#ইচ্ছেপূরন#পর্ব-১
Farhana_Yesmin
অফিসে বসে খুব মন দিয়ে একটা ফাইল চেক করছিলো বিভা। একটা বায়িং হাউজের কমার্শিয়াল ডিপার্টমেন্ট এ চাকরি করে ও। আজ একটা ইমপর্টেন্ট কোটেশন মেইল করতে হবে বায়ারকে। তাই এতো মনোযোগ ওর কাজে। ঠিক এই সময় ওর ফোনটা বেজে উঠলো। একবার ভাবলো ইগনোর করবে। কিন্তু পারলো না, ফোনটা কেটে যেয়ে কিছুক্ষণ পরে আবার বাজতে শুরু করেছে। বিরক্ত হয়ে ফোনটা হাতে নিলো বিভা, একটা আননোন নাম্বার। একটু দ্বিধায় পড়ে গেলো সে। সাধারণত আননোন নাম্বারের ফোন সে রিসিভ করে না। এই দ্বিধার মধ্যে আরো খানিকটা সময় পার হলো। ফোন আবার বাজতে শুরু করলো। এবার ফোনটা রিসিভ করবে বলে ঠিক করলো বিভা। কেউ যখন এতোবার ফোন দিচ্ছে তারমানে ব্যাপারটা নিশ্চয়ই গুরুতর!
“হ্যালো, আসসালামু আলাইকুম। কে বলছেন?”
“হ্যালো, আপনি কি বিভা বলছেন? ”
“জ্বী, বলছি। আপনি কে বলছেন?”
“জ্বী আপনি আমাকে চিনবেন না। আচ্ছা, আতিক ইশরার কি আপনার হাজবেন্ড? ”
এবার বিভা একটু নড়েচড়ে বসে। অপরিচিত লোক ওর হাজবেন্ড কে কিভাবে চিনে? ও ভয় পাওয়া গলায় বলে-
“হ্যা, উনি আমার হাজবেন্ড। কেন কি হয়েছে?”
“আপনি কাইন্ডলি একটু মোহাম্মদপূর সলিমুল্লাহ রোডে আট নম্বর বাসায় চলে আসুন। এখনি আসবেন, দেরি করবেন না।”
লোকটা ওকে আর একটা কথা বলার সুযোগ না দিয়ে ফোনটা কেটে দিলো। বিভার এবার একটু বেশিই ভয় লাগছে। কি হলো হঠাৎ? আতিক তো সকালে অফিসে গেলো? ওর অফিস হচ্ছে মহাখালী, তো ও মোহাম্মদপূর গেলো কি করে? অফিসের কাজে গেছে কি? হাজারো প্রশ্ন মনের মধ্যে কিলবিল করছে৷ বিভা ঘড়ি দেখলো, মোটে বেলা বারোটা। এখন যদি যেয়ে বসকে বলে তবে কি বিশাল একটা ঝাড়ি খেতে হবে সেটা ভাবতেই মনটা তেতো হয়ে গেলো। কিন্তু কি করা, এতো ইমারজেন্সি, যেতে তো হবেই? বিভা ডেস্কের সবকিছু গুছিয়ে নিয়ে উঠলো। একহাতে নিজের ভেনেটিব্যাগ নিলো আর অন্য হাতে ফাইলটা নিয়ে পাশের ডেস্কে বসে থাকা জেরিনের দিকে এগুলো। এই মেয়েটা ভালো আছে। বিপদে পড়লে সব সময় হেল্প করে। বিভা যেয়ে শুকনো মুখে জেরিনের সামনে দাঁড়ালো। ওকে দেখেই জেরিন বললো-
“কি রে, কিছু বলবি?”
“হুম, জেরিন আপু, একটা সমস্যা হয়ে গেছে।”
“কি সমস্যা?”
“আমার মোবাইলে না একটা আননোন নাম্বার থেকে কল এসেছিলো। আমাকে এখনই যেতে বললো মোহাম্মদপূর। আতিকের নাকি কি হয়েছে? এদিকে এই প্রজেক্টের কোটেশন পাঠানোর আজ লাস্ট দিন। কি করি বলোতো?”
“এই ব্যাপার? দে আমাকে ফাইলটা দিয়ে তুই চলে যা। বিপদ আপদ কি বলে কয়ে আসে? এটা আমি সামলে নেবো।”
জেরিন হাত বাড়িয়ে ফাইলটা নেয়। বিভা কৃতজ্ঞতার দৃষ্টিতে তাকায় জেরিনের দিকে।
“থ্যাংক ইউ আপু।”
“থ্যাংক ইউ পরে দিস। আগে যা, দেখ কি হলো আতিকের?”
বিভা খুব সাহস করে ওর বসের কাছে গেলো পারমিশন নিতে। ছুটির কথা বলতেই কিছুক্ষণ ঝাড়লেন ওকে। তারপর ফাইলের খরব নিয়ে যখন শুনলেন যে ওটা জেরিন দেখবে তখন কিছুটা শান্ত হয়ে বিভাকে যাওয়ার অনুমতি দিলো। বিভার যেন ঘাম দিয়ে জ্বর ছারলো। ও দৌড়ে লিফটে উঠে নিচে নেমে হাতের কাছে পাওয়া একটা সিএনজিতে চড়ে বসলো। ফোনটা আসার পর থেকে মনটা কেমন কু ডেকে যাচ্ছে? কি যে বিপদে পড়লো আতিক আল্লাহ জানে। সিএনজি ড্রাইভারকে তাড়া দিলো বিভা। এই গুলশান থেকে মোহাম্মদপূর যেতে যে কতক্ষণ লাগবে তা আল্লাহই জানে! আবার আজকে জ্যামও দেখা যাচ্ছে প্রচন্ড। বিভা অস্থির হয়ে শুধু এদিক ওদিক চোখ বুলাচ্ছে।
আতিকের সাথে বিয়ের প্রায় তিন বছর হতে চলেছে বিভার। ওদের বিয়ের ঘটনাটা আসলে কোনো সুখকর স্মৃতি নয় ওদের কাছে। মনে পড়লে বরং মনটা বাজে ধরনের অনুভুতিতে ছেয়ে যায় বিভার। বিয়ের আগে আতিকের সাথে দু’বছরের প্রেম ছিলো বিভার। কোনো এক বন্ধুর বিয়েতে যেয়ে পরিচয় হয়েছিলো আতিকের সাথে। সেই পরিচয় প্রেম পর্যন্ত গড়াতে বেশি সময় লাগেনি। আতিক তখন ভার্সিটিতে মাস্টার্স করছে আর বিভা অন্য একটি সরকারি কলেজে অনার্স ফাইনাল ইয়ার। কিভাবে কিভাবে যেন দুজন দুজনার প্রেমে পড়ে গেলো। অবশ্য প্রস্তাবটা আতিকের তরফ থেকেই এসেছিলো। তো বিভাও রাজি হয়ে গেছিলো। আতিক অবস্থাপন্ন ঘরের ছেলে। বাবা পুলিশ কর্মকর্তা ছিলো যদিও ওর বাবা মারা গেছিলো বেশ কিছুদিন আগেই, চাপাই নবাবগঞ্জে বাড়ি, জায়গা জমি, আমবাগান। মোটকথা কোনো কিছুর কমতি নেই।
অপরদিকে বিভারাও দুটোই বোন। বাবা সরকারি কর্মকর্তা, ছোট ফ্যামিলি। খুব বড়লোক না হলেও বেশ সচ্ছলই বলা যায়। গ্রামে জমিজমাও বেশ ভালোই আছে। বিভার বোনের বিয়ে হয়েছে ঢাকায়। দুলাভাই একটা বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত। সেই সুত্র ধরে বিভা ঢাকায় পরতে আসলো। চান্সও হয়ে গেলো একটা সরকারি কলেজে, অর্থনীতিতে অনার্স মাস্টার্স শেষ করতেই এই বায়িং হাউজে চাকরি হয়ে গেলো ওর।
তো, বিভার অনার্স ফাইনাল পরীক্ষা দেওয়ার পর একদিন আতিক ডেকেছিলো ওকে। কি বিশেষ জরুরি কথা নাকি আছে। সেদিন বেশ সেজেগুজেই গেছিলো বিভা আতিকের সাথে দেখা করতে। ধানমন্ডি লেকের ধার দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে আড়চোখে বিভাকে দেখছিলো আতিক। বিভাও বেশ বুঝতে পারছিলো আতিকের চোরা চাহুনি। একসময় দুজন একটা বেদির উপর বসলো। বসার পর মিনিট পাঁচেক আতিক চুপচাপ বসে ছিলো। হঠাৎ ই বলে বসলো, আমি তোমাকে পচ্ছন্দ করি বিভা। প্রথমদিন দেখেই ভালো লেগেছে। সম্পর্কটা এগিয়ে নিতে চাইলে তোমার কি মত আছে?
বিভা কিছুক্ষণ আতিকের চোখের দিকে তাকিয়ে থেকে চোখ ফিরিয়ে নিয়েছিলো। তারপর বলেছিলো, যদি মাঝপথে হাত ছেওয়ার ইচ্ছে থাকে তবে এখনই বলুন। পড়ে আবার আমার আফসোস করতে না হয়।
আতিক মিষ্টি হেসে বিভার হাতটা নিজের মুঠোয় তুলে নিয়ে বলেছিলো-
“এই যে শক্ত করে ধরলাম তোমার হাতখানা। আর ছাড়ছি না।”
সেই থেকে চলছিলো ওদের প্রেম। বিয়ের আগের দুবছরে শুধু এতটুকুই বুঝেছিলো বিভা, আতিকের রাগ ভয়ংকর রকমের। রেগে গেলে কোনো হুশ থাকে না। আর প্রচন্ড রকমের একগুঁয়ে স্বভাব। নিজে যেটা বলবে সেটাই ঠিক, সেটাই মানতে হবে। বিভা নরম সরম মেয়ে, ওর কাছে এটাকে তেমন বড় কিছু মনে হয়নি।
ওদের সম্পর্কের দু’বছরের মাথায় আতিক একবার বিভাকে ওর মেস বাড়িতে ডাকলো। এমনিতে আতিক বেশ ভদ্রই ছিলো আচরণের দিক দিয়ে। মাঝে মাঝে একটু আধটু চুমু টুমু ছাড়া সেরকম বায়না ছিলো না ওর। তো যাইহোক, আতিকের ডাককে উপেক্ষা করার মতো সাহস কিংবা ইচ্ছা কোনোটাই ছিলো না বিভার। আতিকরা তিনজন মিলে একটা ফ্লাট ভাড়া করে থাকতো সেসময়। বিভার মনে যথেষ্ট দ্বিধা থাকা স্বত্বেও সে গিয়েছিল আতিকের ফ্লাটে। এরপরে যেটা ঘটেছিলো তা অতি লজ্জা জনক। ওর যাওয়ার ঘটনা কিভাবে যেন বাড়িওয়ালা টের পেয়ে যায়। মেস বাড়িতে মেয়েমানুষ আশাটা একধরনের অপরাধ বটে! বাড়িওয়ালা দ্রুত লোকজন নিয়ে আতিকের ফ্লাটে চলে আসে। বিভা তখন কেবলই আতিকের ঘরে এসে বসেছে। তারপরের ঘটনা এতো দ্রুত ঘটেছিলো যে ওরা দুজনাই বাকরুদ্ধ হয়ে গেছিলো। দুজনারই লোকাল গার্জেনকে খবর দেয়া হলো। লোকাল গার্জেন আসার পরেই বাড়িওয়ালা নিজ উদ্যোগে কাজী ডেকে এনে ওদের বিয়ে পড়িয়ে দিলেন। ঘটনার আকস্মিকতায় ওরা এতোটাই হতবাক হয়েছিলো যে রোবটের মতো যে যা করতে বলেছিলো তারা করে চলেছিলো দু’জনেই। বিভার বাবা এসব ঘটনা শুনেই ফোনেই মেয়েকে ত্যাজ্য করলেন। আতিকের মা অবশ্য কিছুই বললেন না। তিনি খুশি হলেন না দুঃখিত হলেন তা বোঝা গেলো না। তবে বিয়ের প্রায় বছর দেড়েক দুজনার কারো পরিবারের সাথেই সম্পর্ক ছিলো না। ঢাকায় আতিকের তিনবোন থাকতো। বিভারও বোন, চাচা, মামা থাকতো। কিন্তু কেউই ওদের সাথে যোগাযোগ রাখতো না। এতো আত্বীয় স্বজন থাকা সত্বেও ওরা ভীষণ একাকী ছিলো এই শহরে। বছর দেড়েক পরে আতিকের মা অসুস্থ হলো, তখন আতিক ওকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি গেলো। সাতদিন ছিলো ওরা। ঔ সময়টা বিভা মনপ্রান উজার করে দিয়ে সেবা করেছিলো শাশুড়ী মায়ের, শুধুমাত্র মন পাওয়ার জন্য। ওনার মন নরম হয়েছিলো কিনা জানেনা বিভা। তবে এরপরে বাড়ি যাওয়ার অনুমতি পেয়েছিলো ওরা। বিভার অবশ্য শশুর বাড়ি যাওয়া মানে অগনিত খাটুনি করা, বউ হিসেবে এর বেশি অধিকার সে পায়নি।
ওদের বাসর হয়েছিলো আতিকের সেই মেছ বাড়িতে। সে এক ভয়ংকর রাত কেটেছিলো বিভার। আতিক সেই দিন ওকে মেরেছিলো ভীষণ। যেন এভাবে বিয়ে হওয়াটা কেবল বিভারই দোষ। বিভা শুধু অবাক হয়ে নতুন আতিককে দেখছিলো। এতোদিনের চেনা আতিককে একদম অচেনা লাগছিলো বিভার কাছে। এ কোন আতিক? দু বছর যাকে ভালোবাসলো সে কোথায়? প্রচন্ড মার দিয়ে তারপর ওর উপর ঝাপিয়ে পরেছিলো পশুর মতো। সারারাতের নির্যাতনে অজ্ঞান বিভার জ্ঞান ফিরেছিলো পরদিন দুপুরে। সারা শরীরে অসম্ভব ব্যাথা ওর সমস্ত অনুভূতি কে অসার করে দিচ্ছিলো। কেঁদে বুক ভাসানো ছাড়া আর কিছু করার ছিলো না বিভার। বাবা মা সম্পর্ক ছিন্ন করেছে,বোনও খোঁজ নেবে না তবে আর কে রইলো এ জগতে?
পরের দিন ঐ অসুস্থ শরীরেই বাসা ছেড়েছিলো ওরা। এতো বদনাম নিয়ে কি কোথাও থাকা যায়? সবাই ওদের দেখে হাসতো। এরপরে আদাবরের দিকে একরুম সাবলেট নিয়েছিলো ওরা। আতিক আগে থেকেই টিউশনি করাতো দু’চারটা, আর বাড়ি থেকে টাকা পাঠাতো ওর মা এই দিয়ে চলছিলো। আতিকেরও মাস্টার্স শেষ হতেই ও চাকরির জন্য চেষ্টা করতে লাগলো। বিভারও অনার্স শেষ, মাস্টার্সে ভর্তি হলো। ও নিজের পড়ালেখার খরচ যোগানোর জন্য দুচারটা টিউশনি খুজে নিলো। সরকারি কলেজ তাই অতো খরচ নেই। বিভা বেশ ভালোভাবেই নিজের খরচে পড়ালেখাটা শেষ করে ফেললো। মজার ব্যাপার হলো আতিক একবারও তাকে মানা করলো না টিউশনি করতে। এমনকি নিজে থেকে একবারও ওর পড়ালেখার খরচ দিতে চায়নি। মনে মনে বিস্ময়ের চুড়ায় পৌঁছে গেছিলো বিভা কিন্তু মুখে কিছুই বলেনি। একটা মানুষ এতো অল্প সময়ে এতো চেঞ্জ হয় কিভাবে? ভাগ্যিস পড়ালেখা শেষ হতেই এই চাকরি টাও পেয়ে গেলো। শুধু শুধু আতিকের কাছে হাত পাততে হলো না বলে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানালো।
আতিকটা কেন জানেনা বিয়ের পর পুরাই চেঞ্জ। বিভাকে মার দেওয়াটা যেন ওর হবি হয়ে গেলো। ছোটখাটো সামান্য ভুলেই ও বিভাকে ধরে মারতে শুরু করে। বিয়ের বছর দুই পরে বিভার বাসা থেকেও বিয়েটা মেনে নিলো। ওর বাবা মা বাড়ি থেকে নানা জিনিসপত্র নিয়ে ওকে দেখতে এলো। বাবার সামনে ও নিজেকে যথেষ্ট সুখী সুখী প্রমানের চেষ্টা করেছিলো। কিন্তু পারেনি। আগের দিনই ওকে মেরে মুখ ফুলিয়ে দিয়েছিলো আতিক। বাবাও কেন কে জানে, দেখে না দেখার ভান করেছিলো।
“আপা, ও আপা! ”
সিএনজি ওয়ালা ডেকেই যাচ্ছে বেশ অনেকক্ষন যাবত। বিভা তার অতীতে এতো বিভোর যে কিছুই কানে যাচ্ছে না ওর। শেষ মেশ সিএনজি ওয়ালা ওর সামনে কিছু একটা দিয়ে বারি দিলো। চমকে বাস্তবে ফিরলো বিভা।
“আপা, অনেকক্ষণ ধইরা ডাকতেছি আপনেকে। শুনতেছেন না। কি হইছে? ”
“না ভাই, কিছু না। আমরা কি চলে আসছি?”
“হ, এই লাইগাইতো ডাকতাছি।”
“আচ্ছা ভাই, কত হয়েছে বিল?”
“দেন, তিনশ টাকা।”
বিভা বিল দিয়ে সিএনজি থেকে নেমে এলো।
সামনে একটা ছয়তলা বাড়ি। নাম্বার মিলিয়ে ঢুকে গেলো বিভা। আননোন লোকটা মেসেজ করেছে, এই বিল্ডিঙের তিনতলায় যেতে বলেছে। সিড়ি দিয়ে উঠতে উঠতে কেমন অদ্ভুত ভয় ভয় লাগছে বিভার। দোতলা থেকেই একটু একটু শোরগোল শোনা যাচ্ছে। বিভার হার্টবিট ফাস্ট হলো। ওর পা যেন আরো ধীর হলো। তিনতলায় উঠতেই একপাশের ফ্লাটের দরজা খোলা দেখতে পেলো আর দেখলো লোকজনের জটলা। বিভা ওরমধ্যেই ফ্লাট নাম্বার জিজ্ঞেস করে সিওর হয়ে নিলো। হ্যা, এটাই সেই ফ্লাট। ওকে দেখেই লোকজন একটু সরে জায়গা করে দিলো। ড্রইং রুমটাতে বেশ কিছু লোক বসে বসে গুন গুন করে নিজেদের মধ্যে কথা বলছিলো। বিভাকে দেখেই গুন গুন থেমে গেলো। সবাই ওর দিকে তাকালো একসাথে। এভাবে সবাইকে একসাথে তাকাতে দেখে বিভা ঘাবড়ে গেলো। ঢোক গিললো কয়েকবার। একজন উঠে এলো বিভার সামনে-
“আপনি বিভা?”
বিভা মাথা নাড়ে।
“আমি ফোন করেছিলাম আপনাকে।”
“আচ্ছা, কি দরকার ভাই? আমার স্বামী কোথায়? কি হয়েছে ওর?”
“আস্তে আস্তে! এত উতলা হচ্ছেন কেন? বলবো বলেই তো ডাকলাম! দেখুন তো ইনিই আপনার স্বামী কিনা?”
লোকটা বিভার পিছন দিকে ইশারা করলো।
বিভা পিছন ফিরে তাকাতেই ওর মুখ হা হয়ে গেলো। চেয়ারে আতিকের হাত পা পিছমোড়া করে বেঁধে রেখেছে। ওর মুখ ঝুলে আছে। বোঝাই যাচ্ছে ওকে মেরেছে ভীষণ ভাবে। মুখ চোখ ফুলে আছে। বিভা বোকার মতো আতিকের মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো।
চলবে—-