কাবিননামা Part_5

কাবিননামা
Part_5
#Written_By_Nilima_Zabin_Tanmona

সাগর অস্থির হয়ে আছে জাবিনকে দেখার জন্য। ক্লাস শেষ করে রেহান ক্লাস থেকে বেরিয়ে দেখে সাগরের মিসড কল গুলো। রেহান সাথে সাথে কলব্যাক করে। কিছুক্ষন রিং হওয়ার পর সাগর ফোন রিসিভ করলো।

-কিরে ফোন দিয়েছিলি?(রেহান)
-হুম। একটা কাজ করে দিতে পারবি?(সাগর)
-বল
-জাবিনকে কলেজের বাইরে আসতে বল। আমি আসছি।
-কিন্তু এখন তো কলেজ আওয়ার।
-প্লিজ ম্যানেজ কর। নয়ত আমি এখন দম বন্ধ হয়ে মারা যাব।
-আচ্ছা ছুটি দিয়ে দিচ্ছি তুই আয়।
-জাবিনকে বলিস না আমি আসতে বলেছি।
-আচ্ছা রাখছি।
-বাই।

রেহান ব্যাক করে জাবিনের ক্লাসে গেলো। জাবিনকে ডায়েরি নিয়ে রেহানের কেবিনে আসতে বলল। জাবিন ডায়েরি নিয়ে যাওয়ার পর রেহান জাবিনকে ছুটি দিয়ে দিলো।

-স্যার ছুটি তো আমি চাইনি। (জাবিন অবাক হয়ে)
-ব্যাগ নিয়ে ক্যাম্পাসের বাইরে যাও। কেউ তোমার জন্য অপেক্ষা করছে। (মাথা নিচু করে রেহান)
-কিন্তু স্যার কে অপেক্ষা করবে?
-প্লিজ গিয়ে দেখো। যাও এখন।
-ওকে স্যার।

এরপর জাবিন ব্যাগ গুছিয়ে বাইরে চলে গেলো। বাইরে গিয়ে দেখে সাগর গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে দাঁড়িয়ে আছে। জাবিন রেগে যায়। এই প্রথম জাবিন সাগরের উপর এতটা রাগ করে যে চোখ মুখ রীতিমত লাল হয়ে গেছে। জাবিন সাগরের দিকে এগিয়ে যায়। জাবিন পাশে গিয়ে দাঁড়াতেই সাগর চোখ খুলে জাবিনের দিকে তাঁকায়।

-আপনার সাহস হয় কি করে আমায় ক্লাস করতে না দেওয়ার? (রেগে গিয়ে জাবিন)
-কথা না বলে গাড়িতে বসো। (শান্ত গলায় বলল সাগর)
-প্লিজ যান এখান থেকে।

সাগর হাত টেনে সবার সামনে থেকে জাবিনকে গাড়িতে বসিয়ে গাড়ির লক টেনে দেয়। সাগর সিট বেল্ট বেঁধে গাড়ি স্টার্ট করে। জাবিন তো চেঁচাচ্ছে।

-এই মেয়ে থামো। তোমায় মেরে ফেলব না আমি তুমি যে এমন করছো। (চোখ রাঙিয়ে সাগর)
-সাগরের এমন রুপ দেখে ভয় পেয়ে যায় জাবিন। এরপর জাবিন চুপ করে থাকে।

সাগর খুব জোরে গাড়ি চালাচ্ছে। ধানমন্ডি লেকের পাড়ে গাড়ি পার্ক করে সাগর। এরপর জাবিনকে গাড়ি থেকে নামায়। জাবিনের হাত ধরে লেকের পাড়ে বসে সাগর। একদম শরীরের সাথে শরীর লাগিয়ে রেখেছে সাগর।

-জাবিন তুমি এতটাও ছোট নও যে বুঝবানা আমার কথা। আমি তো তোমায় ভালোবাসি। তুমি কেন মানতে পারছো না আমাকে? তোমার ব্যাপারে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত আমার জানা। তুমি তো কাউকে ভালো ও বাসো না তাহলে কেন এমন করছো আমার সাথে? তুমি জানো কাল রাত থেকে আমি কতটা কষ্টে আছি?
-সেইটা আপনার ব্যাপার, আমার না।
-কেন এমন করছো আমার সাথে অন্তত সেইটা বলো?
-প্লিজ। ছাড়ুন।

এরপর জাবিন সাগরের পাশ থেকে সরে যায়। সাগর কিছুক্ষন নীরব হয়ে বসে থাকে। এরপর জাবিনকে বলে

-আজকে তোমায় নিয়ে শপিং এ যাবো।
-কেন?
-বিয়ে হলো কিন্তু তোমায় তো কিছু দেওয়া হলো না তাই।
-না আমার কিছু লাগবেনা।
-আচ্ছা ঠিক আছে। শপিং এ তো অন্তত চলো।
-না আমি এখন বাসায় যাবো।
-জাবিন আমি তোমার স্বামী হই। আমার সাথে গেলে নিশ্চই তোমার বদনাম হবেনা। আর না করার ও কিছু নেই এখানে।
-হুম।
-গাড়িতে উঠো।

এরপর জাবিন চুপ করে গিয়ে গাড়িতে বসলো। সাগর বসুন্ধরা শপিং মল এ গেলো জাবিনকে নিয়ে। জাবিনের জন্য সবার আগে একটা ফোন কিনলো আশি হাজার টাকা দিয়ে। জাবিন জানে না ফোনটা সাগর জাবিনের জন্য কিনেছে। এরপর জাবিনের জন্য অনেক ড্রেস কিনলো,, রিমির জন্য কিনলো,, লামিয়ার জন্য,, নওশীনের জন্য কিনলো। মোটামোটি আড়াই লক্ষ টাকা খরচ করে ফেলেছে সাগর। শপিং মল থেকে বের হয়ে আসার পর জাবিন সাগরকে বলল

-এতগুলা টাকা এইভাবে নষ্ট না করলেও পারতেন। শুধু নওশীনের জন্য কিনতেন।
-U r my wife & u r my first priority.
-জাবিন এরপর আর কিছু বলল না।
-আজকে আমাদের বাসায় চলো।
-কেন?
-প্লিজ চলো। আমি আব্বুকে ফোন করে বলে দিচ্ছি।
-কোনো দরকার নেই। আমি যাব না। আমায় বাসায় দিয়ে আসেন।

এরপর সাগর আর কোনো কথা বলল না। জাবিনকে জাবিনের বাসায় দিয়ে এসে চলে এলো সাগর। আসার সময় বলে আসলো ফোনটা তোমার জন্য। আজকে থেকে এই ফোনটাই ইউজ করো।

জাবিন ফোনটাও ধরেনি আর জামাকাপড় গুলোও নেয়নি। সাগর খাটের উপর ওইভাবেই ফেলে আসে ওইগুলো। শুধু মাত্র রিমি লামিয়ার জামাকাপড় গুলো দিয়ে আসে ওদের হাতে।

জাবিন ফ্রেশ হয়ে আসার পর রেহান ফোন দেয় জাবিনকে। রেহানের নাম্বার দেখে হেসে দেয় জাবিন। জাবিন ফোনটা রিসিভ করে।

-হ্যা স্যার বলেন।
-কালকে একটু দেখা করতে পারবে। (রেহানের গলা ধরে আছে কেউ এমন মনে হচ্ছে)
-হ্যা স্যার কিন্তু আপনার কি হয়েছে? (ভয় পেয়ে জাবিন)
-কিছু হয়নি। কালকে তো ফ্রাইডে। কফি শপ এ একটু দেখা করো ১১ টার দিকে।
-আচ্ছা স্যার।

এরপর রেহান ফোন কেটে দেয়। এইদিকে জাবিন ভাবছে রেহানের আবার কি হলো? আর কেনই বা কফি শপ এ দেখা করার কথা বলল?

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here