এসব নির্বাচন হলো ছেলে মানুষের জন্য । মেয়েদের জন্য হলো ঘর। যখন মেয়ে ছেলের যায়গায় যায় তখনই শুরু হয় ঝামেলা। আর আমি মুরাদ কে ছাড়া কিছু কল্পনা করতে পারি না। মুরাদ আমার সব। এসব চিন্তা করতে করতে নিলা ঘুমিয়ে যায়। পরদিন ওঠে । এভাবে ৫ দিন চলে যায়। নির্বাচনের আর দুদিন আছে। কিন্তু মুরাদ আর আসে না। শেষমেষ নিলা নির্বাচন থেকে অব্যাহতি নেয়। কারন তার দরকার মুরাদ কে আর নির্বাচন না করলে মুরাদ আসবে। মুরাদ কে নিয়ে নিলা বাকিটা জীবন পার করে দিতে চায়।
👉আজ পাঁচদিন হয়ে গেলো । আমি ওইদিনের ঘটনা ভুলতে পারছি না। নিলার মুরাদ মুরাদ ডাকটা কেনো জানি এখনো আমার কানে বাজছে। আমার মন বলছিলো যা গিয়ে তর ভালোবাসাকে জড়িয়ে ধর। কিন্তু আমার পা সামনে হেঁটে চলে এসেছে। নিলা কে আমার অনেক মায়া লেগেছে কারণ নিলা আগের থেকে অনেক শুকিয়ে গেছে। কেমন যেনো নিলার মুখে সেই লাবন্যতা নেই। আমি বুঝতে পারছি নিলা অনেক কষ্টে আছে। কিন্তু এতো কষ্টের পরেও কি নিলা নির্বাচন ছেড়ে। আমর কাছ মাফ চাইবে। আমার মা বাবার কাছে মাই চাইবে । কে জানি?
ছয় দিনের মাথায় আমি অফিস শেষ করে চলে আসছি । এক লোক এসে বলল ম্যাডাম ডাকছে। ম্যাডামের নাম তানিয়া। আমি অফিসে গেলে ।
ম্যাডাম বলল।
ম্যাডাম: আপনার নাম কি?
আমি: মুরাদ।
ম্যাডাম: আপনার ওয়াইফ এর নাম কি?
আমি: সেটা না বললে হয় না।
ম্যাডাম: হুম। বাড়ি কোথায়?
আমি: নরসিংদী।
ম্যাডাম: ওকে যান।
👉আমি ম্যাডামের কাজ কারবার কিছুই বুঝলাম না। নির্বাচনের দুইদিন পর গেলাম এলাকায় সিউর হতেনিলা নির্বাচনে পাস করেছে কিনা।
Wait for next……..🥰