#আমি_তোমাকে_ভালোবাসি
#সূচনা_পর্ব
#লেখনীতে_সুরঞ্জীতা_সুর
১.
বারসাত চন্দ্রাকে বললো, চন্দ্র চলো আজকে বিয়ে করে ফেলি।
চন্দ্রা হাসতে হাসতে বললো, চলো।
কারন সে জানতো বারসাতের যেকোন কাজ ওই বলা পর্যন্তই আগ্রহ। যখনই অপরজন আগ্রহ দেখায় কাজটা করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। সেই হিসেবে সেও আগ্রহ দেখিয়েছ। বারসাত রিকশা ডাকলো। তার রিকশায় উঠে বসলো। বারসাত হাত নেড়ে নেড়ে গল্প করছে।
চন্দ্রাকে বললো, বুঝলে চন্দ্রা বিয়ের আইডিয়াটা আমার কালকে মাথায় এলো। তুমি ফোন রাখার ঠিক চার মিনিট পর। আমি তোমার সাথে কথা বলে বাথরুম সেড়ে বিছানায় এলাম ঘুমাতে সেই সময়। হঠাৎ করে মনে হলো কেমন হয় যদি কালকে বিয়েটা করে ফেলি৷ বিয়ের পর তোমাকে গাড়িতে তুলে দিলাম তুমি বাসায় চলে যাবে। আর আমি তোমাকে বাসে তুলে দিয়ে এসে পার্কে বসে বিরহের গান করবো।
আমি তোমার বিরহে রহিব বিলিন
ভালো হবে না?
চন্দ্রা বললো, খুবই ভালো হবে। আচ্ছা আমরা এখন কোথায় যাচ্ছি? তুমি ভুলে যাচ্ছো আমার বাস কিন্তু ঘন্টা তিনেকের মধ্যে।
হ্যাঁ সে আমার মনে আছে। আমরা এখন যাচ্ছি কাজী অফিস। বিয়েটা সেখানে হবে।
চন্দ্রার কিছু বললো না। সে জানে কাজি অফিসের সামনে গিয়ে বারসাতের মনে হবে বিয়েটা কয়দিন পরে করলে ভালো হয়। কারণ এর আগে দুইবার তারা কাজী অফিসে গিয়েছে। একবার তো ঠিক সাইন করার আগমুহূর্তে সে বিয়ে বাতিল করে দিল। চন্দ্রা জানে আজকেও ঠিক একই কাজ করবে বারসাত। দানে দানে তিন দান। হয়তো বলবে চন্দ্র চলো ঈদের পর বিয়েটা করি এখন তো রোজা বন্ধুদের ট্রিট দিতে পারবো না। চন্দ্রা আপনমনে হাসলো।
চন্দ্র শুনো?
কী বলো? শুনছি তো।
ভবিষ্যৎতে নাতি নাতনিদের বলার জন্য তো কিছু গল্প রেডি করা দরকার। তাই না? ধরো ওরা আমাদের বিয়ে কীভাবে হয়েছে সেই গল্পটা শুনতে চাইলো তখন আজকের ঘটনাটা বলবো৷
বারসাত তুমি কী শুধু নাতি-নাতনীদের গল্প শোনাবে তাই এভাবে বিয়েটা করছো?
হ্যাঁ।
ওহ আচ্ছা।
শুনো না তাদের কী বলবো?
বলো শুনছি।
তাদের বলবো বুঝলি তোদের দাদিজানকে বাড়ি থেকে বিয়ের জন্য খুবই চাপ দিচ্ছিলো। বলেছে এইবার রাজি না হলে ধরে বেঁধে বিয়ে দিয়ে দিবে। তারপর তোদের দাদিজান আমার কাছে এসে সে কী কান্না। তখন আমার চাকরি নেই। পুরোই বেকার। তার উপর আমি গরীব ঘরের ছেলে তোদের দাদিজান ছিলো বিরাট বড়লোক বাড়ির মেয়ে। সেদিন ছিলো ছয় রোজা তোর দাদিজান বাড়িতে যাবে। কিন্তু সে তো যাবে না বলে কী কান্নাকাটি। তারপর আমাকে বললো, এক্ষুনি বিয়ে করতে হবে না হলে আমি চলন্ত বাসের সামনে ঝাঁপিয়ে পড়বো ওয়ান, টু, থ্রি। আমি বললাম ঠিক আছে চলো এখনি বিয়ে করবো৷ চলো কাজি অফিসে। তারপর আমরা কাজি অফিসে বিয়ে করে তোদের দাদিজানকে বাসে তুলে দিলাম।
চন্দ্রা অবাক দৃষ্টিতে বারসাতের দিকে তাকিয়ে রইলো। ছি এতো গুলো মিথ্যে বলবে তুমি?
মিথ্যে কোথায় বললাম? আমি গরীব ঘরের ছেলে আর তুমি বরলোক বাড়ির মেয়ে। আমি বেকার। আজকে বিয়ে করছি সবই তো সত্যি।
এইযে আমাকে বিয়ের জন্য প্রেসার দিচ্ছে, আমি কান্নাকাটি করলাম, আমি এসে তোমাকে বলছি বিয়ে করতে না হলে চলন্ত বাসে ঝাঁপিয়ে পড়বো। ওয়ান, টু, থ্রি। এগুলো তো মিথ্যে।
আরেহ এসব একটু বানিয়ে বলতে হবে না। না হলে তো ওরা ভাববে ওদের দাদাজান,দাদিজানের বিয়ের গল্প টিপিক্যাল গল্পের মতো। তার একটু এসব বাড়িয়ে বলবো।
এটাও কোন অতি অসাধারণ গল্প নয়। শুধুমাত্র ঢাকা শহরে এমন গল্প তুমি প্রতি হাজারে মিনিমাম একশটা পাবে।
বারসাত আরো কিছু বলতো।
কিন্তু তার আগেই কাজি অফিসের সামনে রিকশা থামলো। বারসাত রিকশা ভাড়া মিটিয়ে বললো, চন্দ্র চলো ভেতরে যাই। সবাই অপেক্ষা করছে।
সবাই অপেক্ষা করছে মানে।
সাক্ষী লাগবে না বিয়ের? সাক্ষী ধরে নিয়ে এসেছি।
একমিনিট বারসাত তুমি কী সত্যিই আজ বিয়ে করবে?
হ্যাঁ। তুমি কী ভেবেছো? আগের দুইবারের মতো এবারও সামনে এসে চলে যাবো।
হ্যাঁ।
না এবার আর তা হবে না। তুমি কী রাজি না?
না সেটা না। তবে একটা প্রিপারেশন তো আছে।
সব প্রিপারেশন আমি করে রেখেছি।
চন্দ্রা থম মেরে দাঁড়িয়ে রইলো। সে এখনও বিশ্বাস করতে পারছে না। বারসাত কী সত্যিই ওকে বিয়ে করবে? আগের বারও তো সাইন করার আগে চলে এসেছে। চন্দ্রা কতো সুন্দর করে শাড়ি পরে সেজে এসেছিল। বিয়ে হবে বলে। হোক লুকিয়ে বিয়ে তারপরও বিয়ে তো।আচ্ছা তাহলে আজকে কী আসলেই তার বিয়ে? আগে বললে তো সে শাড়ি পরে আসতো।
বারসাত হাত ধরে বললো, কী হলো কী ভাবছো?
কিছু না চলো ভেতরে।
চন্দ্রা ভেতরে গিয়ে দেখলো তার দুটো মেয়ে ফ্রেন্ড বর্ষা আর সোহা। বারসাতের দুটো ছেলে ফ্রেন্ড আরিফ আর সোহান।
বারসাত বললো, তোরা সবাই এসে গেছিস দেখছি। ভেতরের কী অবস্থা আমরা কোন সময় যাব?
সোহান বললে, আস্তে তর সইছে না দেখছি। একটু দেরি হবে। আজকে অনেক ভিড় একঘন্টার মতো লাগতে পারে।
তোদের যা বলছিলাম এনেছিস? দে তো।
হ্যাঁ। এই নে।
চন্দ্রা তাকিয়ে দেখলো। দুটো মালা আর একটা প্যাকেটে কী যেন দেখা যাচ্ছে না।
বারসাত চন্দ্রাকে বললো,চন্দ্র এটাতে একটা শাড়ি আছে। পরে চলে আসো। আসার সময় দেখলাম একটা পার্লার আছে। সেখান থেকে পরে আসো। সাজার দরকার নেই। তোমার তো চোখে সমস্যা।
চন্দ্র বাকরুদ্ধ। তার চোখে জল চলে আসছে। কিন্তু সে তা বারসাতকে দেখাতে চায় না। তাই অন্য দিকে তাকালো।
বর্ষা, সোহা তোমরা ওর সাথে যাও। তাড়াহুড়ো করতে হবে না। সময় আছে হাতে।
মিনিট বিশেক পর চন্দ্রা কলাপাতা রংয়ের সুতি শাড়ি পরে এলো। তার সাথেসাথেই তাদের ডাক পড়লো। বিয়েটাও হয়ে গেল। চন্দ্রা একটা ঘোরের মধ্যে আছে। সে বিশ্বাস করতে পারছে না তার বিয়ে হয়ে গেছে। এমন না সে চায়নি তাকে বিয়ে করতে। সে চেয়েছিল গভীর ভাবে চেয়েছিল তাইতো বারসাত তার হলো। আগে বললে হয়তো মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতো শুধু এতোটুকুই। তবে এটাও মন্দ হয়নি। হুট করে বিয়ে। সারাজীবন মনে রাখার মতো ঘটনা।
বিয়ের পর চন্দ্রার কপালে বারসাত চুমু দিয়ে বললো, চন্দ্র আমি তোমাকে ভালোবাসি, অনেক ভালবাসি। হয়তো তোমাকে খুব টাকা পয়সা দিয়ে সুখ দিতে পারবো না বা কিন্তু ভালবাসার কোন কমতি থাকবে না আমাদের সংসারে। জানো কাল রাতে স্বপ্ন দেখলাম তুমি আমার থেকে অনেক দূরে চলে যাচ্ছো তাই রাত তিনটার সময় সবাইকে কল দিয়ে এখানে আসার কথা বললাম।ভয় হচ্ছিল যদি সত্যিই চলে যাও তার উপর আজকে আবার বাসায় যাচ্ছো। তাই এতে তাড়াহুড়ো। তার উপর হাত একদম খালি টাকা পয়সা কিছুই নেই দেখো তোমাকে একটা সুতি শাড়ি দিতে হয়েছে। রাগ করো নিতো?
চন্দ্রা হেসে বললো, হ্যাঁ রাগ করেছি খুব রাগ করেছি।
বারসাতও হেসে ফেললো।
চন্দ্রা বারান্দায় বসে ফুঁপিয়ে কাঁদছে। তার চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করছে দেখো,বারসাত আমি তোমায় ছেড়ে যাইনি তুমি ছেড়ে চলে গেছে। বহু দূরে এতো দূরে যেখান থেকে আমি চাইলেও তোমাকে ফিরিয়ে আনতে পারবো না।
২.
চন্দ্রা আমরা না হয় বিয়ের পর একে অপরকে ভালোবাসবো।
চন্দ্রা তাকিয়ে আছে রাশেদের দিকে। সত্যিই কী তা সম্ভব। বলতে যতটা সোজা করতে ততটাই অসম্ভব। এই লোকটাকে কী বিশ্বাস করা যাবে। যদি বিয়ের পর সে তাকে ভালবাসতে না পারে। তখন কী হবে?
চন্দ্রা কথা বলো।
চন্দ্রা চমকে উঠলো। তারপর বললো, আপনি যতটা সহজ মনে করছেন বিষয়টা ততটাও সহজ না। বিয়ের পর আপনি না হয় মানিয়ে নিলেন। আমি যদি মানিয়ে নিতে না পারি তখন কী হবে?
সত্যি বলতে আমিও মানিয়ে নিতে পারবো কিনা বলতে পারছি না। ভালবাসতে পারবো তাও বলতে পারছি না কিন্তু শুধু এতটুকু জানি ছেড়ে যাবও না। এতোটুকু বিশ্বাস করতে পারো।
চন্দ্রা ছোট্ট একটা নিঃশ্বাস ফেলে বললো, আপনাকে একটা কথা বলা হয়নি। এটা বলার পর আপনার যদি মনে হয় বিয়েটা তারপরও করবেন তাহলে আমার কোন আপত্তি নেই।
সেটা কী?
আমার বারসাতের সাথে বিয়ে হয়েছিল।
চন্দ্রা যদি তাকিয়ে থাকতো তাহলে দেখতে পেত রাশেদ চমকে উঠেছে। মেয়ে দেখতে এসে মেয়ে এমন কোন কথা বলবে সে ভাবতে পারে নি।
বাসায় কেউ জানে?
না।
কবে হয়েছিল?
বারসাত যখন মারা যায় তখন আমাদের বিয়ের একুশ দিন ছিলো।
রাশেদ তাকিয়ে রইলো। কী বলবে বুঝতে পারছে না?
চন্দ্রা বললো, এবার আপনি ঠিক করুন কী করবেন? বিবাহিত বিধবা মেয়ে কী আপনার পরিবার মেনে নিবে একমাত্র ছেলের বউ হিসেবে?
এখন তো বাসায় বলা উচিত। তাই না?
হ্যাঁ এখন বলতে হবে।
চন্দ্রা তুমি এককাজ করো আমি চলে যাবার পর তুমি তোমার পরিবারকে সব খুলে বলো। আমি এখনি কিছু আমার পরিবারকে বলবো না। তুমি বলো তারপর না হয় আংকেল সব বলবে তাদেরকে। তখন সব দেখা যাবে।
আচ্ছা।
রাশেদ বেরিয়ে গেল। রাশেদ সম্পর্কে চন্দ্রার বাবার বন্ধুর ছেলে হয়। পেশায় ডাক্তার। প্রায় সাত আট মাস আগে ওদের বাড়িতে বেড়াতে আসে। তারপর আবার এই আজকে এলো। চন্দ্রার জন্য রাশেদের বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে। তবে মনে হয়না বিয়েটা আর হবে বলে। আর যাই হোক বিবাহিত মেয়েকে নিশ্চয়ই তারা একমাত্র ছেলের বউ হিসেবে মেনে নিবে না।
৩.
চন্দ্রা বসার ঘরে সবাইকে ডেকে ইতস্তত করে বললো, বাবা তোমাদের কিছু কথা বলার ছিলো।
বল।
চন্দ্রা খুবই ভয় পাচ্ছে। কীভাবে কী বলবে বুঝতে পারছে না।
বাবা তোমাদের কিছু আমার বলা হয়নি।
কী কথা? এতো ইতস্তত করার তো কিছু নেই।
বাবা আমি জানি পাগলামি করেছি কিন্তু তখন এটাই ঠিক মনে হয়েছিল।
তুই করেছিস কী?
বাবা আমি বারসাতকে বিয়ে করেছিলাম তোমাদের না জানিয়ে।
ড্রয়িংরুমের সবাই স্তব্ধ। চন্দ্রার মাথা নিচু করে সোফায় বসে আছে। তার দিকে তাকিয়ে আছে চারটি মুখ। চন্দ্রার বাবা মনির হোসেন, চন্দ্রার মা তাহমিনা খাতুন, চন্দ্রার ভাই ইউসুফ হোসেন আর চন্দ্রার ভাবি আয়েশা।
মনির হোসেন রাগী গলায় বললেন, কবে করেছিলে এইসব?
রোজার সময় যেদিন বাড়ি এসেছিলাম সেদিন।
তুমি কাকে জিজ্ঞেস করে এই কাজ করেছিলে?
কাউকে না বাবা। বললাম তো ঝোঁকের বশেই করে ফেলেছি।
কাউকে জানানোর প্রয়োজন মনে কর নি?
বাবা প্লিজ ভুল বোঝো না। আমি সত্যিই এতো কিছু ভেবে করিনি।
এই কথা রাশেদকে বলেছিলে?
হ্যাঁ।
কী বলেছে সে?
বলেছে তোমাদের জানাতে।
রাশেদ নিশ্চিত তার বাবা মাকে এই কথা বলছে।
না বলেনি।
তুমি কীভাবে জানো?
রাশেদ বলেছে আগে আমি বাসায় কথা বলতে। তারপর তুমি ওদের বলবে।
তোমার মনে হয় এই কথা বলার পর উনারা বিয়েটা করাবে এইখানে?
আমি জানি না বাবা। আর আমি তো বিয়ে করতে চাইনি। তোমরা জোর করেছে তাই গিয়েছিলাম ওদের সামনে।
বিয়ে না করার কারণটা যে এইটা সেটা তো তুমি বলোনি। বললে আমি কখনোই কথা এগিয়ে নিতাম না।
বাবা তুমি উনাদের বলে দাও। বাকিটা ওরা বুঝবে। উনারা যদি না করে দেয় তাহলে আমাকে বিয়ের জন্য জোর করবে না। আমি বিয়ে করবো না। আমার বিয়ে হয়ে গেছে। বিয়ে একবারই হয়।
চন্দ্রা ঘরে যাও। এই নিয়ে আর কথা বলতে চাইনা।
চন্দ্রা ঘর থেকে বেরিয়ে তার নিজের ঘরে চলে গেল। চন্দ্রার মা তাহমিনা মনির হোসেনকে বললো, তোমার উচিত ছিল না ওকে দুএকটা কড়া কথা বলার।
এখন আর বলে কী হবে? যা হবার তা তো হয়েই গেছে।
তাই বলে কিছুই বলবে না। এখন রাশেদের মা বাবাকে কী বলবে?
যা ঘটেছে তাই বলবো। লুকিয়ে তো রাখা যাবে না।
তোমার যা ভালো মনে হয় করো। ভালো করেই বুঝতে পারছি বিয়েটা হবে না।
না হলে না হবে। কিছু তো করা যাবে না।
তুমি ভেবো না তুমি কিছু বলোনি তাই আমিও বলবো না।
সে তোমারও মেয়ে তোমার শাসন করার অধিকার আছে। তবে শুধু এইটুকুই বলবো বাড়াবাড়ি করো না।
৪.
চন্দ্রার মা লিনা দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকলেন।
চন্দ্রা মাকে দেখে বললো, কিছু বলবে মা?
হ্যাঁ।
আচ্ছা বলো।
তুই কাজটা কী ঠিক করেছিস?
তুমি কী বিয়ের ব্যাপারটা নিয়ে বলছো?
হ্যাঁ।
মা বললাম তো ঝোঁকের বশেই করে ফেলেছি। ভুল হয়ে গেছে। ভুল কী হয় না মানুষের?
তুই কী বারসাতের সাথে থেকেছিলি?
ছি মা এসব কী বলছো?
ছি ছি বলার কিছু তো হয়নি। না বলে যেহেতু বিয়েটা করেছিস না বলে থাকতেই পারিস।
মা এই চিনলে আমাকে। বিয়ে করলেই কী একসাথে থাকতে হবে? এসব কোন ধরনের কথা?.
তোকে যা বলছি তার উত্তর দে। এতো কথার তো কোন প্রয়োজন দেখছি না।
তোমার কী মনে হয়?
আমার কী মনে হয় তাতে কিছু যায় আসে না। যা বলছি তার উত্তর দে।
মা তুমি বোধহয় খেয়াল করো নি বাবাকে আমি বলেছি রোজায় যেদিন বাসায় আসবো সেদিন বিয়ে করেছি। মানে কাজী অফিস থেকে আমি গাড়িতে উঠেছি।
চন্দ্রার মা লিলা ছোট্ট একটা নিঃশ্বাস ফেললো। তিনি জানতেন মেয়ে এমন কিছু করবে না তার পরও জিজ্ঞেস করে নিলেন। তিনি তার মেয়েকে নিয়ে খুবই চিন্তিত। মেয়েটার জীবন এমন হলো কেন? তিনি ঘর থেকে বের হয়ে গেলেন। চন্দ্রা কাঁদছে বারান্দায় বসে।
তুমি স্বার্থপর বারসাত খুবই স্বার্থপর। আমাকে একা করে রেখে গেলে। যদি সত্যিই চলে যাবে তাহলে এসেছিলে কেন? তুমি কী আমার উপর রাগ করেছে বিশ্বাস কর আমি বিয়েটা আটকানোর অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু পারি নি। তাই শেষ চেষ্টা হিসেবে আমাদের বিয়ের কথাটা বলেছি। আমি শুধু তোমাকেই ভালোবাসি সত্যিই বিশ্বাস কর। তুমি ছাড়া কাউকে আমি এই জীবনে মেনে নিতাম না। কিন্তু আমি এখন বাধ্য করতে। সরি।
চলবে……