🍀অহংকারি_চাচাতো_বোন💔,পর্ব~০২
✍️শাকিল দিহান😎
🍀কর্নেল স্যারের সাথে কথা বলে ফোনটা রাখলাম।তারপর,”ভাইয়া আসবো?”
.
“ওই টুনটুনি ভাইয়ের রুমে আসতে অনুমতি লাগে নাকি?”(তানুর ছোট বোন তাসনু)
.
“না,ভাইয়া আমার জন্য কি নিয়ে আসলে?”
.
“ওমা টুনটুনির জন্য কিছু আনতে ভুলে গেছি,হায় আল্লাহ”
.
“যাহ আমি ভাইয়ার সাথে কথা বলি না”
.
“ওই পুরো সুটকেস তুমি আর জিহাদের জন্য।এবার খুশি?”
.
“হুম অনেক,দাদাভাই তোমাকে বসার ঘরে যেতে বলছে,সবাই তোমার জন্য অপেক্ষা করছে”
.
🍀বসার ঘরে গিয়ে দেখি দাদা,চাচা,চাচি,তানু,জিহাদ সবাই একসাথে বসে আছে।
“দেখ অনেক দিন পর এমন আড্ডা,তুই যাওয়ার পর এরকম আড্ডা আর হয়নি”~(চাচা)
.
“কেন!”
.
“তুই যাওয়ার পর তোর দাদা নিচে একদমই আসতো না,দেখি এখানে আয় সব শুনা তোর পালিয়ে থাকার ঘটনা”~(চাচি)
.
“এগুলো বলার কি আছে?”
.
“বলার কি আছে মানে!কোথায় ছিলি,কার কাছে ছিলি,পড়ালেখা করলি কিনা,অনেক কথা জানার আছে”~(দাদা)
.
“ও,সবকিছু এখন বলতে পারবো না,কিছু বলবো কিছু পরে?”
.
“ওকে যা বলার বল এখন”
.
তারপর আমি বলা শুরু করলাম।
🍀আমি যখন বাসা থেকে বের হয়ে গিয়েছিলাম,তখন তেমন কিছুই বুঝতাম না।বন্ধু বান্ধব গুলোও কিছু জানে না এই ব্যাপারে।
🍀তখন শুনছিলাম সবাই নাকি পালিয়ে ঢাকা চলে যায়।আর বাসের ছাঁদে করে যেতে টাকা লাগে না।ঢাকার বাসে করে ঢাকায় চলে গেলাম।
🍀তারপর শুরু হলো জীবন যুদ্ধ।কিছু জানতাম না,কিছু বুঝতাম না,একজন ভাইকে পেয়েছি তার গ্যারেজে কাজ করে খাবার খেতে পারতাম।ঐ ভাইটার একটা আমার বয়সি ভাই ছিল।ওর কাছ থেকে বই নিয়ে পড়তে দেখায় ভাইটা আমাকে স্কুলে ভর্তি করে দিল।
🍀দিনে পড়ালেখা আর রাতে কাজ করতাম।এভাবে চলছিল জীবন।এস.এস.সি পরিক্ষার পর থেকে কোনোরকম চলে।এটাই আমার ঢাকার জীবন।
.
“কি দরকার ছিল যাওয়ার,এত কষ্ট করতে হতো না,তোকে অনেক খুজেছি.আমরা,কিন্তু পায়নি,আচ্ছা তোরা বস আমি ভালো কিছু নাস্তা রেডি করি,এই তুমি বাজার থেকে কিছু বাজার নিয়ে আসো”~(চাচি বললো চাচাকে)
.
🍀চাচা_চাচি সেখান থেকে চলে গেলো।আর দাদা,আমি,তানু,জিহাদ,তাসনু।
“জিহাদ তাসনু তোরা খেল,তোর ভাইয়া আর আপুর সাথে আমার কথা আছে”~(দাদা)
🍀জিহাদ তাসনু চলে গেলো।আমাকে আর তানুকে দাদা তার পাশে বসালো।
.
“দাদা কিছু বলবে?”~(আমি)
.
“হুম,এখন তোরা বড় হয়ছিস,এখন তোদের দুজনকে বিয়ে দিয়ে এখান থেকে আর কোথাও যেতে দিবনা”~(দাদা)
.
“দুর দাদা ফালতু কথা বলো নাতো,ভালো লাগে না এসব”~(এই বলে তানু সেখান থেকে চলে গেলো)
.
“এসব এখন বলার কি আছে?সময় হলে বলতে আরকি”~(আমি)
.
“মনে হয় তোর ওপর রাগ করে আছে,যা গিয়ে রাগ ভাঙা,তাড়াতারি তোদের বিয়ে দিতে পারলেই হলো”
.
“তোমার শুধু বিয়ে আর বিয়ে”~(এটা বলে তানুর রুমের দিকে পা বাড়ালাম)
🍀দেখি তানু রুমে শুয়ে আছে।আমি গিয়ে তানুর পাশে গিয়ে বসলাম।
“আমার ওপর রাগ করে আছো?আচ্ছা বাবা সরি আর কোথাও যাবো না”
.
(নিশ্চুপ)
.
“বললাম তো সরি,আর কোথাও যাবো,অনেক ভালোবাসবো,প্লিজ ক্ষমা করে দাও”
.
“এসব ফালতু কথা আমার সামনে বলবি না।তুই আমার রুমে আসার আগে অনুমতি নিছিস?আসলে তোরা সব ছেলেরাই এক একটা ফালতু,যা সামনে থেকে”
.
“আচ্ছা বাবা চলে যাচ্ছি,তবুও রাগ করে থেকো না”
.
🍀তানুর রুম থেকে বের তাসনু আর জিহাদকে খুজতে লাগলাম।দেখলাম ওরা ছাঁদে বসে খেলছে।
“ভাইয়া আসছো,দেখ জিহাদের সাথে তোমার কথাই হয়নি”~(তাসনু)
.
“হুম,জিহাদ আমার সাথে কথা বলছিস না কেন?”
.
“তুমিইতো আমাকে ভুলে গেছো,নয়লে এতদিন আমাদের ছেড়ে থাকতে পারতে নাকি?”
.
“ওরে আমার পিচ্ছিরে এত রাগ আমার ওপর,তোর গিফট আনছি,তাসনু দিবে তোকে”
.
“থ্যাংস্ ভাইয়া”
.
🍀আমরা কথা বলতে বলতে রাফি ও আরিফ আসলো।
“কিরে দোস্ত শহরে গিয়ে আমাদেরতো ভুলে গেলি মনে হয়?”
.
“ভুলেই.. তো যাবে,প্রেম করলে কি আমাদের মনে থাকবে?”~(আরিফ)
.
“এই এই একদম ফালতু কথা বলবি না,এত বছর পর আসলাম এবার জড়িয়েও ধরলি না”
.
“আরে তোকে জড়িয়ে ধরলে আমাদের সম্মান কমে যাবে,তার থেকে চল চাচার দোকানে গিয়ে সিগারেটের স্মুথ স্বাদ নেয়”~(রাফি)
.
“সিগারেট ইজ ডেন্জার ফর হেল্থ”~(আমি)
.
“বালের ডায়লগ রাখ,চল তাড়াতারি”~(আরিফ)
.
চাচার দোকানে এসে বসলাম তিনজন।রং চা আর সিগারেটের এক অসাধারন মুহুর্ত।যদিও আর্মিতে এসব নিষেধ।তখনই লিজার ফোন আসলো।
“হ্যালো”~(লিজা)
.
“হুম,কেমন আছো?”~(আমি)
.
“আলহামদুল্লিহ ভালো,তুমি?”
.
“ভালো,তা এই অবেলায় ফোন দিলে কেন?”
.
“কেন দিতে পারি না?”
.
“তা তো অবশ্যয় পারো,এবার বলো কেন?”
.
“দেখি তোমার বাসার ঠিকানা দাও,আমি আসবো তাড়াতারি”
.
“দেখ লিজা এখন নিয়ে আসতে পারবো না,সময় হলে আমিই নিয়ে আসবো,ওকে?”
.
“ওকে,আচ্ছা তাহলে এখন রাখি?”
.
“ওকে বাই”
.
ফোন রেখে চা খাওয়াই মনযোগ দিলাম।রাফি আর আরিফ কেমন দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকাচ্ছে।
.
“দেখসছ রাফি,আমি বললাম না প্রেম করে তাই আমাদের মনে পরেনি”~(আরিফ)
.
“আরে না,এটা শুধু ফ্রেন্ড আসার সময় পরিচয় হয়ছে”~(আমি)
.
“তাইলে ভালো,তানু যদি জানে প্রেম করিস তাহলে মেরে ফেলবে,যে রাগী মেয়েরে বাবা”
.
“দুর তানু অনেক ভালো মেয়ে,আমার ভালোবাসা”
.
“হ্যা তুই নিজেই দেখ”
.
ওদের সাথে ঘুরাঘুরি করে রাত ৯টা বেজে গেলো।বাসায় এসেই চাচি ডাকলো খাবার খেতে,আমি গিয়ে দাদার পাশে বসলাম।তা দেখে জিহাদ চিৎকার দিয়ে বলে উঠলো,
.
“ভাইয়া এই চেয়ারে বসিও না আপু দেখলে অনেক রাগ করবে,এটা আপুর চেয়ার,দাদা ভাইয়ের পাশে আপু বসবে”~(জিহাদ)
.
“বসোক তোর আপু কিছু বলবে না”~(দাদা)
.
দাদার পাশে বসে আছি,কিছুক্ষন পর তানু আসলো,
“এই আমার চেয়ার থেকে উঠ, এটাই আর বসবি না”
.
“থাকনা দাদুভাই”~(দাদা)
‘চলবে’ツ