অন্ধকার_পল্লী,Part:২১,২২ শেষ
Tabassum_Riana
Part:২১
কাজী সাহেবকে মিষ্টি আর টাকা দিয়ে পাঠিয়ে দিয়ে বেরিয়ে এলো ওরা।রাস্তার মাঝে বন্ধুরা ও বিদায় নিয়ে চলে গেলো।অবনীকে নিয়ে রহমত সাহেবের বাসায় পৌছে গেলো আফিন।
বাবা আফিন তুমি?ওকে কোথায় পেলে?কই ছিলো ও?অবনীর দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করছিলো রহমত সাহেব।এতক্ষন চুপ করে রহমত সাহেবের কথা গুলো শুনছিলো আফিন।এতক্ষনে মুখ খুলল ও।আঙ্কেল আমি জানিনা অবনীর মনে কি চলছে?তবে এটা সত্য আমি ওকে খুব খুব ভালোবাসি।এজন্যই ওকে কিডন্যাপ করে বিয়ে করতে হয়েছে আমার।কথা গুলো বলে রহমত সাহেব থেকে চোখ সরিয়ে আফসানার দিকে তাকালো আফিন।আফসানা থ্যাংকস তোমার জন্যই অবনীকে নিজের করে পেলাম।
কয়েকদিন আগে
,,,,,,,,,,,,, হ্যালো আফসানা বলো।সব ঠিক আছে তো?(অপর পাশ থেকে বলে উঠলো আফিন)
,,,,,,,,,,,,,,,ভাইয়া সব ঠিক আছে কিন্তু,,,,,থেমে গেলো আফসানা।
,,,,,,,,,,,,,,,, কিন্তু কি আফসানা?জিজ্ঞেস করলো আফিন।
,,,,,,,,,,,,,,আপনি চলে যাওয়ার পর আপি বের হয়ে বলছিলো বিয়ে এ সপ্তাহের মাঝেই হবে।বলে উঠলো আফসানা।
,,,,,,,,,,,,,,,, কিছুক্ষনের জন্য থমকে গেলো আফিন।বুকটা যেন আগের চেয়ে আর ও বেশি ধুকপুক করছে।আফসানা শুনো টেনসন করোনা।আমি আছি।বিয়ের সাজটা যেন পার্লারে সাজে সেটার দায়িত্ব তোমার।আমি ঠিক করবো কোন পার্লারে সাজবে।পার্লারের ঠিকানা পাঠিয়ে দেবো।
,,,,,,,,,,,,,,,, ওকে ভাইয়া।আল্লাহ হাফেজ।
,,,,,,,,,,,,,,,, আল্লাহ হাফেজ।
,
,
,
,
বড় একটি চকোলেট বক্স আফসানার হাতে তুলে দিলো আফিন।আফসানার দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে আছে অবনী।নিজের বোন হয়ে এতো বড় ধোঁকা!!!!!ভেবেই অবাক হচ্ছিলো অবনী।
,
,
,
,
আপি তোর বিয়ে হয়ে গেছে চলে যাবি। এভাবে আমার দিকে চোখ বড় করে তাকাবিনা।এখন আফিন ভাইয়ার বাসায় জোর খাটাবি।আর আমার সাথে রাগা রাগী করলে আমার জিজু আছে তোকে টাইট বানানোর জন্য।কথা গুলো বলে চকলোট হাতে রুমে চলে গেলো আফসানা।বোনের কথায় মাথা নিচু করে রাগে ফুঁসছিলো অবনী।আফিন এতক্ষন অবনীর কথা শুনে হেসে দিয়েছিলো।হাসি থামিয়ে রহমত সাহেবের দিকে তাকালো আফিন।আঙ্কেল আমাদের মেনে নিয়ে দোয়া দিন।বলে অবনীকে নিয়ে রহমত সাহেব আর আমেনা বেগমের পা স্পর্শ করলো ওরা।রহমত সাহেব আর আমেনা বেগম আফিনকে মেয়ের জামাই হিসেবে পেয়ে ভীষন খুশি।বাবা তোমরা যেয়ে রুমে রেস্ট করো।রান্নার ব্যাবস্থা করছি আমি।বলে আমেনা বেগম পাকঘরের দিকে পা বাঁড়ালেন।আফিন অবনীকে নিয়ে অবনীর রুমে এলো।রুমে এসে খাটে ধপ করে বসে পড়লো অবনী।আফিন অবনীর পাশে বসে অবনীর অল্প কিছু চুল নিয়ে ওর ঠোঁটের ওপর রাখলো মোচের মতো করে।ওয়াও বৌটাকে বেশ লাগছে মোচে।বলেই হেসে উঠলো আফিন।চুল দিয়ে অবনীর কানে নাকে খোঁচাতে লাগলো।এতক্ষন এসব চুপচাপ সহ্য করছিলো অবনী।আর চুপ থাকতে পারলোনা।প্লিজ এসব বন্ধ করুন।ভালো লাগছেনা আমার।কাছে আসবেননা আমার।বিরক্ত লাগে আপনাকে দেখলে।দম বন্ধ হয়ে আসে।চিৎকার করে কথা গুলো বলে খাট ছেড়ে উঠে আলমারির দিকে এগুলো অবনী।
,
,
,
,
আলমারি থেকে স্যালোয়ার কামিজ বের করতেই সেটা অবনীর হাত থেকে ফেলে দিলো আফিন।হোয়াট কি চান আপনি?চিৎকার করে বলল অবনী?কি চান আপনি?অবনীকে ভেংচিয়ে বলল আফিন।অবনী আলমারি থেকে সব কাপড় ফেলে দিলো।
হা হা হা হেসে উঠলো আফিন।
আফিনের দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে একটা জামা নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো।
বাহির থেকে অাফিন জোরে জোরে গান গাইছে
“অভদ্র হয়েছি আমি তোমারই প্রেমে তাই”
কাছে আসোনা, আরো কাছে আসো না, হিসসস কথা বলোনা,কোন কথ,,,,,,,প্লিজ চুপ থাকুন একটু ও ভালো লাগছেনা এসব ফালতু গান শোনতে।চুপ থাকুন প্লিজ চিৎকার করে বলতে লাগলো অবনী ওয়াশরুম থেকে।
আফিন চুপ করে খাটে বসে হাসতে লাগলো।
অবনী ফ্রেশ হয়ে এলে আফিন ফ্রেশ হয়ে নিলো।রাতের খাবার সেড়ে আফিন অবনীকে নিয়ে বাসায় চলে এলো।সারা গাড়িতে নীরবে কাঁদছিলো অবনী।পুরো এক বক্স টিস্যু শেষ আমার পুরো এক বক্স!!!! মজা করেই বলছিলো আফিন।আর সহ্য করতে না পেরে অবনী কাঁদতে কাঁদতে দৌড়ে উপরে চলে গেলো।আফিন মলিন হেসে অবনীর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো।ভালবাসি জলপরী বড্ড ভালোবাসি বলেই হাসলো আফিন।রাতে অবনী দুজনের মাঝে কোলবালিশ টাকে দিয়ে রেখেছিলো যেন আফিন ওর গাঁ ঘেষতে না পারে।আফিন মাঝ রাতে বালিশ টাকে সরিয়ে অবনীর কিছুটা কাছে এসে খাটের ওপর রাখা অবনীর হাতের আঙ্গুল গুলো নিজের আঙ্গুলের ভাজে ঢুকিয়ে নিলো।
,
,
,
,
খুব সকাল আফিন উঠে পড়লো।অবনীর ঘুম ভেঙ্গেছে একটু সময় করেই।উঠে বসে হাই তুলে বারান্দার দিকো তাকালো অবনী।
,,,,,,,,,,,,,,,, মামুন হঠাৎ অবনীর বাসায় বিয়ের প্রস্তাব পাঠিয়ে ছিলো কেন?জানেন কিছু?প্রশ্ন করলো আফিন।
,,,,,,,,,,,,মামুনের কারনে ওর বার বাবার মন্ত্রীত্ব চলে গেছে।ওরা অবনীকে মামুনের সাথে বিয়ে দিয়ে বলতো অবনী আর মামুনের রিলেশন ছিলো।অবনী বিয়েতে রাজী না হওয়ায় মামুন এমন করেছে। এখানে মামুনের কোন দোষ নেই।এসব স্বীকার করাতো অবনীকে।এতে করে ইসলাম সাহেব ওনার মন্ত্রীত্ব ফিরে পেতো।অপর পাশ থেকে বললেন ডিআইজি।
,,,,,,,,,,,,,হুম।আস্তে করে শব্দ করলো আফিন।
,,,,,,,,,,,, আফিন কি করবে?মামুন কে কিভাবে শাস্তি দেবে?এতো সহজে ধরা পড়বেনা ও।অপর পাশ থেকে বলছিলেন ডিআইজি।
,,,,,,,,,, শাস্তি ওরা পাবেই।সত্যেরই জয় হবে।অবনী প্রমান দিবে। বলে উঠলো আফিন।
,,,,,,,,,,,,,,,এক সপ্তাহ পর কোটে হিয়ারিং।ওকে নিয়ে এসো।বলে উঠলেন ডিআইজি।
,,,,,,,,,,,,,,,, ওকে।বায়।ফোন কেঁটে পিছনে ফিরে অবনীকে দেখতে পেলো আফিন।
কেন আমার জীবনে আসলেন?কেন এতো সমস্যার সৃষ্টি করছেন?কোন প্রমান দিবোনা আমি।কোথাও যাবোনা আমি।আমাকে আমার অবস্থায় ছেড়ে দিন।চিৎকার করে বলছিলো অবনী।
অবনী নরপশুরা স্বাধীন ভাবে ঘুরছে।তুমি কি চাওনা ওরা শাস্তি পাক?প্রশ্ন করলো আফিন।
চাইনা কিছু চাইনা জোরে চিল্লিয়ে কথাগুলো বলে বেরিয়ে গেলো অবনী।
চলবে
#অন্ধকার_পল্লী
#Tabassum_Riana
Part:২২ এবং অন্তিম পর্ব
,
,
,
,
অনেকদিন চলে গেলো আফিন আর অবনীর জীবন থেকে।আফিন প্রতিনিয়ত অবনীকে মানানোর চেষ্টা করতো কিন্তু অবনী নাছোড়বান্দা। কোনমতেই বাগে আনতে পারছিলোনা অাফিন ওকে।আফিন কথা বলতে গেলেই অবনী ওকে দূরে সরিয়ে দিতো।আফিন বুঝতে পারছিলো যে কিছু তো।একটা হয়েছে ওর অবনীর।কারন অবনী কখনোই এমন করার মতো মেয়ে না।
অন্যদিকে অবনী একটা জিনিস খেয়াল করতো প্রত্যেক রাতেই আফিন যেন কই চলে যায়।প্রথম দিকে পাত্তা না দিলে ও পরে আর চুপ থাকতে পারলোনা।একদিন রাতে আফিনের পিছু পিছু চলে আসে নিচ তলার বন্ধ একটি রুমে।আফিন তালা খুলে রুমে ঢুকে গেছে।অবনী কিছুটা চিন্তিত হয়ে পড়েছে।সিড়ির ওপর বসে পড়লো অবনী।সেই রুমটির দিকে তাকিয়ে আছে।কি হচ্ছে ভিতরে কে জানে।এভাবে বসে অপেক্ষা করতে করতে দুঘন্টা পেরিয়ে গেলো।হঠাৎ দরজা খুলার শব্দে অবনী দাঁড়িয়ে গেলো।ভিতর থেকে আফিন চোখ মুছতে মুছতে বের হচ্ছে।অবনী জলদি রুমে গিয়ে শুয়ে পড়লো।ওনি কাঁদছিলেন কেন?ভিতরে কি ছিলো?কি হচ্ছিলো? জানতে হবে আমার।যে করেই হোক রুমটায় যেতে হবে।কিছুক্ষন পর অবনী খেয়াল করলো কেউ ওর গায়ের ওপর চাদরটি উঠিয়ে পাশে শুয়ে পড়লো।পরদিন অবনী আফিনকে সকাল থেকেই খেয়াল করছিলো চাবিটা কই রাখে আফিন।নাস্তা সেড়ে অফিসের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লো আফিন।অবনী তৎখনাৎ আফিনের কালো কোটের পকেট থেকো চাবিটি নিয়ে সেই রুমে ঢুকে গেলো।
,
,
,
,
পুরো রুম যেন ছবির প্লাটফর্ম। আফিনের বাবা মা অবনীর বাবা মা আফসানা সবার ছবি আছে।আফিনের কিছু সিঙ্গেল ছবি অবনীর কিছু সিঙ্গেল ছবি।যে দুইদিন আফিনের সাথে ফার্ম হাউজে ছিলো তখন কার কিছু সুন্দর মুহূর্ত গুলো ফুঁটে উঠেছে ফ্রেম গুলোয়।ওদের একসাথে কাঁটানো সুন্দর মুুহূর্ত গুলো সবই যেন স্মৃতি আজ।তবে একটা জিনিস যেটা অবনীকে কিছুটা অবাক করে তুলেছে সেটা হলো কিছু খালি ফ্রেম।ছোট্ট কিছু ফ্রেম অবনীর বাবা মা আফিনের বাবা মা আর কিছু আফিন আর অবনীর সাথে লাগানো আর অনেক বড় খালি একটা ফ্রেম পুরো দেয়াল জুড়ে আছে।অবনী বুঝতে পারছেনা এই খালি ফ্রেম গুলোর মানে কি?এতো সুন্দর করে সাজানো রুমটা কিন্তু খালি ফ্রেম!!!!!ফ্রেম গুলো দেখতে দেখতে পিছনে আসতে থাকে অবনী।হঠাৎ এক উষ্ণ নিশ্বাস অবনীর ভিতর শিহরিত করে উঠে।কিছুটা কেঁপে উঠে অবনী।দুটি হাত ওর কোমড় জড়িয়ে ধরে আছে।বড় বড় নিশ্বাস নিচ্ছে অবনী।পাশ থেকে ও কারোর গরম নিশ্বাস উপভোগ করছে অবনী।দুটি নিশ্বাস একে অপরের সাথে বাড়ি খাচ্ছে।আফ!!কিছু একটা বলতে গেলে থামিয়ে দেয় মানুষটা।এখানে আসতে হলে আমাকে বলতে আমি নিয়ে আসতাম।এভাবে লুকিয়ে আসলে? নেশা ধরানো কন্ঠ অবনীর কানে যেন বার বার বেজে উঠছে।অনেক দিন কন্ঠটাকে মন ভরে শোনা হয়নি।নিজেকে চেয়ে ও ছাড়াতে পারলোনা অবনী আফিনের বাহুডোর থেকে।
,,,,,,,,,,,,,,এগুলো কখন তুললেন?প্রশ্ন করে উঠলো অবনী।
,,,,,,,,,,,,,,,,,যখনই সময় পেয়েছি তোমার আমার ছবিগুলো ফ্রেমবন্দী করে রেখেছি।পিছন থেকে বলল আফিন।ভাবছিলাম আমাদের বিয়ের পর প্রত্যেক রাতে তোমাকে এখানে নিয়ে আসবো।গল্প করবো দুজন মিলে আর পুরোনো স্মৃতি গুলোকে রাঙ্গিয়ে দিবো নতুন রং এ।কিন্তু তুমি তো আমাকে এখন ভালবাসোনা স্বামী হিসেবে আমাকে মানোনা।কিছুই মনে করোনা আমাকে তোমার।তাই আমি একাই এরুমে আসি একাই পুরোমো স্মৃতি গুলো স্মরন করি আর একাই চলে যাই।
,,,,,,,,,,,,,,,,অবনী মাথা ঘুরিয়ে নিলো।কথা গুলো ওর বুককে ক্ষত বিক্ষত করছে।চোখ জোড়া ভিজে আসতে চাইছে।নিজেকে সামলে নিয়ে বলল আর খালি ফ্রেম গুলো?
,
,
,
,
এই ফ্রেম গুলোর মানুষটা এখনো আসেনি।বলে উঠলো আফিন।
নেই তাহলে ফ্রেম রাখলেন যে?এ খালি ফ্রেম গুলো আমাদের ছোট্ট বাবুটার জন্য।প্রতিদিন রাতে ওকে ঘুম পাড়িয়ে এখানে এসে ওর একটু একটু করে বেড়ে উঠার প্রত্যেকটা মুহূর্তের ছবি গুলো সাজাবো।রুমগুলো কে খুব সুন্দর করে সাজাবো।ফ্রেম আছে প্ল্যান আছে সব আছে শুধু তুমি হারিয়ে গেছো কই জানি?কথা গুলোয় নিজেকে আর ঠিক রাখতে পারলোনা অবনী।কেঁদে দিলো।পিছনে ঘুরে আফিনকে জড়িয়ে ধরলো অবনী।আফিন আপনাকে ভালোবাসি সত্যি খুব ভালোবাসি।ভুলিনি আপনাকে।কিন্তু সবাই বলছিলো আমি নোংরা হয়ে গেছি অপবিত্র হয়ে গেছি।আমার সাথে যে থাকবে সে ও নোংরা অপবিত্র হয়ে যাবে।তাই বাসায় যাওয়ার পর ইসলাম সাহেব আমাকে কল করেছিলো।সে আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলো। বলছিলো রাজি না হলে ওরা আফসানাকে তুলে নিয়ে যাবে মা বাবাকে নিয়ে যাবে আর আপনাকে মেরে ফেলবে।কিন্তু আমি তো হারাতে পারবোনা আপনাদের।বলতে পারছিলামনা আপনাকে যদি ওরা কিছু করে ফেলে?তাই রাজি হয়ে গেছিলাম ভয়ে।তাই
আমি আমার জীবনের সাথে আপনাকে জড়াতে চাইনি।কাঁদতে কাঁদতে বলছিলো এঅবনী।না তুমি মোটে ও নোংরা না অপবিত্র না।আমার জন্য সবসময়ই পবিত্র তুমি।যারাএগুলো বলেছে তারা নোংরা তারা অপবিত্র।
,
,
,
,
অবনীর মুখ দুহাতে ধরে সামনে এনে ওর কপালে চুৃমো খায় আফিন।অবনী শক্ত করে আফিনকে জড়িয়ে ধরলো।অবনীর কাঁধের চুলগুলো আলতো হাতে সরিয়ে সেখানে ঠোঁট বুলায় আফিন।অবনী আফিনের শার্ট খামচে নিজেকে অাফিনের হারাতে চাইছে।আফিন আরো কিছুক্ষন অবনীর কাঁধে উষ্ণ পরশ বুলিয়ে ওকে কোলে তুলে নিয়ে সিড়ির দিকে পা বাড়ালো। অবনী দুহাতে আফিনের গলা জড়িয়ে আছে।রুমে এসে অবনীকে খাটে শুইয়ে দিয়ে নিজের ভর টুকু ওর ওপর ছেড়ে দিলো আফিন।অবনীর রসালো ঠোঁটজোড়ায় ঠোঁট ডুবিয়ে দিলো আফিন।বেশ কিছুক্ষন পর সরে এলো আফিন।নিজের শার্ট খুলে নিয়ে অবনীর শাড়ীর আঁচলের দিকে হাত বাঁড়ালো।অবনীর ওপর শুয়ে ওর ঠোঁট জোড়া নিজের ঠোঁটের ভাজে নিয়ে নিলো আফিন।অবনীর সারামুখে ঠোঁট বুলিয়ে ওর গলায় মুখ ডুবিয়ে দিলো আফিন।এভাবে ভালোবাসা দিয়ে নিজের করে নিতে থাকলো আফিন ওর অবনীকে।
পরদিন অবনীকে নিয়ে কোটে উপস্থিত হলো আফিন।অবনী সকল প্রমান দিলো মামুনেের বিরুদ্ধে।ইসলাম সাহেব অবনীকে জোর করে বিয়েতে রাজী করানোর অপরাধে ৬বছর জেল হলো।পতিতা পল্লীর রুপা খালার ৫বছর জেল হলো মিথ্যা বলার অপরাধে আর মামুনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড হলো অবনীকে হ্যারেসমেন্ট করার অপরাধে।সামনের সপ্তাহে আফিন বড় গ্রান্ড রিসিপশন পার্ট রাখলো ওর আর অবনীর জন্য।সবাই মজা করছে ভীষন। আফিন তো আজ ওর জল পরীকে দেখে যাচ্ছে।কলাপাতা বর্নের সিল্কের গাউন আর সেই সাথে হালকা গহনা।সব মিলিয়ে অপ্সরী লাগছে অবনীকে।
,
,
,
,
অবনী বর আফিন দুজনেই গেস্টদের সাথে কথা বলার ফাঁকে একে অপরকে দেখে যাচ্ছে।এ দেখার যে কোন শেষ নেই।এভাবে শেষ হয়ে গেলো রিসিপশন পার্টি।সবাই ভীষন এঞ্জয় করেছে সময়টাকে।গেস্টরা চলে যেতেই অবনীকে কোলে তুলে রুমে নিয়ে এলো আফিন।অবনীর দুগাল হাত রেখে ওর ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে পরম আবেশে চুমো খাচ্ছে আফিন।অবনী ও সমান তালে ভালোবেসে যাচ্ছে ওর আফিনকে।ঠোঁট সরিয়ে অবনীর কাঁধে ঠোঁট ছুইয়ে দিলো আফিন।অবনী পরম মায়ায় আফিনের কাঁধে মাথা রাখলো।আফিন অবনীকে খাটে শুইয়ে ওর গলায় মুখ ডুবালো।আজ ওদের এই ভালোবাসার সাক্ষী দেবে স্নিগ্ধ মাতাল করা এই সময়টা।
একবছর পর
আফিন আর অবনী সেই ছবির রুমটিতে এসেছে।ওদের মুখে পূর্নতার হাসি।সেই খালি ফ্রেম গুলোর দিকে এক পলক তাকিয়ে দুজনে এগিয়ে গেলো সেদিকে।খালি ফ্রেম গুলো কে ভরতে লাগলো ওদের ভালবাসার প্রতীক ছোট্ট আদরের ছবি গুলো দিয়ে।বাচ্চাটার জন্ম থেকে সকল ছবি গুলো ফ্রেমবন্দী করে রাখা।আফিন আর অবনীর ছবির মাঝে বাবুর ছবিটি লাগিয়ে নামার সময় অবনীকে কোলে তুলে নিলো আফিন।থ্যাংকস আমার স্বপ্ন পূরনে আমার সাথে থাকার জন্য।বলে অবনীর কপালে চুমো এঁকে দিলো আফিন।এভাবে পরিপূর্নতায় ভরে যেতে লাগলো আফিন আর অবনীর ভালোবাসার সংসারটা।
সমাপ্তি